ধরুন আপনাকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিচয়ে ধরে নিয়ে গেলো(আল্লাহ না করুন)।আপনার পরিবার থানা,আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন অফিসে খোজাখুজি করবে।দুএকদিনের ভিতরে না পেলে, হয়তো সংবাদ সম্মেলন করবে।সেখানে দাবী জানাবে আপনাকে জীবিত ফেরত দেয়া হোক অথবা আপনি অপরাধী হলেও আপনাকে আদালতে উপস্থিত করা হোক। কিন্তু দিন যায়,মাস যায় আপনি আর ফিরে আসেন না। না জীবিত,না মৃত।সবাই ভেবে নিলো,এটাই এখন নিয়তি।
কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার হলো গতকালকে।লাশতো ফেরত পেলোই,আরো পেলো লাশের দাম হিসাবে ৫০ হাজার টাকা। পাশাপাশি নিহতের পরিবারের পুলিশে চাকরির অফার। কি ভাগ্য!!!
পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অ্যাডিশনাল ডিআইজি মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসার শিক্ষকসহ জেলার শীর্ষস্থানীয় আলেমদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে অ্যাডিশনাল ডিআইজি নিহত মাদরাসা ছাত্রের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার আশ্বাস দেন এবং নিহতের পরিবারে পুলিশে চাকরি করার মতো উপযুক্ত কেউ থাকলে চাকরি দেয়ার আশ্বাস দেন।
জ্বলছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া
কিন্তু সমস্যা হলো,এগুলো অফার কিন্তু এমনি এমনি আসেনি।
সকাল ৭টা থেকে মাদ্রাসার শ’ শ’ ছাত্র-শিক্ষক শহরের প্রধান সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। তারা প্রধান সড়কের বিভিন্নস্থানে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এ সময় শহরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ও স্থাপনায় মাদ্রাসা ছাত্র ও জনতা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। কোর্ট রোড এলাকায় নতুন চালু হওয়া ব্যাংক এশিয়ার শাখা ভাঙচুর করা হয়। শহরের বিভিন্নস্থানে থাকা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নামে টাঙানো বিলবোর্ড ছিঁড়ে ফেলা হয়। সকাল ১০টার দিকে রেলপথে অবরোধ সৃষ্টি করে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়। আগুন ধরিয়ে দেয়া হয় রেলপথের বিভিন্ন স্থানে। এ সময় রেলস্টেশনের প্রতিটি কক্ষ ব্যাপক ভাঙচুর করে তারা। ভেঙে ফেলা হয় কন্ট্রোল প্যানেল। ফলে ট্রেন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়াও ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্কুল, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বরে সাহিত্য একাডেমি, তিতাস সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদ, শিশু নাট্যম, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্মৃতি পাঠাগার ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়। আগুন ধরিয়ে দেয়া হয় ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সংগীতাঙ্গনে। আগুন দেয়া হয় হালদারপাড়াস্থ আওয়ামী লীগের অফিসে। আগুনে এ দু’টি অফিসের সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। বিকালে জেলা সদর হাসপাতালে ভাঙচুর চালানো হয়। পুড়িয়ে দেয়া হয় পুলিশের রিক্যুজিশন করা একটি গাড়ি। এক র্যাব সদস্যকেও মারধর করা হয়।
এরকমভাবে যদি আপনার পরিবারের সদস্য,শুভাকাংখি,আপনার দল(যদি থাকে) সাধারন মানুষের অসুবিধা করে ভাংচুর,বিক্ষোভ করে,তবেই আপনার পরিবার পেতে পারে এই ধরনের হট অফার।আর যদি না পারে তাহলে যা হবে-
১) আপনার শিশু সন্তান প্রতিদিন আপনার সাথে স্কুলে যাওয়ার জন্য বায়না ধরবে,আপনার স্ত্রী মিথ্যে সান্তুনা দেবে।
২)আপনার স্ত্রী কলিং বেলের শব্দ শুনলেই অজানা আশায় কেপে উঠবে।
৩)আপনার বাবা আপনার ভাইকে সাথে করে জমানো ও জমি বেচা টাকা নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন অফিসের বারন্দায় ঘোরাঘুরি করবে।
৪)আপনার মা রোজ গভীর রাতে আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করবে,আর দিনে রোজা রাখবে।
আর আপনি হয়তো ইট বাধা অবস্থায় শুয়ে থাকবেন কোনো নদীর তলদেশে,মাছেরা আপনাকে খুটে খুটে খাবে।
পাদটিকাঃ আমি এত অসুশীল না যে , নিহত হাফেজ মাসুদুর রহমানের জন্য আমার চোখ দিয়ে পানি বের হবে বা তার হত্যার বিচার চাইবো।সে একজন সামান্য কোরানে হাফেজ।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



