রবিবারের দিনে আমার রুটিনটা খুবই খারাপ পড়েছে। আমি থিওরীতে এক গ্রুপে পড়েছি আর ল্যাবে আরেক গ্রুপে পড়েছি। ত, শুধু আমার কপালেই এই রবিবার অদ্ভুত রকমের ক্লাস শিডিউল পড়ল। সকাল ৮ টায় একটা ক্লাস আর ৪ টায় আরেকটা ক্লাস। মাঝের এই বিশাল সময় আমি তাহলে কী করব ? বাসায় চলে আসলে আর ফেরত যাওয়া সম্ভব না। তবু, সপ্তাহের এই ক্লাসটা আমার মিস দেয়া ফিক্সড।
ঘটনা আসলে এটাই। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পরেও স্বাভাবিক ভাবেই ডিসকভারীতে সিট পেলাম না। বাসের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছি। এমন সময় উঠল দুই হুজুর। তাদের দুইজনের মুখে অমায়িক হাসি। তারা এত জায়গা থাকতে, আমার পাশে এসে দাঁড়াল। আত্মঘাতী হামলায় নাকি এরা মানুষের কাছে থাকার চেষ্টা করে। ঢোঁক গিললাম। দুইজন আমার দিকে হাসি দিল। দুইজনের এত সুন্দর হাসি দেখে আমি ভয় পেয়ে গেলাম। ভালভাবে খেয়াল করতেছি বোমা টাইপ কিছু আছে নাকি ! লুঙ্গির গিঁট পাঞ্জাবীর ভেতর উঁচু হয়ে আছে। ভালভাবে খেয়াল করতেছি যে, ওইখানে বোমা লুকিয়ে রাখা সম্ভব কী না !
বাসে অনেকেই উঠেছে। এমন সময় বাসে উঠল আরেক গ্রুপ। ৪টা ছেলে। ৩ জন একজনকে ভাই ডাকতেছে। তারা ভিড় গুতিয়ে গাতিয়ে সরিয়ে দিয়ে সেই একজনকে একটা ফাঁকা স্পেসে দাঁরাতে দিল। ভাব চক্কর দেখেই বুঝলাম ক্যাডার। ভিড়ে দাঁড়িয়ে চাপে পড়ে কেউ ওদের কাছাকাছি আসেলে তারা দেখি চোখ গরম করে তাকায়। তাদের কাগজে মোড়ানো বাক্স। দেখেই টেনশনে পড়ে গেলাম, কাগজে মোড়ানো বাক্স নাকি ছুরি আর চাপাতির বাণ্ডিল ?? মোটামুটি তাদের ধারে কাছে ঘেষতেছেনা কেউ। আমিও উলটা দিকে সরে গেলাম। বাসে তাদের দিক খালি, আরেকদিক ভারি। হুজুর দুইটা দেখি আরও সবার সাথে মিলে দাড়াইছে। একেবারে সবার মাঝে যেয়ে।
আমি ভয়ে ঘামতে লাগলাম।
এক ভদ্রলোক নেমে যাবার সময়, আমাকে দেখে বললেন, “ তোমাকে ত দেখে খুবই অসুস্থ মনে হচ্ছে। মাথা ঘুরে পড়ে মনে হয়। আমার সিটে তুমি বস।” আমি বসে পড়লাম।
পাশে দেখি এক ডিঝুশ পোলা
সরে বসতে যেয়ে খেয়াল করি, পাশের সিটে একটা মেয়ে
ঝাড়ি খেয়ে ঢোঁক গিললাম। দেখি, ডিঝুশ পোলা এগিয়ে আসতেছে। আমি ভয়ে লাফ দিয়ে দাঁড়িয়ে গেলাম। হটাৎ দাঁড়াতে যেয়ে খেলাম ধাক্কা। ক্যাডার গুলার সাথে !! ওরা পুরা ক্ষেপে গিয়ে বলে, “ ওরে ধর! ”
ইয়া বুমমমমমম।
মনের ভুলেই গলা ছেড়ে ডাক দিলাম, “ আম্মা গাড়ি কিন। আম্মা আ আ আ আ। গাড়ি গাড়ি গাড়ি। আম্মা আ আ আ আ । ”
তাকিয়ে দেখি বাজে ঘড়িতে বাজে ৪ টা ৩০। ক্লাসটা আজকেও মিস গেল। আম্মা কাছে এসে বলে, “ এখনকার ড্রাইভারদের বিশ্বাস আছে ? পরে কখন গাড়ি নিয়ে ভাগবে নয়তো তোকে অপহরণ করবে। তুই যেই হইছিস, তোকে কোত্থেকে কই নিয়ে যাবে টেরও পাবি না। কী দরকার এত ঝামেলার !! এর চেয়ে বাসে যাচ্ছিস বাসেই যা। এটাই সেইফ।”
বাসের সেইফটির কথা আবারও মনে পড়ায়, অতঃপর, এই পাগল অতঃপর মূর্ছা গেল।
ব্লগার রোহান ভাই কী তার মাথা ভাঙ্গা আর কানা গাড়িটা আমাকে বিনা শর্তে দান করে অশেষ নেকীর মালিক হতে চান ??? জাতি আর জাতির বিবেক দুই দলের কাছেই প্রশ্ন রইল।
© আকাশ_পাগলা
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই অক্টোবর, ২০০৯ রাত ১১:০৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




