ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন, লিফলেট, বিলবোর্ড, তোরণ, দেওয়াললিখন, মাইকিং, ক্রেস্ট, ফুলের মালা, ফুলের তোড়া, এসব দিয়ে যুগের পর যুগ বাংলাদেশে sycophancy-র যে কালচার চলে এসেছে, সেটা বিশ্বে অদ্বিতীয়, অভূতপূর্ব, অপ্রতিদ্বন্দ্বী, অপ্রতিরোধ্য।
ফটোশপ সফটওয়্যার ও কম্পিউটার-ইন্টারনেট-প্রিন্টারের সহজলভ্যতার আগে থেকেই, বাঙালীর রক্তে মিশে যাওয়া এই তোষামুদে চরিত্রকে পুজি করে গড়ে উঠেছে এক শ্রেণীর পেশাজীবি ও ব্যবসায়ী। জন্ম, মৃত্যু, বিয়ে, উৎসব, নির্বাচন, ইত্যাদি নানা উপলক্ষে, অনলাইনের পাশাপাশি বাস্তব জীবনেও রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, থেকে শুরু করে মানুষের খাট আর কমোডের উপরেও চলে এসব প্রচারণা আর প্রসাদ বন্টন।
কালেভদ্রে সচেতন নাগরিক আর পেশাজীবিগণ এসব থামাতে ও কমাতে সচেষ্ট হলেও, দীর্ঘমেয়াদে সেসব ফলপ্রসূ হয়নি। উপরন্তু, বিলবোর্ড ও পোস্টার ব্যবসায়ী ও প্রমোটারদের কিল-ঘুষি খেতে হয়েছে, এসব উচ্ছেদ ও অপসারণ করতে আসা ম্যাজিস্ট্রেটদেরকে।
পুরো বিশ্ব যখন কাগজের ব্যবহার কমিয়ে আনছে, বৃক্ষনিধন কমিয়ে আনছে, বর্জ্য উৎপাদন কমিয়ে আনছে, বাংলাদেশ তখনও হাটছে বিপরীত পথে। আজকাল কাগজের পরিবর্তে প্লাস্টিকের ম্যাটেরিয়ালে ছাপানো হচ্ছে এসব প্রমোশনাল জিনিস, যা কিনা পরবর্তীতে পরিণত হচ্ছে এমন বর্জ্যে, যা রিসাইকেল করা অসম্ভব। তাছাড়া, বিলবোর্ড বা দেওয়াললিখন নষ্ট করছে প্রাকৃতিক ও স্বাভাবিক সৌন্দর্য।
কিন্তু, সাধারণ জনগণের মধ্যে একটা প্রবণতা মজ্জাগতভাবে গেথে গিয়েছে, যার ফলে তারা সবসময় প্রমাণ করতে চায়, দেখাতে চায়- আমার অমুক বন্ধু, তমুক আত্মীয়, বড় নেতা, বড় অফিসার। কিংবা সবাইকে জানাতে চায়, অমুক ক্ষমতাধর ব্যক্তির সাথে আমার জানাশোনা, উঠাবসা। যত্রতত্র power exercise এর ফলে দেশে এখন social, economic এবং political imbalance সর্বত্র।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪৭