পলিটিক্স নিয়ে লেখার সামর্থ আমার খুব কম, আর বিশ্লেষণ ধর্মী লেখা সে তো কল্পনার বস্তু! কিন্তু আজ সাহস করে শুরু করলাম।
সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে ভর্তি পরিক্ষা ছাড়াই মেডিক্যাল কলেজ গুলোতে এবার থেকে ভর্তি প্রক্রিয়া চলবে, ব্যাপারটা কতটুকু যৌক্তিক বা এর প্রায়গিক ব্যাপার গুলো কতখানি বাস্তব সেটার কোন সমীক্ষা না চালিয়েই। আমি এককথায় থ!! এই জিপিএ ব্যাপারটা যে সরকারের সচিব আমলা রা একেবারে ন্যুনতম রকমের বুঝেন তার দুটো দৃষ্টান্ত আমি নিজেই দেখেছি। সচিবালয়ের একজন পদস্থ কর্মকর্তা বেশ কিছুদিন আগে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন জিপিএ পদ্ধতিতে মার্ক্স ডিস্ট্রিবিউশান কিভাবে হয়? যা হোক আমি উনাকে যতটুকু সম্ভব বুঝিয়ে দেবার পর তিনি আমাকে অবাক করে দিয়ে বললেন তার মত অনেকেই এই জিপিএ প্রক্রিয়াকরণ পদ্ধতি সম্পর্কে একেবারেই অন্ধকারে! আর একজন ছিলেন এক বেসরকারি প্রতিষ্টানের ম্যানেজারিয়েল লেভেল কর্মকর্তা। তিনি নিজে প্রমোশানের জন্য এমবিএ করছেন।
এখন বলি আসল কথা, এগুলো নিতান্তই আমার ব্যাক্তিগত অভিমত যদিও চারপাশের অবস্থা দৃষ্টেই আমার এমন অভিমতের সৃষ্টি। এই জিপিএ পদ্ধতিতে যে কোনও ভর্তি কার্যক্রমে যে কি বিশাল রকমের দুর্নীতি করা যায় তার বাস্তব উদাহরণ হলো এইচএসসি ভর্তি প্রক্রিয়া। এবার আমার ভাগ্নিকে ভর্তি করতে গিয়ে তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছি। প্রিন্সিপাল থেকে শুরু করে সবাই এর মজা লূটার চান্স পায়। যেহেতু কোন ভর্তি পরীক্ষাই হচ্ছে না সেহেতু খাতার নাম্বারের কোন অস্ত্যিত্বই নেই। তাই সিরিয়াল মেইন্টেইন করা হয় জিপিএ ক্রমানুসারে। আর সমান সমান জিপিএ অলা স্টুডেন্ট হাজারে হাজার আছে। এখন একটি প্রতিষ্টানে ভর্তিচ্ছু ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে যারা সেম জিপিএ নিয়ে আবেদন করেছে তারা কি করবে? আপনার কি মনে হয় এই রাম রাজত্বে কোন সৎ শিক্ষক একা বা দুএকজন সাহস করবে সততার? যে খানে দেশের ৯৫% শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভার্নিং বডিতে আছে আম্লিগের দলীয় লোকজন? যাদের সব রকমের চরিত্র ডাইনে না নড়ে বামে নড়ে? প্রশ্ন আপনাদের কাছে।
আম্লিগীয় ভুত তো আছেই, তারুপর গোপালগঞ্জি ভুত দেশের একমাত্র বিশ্ব নন্দিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বুয়েটকেও ছাড়ে নি ধর্ষণ করতে। একে একে সব গুলো সরকারি প্রতিষ্ঠানকে গিলে খেয়েছে।
দুর্নীতি আর স্বজন প্রীতির স্বর্ণ শিখরে এখন আমরা। সব জায়গায়।
মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, কারণ আজকের মেডিক্যাল স্টুডেন্ট পাঁচ বছর পর একজন পুর্নাংগ ডাক্তার। যে কিনা তার জীবনে অসংখ্য মানুষের স্বাস্থ সেবা দিবে। তাই এইসব ডাক্তারদের নির্বাচন প্রক্রিয়া যদি হয় ত্রুটিযুক্ত তাহলে সেই ডাক্তার গুলো কি ত্রুটিযুক্ত হবে না? এটাও আপনাদের জন্য কুইজ।
এখন আসি ম্যাটার অব ফ্যাক্ট এ। পদ্মা সেতু, রেল মন্ত্রি, সাবেক যোগু মন্ত্রী আবাইল্লা সহ আরও বিভিন্ন বিশ্ব মাতানো দুর্নীতি নিয়ে সরকার বেজায় বেকায়দায় আছে। এদিকে নিররাবচনের সময়ও ঘনিয়ে আসছে, বি এন পি সে নির্বাচনে যাক বা না যাক। এতদিন মন্ত্রী এমপি কেন্দ্রীয় এবং জেলা পর্যায়ের সকল নেতা ফেতা সহ তাদের সমস্ত চেলা চামুন্ডারা যা কামিয়েছে তা তারা নিজেদের জন্য ডিপোজিট করেছে বলেই আমার বিশ্বাস। কিন্তু সামনের নির্বাচনে যে বিশাল একটা খরচ আছে, সুযোগ পেলে টাকা দিয়ে হলেও যে পাবলিকের ভোট কেনার একতা প্ল্যান আম্লীগের সেটার জন্য তো তৃণমূল পর্যায়ের সকলনেতা ফেতাদেরও প্রচুর পরিমাণে টাকা দিতে হবে। সেই টাকা কই পাওয়া যাবে? সব চে বড় সুযোগ ছিল পদ্মা সেতু। তা কিন্তু হলো না। পদ্মা সেতুর বিশাল বাজেট ছিল। দীর্ঘ সময় ধরে চলতো। তাই মারিং কাটিং ও চালানো যেতো যথেচ্ছ। যেখানে সমীক্ষা চলা কালীনই শ্ত কোটি টাকার দাও মারা হয়ে গেছে সেখানে মূল সেতুর কাজ শুরু হলে কি হত বলুন তো? বিশাল!!!
সামনের নির্বাচনে অতিকায় একটা ফান্ড দরকার আম্লিগের। কারণ আম্লিগীয় ভোট বাদে অন্য ভোটগুলো আম্লিগের কিনতে হবে। সে জন্য আম্লিগ গ্রাম পর্যায়ে স্থানীয় গন্য মাণ্য দের মাথা কিনে নেবে। মোস্ট অব দ্যা পিপলের সাপোর্ট দেখাতে পারলে যদি '৯৬ স্টাইলের একটা ইলেকশান কে জারজ থেকে বৈধ করা যায়! আর মধ্যবিত্ত থেকে নিম্নবিত্ত সবাই এখন নগদ নারায়ণকেই বেশি সালাম করে। সমাজে নীতি নৈতিকতার বালাই নেই।
প্রচুর অর্থ ছড়াতে পারলে ঠিকমত ভোট কাস্টিং বৈধ লেভেলে পৌছে যেতে পারে। আর এজন্যই বিশাল ফান্ড দরকার। আর পদ্মা সেতু ছিল সেই তুরুপের তাস। বিশ্বব্যাংক দিল না, তিনারা আওয়াজ দিলেন পাবলিকের পকেট কাটার, মাগার চতুর পাবলিক জান-মান দিয়ে দেবে কিন্তুক মাল দেবে না! অবস্থা বেগতিক, তাই খব দ্রুত বিকল্প খোঁজা শুরু হল। আর বুবুর উর্বর মস্তিষ্ক উপদেষ্টা রা সহজ কিন্তু কার্যকর উপায় বের করে ফেললেন!
তারা দেখলো যে মেডিক্যাল ভর্তিচ্ছু ছাত্র ছাত্রীদের অভি্ভাবকদের পকেট না খালি, ঘরের সিন্ধুক আর ব্যাংকের ভল্টও নিজেদের ঘরে তুলে নিতে পারবে তারা! প্রাইভেট মেডিক্যাল গুলো সহ সব গুলো মেডিক্যাল কলেজে ভতির জন্য কয়েক লাখ আবেদনকারী পাওয়া যাবে। যাদের বেশিরভাগের কাছ থেকেই একটা মোটা অংকের টাকা খসানো সহজ হবে। আর এতা করা হতে পারে আগেই। পরে যদি একজন ছাত্র বা ছাত্রী চান্স নাও পায় তার টাকা সে ফেরত পাবে এর কোন নিশ্চয়তা নেই। কারন দেশে এখন পচাত্তুর পূর্ব জঘণ্য অবস্থার থেকেও জঘণ্য অবস্থা বিরাজ করছে। এখন বলি পাবলিক মোটা অংকের টাকা দিবার জন্য কেনো এত বড় রিস্ক নিবে। দেখুন মানুষ আজকাল ঘুষ সম্ভাবনাময় চাকরি গুলোতে, হোক না পিওন, বিশাল ইনভেস্ট করে, যায়গা বুঝে একটা পিওন পোস্টের জন্য মানুষ এখন ২ থেকে ৩ লাখ টাকাও ঢালছে! আর ব্যাপার যখন ডাক্তারী সেখানে মেডিক্যাল কলেজের একটা সিটের জন্য একজন অভিভাবক ২০লাখ টাকা চোখ বন্ধ করে বাজী ধরবে। কারণ বাংলাদেশে ডাক্তারী আর আইন পেশায় কেউ এক ফুটো পয়সায় লস দেখাতে পারবে না।
এই গেল cause, এখন বলবো effect সম্বন্ধ্যে।
ধরুন একজন ছাত্র, যে ভর্তি তালিকায় নিচের দিকে ছিল। সে কোন এক আলাদিনের জিনের (আবুল, চোরঞ্জিত, রাজু, ইত্যাদি) ছোঁয়ায় মেডিক্যাল এ চান্স পেয়েছে। এতে তার বাবার ইনভেস্ট দশ লক্ষ, এটা প্রাথমিক। পরবর্তিতে তার পড়াশুনা চলাকালীন ইনভেস্ট এরকম আরও দশ লাখ, পাঁচ বছরে, সে ডাক্তারী পাশ করে কি করবে? এমনিতেই আমাদের দেশের ডাক্তার গণ দরিদ্র রোগীর পাঁচ আনাও ছাড়েন না। তখন কি হবে অবস্থা?
উত্তর সবারই জানা। যাই হোক, অনেক ব্যস্ততার মাঝে থেকেও এই পোস্ট দিলাম। এবং অনেক বানান ভুল হতে পারে, তাড়াহুড়ো করে লিখেছি বলে। আর আমার অনেক চিন্তা অতিশয় রঞ্জিত মনে হতে পারে, কারণ সত্যিই আমি ব্যাপারটা নিয়ে আতংকিত।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




