এমন একটা সময় ছিল যে সময় আমরা বা আমাদের বাবা-চাচা’রা তাদের থেকে বয়সে বেশি লোকদের সম্মান করত। এখনও হয় তবে আগের সম্মান বা কথা বলার স্টাইল আর এখনকার স্টাইলে অনেক ফারাক।
আগে ঈদে কেনাকাটার জন্য অনুমতি চাইতে হত যদি পরিবারে দাদা বেঁচে থাকত তাহলে দাদার কাছে। দাদা না থাকলে পরিবারের সবার বড় যিনি তার কাছে। চাওয়ার ধরনটা ছিল অনেকটা লাজুক হয়ে শিড় নিচু করে। পরিবারের প্রধান যা সিদ্ধান্ত নিতেন তাই সবাই মেনে নিত। এমনও হত কোন বছরে পরিবারে একটু অভাব লক্ষনীয় হলে ঈদর শপিং বাতিল হয়ে যেত। সেখানেও কারো কোন অভিযোগ থাকত না। বাড়ির পুরুষরাই শুধুমাত্র মার্কেটে গিয়ে কাপড় কিনত। স্ত্রীর জন্য শাড়ী, মেয়ে সন্তানের জন্য পছন্দসই কাপড়, জুতা। এসব পাবার পর পরিবারে সুখের ফুয়ারা বইত। পরিবারের কর্তা যেহেতু বয়োজৈষ্ট, তিনি সবাইকে সমান হিসাবে কেনার পরামর্শ দিতেন ব কিনে দিতেন। ঈদের নামাজের উদ্দেশ্যে পরিবারের সবাই একসাথে বের হত। এর ফলে পারিবারিক সম্পর্কটা অনেক দৃঢ় ছিল।
বর্তমানে আগের কিছু নাই বললেই চলে। সম্মান তো দুরের কথা ছেলে বাবার কাছে টাকা চাওয়ার ধরনই বেয়াদবের মত। টাকা চাওয়ার সংলাপটা প্রায় এভাবেই শুরু হয় ‘বাবা ঈদের শপিং করব দশ হাজার টাকা দাও’। বাবা হয়তো একটু সাহস করে বলবেন ‘তোমার একার জন্য দশ হাজার টাকা? কি কিনবে?’। তখন সন্তান বলবে ‘সেটা তোমার জানতে হবে না আমি কি করব’ তাড়াতাড়ি টাকা দাও। আমারা বন্ধু অপেক্ষা করছে। [এখানে বন্ধু বলতে ছেলে বন্ধু না মেয়ে বন্ধুর কথা বলা হয়েছে।]
ঈদ আসছে। কেনাকাটার জন্য রমজানের ১৫ তারিখ থেকে সবাই ব্যস্থতা শুরু করে দিয়েছে। বিভিন্ন ধরনের কাপড় বাজারে এসেছে। যে যার মত কাপড় কিনছে। আগের পরিবারতো আর এখন সুন্দরবনের বাঘের মত বিলুপ্তপ্রায়। তবে আমরা একটা বিষয় যেন লক্ষ রাখি যারা আমাদের নতুন কাপড় কেনার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রমের টাকা আমাদেরই হতে তুলে দিচ্ছেন তাদের ঈদের দিনে যেন নতুন কাপড়ের নিশ্চয়তা থাকে।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:৩৯