somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যে স্মৃতি ভুলবার নয়

১২ ই মে, ২০১১ সকাল ৯:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আলী হাসান তৈয়ব
কুরবানি ঈদের আলোকজ্জ্বল সন্ধ্যা। মনটা কেমন উদাস উদাস লাগছে। সারাদিন বাল্যবন্ধুদের কাছে না পেয়ে ঈদটাকে বড় বিবর্ণ মনে হচ্ছে। আশরাফুলকে বললাম, চল খালাদের বাড়ি থেকে ঘুরে আসি। যেই প্রস্তাব সেই রাজি।
পরদিন সকালে বগুড়া বিআরটিসি বাস কাউন্টার থেকে জয়পুরহাটের টিকেট কেটে সিটে গিয়ে বসলাম। বাস অচিরেই চলতে শুরু করল। ঐতিহ্যবাহী বগুড়া সাতমাথা পেছনে ফেলে দ্রুত এগিয়ে যেতে লাগল গন্তব্য অভিমুখে। কিছুদূর যেতেই একে একে চোখে পড়ল রেলওলে স্টেশন, পাক আমলের বিখ্যাত জামিল ফ্যাক্টরি ও ঐতিহ্যবাহী আজিজুল হক বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ। ভোরের নির্মল স্নিগ্ধ হাওয়ায় সদ্য প্রফুল্ল মনে হঠাৎ বেদনার দমকা হাওয়া বয়ে গেল- হাজারো ছাত্র-ছাত্রীর পদচারণায় সদা চঞ্চল সুবিশাল কলেজের নীরব বিষণ্ন ক্যাম্পাস, আপন জৌলুস হারানো জামিল ফ্যাক্টরির পতিত দালানের সারি আর রেল স্টেশনের প্লাটফর্মে শুয়ে থাকা দুখী মানুষদের ধূলি-মলিন শুকনো চেহারা হৃদয়ে এক পশলা আফসোস বর্ষণ করল।
আসলে আমি যখনই কোনো কলেজের সামনে দিয়ে পথ চলি, ক্যাম্পাস জোড়া ছাত্র-ছাত্রীর সোল্লাস কোলাহল আমাকে মুগ্ধ করে। ভাবি, আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমার প্রিয় মাতৃভূমি থেকে অচিরেই দূর হবে অশিক্ষা, নিরক্ষরতার অভিশাপ। আমরা সফল হব শিক্ষিত চরিত্রবান আদর্শ জাতি নির্মাণে। কিন্তু আফসোসে মনটা ভারী হয়ে আসে যখন দেখি- ছাত্ররা ব্যস্ত বই নয় বান্ধবী নিয়ে, তাদের গল্পের প্রতিপাদ্য পাঠ্য নয় প্রণয়, আগ্রহ পাঠাগারের গবেষণায় নয় পার্কের যুগল আড্ডায়। তাদের চলনে-বলনে মনে হয় তারা লক্ষ্যহীন। লক্ষ্য তাদের দেশ ও দশের সেবা করা নয়; অঢেল অর্থ উপার্জন। স্বপ্ন তাদের দেশ ও দশের সেবক হওয়া নয়; সুন্দর নারী-বাহারি গাড়ি আর নয়নাভিরাম বাড়ির মালিক হওয়া। এর পরিণতি আজ আমরা চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে অন্যায় অপকর্মের হোতাদের বিরুদ্ধে পরিচালিত অভিযান জাতির সামনে তুলে ধরেছে- আদর্শহীন এসব তরুণ-তরুণীরা কতটা নিচে নেমে গেছে। শিক্ষিত (?) স্মার্ট তরুণরাও ছুটছে মাদকালয়-গণিকালয়ে আর কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেকি সুন্দরীরাও যাচ্ছে অভিজাত হোটেলে। ভদ্র শিক্ষিত এসব ভাই-বোনের কাণ্ড-কীর্তি দেখে জাতির মাথা লজ্জায় হেঁট হয়ে এসেছে।
আশরাফের গলার আওয়াজে ভাবনার সুতা ছিঁড়ে গেল। দৃষ্টি নিক্ষেপ করলাম বাইরে। চারমাথা কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড, ঝোপগাড়ি অতিক্রম করে আমরা ঐতিহাসিক মহাস্থান গড়ের কাছাকাছি পৌঁছে গেছি। দৃষ্টির শেষ সীমায় অল্পক্ষণের মধ্যেই উদিত হল হযরত শাহ সুলতান বলখি মাহিসওয়ার (র.) এর মাজার কমপ্লেক্স ভবনের সুঊচ্চ গম্বুজ।
এককালের রাজধানী পুন্ড্র নগরের অঙ্গে সেই রূপ-জৌলুস না থাকলেও তার চিহ্ন আছে। আছে তথাকথিত সেই জিন্দা কূপ, দুধ খেকো পাথর, বলখির (র.) নামাজ আদায়ের স্মৃতি বিজড়িত স্থান, বেহুলা-লক্ষিণদরের বাসর ঘরসহ আরো কত কী। নেই শুধু পৌত্তলিক রাজের সেই দোর্দণ্ড প্রতাপ যার বলে তিনি স্রষ্টার জমিনে স্রষ্টাকে খুশি করার উদ্দেশ্যে গরু কুরবানি দেয়ার অপরাধে (?) এক মুসলিমকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন। রাজার বিশাল রাজ্যে আজ তার সমাধিটুকুও খুঁজে পাওয়া যায় না; কিন্তু যে ফকির তার রাজ্যে এক আল্লাহকে সেজদা করার অনুমতি চেয়ে প্রত্যাখ্যাত হয়েছিলেন তাঁর কবর আজো টিকে আছে !
হাতে ধরা বইয়ের পাতা উল্টিয়ে আর আশরাফের সঙ্গে গল্প করতে করতে মহাস্থান-মোকামতলা, কিচক-কালাই অতিক্রম করে কখন যে জয়পুরহাটের প্রবেশ মুখে এসে পড়লাম তা যেন টেরই পেলাম না। আশরাফ হঠাৎ জিজ্ঞেস করল, আচ্ছা জার্জিস (খালার একমাত্র ছেলে) কি আমাদের জন্য বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষা করছে বলে তোর মনে হয়? বললাম, মনে হয় না। ইদানীং ও যা বদলে গেছে তাতে এ ধরনের আশা করা অনুচিত বৈ কি ! আশরাফ আক্ষেপের সুরে বলল, যে কিনা আমাদের কাছে পেটের কথা না বলে স্বস্তি পেত না সে আজ আমাদের সঙ্গে প্রাণ খুলে কোনো কথাই বলে না ! আজ ওর সঙ্গে গায়ে পড়ে কথা বলতে হয়! বললাম, ও আসলে অসময়ে বিয়ে করে আমাদের সঙ্গে আগের মত ফ্রি হতে সংকোচ বোধ করছে। পরে ওদের বাড়ি গিয়ে জানলাম, শুধু আমাদের সঙ্গেই না খালা-খালুর সঙ্গেও খুব একটা কথা হয় না ওর। কী অদ্ভুত ব্যাপার, বিবাহ ছেলেকে বাবা-মা'র থেকে দূরে সরে দেয় অথচ সন্তানের দাম্পত্য সুখ দেখে তাঁরাই তো সবচে' বেশি আনন্দিত হন !
সময় লাগল একঘন্টা পনের মিনিট। জয়পুরহাট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে নেমে রিকশায় চাপলাম। এখানে রিকশার চেয়ে দু'পাশে আসন পাতা ভ্যানের সংখ্যাই বেশি। ছোট বেলায় মা'র সঙ্গে যখন খালাদের বাড়ি আসতাম তখন এই ভ্যান আমার কাছে খুব অদ্ভুত লাগত। ভাবতাম, এ আবার কেমন কথা- ভ্যানেও কি মানুষ যাতায়াত করে? আসলে বগুড়া শহরে এমন ভ্যানের প্রচলন নেই বলে আমার কাছে এটি অদ্ভুত মনে হত। আমাদের ওখানে শুধু মালামাল বহণের জন্যই ভ্যানের ব্যবহার দেখি। অবশ্য পরবর্তীতে বিভিন্ন জেলায় বিভিন্ন রকমের রিকশা-ভ্যান দেখেছি। আমার কাছে সবচে আকর্ষণীয় ও একেবারে আনকোরা মনে হয়েছে দু'বছর আগে রমজানে ফরিদপুরে দেখা ভ্যানগুলো। দেখতে কিছুটা পালকীর মত। দু'পাশে গদি বিশিষ্ট রঙ্গিন আসন। উপরে কাঠের ছাউনী।
অনেকদিন জয়পুরহাটে আসা হয় না। আগে দেখা শহরের পুলিশ লাইন, পুলিশ লাইনের চমৎকার মসজিদ, সরকারি হাসপাতাল, জেলা পরিষদ মিলনায়তনসহ অনেক কিছুই যেন আজ নতুন রূপে আমার সামনে আবির্ভূত হল। আমাদের উস্তাদ রম্যবিদ লেখক মাও. ফয়জুল্লাহ প্রায়ই বলেন, 'যে পথে আমি নিত্য চলি আজ যখন সে পথে চলছি তখন ভাবি, আজই প্রথম এ পথে এসেছি। ব্যাস এখন আমার চোখে সব কিছুই নতুনভাবে ধরা দেয়।' এখন আমি নিজে এ কথার বাস্তবতা অনুভব করলাম।
রিকশা থেকে নেমে গেট নক করতেই ভেতর থেকে প্রশ্ন ভেসে এলো- কে ? আমরা একটু রহস্য করে সুর পাল্টিয়ে বললাম, তা দরজাটা একটু খুলুন না ! দরজা খুলে ভূত দেখার মত চমকে উঠল ছোট বোন স্বর্ণা। ওমা এ দেখছি না চাইতেই বৃষ্টি। বিনা নোটিশেই উপস্থিত। ভেতর থেকে খালার কণ্ঠ, কে রে স্বর্ণা? আমরা ইশারায় ওকে উত্তর দিতে নিষেধ করে সমস্বরে 'আসসালামু আলাইকুম খালামনি' বলে সহসা তাঁর সামনে আবির্ভূত হলাম। দুই বোনের দুই ছেলেকে হঠাৎ একসঙ্গে পেয়ে খুব খুশি হলেন বটে তবে তাঁকে কিছুটা অপ্রস্তুত দেখাল। তিনি কোথাও যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। বুঝলাম মোবাইলের যুগে সংবাদ না দিয়ে এসে ভুলই করেছি। এ জন্যই বুঝি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পূর্ববার্তা দিয়ে মেহমান হওয়ার আদব শিক্ষা দিয়েছেন।
খালা তাঁর মেয়ের বাড়ি যাচ্ছিলেন। আমাদেরকেও সঙ্গে নেয়ার জন্য পীড়াপীড়ি শুরু করলেন। গ্রামের শান্ত সবুজ প্রকৃতি আমাকে খুব টানে। তাছাড়া ছবি আপার বাড়ি গেলে খুব আনন্দ হবে সেও আমি জানি। কিন্তু বিনা দাওয়াতে মেহমান হওয়ার ভুলটা এত তাড়াতাড়ি আবার করতে চাচ্ছিলাম না। ভাগ্য সুপ্রসন্ন ছিল বলে ঠিক তখনি ছবি আপার কল এলো- 'মা তুমি কি এখনো রওনা করো নি? এক্ষুণি রওনা দাও।' খালা উত্তর দিলেন, 'মা বগুড়া থেকে এইমাত্র তোর দুই ভাইয়া এলো। তা ওদের এত পীড়াপীড়ি করছি তোর বাসায় যাওয়ার জন্য কিন্তু ওরা রাজি হচ্ছে না।' তারপর 'ছবি কথা বলতে চায়' বলেই খালা মোবাইল আমার দিকে এগিয়ে দিলেন। আপা যা বললেন তারপর আর যাব না বলা যায় না।
সংক্ষিপ্ত নাস্তা সেরেই রওনা করলাম। গন্তব্য আপার বাড়ি। জয়পুরহাটের পাঁচবিবি থানাধীন কাশরা গ্রাম। পূর্ব থেকে রিজার্ভ করা ভ্যানে উঠে বসলাম আমি, আশরাফ, খালা, স্বর্ণা ও ছবি আপার মেয়ে মীম। দুঃখের বিষয় এটি জয়পুরহাটে প্রচলিত আসন বিশিষ্ট ভ্যান নয়। আসনবিহীন সাধারণ ভ্যান। এমন বাহনে চড়ার অনভ্যাস হেতু কিছুটা অপ্রতিভ বোধ করছিলাম; যাকে বলে আন ইজি ফিল করা। মেঠো পথে ভ্যান চলতে আরম্ভ করল।
ছায়া সুনিবিড় গ্রামীণ পথে এগিয়ে চলেছে ত্রিচক্র যান। দু'পাশের বড় বড় গাছগুলো দেখে মনে হচ্ছে আমাদের অভ্যর্থনা জানাতে এগিয়ে আসছে। যে দিকে তাকাই সবুজের মেলা। বাতাসের ডাকে সাড়া দিয়ে ধান ক্ষেতগুলো যেন ক্ষণে ক্ষণে নেচে উঠছে। কী অপূর্ব দৃশ্য! পল্লীর অপরূপ নিসর্গ যতই দেখি ততই মুগ্ধ হই। কিন্তু এ ভাললাগা ও মুগ্ধতায় বাদ সাধতে চাইছে লক্কর ঝক্কর মেঠো পথ। কে যে কখন ভ্যান থেকে চিৎপটাং পড়ে যায় সে চিন্তা মাথা থেকে তাড়াতে পারছি না। একটু পর পরই দেখা মিলছে উঁচু উঁচু সাঁকোর। প্রয়োজনে আমি বা আশরাফ নেমে চালককে গাড়ি উপরে ওঠাতে সাহায্য করছি। সাঁকোর ওপর ওঠতে বেচারা চালকের পোয়াবারো অবস্থা হলেও নামতে তো বেশ আরাম। ঢালুতে প্যাডেল চাপা ছাড়াই যথেষ্ট স্পিডে ভ্যান নেমে যায়। ছবি আপাদের গ্রাম যখন দূর দিগন্তে উঁকি দিল ঠিক তখন সামনে এক উঁচু সাঁকো চোখে পড়ল। আমার একার সাহায্য চালকের জন্য গাড়ি ওপরে ওঠানোর ক্ষেত্রে যথেষ্ট হল না। আশরাফও এগিয়ে আসল। দুজনে এমন জোরে ঠেলা দিলাম যে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলল। ভ্যান সাঁকো পেরিয়ে অস্বাভাবিক গতিতে নিচে নেমে গেল। স্বর্ণা ছিল একেবারে শেষ প্রান্তে। এমন অবস্থার জন্য সে বোধ হয় প্রস্তুত ছিল না। ফলে যা হবার তাই হলো। ভ্যান স্বাভাবিক গতির ওপর আসলে দেখা গেল স্বর্ণা নেই। পেছনে চেয়ে দেখি বেচারি কষ্টে উহ্ ইস্ করছে। ওর কষ্ট প্রকাশের ধরন দেখে আমি আশরাফ ও মীম হাসি আটকাতে পারলাম না। নিজের দুঃখে অন্যের হাসি দেখে বেচারির কষ্টের অন্ত রইল না।
বাড়ির দুয়ারের সামনে গিয়ে আমরা ভ্যান থেকে নামলাম। গ্রামের মানুষের অভ্যাস হল তারা এলাকায় নূতন কোনো অতিথির আগমন দেখলে কৌতূহলবশতঃ তাদের ঘিরে ধরে। এখানেও তার ব্যতিক্রম হলো না। জয়পুরের টানা মিষ্টি কন্ঠে খালাকে মহিলারা জিজ্ঞেস করতে লাগলেন- কে..ম..ন আছিন বু...বু..? ছবি আপা আমাদের পেয়ে যার পর নাই খুশি হলেন। উপস্থিত নাস্তা সেরেই বেরিয়ে পরলাম গ্রাম দেখতে। বিজ্ঞানের আশীর্বাদে প্রত্যন্ত গ্রামেও পৌছে গেছে টিভি মোবাইল। পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে মানুষের জীবন যাত্রায়- আচারে-ফ্যাশনে ও বলনে-চলনে। লক্ষণীয় বিষয় হল, আমরা প্রযুক্তির ভালোটা নয় মন্দটাই আগে ও অধিক মাত্রায় গ্রহণ করছি। এ প্রবণতায় পরিবর্তন আনা দরকার।
সেদিন কাশরায় কাটিয়ে পরদিন আবার খালাদের বাড়ি হয়ে আমরা বগুড়ায় ফিরে আসি। ফিরতি পথে খালার তৈরি করা কুরবানির গরুর পায়া ও রুটি যে মজা করে খেলাম তাও অনেকদিন মনে থাকবে এই ভ্রমণ স্মৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে।

কুরবানি ঈদের আলোকজ্জ্বল সন্ধ্যা। মনটা কেমন উদাস উদাস লাগছে। সারাদিন বাল্যবন্ধুদের কাছে না পেয়ে ঈদটাকে বড় বিবর্ণ মনে হচ্ছে। আশরাফুলকে বললাম, চল খালাদের বাড়ি থেকে ঘুরে আসি। যেই প্রস্তাব সেই রাজি।
পরদিন সকালে বগুড়া বিআরটিসি বাস কাউন্টার থেকে জয়পুরহাটের টিকেট কেটে সিটে গিয়ে বসলাম। বাস অচিরেই চলতে শুরু করল। ঐতিহ্যবাহী বগুড়া সাতমাথা পেছনে ফেলে দ্রুত এগিয়ে যেতে লাগল গন্তব্য অভিমুখে। কিছুদূর যেতেই একে একে চোখে পড়ল রেলওলে স্টেশন, পাক আমলের বিখ্যাত জামিল ফ্যাক্টরি ও ঐতিহ্যবাহী আজিজুল হক বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ। ভোরের নির্মল স্নিগ্ধ হাওয়ায় সদ্য প্রফুল্ল মনে হঠাৎ বেদনার দমকা হাওয়া বয়ে গেল- হাজারো ছাত্র-ছাত্রীর পদচারণায় সদা চঞ্চল সুবিশাল কলেজের নীরব বিষণ্ন ক্যাম্পাস, আপন জৌলুস হারানো জামিল ফ্যাক্টরির পতিত দালানের সারি আর রেল স্টেশনের প্লাটফর্মে শুয়ে থাকা দুখী মানুষদের ধূলি-মলিন শুকনো চেহারা হৃদয়ে এক পশলা আফসোস বর্ষণ করল।
আসলে আমি যখনই কোনো কলেজের সামনে দিয়ে পথ চলি, ক্যাম্পাস জোড়া ছাত্র-ছাত্রীর সোল্লাস কোলাহল আমাকে মুগ্ধ করে। ভাবি, আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমার প্রিয় মাতৃভূমি থেকে অচিরেই দূর হবে অশিক্ষা, নিরক্ষরতার অভিশাপ। আমরা সফল হব শিক্ষিত চরিত্রবান আদর্শ জাতি নির্মাণে। কিন্তু আফসোসে মনটা ভারী হয়ে আসে যখন দেখি- ছাত্ররা ব্যস্ত বই নয় বান্ধবী নিয়ে, তাদের গল্পের প্রতিপাদ্য পাঠ্য নয় প্রণয়, আগ্রহ পাঠাগারের গবেষণায় নয় পার্কের যুগল আড্ডায়। তাদের চলনে-বলনে মনে হয় তারা লক্ষ্যহীন। লক্ষ্য তাদের দেশ ও দশের সেবা করা নয়; অঢেল অর্থ উপার্জন। স্বপ্ন তাদের দেশ ও দশের সেবক হওয়া নয়; সুন্দর নারী-বাহারি গাড়ি আর নয়নাভিরাম বাড়ির মালিক হওয়া। এর পরিণতি আজ আমরা চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে অন্যায় অপকর্মের হোতাদের বিরুদ্ধে পরিচালিত অভিযান জাতির সামনে তুলে ধরেছে- আদর্শহীন এসব তরুণ-তরুণীরা কতটা নিচে নেমে গেছে। শিক্ষিত (?) স্মার্ট তরুণরাও ছুটছে মাদকালয়-গণিকালয়ে আর কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেকি সুন্দরীরাও যাচ্ছে অভিজাত হোটেলে। ভদ্র শিক্ষিত এসব ভাই-বোনের কাণ্ড-কীর্তি দেখে জাতির মাথা লজ্জায় হেঁট হয়ে এসেছে।
আশরাফের গলার আওয়াজে ভাবনার সুতা ছিঁড়ে গেল। দৃষ্টি নিক্ষেপ করলাম বাইরে। চারমাথা কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড, ঝোপগাড়ি অতিক্রম করে আমরা ঐতিহাসিক মহাস্থান গড়ের কাছাকাছি পৌঁছে গেছি। দৃষ্টির শেষ সীমায় অল্পক্ষণের মধ্যেই উদিত হল হযরত শাহ সুলতান বলখি মাহিসওয়ার (র.) এর মাজার কমপ্লেক্স ভবনের সুঊচ্চ গম্বুজ।
এককালের রাজধানী পুন্ড্র নগরের অঙ্গে সেই রূপ-জৌলুস না থাকলেও তার চিহ্ন আছে। আছে তথাকথিত সেই জিন্দা কূপ, দুধ খেকো পাথর, বলখির (র.) নামাজ আদায়ের স্মৃতি বিজড়িত স্থান, বেহুলা-লক্ষিণদরের বাসর ঘরসহ আরো কত কী। নেই শুধু পৌত্তলিক রাজের সেই দোর্দণ্ড প্রতাপ যার বলে তিনি স্রষ্টার জমিনে স্রষ্টাকে খুশি করার উদ্দেশ্যে গরু কুরবানি দেয়ার অপরাধে (?) এক মুসলিমকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন। রাজার বিশাল রাজ্যে আজ তার সমাধিটুকুও খুঁজে পাওয়া যায় না; কিন্তু যে ফকির তার রাজ্যে এক আল্লাহকে সেজদা করার অনুমতি চেয়ে প্রত্যাখ্যাত হয়েছিলেন তাঁর কবর আজো টিকে আছে !
হাতে ধরা বইয়ের পাতা উল্টিয়ে আর আশরাফের সঙ্গে গল্প করতে করতে মহাস্থান-মোকামতলা, কিচক-কালাই অতিক্রম করে কখন যে জয়পুরহাটের প্রবেশ মুখে এসে পড়লাম তা যেন টেরই পেলাম না। আশরাফ হঠাৎ জিজ্ঞেস করল, আচ্ছা জার্জিস (খালার একমাত্র ছেলে) কি আমাদের জন্য বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষা করছে বলে তোর মনে হয়? বললাম, মনে হয় না। ইদানীং ও যা বদলে গেছে তাতে এ ধরনের আশা করা অনুচিত বৈ কি ! আশরাফ আক্ষেপের সুরে বলল, যে কিনা আমাদের কাছে পেটের কথা না বলে স্বস্তি পেত না সে আজ আমাদের সঙ্গে প্রাণ খুলে কোনো কথাই বলে না ! আজ ওর সঙ্গে গায়ে পড়ে কথা বলতে হয়! বললাম, ও আসলে অসময়ে বিয়ে করে আমাদের সঙ্গে আগের মত ফ্রি হতে সংকোচ বোধ করছে। পরে ওদের বাড়ি গিয়ে জানলাম, শুধু আমাদের সঙ্গেই না খালা-খালুর সঙ্গেও খুব একটা কথা হয় না ওর। কী অদ্ভুত ব্যাপার, বিবাহ ছেলেকে বাবা-মা'র থেকে দূরে সরে দেয় অথচ সন্তানের দাম্পত্য সুখ দেখে তাঁরাই তো সবচে' বেশি আনন্দিত হন !
সময় লাগল একঘন্টা পনের মিনিট। জয়পুরহাট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে নেমে রিকশায় চাপলাম। এখানে রিকশার চেয়ে দু'পাশে আসন পাতা ভ্যানের সংখ্যাই বেশি। ছোট বেলায় মা'র সঙ্গে যখন খালাদের বাড়ি আসতাম তখন এই ভ্যান আমার কাছে খুব অদ্ভুত লাগত। ভাবতাম, এ আবার কেমন কথা- ভ্যানেও কি মানুষ যাতায়াত করে? আসলে বগুড়া শহরে এমন ভ্যানের প্রচলন নেই বলে আমার কাছে এটি অদ্ভুত মনে হত। আমাদের ওখানে শুধু মালামাল বহণের জন্যই ভ্যানের ব্যবহার দেখি। অবশ্য পরবর্তীতে বিভিন্ন জেলায় বিভিন্ন রকমের রিকশা-ভ্যান দেখেছি। আমার কাছে সবচে আকর্ষণীয় ও একেবারে আনকোরা মনে হয়েছে দু'বছর আগে রমজানে ফরিদপুরে দেখা ভ্যানগুলো। দেখতে কিছুটা পালকীর মত। দু'পাশে গদি বিশিষ্ট রঙ্গিন আসন। উপরে কাঠের ছাউনী।
অনেকদিন জয়পুরহাটে আসা হয় না। আগে দেখা শহরের পুলিশ লাইন, পুলিশ লাইনের চমৎকার মসজিদ, সরকারি হাসপাতাল, জেলা পরিষদ মিলনায়তনসহ অনেক কিছুই যেন আজ নতুন রূপে আমার সামনে আবির্ভূত হল। আমাদের উস্তাদ রম্যবিদ লেখক মাও. ফয়জুল্লাহ প্রায়ই বলেন, 'যে পথে আমি নিত্য চলি আজ যখন সে পথে চলছি তখন ভাবি, আজই প্রথম এ পথে এসেছি। ব্যাস এখন আমার চোখে সব কিছুই নতুনভাবে ধরা দেয়।' এখন আমি নিজে এ কথার বাস্তবতা অনুভব করলাম।
রিকশা থেকে নেমে গেট নক করতেই ভেতর থেকে প্রশ্ন ভেসে এলো- কে ? আমরা একটু রহস্য করে সুর পাল্টিয়ে বললাম, তা দরজাটা একটু খুলুন না ! দরজা খুলে ভূত দেখার মত চমকে উঠল ছোট বোন স্বর্ণা। ওমা এ দেখছি না চাইতেই বৃষ্টি। বিনা নোটিশেই উপস্থিত। ভেতর থেকে খালার কণ্ঠ, কে রে স্বর্ণা? আমরা ইশারায় ওকে উত্তর দিতে নিষেধ করে সমস্বরে 'আসসালামু আলাইকুম খালামনি' বলে সহসা তাঁর সামনে আবির্ভূত হলাম। দুই বোনের দুই ছেলেকে হঠাৎ একসঙ্গে পেয়ে খুব খুশি হলেন বটে তবে তাঁকে কিছুটা অপ্রস্তুত দেখাল। তিনি কোথাও যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। বুঝলাম মোবাইলের যুগে সংবাদ না দিয়ে এসে ভুলই করেছি। এ জন্যই বুঝি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পূর্ববার্তা দিয়ে মেহমান হওয়ার আদব শিক্ষা দিয়েছেন।
খালা তাঁর মেয়ের বাড়ি যাচ্ছিলেন। আমাদেরকেও সঙ্গে নেয়ার জন্য পীড়াপীড়ি শুরু করলেন। গ্রামের শান্ত সবুজ প্রকৃতি আমাকে খুব টানে। তাছাড়া ছবি আপার বাড়ি গেলে খুব আনন্দ হবে সেও আমি জানি। কিন্তু বিনা দাওয়াতে মেহমান হওয়ার ভুলটা এত তাড়াতাড়ি আবার করতে চাচ্ছিলাম না। ভাগ্য সুপ্রসন্ন ছিল বলে ঠিক তখনি ছবি আপার কল এলো- 'মা তুমি কি এখনো রওনা করো নি? এক্ষুণি রওনা দাও।' খালা উত্তর দিলেন, 'মা বগুড়া থেকে এইমাত্র তোর দুই ভাইয়া এলো। তা ওদের এত পীড়াপীড়ি করছি তোর বাসায় যাওয়ার জন্য কিন্তু ওরা রাজি হচ্ছে না।' তারপর 'ছবি কথা বলতে চায়' বলেই খালা মোবাইল আমার দিকে এগিয়ে দিলেন। আপা যা বললেন তারপর আর যাব না বলা যায় না।
সংক্ষিপ্ত নাস্তা সেরেই রওনা করলাম। গন্তব্য আপার বাড়ি। জয়পুরহাটের পাঁচবিবি থানাধীন কাশরা গ্রাম। পূর্ব থেকে রিজার্ভ করা ভ্যানে উঠে বসলাম আমি, আশরাফ, খালা, স্বর্ণা ও ছবি আপার মেয়ে মীম। দুঃখের বিষয় এটি জয়পুরহাটে প্রচলিত আসন বিশিষ্ট ভ্যান নয়। আসনবিহীন সাধারণ ভ্যান। এমন বাহনে চড়ার অনভ্যাস হেতু কিছুটা অপ্রতিভ বোধ করছিলাম; যাকে বলে আন ইজি ফিল করা। মেঠো পথে ভ্যান চলতে আরম্ভ করল।
ছায়া সুনিবিড় গ্রামীণ পথে এগিয়ে চলেছে ত্রিচক্র যান। দু'পাশের বড় বড় গাছগুলো দেখে মনে হচ্ছে আমাদের অভ্যর্থনা জানাতে এগিয়ে আসছে। যে দিকে তাকাই সবুজের মেলা। বাতাসের ডাকে সাড়া দিয়ে ধান ক্ষেতগুলো যেন ক্ষণে ক্ষণে নেচে উঠছে। কী অপূর্ব দৃশ্য! পল্লীর অপরূপ নিসর্গ যতই দেখি ততই মুগ্ধ হই। কিন্তু এ ভাললাগা ও মুগ্ধতায় বাদ সাধতে চাইছে লক্কর ঝক্কর মেঠো পথ। কে যে কখন ভ্যান থেকে চিৎপটাং পড়ে যায় সে চিন্তা মাথা থেকে তাড়াতে পারছি না। একটু পর পরই দেখা মিলছে উঁচু উঁচু সাঁকোর। প্রয়োজনে আমি বা আশরাফ নেমে চালককে গাড়ি উপরে ওঠাতে সাহায্য করছি। সাঁকোর ওপর ওঠতে বেচারা চালকের পোয়াবারো অবস্থা হলেও নামতে তো বেশ আরাম। ঢালুতে প্যাডেল চাপা ছাড়াই যথেষ্ট স্পিডে ভ্যান নেমে যায়। ছবি আপাদের গ্রাম যখন দূর দিগন্তে উঁকি দিল ঠিক তখন সামনে এক উঁচু সাঁকো চোখে পড়ল। আমার একার সাহায্য চালকের জন্য গাড়ি ওপরে ওঠানোর ক্ষেত্রে যথেষ্ট হল না। আশরাফও এগিয়ে আসল। দুজনে এমন জোরে ঠেলা দিলাম যে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলল। ভ্যান সাঁকো পেরিয়ে অস্বাভাবিক গতিতে নিচে নেমে গেল। স্বর্ণা ছিল একেবারে শেষ প্রান্তে। এমন অবস্থার জন্য সে বোধ হয় প্রস্তুত ছিল না। ফলে যা হবার তাই হলো। ভ্যান স্বাভাবিক গতির ওপর আসলে দেখা গেল স্বর্ণা নেই। পেছনে চেয়ে দেখি বেচারি কষ্টে উহ্ ইস্ করছে। ওর কষ্ট প্রকাশের ধরন দেখে আমি আশরাফ ও মীম হাসি আটকাতে পারলাম না। নিজের দুঃখে অন্যের হাসি দেখে বেচারির কষ্টের অন্ত রইল না।
বাড়ির দুয়ারের সামনে গিয়ে আমরা ভ্যান থেকে নামলাম। গ্রামের মানুষের অভ্যাস হল তারা এলাকায় নূতন কোনো অতিথির আগমন দেখলে কৌতূহলবশতঃ তাদের ঘিরে ধরে। এখানেও তার ব্যতিক্রম হলো না। জয়পুরের টানা মিষ্টি কন্ঠে খালাকে মহিলারা জিজ্ঞেস করতে লাগলেন- কে..ম..ন আছিন বু...বু..? ছবি আপা আমাদের পেয়ে যার পর নাই খুশি হলেন। উপস্থিত নাস্তা সেরেই বেরিয়ে পরলাম গ্রাম দেখতে। বিজ্ঞানের আশীর্বাদে প্রত্যন্ত গ্রামেও পৌছে গেছে টিভি মোবাইল। পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে মানুষের জীবন যাত্রায়- আচারে-ফ্যাশনে ও বলনে-চলনে। লক্ষণীয় বিষয় হল, আমরা প্রযুক্তির ভালোটা নয় মন্দটাই আগে ও অধিক মাত্রায় গ্রহণ করছি। এ প্রবণতায় পরিবর্তন আনা দরকার।
সেদিন কাশরায় কাটিয়ে পরদিন আবার খালাদের বাড়ি হয়ে আমরা বগুড়ায় ফিরে আসি। ফিরতি পথে খালার তৈরি করা কুরবানির গরুর পায়া ও রুটি যে মজা করে খেলাম তাও অনেকদিন মনে থাকবে এই ভ্রমণ স্মৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে।

সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১২ সকাল ৮:৫০
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রোড জ্যাম ইন ভিয়েতনাম

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৭



আমার ধারনা ছিল জটিল জ্যাম শুধু বাংলাদেশেই লাগে । কিন্তু আমার ধারনা ভুল ছিল । ভিয়েতনামে এরকম জটিলতর জ্যাম নিত্য দিনের ঘটনা । ছবিটি খেয়াল করলে দেখবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!

লিখেছেন মাঈনউদ্দিন মইনুল, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬



এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×