"বাসা থেকে বের হতেই দেখলাম আমাদের এলাকার ড্রেন পরিষ্কার করা হচ্ছে। এতো ময়লা, প্লাস্টিক গুলো এখানে কে ফেলছে???? জ্বি আমরাই যারা এখানে বসবাস করি, আমরাই ফেলছি। সপ্তাহ না যেতেই আবার একই অবস্থা হয়ে যাবে....... কি করনীয় জানতে চাই?"
আমি উনার উদ্দেশ্যে যা লিখলামঃ-
১) এলাকার মুদির দোকান, অন্যান্য দোকান, প্রধান প্রধান বাড়ির সদর দরজা বা দেওয়াল, মসজিদ বা কমিউনিটি সেন্টারের গেইট/দেওয়ালে লেমিনেটেড পোস্টার/ব্যানার বা দেওয়াল লিখন দিয়ে লিখে দিবেনঃ-
"নালা-নর্দমাতে প্লাস্টিক বোতল/ব্যাগ কিংবা যেকোন ময়লা আবর্জনা ফেলা নিষিদ্ধ। নালা শুধুমাত্র তরল বর্জ্য যাওয়ার জন্য। সিসিটিভি ক্যামেরা দিয়ে মনিটর করা হচ্ছে।"
২) বাচ্চা ছেলেমেয়ে, বুয়া, ভিক্ষুক, ইত্যাদি অশিক্ষিত ও বেপরোয়া গোছের মানুষদেরকে চিপসের প্যাকেট, সিগারেটের অবশিষ্টাংশ, ময়লার পলিথিন, ইত্যাদি নালার পরিবর্তে ময়লা ফেলার ঝুড়িতে ফেলার আদেশ দিতে হবে।
৩) আমার জানামতে, শহরাঞ্চলের এলাকাগুলোর নালানর্দমা থেকে কঠিন বর্জ্য তোলার কাজ করে এক টিম, এবং বর্জ্যগুলো সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ করে অন্য টিম। দুই টিমের মধ্যে কোন যোগাযোগ থাকে না সম্ভবত। কিন্তু দুই টিমকেই তত্ত্বাবধান করে সিটি কর্পোরেশন। স্থানীয় কাউন্সিলর অফিসে কঠোরভাবে জানানো যেতে পারে। পাবলিককে সচেতন ও সোচ্চার হতে হবে। সবাই শক্তের ভক্ত, নরমের যম।
৪) নালা নর্দমা আরো গভীর করতে হবে। এবং সবচেয়ে ভালো হবে যদি- সরকারি খরচে বা এলাকাবাসীর সমন্বিত খরচে- নালার উপরে স্ল্যাব বা ঢাকনা দিয়ে দেওয়া যায়। যাতে কেউ সহজে নালার ভিতরে আবর্জনা ফেলতে না পারে।
৫) গৃহস্থালী বর্জ্য থেকে ঘরের আশেপাশে লাগানো গাছগাছালির জৈব সার, এলাকার কাছাকাছি অবস্থিত পোল্ট্রি, ডেইরি বা মাছের ফার্মের খাবার উৎপাদন করতে হবে। তাহলে গৃহস্থালি খাদ্যবর্জ্য সিটি কর্পোরেশনের ময়লার গাড়িতে না ফেললেও চলবে। এলাকাতে যাদের সামর্থ্য ও জায়গা আছে, গরু-ছাগল-মুরগি-হাস পালন করা উচিত। অপচনশীল যেকোন বর্জ্য (প্লাস্টিক, ধাতু, কাপড়, কাঁচ ইত্যাদি) সিটি কর্পোরেশনের ময়লার গাড়ি বা ডাস্টবিনে না ফেলার পরিবর্তে- বাসাবাড়ি থেকেই পরিচ্ছন্ন করে, রিসাইকেল করার জন্য আলাদা আলাদা রিসাইকেলার (সহজ বাংলায় ভাঙ্গাড়িওয়ালা) এর কাছে দিয়ে দেওয়ার এলাকাভিত্তিক উদ্যোগ নিতে হবে।
৬) মসজিদের খুতবা/বয়ানে, এলাকার কোন সভা/মিটিং-এ, প্রতিবেশীদের কোন গায়েহলুদ উৎসব বা আয়োজনে, মাইকে সবার জ্ঞাতার্থে- লজ্জা না পেয়ে, সাহস করে, কাউকে এসব কথা জানাতে হবে। বর্জ্য অব্যবস্থাপনা, পরিবেশ দূষণ, জলজ প্রাণীর বিলুপ্তি, ক্যান্সার ও নতুন নতুন রোগের প্রকোপ, জলবায়ুর উগ্রতা, তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া, জমির অনুর্বরতা ও খাদ্য ঘাটতি, সবই এক সুতোয় গাঁথা।
৭) ঘর থেকে ময়লা ফেলতেই হলে- প্লাস্টিকের/পলিথিন ব্যাগের পরিবর্তে কাগজের বা কাপড়ের ব্যাগ ব্যবহার করা উচিত। তাতে অন্তত কম ক্ষতি হবে। কিংবা রিইউজেবল ট্র্যাশ ব্যাগ ব্যবহার করা যেতে পারে; অর্থাৎ ঘরে যে ব্যাগে ময়লা ফেলবেন (হোক সেটা প্লাস্টিক), এবং যে ব্যাগে করে ময়লা বহন করে সিটি কর্পোরেশনের গাড়িতে/যথাস্থানে রেখে আসবেন, সেই একই ব্যাগ ব্যবহারের পরে বার বার ধুয়ে ব্যবহার করা। পুনর্ব্যবহারযোগ্য গার্বেজ ব্যাগ
সবার প্রতি অনুরোধ থাকবে, নিচের ভিডিও দুটো দেখে, এগুলো থেকে কিছু শিক্ষা ও আইডিয়া নেওয়ার জন্য। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটেও এরকম প্রতিবেদন, পরিসংখ্যান ও সমাধানের উদ্যোগ নেওয়ার সময় এসেছে।
আবর্জনা থেকে বিদ্যুৎ- নিউইয়র্ক পারছে না সামাল দিতে
ভারতে উচ্ছিষ্ট খাদ্য দ্রব্য থেকে উৎপাদিত হচ্ছে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও সার
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই এপ্রিল, ২০২১ ভোর ৫:০০