বৈশাখের দিন। আকাশে হপ্তাখানেক পরে মেঘ করেছে। তবে বৈশাখের রোদ্রঝড়ের পর কালবোশেখী নয়। শরতের হঠাৎ বৃষ্টির মতো মেঘ।
পাড়াগায়ে নতুন ব্যাংক, সবুর মিয়া সেই ব্যাংকের সেনাপতি। তিনিও গোটা সপ্তাহজুড়ে বৃষ্টির জন্য সবুর করছেন। ওনার সঙ্গী চকচকে দোনলা বন্দুকটাও সবুর করছে, একটু গর্জানোর জন্য! বন্দুকটার ট্রিগার কতদিন টানা হয়নি কে জানে?
কোনদিন টানা হয়েছিলো কি?
এখন ধানের দিন। বৃষ্টি হবে না।
সবুর মিয়া হাতপাখায় হাত রেখে নিরবে আফসোস করেন। গত দশ বছর ঢাকাতে, এই ব্যাংকের অন্য শাখায় ছিলেন। সেখানে গোলাগুলি দূরে থাক, বন্দুক সমেত তিনি আরাম করে গদি দুলিয়েছেন, আর ঝিমিয়েছেন।
কায়দা করে সালাম ঠুকতে পারেন দেখে বড় সাহেবেরা সবুর মিয়াকে ভালো করে চিনতেন। চেনাটাই কাল হলো। বন্দুক বগলে তিনি নির্বাসিত হলেন তিনি নতুন শাখায়। চোর ছ্যাচড়ের সাহসী ভূমিতে সবুর মিয়া খুব অসহায় বোধ করছেন।
হাতাহাতিতে তার ভয় নেই। তিনি সজাগে স্বপনে খালি ভাবেন- কতদিন বন্দুক চালানো হয়না!
হাতের টিপ কি আগের মতো আছে? এই বন্দুকটা সময় হলে, দৈত্যের মতো ডাক দিয়ে, এক ফুঁকে কি বের করতে পারবে, জ্বলন্ত গুলি?!
সহজলভ্য দেশীয় অস্ত্র মোকাবেলা করার পূর্বপ্রস্তুতি জনিত চিন্তা, এক আতঙ্কের চাদরের মতো সবুর মিয়াকে আচ্ছাদিত রাখে। তিনি ভেবেছেন, এভাবে বাঁচা যায়না। কালকেই তিনি ট্রান্সফারের মিনতি করবেন।
মেঘের মাদুর আকাশ আস্তে আস্তে ঢেকে সংকেতে দিচ্ছিলো...এমন দিনেই ব্যাংক ডাকাতি হয়!
সমাপ্তি
ছবি: আমাদের ছোট্ট বারান্দা থেকে মোবাইলে তোলা
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১০:০১