২৪শে এপ্রিল ২০১৩ ,
ক্লাস করছি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনের নিচতলায় ! রানা প্লাজা ধ্বসের খবরটা পাই ক্লাস টিচারের কাছ থেকে। ক্লাস শেষ হয় একপর্যায়ে। টিচার এসাইনমেন্ট দেন, সাভার গিয়ে রানা প্লাজার উপর একটা রিপোর্ট করতে। তখন পর্যন্তও সে ঘটনার ভয়াবহতার কথা জানা ছিল না।
গেলাম আমরা ক’জন । প্রথমে জায়গাটা দেখে বলার উপায় নেই যে কিছুক্ষণ আগে সেখানে একটা আস্ত বিল্ডিং ছিল। বস্তির কোন ঘরের আগুন নেভাতে যেরকম কার্যক্রম চলে সে রকম প্রচেষ্ঠা নিয়ে , ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকাজ লক্ষ্য করলাম। তারপর একের পর এক লাশের মিছিল আসতে লাগলো চোখের সামনে। সে মিছিলে শ্লোগান দিল বাইরে দাড়িয়ে থাকা লাশের অাত্বীয়রা।
আর আমরা??
কিইবা করার ছিল মিছিলের অংশগ্রহণকারীদের গোনা বাদে।!
? তারপর মিছিলে অংশগ্রহন বেড়ে চলল দিনের পর দিন । মাসের পর মাস! যারা মিছিলে অংশগ্রহন করতে করতেও ব্যার্থ হল , তাদের অবস্থা হল আরো করুণ। তাদের অনেকেই এখন হাসতে পারে না। হাঠতে পারে না। বন্ধূর মোবাইল ফোনটা থেকে মাকে ফোন করে বলতেও পারে না “ মা আমি কাইল আইতেছি” । এখন সেই মায়ের অবস্থা .... থাক না বলি!!!
আরও পরের অবস্থা?
হ্যা বেশ হয়েছে। কাড়ি কাড়ি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি হয়েছে । কিন্তু কানাকড়িও দেওয়া হয়নি। রানা প্লাজার সামনে বেদী হয়েছে। সেখানে ঘটা করে মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। সেগুলো দেখেই তো সে ছোটলোক গুলার খুশি থাকার কথা ! আর যাই হোক ছোটলোক তো!
২৪শে এপ্রিল ২০১৪
ঘটনার ১ বছর । মিছিলে অংগ্রহন এখনো চলছে! প্রায় সাড়ে এগারশো অংশগ্রহন কারীর রেজিষ্ট্রেশন নিশ্চিত হয়েছে। এখনো রহিমা, ছকিনারা নিজেদের শুষ্ক পাজরের হাড় দেখিয়ে বলে , পিষে যখন দিবি ! তাহলে এইটাও পিষে দিতি! নাকি এটা সবাইকে দেখিয়ে বানিজ্য করার জন্যই এটা অবশিষ্ট রাখলি?
আর রানা প্লাজার রানা? বেশ কষ্টে আছেন। ১১ তলা বুকে চাপার চেয়ে জেলে থাকা কষ্টেরই বৈকি! সরকার তার প্রতি আরো সদয় হোন। কিছু ছোটলোকেদেরই তো মেরেছে!! এ জন্য এর চেয়ে আর কি সাজা হতে পারে!
## ভাল থেক রহিমা! ছকিনা তুমিও খুব ভাল থাকবে কিন্তু!
আর পারলে ক্ষমা করো আমাদের!
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৮:৫২