somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নীলচে খাম

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৫:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বরুণা,
অনেক মানুষের ভীড়ে সবসময়ই খুব অল্প সময়ের জন্য দেখতে পাই তোমায়, কিন্তু তারপর চিন্তাজগতের প্রায় পুরোটা জুড়ে , প্রতিটা রন্ধ্রে থাকো তুমি অনেকক্ষণ । অনেক কিছুই বলার ছিল, জানিনা কিছু বলতে পারবো কি না, তারপরেও বলছি, আমার অনুভুতি গুলোকে ভাষায় কখনো আঁকতে পারি না, তবুও বলছি...................

শুরুতে ক্লাস আর অ্যাসাইনমেন্টের ভীড়ে জীবন যখন সাদাকালো, তখন ধুলো জমা এই মনটাকে কে যেন রাঙ্গিয়ে দিয়েছিলো । একের পর এক বিরক্তিকর ক্লাস করে যেতাম তার ই সম্মোহোনী টানে। বন্ধুদের জমজমাট আড্ডাতেও, অবচেতন মন তাকেই যেন খুজে বেড়াতো । প্রতিটা অলস সময় কাটতো , কল্পনার সমস্ত জুড়ে থাকা সেই মানুষ টার কথা ভেবে । হারমোনিয়ামটা সুর হারিয়েছিলো সেই মানুষটার হাসির সুরে ।

তুমি কি জানো আমি ভাবি একটা রেললাইনের কথা , রেললাইনটা ধরে আমি হাটছিলাম কোথাও একটা মানুষও ছিল না । দূর থেকে একটা ট্রেন আসছিলো ,কিন্তু আমি ভয় পায়নি ।কারন আমি ছিলাম নিঃসঙ্গ । হারানোর মতোন আমার কিছুই ছিল না । ঠিক তেমনি দেওয়ার মতোন ও আমার কিছুই ছিল না এই পৃথিবীকে ।

হঠাৎ তোমার মুখটা ভেসে উঠলো । আমার মধ্যে কোথায় যেনো একটা ঝড় বয়ে গেলো। আমার ভয় লাগা শুরু হলো ।মনে হলো হয়তো আমি তোমার জন্যই জন্মেছি, হয়তো আমাকে তোমার জন্য হলেও বাঁচতে হবে। তোমাকে পাওয়ার জন্য হলেও আমাকে বাঁচতে হবে । তারপর আমিতো বাঁচলাম, তুমি আমাকে বাঁচতে শিখালে। এখন তোমাকে ছাড়া আর কিছুই বুঝি না ।

সতেরোই জানুয়ারী, ক্লাস শেষে বাসায় যখন ফিরছিলাম সেদিন ই প্রথম বাসে জিজ্ঞেস করেছিলে “তোমার বাসা কই? দশে থাকো নাকি?” বললে হয়তো বিশ্বাস করবে না চোখ বুঁজলে আজও আমি সেই কথা গুলো স্পষ্ট শুনতে পাই ,তারপর কেটে গেছে ২৫৩ দিন, সপ্তাহের হিসেবে ৩৬ সপ্তাহ ,ঘন্টার হিসেবে ৬০৭২ ঘন্টা ,আর ,মিনিটের হিসেবে ৩৬৪৩১৯ মিনিট । এই ২৫৩ দিনের প্রতিটি সকাল হতো তোমার ওই হাসিমাখা মুখ খানির কথা ভেবে, দিনটাও শেষ হতো ঐ একজনেরই কথা ভেবে । ভার্সিটি শুক্রবার দিন বন্ধ থাকতো , গোটা সপ্তাহে ঐ একটা দিন যে আমার কিভাবে যেতো তা বলে কোনোদিন ই বোঝাতে পারবোনা । তোমার ঐ চাঁদপানা মুখ খানি না দেখলে সত্যিসত্যি ই দিনটা খারাপ যেতো , কথাটা হাস্যকর শোনালেও এটাই চিরন্তন সত্য, এটাই আমি।

মনে আছে, প্রথম প্রেসেন্টেশনের দিনের কথা, চমৎকার একটা প্রেসেন্টেশন শেষে যখন ফিরছিলাম, কিছু বুঝে ঊঠতে পারার আগেই হঠাৎ সিড়ি থেকে পড়ে গেলে তুমি , বড্ড ভয় পেয়েছিলাম সেদিন , সামান্য একটু হাত ছিলে গিয়েছিলো বলে হেসে ঊড়িয়ে দিয়েছিলে তুমি, কিন্তু সত্যিই আমি অনেক ভয় পেয়েছিলাম । সেদিন ই প্রথম একসাথে রিক্সশায় চড়েছিলাম দুজন, সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিলো বলে তোমায় হোস্টেল পর্যন্ত এগিয়ে দিয়েছিলাম আমি।রিকশাতে তুমি বলেছিলে , তোমার নাকি অনেকদিনের সখ, তোমার সাহেবের সাথে তুমি নাকি জোছনা দেখতে চাও । তুমি কি জানো এরপর থেকে কোনো জোছনা আমার বাদ যায় না। গ্রুপ স্টাডির আইডিয়াটা আমারই ছিল , যাতে তোমাকে আরো বেশী কিছুক্ষন দেখতে পাই। মার্চের দিকে যখন খুলনা গেলে, কয়টা দিন যে আমার কিভাবে কেটেছিল তা বলতে পারবোনা।

!আমি যদি ভিঞ্চি হতাম, তুমি হতে মোনালিসা
আমি যদি সুনীল হতাম, তুমি
বরুনা।।"

রঙ্গিন সময় ফুরিয়ে গেছে, ধুসর হয়ে গেছে দৃশ্যপট,সময় গুলো কাটে খুব ধীরে, খুবই ধীরে , , ,
তোমাকে লাল শাড়ীটা পড়লে অপূর্ব লাগে, সেই শাড়ীটা পড়ে কি আসবে , লেকের ঐ পাড়ে , যে পাড়ে রোজ আড্ডা দিতাম, হাসি-ঠাট্টা, খুনসুটি হতো, , আসবে কী ঐখানে??
আমি অপেক্ষায় থাকবো ,কিটক্যাটের লাল প্যাকেট নিয়ে, , ,
আসবে তো ???

ইচ্ছে ছিলো, কোনো এক ঝিরিঝিরি বৃষ্টির দিনে দুজনে একসাথে হাতে হাত ধরে ভিজব ঢাকার পথে, আরও কতো ইচ্ছে ছিল, জানি তা পূরণ হবে না।।
জানি এই চিঠি তুমি পাবে না কোনদিনও, কাটবে না আমার অপেক্ষার প্রহরও, তবুও নিজেকে শুনিয়ে নিজেই বলছি , , , ,
আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি

ইতি,
তোমারই টিকটিকি
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৫:৩৬
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×