somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"নারী দিবস"- নারীদের জন্য এক অপমানজনক দিবস

০৮ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১১:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজকের দিনের এতো এতো স্ট্যাটাস দেখে ভাবলাম নারী দিবস সম্পর্কে একটা স্ট্যাটাস দেই। যদিও আমি দিবস গুলোতে স্ট্যাটাস দেইনা। তবু, চুপ থাকতে পারলাম না।

আমার প্রথম কথা হচ্ছে, এই বাঙ্গাল মুলুকে নারীর প্রাপ্য অধিকার সেদিনই প্রথিষ্ঠিত হবে, যেদিন লোকাল বাসগুলোতে "নারী এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য সংরক্ষিত আসন" এই জায়গায় শুধুমাত্র "প্রতিবন্ধীদের জন্য সংরক্ষিত আসন" লেখা থাকবে। যেদিন সরকারী/বেসরকারী সকল চাকুরীতে প্রযোজ্য নারী কোঠা তুলে দেওয়া হবে। ( একটু ভালোভাবে চিন্তা করে দেখুন, কোঠা কাদেরকে দেওয়া হয়? নিজেই উত্তর পেয়ে যাবেন। আমার কিছু বলে দিতে হবে না।) নারীরা ভাবছেন, এতোসব সুযোগ-সুবিধা আদায়ের মাধ্যমে আপনারা আপনাদের অধিকার ফিরে পাচ্ছেন। তাদের জন্য আমার দুই লাইনের অমর বাণী - "অধিকার আদায় করে নিতে হয়। কেউ যখন আপনাকে অধিকার দিবে(বস্তুত, সুবিধা শব্দটাই বেশী মানানসই), তখন সেটা আর অধিকার থাকে না। সেটা হয়ে যায় করুণা।"
এখন সময় এসেছে। নারীদের নিজেদেরকেই ডিসিশন নিতে হবে, তারা কি চায়? পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যাবস্থায় সুবিধা ভোগ করে সম অধিকার(!) অর্জন করতে চায়। নাকি, নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করতে চায়? বেগম রোকেয়া এই যুগে জন্মগ্রহণ করলে নারীদের সম অধিকারের নমুনা দেখলে যে আত্মহত্যা করতেন না, এর নিশ্চয়তা আমি দিতে পারি না।
যাই হোক, মেইন কথা হলো- পুরুষের সাথে কম্পিটিশন করার মত ক্যালিবার নারীদের যথেষ্ট আছে। কিন্তু, সমস্যা তো ওই গোড়ায়। আপনি যদি পুরুষদের দ্বারা প্রাপ্ত কতিপয় সূযোগ-সুবিধা ভোগ করে ভাবেন যে, সম-অধিকার অর্জন করে ফেলেছেন (বস্তুত, এই জিনিসটা কোন অধিকার না থাকার চেয়েও মর্যাদাহানিকর, যদি আপনি উপলব্ধি করতে পারেন), তবে সমস্যার কোন সমাধানই হবে না। আপনারা নিজেরা ভাবলেন, আমরা আমাদের অধিকার আদায় করতে সক্ষম হয়েছি। কিন্তু, প্রকৃতপক্ষে পুরুষজাতির করুণার পাত্রী হিসেবেই রয়ে গেলেন।
সুতরাং, "মেইক ইউর স্টেপ ফরওয়ার্ড অ্যান্ড প্রুভ দ্যাট, ইউ ডোন্ট নিড এনি প্রিভিলেজ টু প্রুভ ইউরসেলফ।"

আমার দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, "নারী দিবস" এই দিবসটাই হচ্ছে একটা জোক্স। দিবসটা কীভাবে আসলো আমরা প্রায় সবাই জানি। নেট ঘাটলেই পেয়ে যাবেন। তাই, সেটা নিয়ে কিছু বললাম না। সমস্যা টা হচ্ছে, দিবসটা পালন করার প্রধান কারণই হচ্ছে নারীদের অধিকার নিশ্চিত করা। এ দিনে সমগ্র বিশ্বে যে নারী আন্দোলন দেখা যায়, সে আন্দোলনের প্ল্যাকার্ডে দেখা যায়-
Save the Women…
Save Women Rights…
বাংলাদেশ সহ আফ্রিকা ও ইন্ডিয়াতেও এটা দেখা যায়-
Save the Tigers…
দুইটার মাঝে কোন মিল খুঁজে পাচ্ছেন কি? আরও খারাপ উদাহরণ দেওয়া যায়। কিন্তু, আমি যথাসাধ্য ভালো উদাহরণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছি। এখন হয়তো সুশীল নারীবাদীরা চিল্লিয়ে বলবেন, এতো বড় সাহস! খামোস! জন্তুর সাথে নারীর তুলনা!
তাদের জন্য বলবো, এই সুযোগটা কিন্তু আপনারাই করে দিয়েছেন। দ্যা রিয়েলিটি ইজ- 'We dont need to save the women. They can be safe by their own."
বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের একটা পংতি মনে পড়ে গেল...
"বিশ্বের যা কিছু মহান
সৃষ্টি চির কল্যাণকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী,
অর্ধেক তার নর।"
এই জিনিসটাই আমরা বুঝতে পারি না। নারীরা সবক্ষেত্রে পুরুষের উপর কেনো নির্ভর করবে? তাহারা নিজেরাই নিজেদের জন্য এনাফ, এই জিনিসটা যতদিন না নারীরা বুঝতে পারবে, ততদিন তাদের সত্যিকারের মুক্তি আসবে না। আর, আপনারা (নারীরা) যদি চান সারাজীবন পুরুষদের উপরই নির্ভর করবেন, তাদের দেওয়া সুযোগ-সুবিধা গুলো ভোগ করবেন, তাহলে বলবো- আপনাদের যা ইচ্ছা। কিন্তু, এই কাজ করলে "নারী-পুরুষ উভয়েই সমান" এই দাবি করার আগে দুইবার ভেবে দেখবেন।


"নারী দিবস"- নারীদের জন্য এক অপমানজনক দিবস, এই কথা বলার কারণ নিশ্চয়ই আপনারা বুঝতে পেরেছেন এতক্ষণে? না বুঝলে বলে দেই, এই দিনটাতে নারীদেরকে নারী হিসেবে (মানুষ হিসেবে না) দেখা হয়।

অনেক কিছু বলে ফেলেছি। মূল কথা, আমি নারীদেরকে সম্মান করি, তাদেরকে আমাদের(পুরুষদের) এক অবিচ্ছেদ্য অংশ ভাবি। এখন কথা হচ্ছে, নারীরা নিজেরা কেন তাদের নিজেদেরকে অসম্মান করবে? কেন নিজেদের হেয় প্রতিপন্ন ভাববে? আমি এবং আমরা নারীদেরকে সম্মান করতে চাই সঠিকভাবে।
সম্মান এমন একটা ব্যাপার যেটা আদায় করা যায় না, অর্জন করতে হয়।
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?

লিখেছেন ঋণাত্মক শূণ্য, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২৮

অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।



১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×