somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হিজড়া ভাই-বোনদের প্রতি কেন এতো উদাসীনতা?

১৫ ই মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হিজড়া ভাই-বোনদের প্রতি কেন এতো উদাসীনতা---------------
----------------------------------------------------------------------------------------------

রাস্তাঘাটে মাঝে-মধ্যেই চোখে পড়ে উদ্ভট অঙ্গভঙ্গি ও পোশাক পরিহিত কিছু বনি আদমকে।

তারা আমাদের সমাজে হিজড়া নামে পরিচিত।
একটি বেসরকারী পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে - ছিটিয়ে থাকা হিজড়ার সংখ্যা ৪০ হাজারের মতো। জরিপটি ২০০৪ সালের।( ‍http://amader-kotha.com)
এখন ২০১৫ সাল।নিশ্চয় তাদের সংখ্যা এখন অনেক বেশি হবে।

২০১৩ সনে রাষ্ট্রিয় ভাবে ৩য় লিঙ্গ হিসাবে তারা স্বীকৃতি পায়।
অধিকাংশ লোকই তাদেরকে ঘৃণার দৃষ্টিতে দেখে। অবহেলা করে।

মহান আল্লাহর এই বিশাল সৃষ্টিজগতে আমাদের অনন্য পরিচয়, আমরা

মানুষ। মানুষ হওয়াতেই আমরা হলাম আশরাফুল মাখলুখাত-সৃিষ্টর সেরা, বিশ্বচরাচরে মহান আল্লাহর প্রতিনিধি।

বলাবাহুল্য, এখানে মানুষ বলতে শুধু মুসলমান উদ্দেশ্য নয়, বরং আমার হিজরা ভাইটিও মানুষ। সেও মহান আল্লাহর এক অনন্য সৃষ্টি।
মানুষ হিসেবে, আল্লাহর মাখলুক হিসেবে আমরা উভয়েই সমান। আমরা উভয়েই আদম-হাওয়া পরিবারের সদস্য। একই পরিবারের দুই ভাই।
সৃষ্টিজগতে মানুষকে মানুষ হিসেবে মহান আল্লাহ যে সম্মান ও মর্যাদা দান করেছেন, তা হিজরা সম্প্রদায়ের জন্যও সমানভাবে প্রযোজ্য। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, (তরজমা) ‘বাস্তবিকপক্ষে আমি আদম সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি’( -সুরা বনি ইসরাইল-৭০)

হিজরা ভাই-বোন কি আদম-পরিবারের সন্তান নয়? এই মহাসত্য অস্বীকার করার কি কোন সুযোগ আছে?

হানাফী মাযহাবের ফিকহের কিতাবে স্পষ্ট উল্লেখ আছে-
”ان الآدمى مكرم وان كان كافراً
“মানুষ (মানুষ হিসেবে) অবশ্যই সম্মানিত। এমনকি কাফির হলেও।” (-রদ্দুল মুহতার ৫/৫৮(এইচ. এম. সাইদ কোম্পানি) )

অতএব মানুষ হিসাবে একজন হিজরাকে ঘৃণার চোখে দেখা, তুচ্ছ ভাবার কোনো অবকাশ ইসলামে নেই।

একই বাবা-মা’র ঘরে দু’ভাই কি একে অপরকে ঘৃণা করতে পারে! আদম সন্তান হিসেবে একজন মুসলিম যেমন আমার ভাই,তেমনি একজন হিজরাও আমার ভাই। আমার বোন। সে হিজড়া হওয়ার পিছনে তার কোন হাত নেই। এটি একটি রোগ। হরোমনজনিত সমস্যা।
কোন রোগীকে কি তার রোগের কারণে ঘৃণা করা যায়? হিজরা হওয়া একটি জন্মগত রোগ। এতে তাদের কোন হাত নেই।

অতএব
১.
ইসলাম ও মানবাতার দাবী অনুযায়ী তাদের প্রতি আমাদের সহানুভ’তি আচরণ করা উচিত।
২.
পর্দা ও ইসলামের সীমারেখার মধ্য থেকে তাদেরকে ইসলামের দাওয়াত দেয়া উচিত। তারা কিভাবে নামাযী হয়ে যায় সে ফিকির করা উচিত। তারা যে মুসলিম একথাটা তাদেরকে স্বরণ করিয়ে দেয়া উচিত। একটি কথা মনে রাখা দরকার, প্রতিটি হিজড়াই একটি সুস্থ পরিবার থেকে এসেছে। কোন হিজড়া হিজড়া থেকে জন্ম নেয় না। আমাদের বাংলাদেশ মুসলিম কান্ট্রি। অতএব হিজড়া ভাই-বোনটিও মুসলিম পরিবারেরই সদস্যা।
কিন্তু অবাক কান্ড হল, অনেক হিজড়া ভাই -বোন ধারণা করে আছেন, তাদের জন্য ইসলামের কোন বিধান মানার প্রয়োজন নেই। প্রয়োজন নেই নামাযের। রোযার, যাকাত ইত্যাদির।
ভালবাসার মাধ্যমে তাদেরকে বিষয়টি বুঝানো উচিত।
৩.
সামর্থ্যবানদের উচিত তাদেরকে কর্মক্ষেত্রের সুযোগ দেয়া।

আর তাদের উচিত----------------
--------------------------------
১.
নিজে স্বাললম্বী হওয়ার চেষ্টা করা।
২.
অশ্লীলতা পরিহার করা।
৩.
স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা।
৪.
একজন পূর্ণ মুসলিম হওয়া।
তারা এসব করা সহজ হবে যদি আমরা আগে তাদের প্রতি সহানূভুতির হাত বাড়াই। আশা করি এব্যাপারে আমরা সচেত হবে॥
নিম্নের হাদীসগুলো একটু লক্ষ্য করি-
# হযরত আবু হুরাইরা রা.থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে কাউকে হেদায়াত ও সত্যের দিকে আহবান করল,এরপর তার হেদায়াত অনুযায়ী সে তার অনুসরণ করল তাহলে এতে তার যে আজর ও সওয়াব হবে সে পরিমাণ সওয়াব আহবানকারীও লাভ করবে।এতে যে ডাকে সাড়া দিয়ে আমল করেছে তার সওয়াবে কোন কমতি হবেনা। (-সহীহ মুসলিম,২৬৭৪)
# হযরত সাহল ইবনে সা’দ রা. থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়াসাল্লাম হযরত আলী (রা.) কে বলেছেন, আল্লাহর শপথ, তোমার ওসিলায় কেউ হেদায়াত লাভ করা এটি শ্রেষ্ঠ লাল উটনির মালিক হওয়া থেকেও অনেক উত্তম। (-সহীহ বুখারী,৩৭০১)
ক্স হযরত আবু মাসউদ আনসারী রা. বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে কাউকে কল্যাণের পথ দেখাল তাহলে সেও ওই পরিমান সওয়াব লাভ করবে যে পরিমাণ সওয়াব ওই লোকের কল্যাণের পথে চলে অর্জন হবে।(-সহীহ মুসলিম,১৮৯৩)
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১১:৫২
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×