somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মানুষের ঈশ্বর হয়ে ওঠা

২০ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ৩:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঈশ্বরের ঈশ্বর হয়ে ওঠা

ঈশ্বরেরা সর্বদাই নিজেদেরকে মানুষের উপরের কোন একটি সম্প্রদায় হিসেবে উপস্থাপন করেছে। মানব জাতীকে রক্ষা করে গিয়েছে, রক্ষা করতে যুদ্ধ করেছে, পানশালায় ঈশ্বরী আর মানবী নিয়ে মেতে উঠেছে আদিম কামনায়, আর বলে গিয়েছে এটা এভাবে তাদের পছন্দ, এভাবে অপছন্দ।

প্রাচীন ঈশ্বরেরা নিজেরা পরস্পরের সাথে য়ুদ্ধ করত। জিউস ঈশ্বর পিতা ক্রোনাসের সাথে যুদ্ধ করে ঈশ্বর হয়েছে, উত্তরের এংলো স্যক্সন ঈশ্বর, ভালহালার অবিভাবক ওডিন তার শত্রু গোত্রের সাথে যুদ্ধ করে সিংহাসন টিকিয়ে রেখেছে। তার পুত্র ঈশ্বর থর তার পিতৃদত্ত হাতুড়িটি চুরি হয়ে গেলে, সেটি উদ্ধার করতে যুদ্ধ করেছে ঈশ্বরপুত্র। ভারতীয় ঈশ্বরেররা যুদ্ধ করেছে রাক্ষসের সাথে, দানবের সাথে।

ঈশ্বরী সবসময়ই ঈশ্বরের পেছনে, বৃক্ষের পেছনের মাটির রসের মত গোপনে জীবনী শক্তি যুগিয়ে গেছে। ক্রোনাস(লীডার অব টাইটানস) যখন একের পর এক আপন সন্তানদেরকে গলাধকরন করে চলেছে, আপন সন্তানেরা বিদ্রোহ করে ফেলতে পারে এই সন্দেহে, তখন এই ক্রোনাসের স্ত্রী এবং বোন ফ্রেয়াই জিউসকে চাতুর্যের আশ্রয়ে আপন সন্তান জিউসকে ক্রোনাসের উদর নামক কারাগার থেকে বাচিয়ে পাহাড়ে মাতৃস্নেহ দিয়ে বড় করে তুলেছিল। থর হাতুরি হারিয়ে প্রায় অক্ষম পুরুষে পরিনত হলে, সে তার বোনের বেশ ধারন করে সেটি উদ্ধারে রওনা হয় এবং সাতদিনের বিশ্রামহীন হন্টনে শত্রুশিবিরে হানা দেয়।

ঈশ্বরের মারনাস্ত্র, যুদ্ধকৌশল, জীবন পদ্ধতি সব সময়ই মানুষ প্রীতিমিশ্রিত শ্রদ্ধার চোখে দেখেছে, শেখার চেষ্টা করেছে।বলা হয়ে থাকে যে, অলিম্পিয়ান ঈশ্বরদের (জিউসের কাল) তুলনায় টাইটান ঈশ্বরেরা ( জিউসের পিতা ক্রোনাসের কাল) ছিল অপেক্ষাকৃত কম সভ্য। সভ্য অসভ্যের মানদন্ডে বোধ করি না, ঈশ্বরের কতৃত্বপরায়ন রুপটিই তাকে করে তুলেছে ঈশ্বর।

নিরাকার ঈশ্বর, নতুন রুপে ঈশ্বর

ঈশ্বরের সভ্যতার বিকাশের সাথে পাল্লা দিয়েই বিকশিত হয়েছে মানব সভ্যতা। বরং বোধকরি দ্বিতীয়টির বেগই ছিল বেশি। কারন কল্পনা আর বাস্তবতা এক নয়। কল্পনা থমকে দাড়ায় বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ে। এরকমই কোনন এক বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ে কল্পনাগুলি ডানা ঝাপটাতে থাকে। পায় নতুন রুপ। এই রুপ অধরা, নির্লিঙ্গ, বহু থেকে তিনি হয়ে গেলেন এক। ঈশ্বর যুদ্ধ বন্ধ করে দিয়ে নিজেকে লুকোলেন পর্দার আড়ালে। ক্ষমতার ছড়ি ঘুরানো বন্ধ হল না। কেতাবি কায়দায় ছড়ি ঘুরতেই থাকল। পর্দার আড়ালে তিনি মুচকি হাসলেন। তিনি এখন যুদ্ধ করেন না করান।

শিক্ষিত মানুষ: মানুষের ঈশ্বর হয়ে ওঠা

বুদ্ধির আড়ষ্ঠতা কাটিয়ে আড়ামোড়া দিয়ে উঠল মানুষও।উত্থিত হল চিন্তাশীল মানুষের। মানুষ আগেও যুদ্ধ করেছে। প্রকৃত অর্থেইসেগুলো বস্তুবাদী(গতানুগতিক বস্তুবাদ বুঝাচ্ছি না, বস্তুবাদ বলতে এখানে আমি বস্তুর জন্য যুদ্ধ বুঝাচ্ছি। এবস্ট্রাক্ট কোন ইজমের জন্য যুদ্ধ, যেটি শুরু হয়েছে আরো অনেক পরে, সেটি এর বহির্ভুত) যুদ্ধ ছিল। এরপর মানুষ স্বেচ্ছায় নাকি মনের অজান্তে ঠিক উপলব্ধ না, নিজেই ঈশ্বর হয়ে উঠতে চেষ্টা করল। নতুন নতুন বাদ যোগ হতে শুরু করল। এই মতবাদ, সেই মতবাদ। ঠু মাচ ইজমস। মানুষ নিজেই বলে দিতে লাগল, মানুষের কি করা উচিত। যেটি এতদিন ঈশ্বরের একচ্ছ্বত্র অধিকার বলে পরিগনিত হত। বিভক্তি বাড়ল মানুষের মাঝে। কেউ এই মতবাদ জানাতে চায় তো কেউ অন্যটা। তলোয়ারের যুগ শুরু হয়েছে অনেক আগেই। হাতে তো উঠলই, আকাশেও উঠল বিমানে চড়ে, শুরু হল আগ্নেয়াস্ত্রের লড়াই। লড়াই যেভাবেই হোক না কেন, কারনটা কি? ঐযে বাদ মানে মতবাদ আরকি। নিজের অজান্তেই মানুষ নিজের ঈশ্বর হয়ে উঠল, প্রাচীন ঈশ্বরদের মত যুদ্ধও করল। মধ্যপ্রাচ্য, ভারত, পাকিস্তান, এমনকি বাংলাদেশের উগ্রবাদীদের দিকে তাকালেই যেন আমি দেখি ঈশ্বরের সাথে ঈশ্বরের লড়াই।

হই হই রই রই,ঈশ্বরীরা গেল কই?

ঈশ্বরী কি তাহলে ঈশ্বরের নিরাকার, নির্লিঙ্গ রুপান্তরের সময় বিলীন হয়ে গিয়েছে। হয়ত হয়েছিল। মানুষের ঈশ্বর হয়ে ওঠার সাথে সাথেই তা আবার নবরুপে আবির্ভাবও লাভ করেছে। এখনকার ঈশ্বর অলিম্পাস পাহাড়ে জিউসের প্রাসাদে বাস করে না। এখনকার ঈশ্বরী আপনার আমার সাথে ক্লাস করে, যানবহনে আমার আপনার সাথেই ভ্রমন করে, পার্কের বেঞ্চে বসে বাদাম ছিলে খায়। ঈশ্বরীহীন ঈশ্বর দেখেছি, তবে ঈশ্বরী হীন মানব ঈশ্বর দেখব না এটি নিশ্চিত।

বিঃদ্রঃ পূর্বে ফেসবুকে প্রকাশিত।
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×