somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কোয়ান্টাম তত্ত্বের সূচনা, বিব্রত ম্যাক্স প্লাঙ্ক (এবং কোয়ান্টামকে বোঝার চেষ্টা)

২১ শে জানুয়ারি, ২০১০ দুপুর ২:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
স্বপ্নের কথা



এক স্বপ্নের মাঝে গাড়ি চালাচ্ছিলাম। হঠাৎ খেয়াল করলাম, গাড়ির স্পিডের আচরণ কেমন যেন অন্যরকম। এক্সেলেটরে চাপ দিলে স্পিড ক্রমাগত বাড়ছে না। বরঙ হঠাৎ হঠাৎ ৫/ ১০ করে বাড়ছে। উদ্বেগের বিষয়। কোয়ান্টাম জগতে চলে এলাম নাকি?


ভূমিকার কথা

লোহাকে তাপ দিলে তা গরম হয়ে লাল রঙের আলো ছড়ায়। কামারশালায় আমাদের পরিচিত অভিজ্ঞতা। তাপমাত্রা বাড়াতে বাড়াতে তা একসময় সাদা আলো ছড়ায়। কামারশালাতে যারা যান নি - তারা তো ইলেক্ট্রিক বাল্ব দেখেছেন নিশ্চই। এই জাদুর প্রদীপে একই ঘটনা ঘটে - টমাস আলভা এডিসনের বিখ্যাত আবিষ্কার। এখানে বিদ্যুত নামের এক দৈত্য ধাতুর কুন্ডলীর (ট্যাঙস্টেন ফিলামেন্ট) মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় এতটাই উত্তপ্ত হয় যে তা আলো ছড়ায়।


প্লাঙ্কের কথা




1900 সালের কথা। বিজ্ঞানী ম্যাক্স প্লাঙ্ক কাজ করছিলেন উত্তপ্ত বস্তু নিয়ে। উত্তপ্ত কোন বস্তু হতে বিভিন্ন রঙের অর্থাৎ বিভিন্ন কম্পনের যে আলো (বিকিরণ) বের হয়, তার তীব্রতা নির্ণয়ের একটা সমীকরণ তিনি বের করলেন। এবং বিখ্যাত হয়ে গেলেন – এর জন্য নোবেল পুরষ্কার পেয়ে গেলেন 1917 সালে। আমরা সে সব সমীকরণে যাবো না, কিন্ত ঐ সমীকরণ আসলে কি বলে তা আমরা জানতে পারি। তার আগে কিছু সাধারণ ধারণা আমরা দেখতে পারি।

ঘটনা ১) ঠান্ডা বরফের মাঝেও পানির অণু থাকে, আবার তরল পানিতেও একই অণু থাকে। দুই অবস্থাতে অণু তো একই। তাহলে একবার বরফ কঠিন, অন্যবার তরল পানি হওয়ার রহস্যটা কি? আসলে যে কোন অণু সবসময়ই কাঁপে। যখন আমরা তাপ দেই, এই কম্পন বেড়ে যায়। এই কম্পন বেড়ে যায় বলেই বরফের ভেতরের পানির অণুগুলো ছোটাছুটি শুরু করে - বরফ গলে যায়।

ঘটনা 2) একেক বস্তুর ক্ষেত্রে কোন নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় কোন অণুর কম্পন নির্দিষ্ট।

এ আবার কোন কথা?

একটা বেশ গরম কোন বস্তুর হয়তো আলো ছড়াচ্ছে। তারমানে তার ভেতরের অণুগুলোর একটা কম্পনাঙ্ক আছে। প্ল্যাঙ্ক এ ধরণের ঘটনা নিয়ে কাজ করতে গিয়ে দেখলেন যে একটা অবাক করা ধারণাকে স্বীকার করে নিতে হচ্ছে। তা হলো, কোন অণুর কেবল নির্দিষ্ট কিছু কম্পণশক্তি থাকতে পারে। এ শক্তিগুলোর মাঝামাঝি কোন শক্তি কখনোই সে ধারণ করতে পারবে না। বিষয়টা অবাক করা কেন? ধরেন আপনি ইন্টারনেট হতে কোন ফাইল ডাউনলোড করছেন। যদি আপনি দেখেন যে, ডাউনলোড স্পিড কেবল 5, 10, 15, 20, 25 কেবিপিএস ইত্যাদি কিন্তু এদের মধ্যখানে কোন মান যেমন 7, 12.5 ইত্যাদি হচ্ছে না তাহলে কি আপনি অবাক হতেন না? বলতেন না, আরে এটা আবার কি? স্পিড লাফায় লাফায় বাড়ছে কমছে কেন? স্পিড তো নিরবচ্ছিন্ন হওয়ার কথা। তাহলে কি স্পিড খন্ডায়িত?



বিষয়টা হয়তো সহজে বোঝা যাবে তখন; যদি কেউ যদি বলে যে তার বয়স হলো খন্ডিত। তার বয়স নিরবচ্ছিন্ন করে বাড়ে না। হঠাৎ হঠাৎ দেখা যায় তার বয়স ৫ বছর ১০ বছর করে বাড়ছে। তাহলে তার বয়সকে বলতে হবে কোয়ান্টাম বয়স!

তো, ম্যাক্স প্লাঙ্কও খুব অবাক হলেন ব্যাপারটাতে। তিনি দেখলেন, কোন অণুর এই নির্দিষ্ট শক্তি হলো hv (টীকা 1) এর পূর্ণ গুণিতক। এ শক্তি হতে পারে 2hv, 3hv, 4hv কিন্তু কখনোই 3/2hv, 2.5hv ইত্যাদি ভগ্নাংশ কিংবা দশমিক নয়।



প্লাঙ্ক শুধু অবাক হন নি। তিনি অত্যন্ত বিব্রতও ছিলেন এ ঘটনায়। কারণ শক্তির পূর্ণ গুণিতক হলে তো আর শক্তি নিরবিচ্ছিন্ন থাকে না। শক্তি হয়ে যায় বিচ্ছিন্ন। এটাতো আমরা সাধারণ জাগতিক জীবনের সাথে খাপ খায় না। আমরা দেখি জলের ধারা বিচ্ছিন্ন। একটা গাড়ি যে কোন স্পিড অর্জন করছে নিরবচ্ছিন্নভাবে। আমাদের ডাউনলোড স্পীডও পাচ্ছি নিরবিচ্ছিন্ন – বাড়ছে কমছে, যে কোনমান অর্জন করছে (কিন্তু 25কেবিপিএস এর উপরে না - হায় রে ব্যান্ডউইথ! যাই হোক, সেটা ভিন্ন বিষয়)। নিরবচ্ছিন্নর উল্টো ধারণা হলো খন্ডায়ন, বা কোয়ান্টানাইজেশন।অণুর ক্ষেত্রে শক্তির যে এই সুনির্দিষ্ট কিছু বৈধ মান থাকা হলো শক্তির কোয়ান্টানাইজেশন। এই ধারণাটা নিয়ৈ ম্যাক্স প্লাঙ্ক এতটাই বিব্রত ছিলেন যে ব্যার্থ প্রচেষ্টা চালিয়েছেন এই ধারণাটিকে তার তত্ত্ব হতে সরানোর! কিন্তু পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফলাফল এবং গণিত তাকে এই কাজটি করতে দেয় নি।
(অতীব দুঃখের বিষয় প্লাঙ্ক তার এই তত্ত্বের জন্যই কি না নোবেল পেলেন!)



পরবর্তীতে আরেক মহাবিজ্ঞানী আইনস্টাইন প্লাঙ্কের এই কাজকে আরো বিকশিত করেন।


টীকা ১
h প্লাঙ্কের ধ্রুবক
v আসলে ভি নয়, গ্রীক মিউ, যাকে দিয়ে কম্পনাঙ্ক প্রকাশ করা হচ্ছে।


আমার কথা

জাফর ইকবালের কোয়ান্টাম মেকানিক্স পড়ে তো তেমন কিছু বুঝি নাই। কোয়ান্টাম বা কোয়ান্টার ধারণাটা বোঝার চেষ্টা করছিলাম। আরো একটা বিষয় পরিষ্কার হলো, কোয়ান্টাম মেথডের সাথে কোয়ান্টাম ধারণার কোন মিল নেই। যেহেতু বায়োলজির ছাত্র, আমার বোঝাতে ভুল থাকতে পারে। এ বিষয়ে জানা-শোনা পড়া-লেখা করা বন্ধুগণ সাহায্য করুন।


তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট, ইবিঙ এর জেনারেল কেমিস্ট্রি বই।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জানুয়ারি, ২০১০ বিকাল ৩:১৫
১৬টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৩:০৬

অবশেষে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেফতার করেছে ডিবি। এবং প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিবি জানিয়েছে সে ছোটবেলা থেকেই বদমাইশ ছিল। নিজের বাপকে পিটিয়েছে, এবং যে ওষুধের দোকানে কাজ করতো, সেখানেই ওষুধ চুরি করে ধরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×