হযরত সামুরা বিনতে জুনদুব রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় কথা হলো চারটি-
১. সুবহানাল্লাহ (سُبْحانَ الله)
২. আলহামদুলিল্লাহ (اَلْحَمْدُ لِله)
৩. লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ (لَا اِلَهَ اِلَّا الله) এবং
৪. আল্লাহু আকবার (اَللهُ اَكْبَر)।
এর যে কোনো একটির দ্বারাই (জিকির) আরম্ভ করা যেতে পারে। (মুসলিম)
জিকিরঃ
দেহকে সজীব ও প্রাণবন্ত রাখার জন্য যেমন খাবার বা আহারের প্রয়োজন, তেমনি কলব বা রুহকে জীবিত রাখার জন্যও খাবারের প্রয়োজন হয়; আর রুহ বা কলবের সেই খাবার হলো আল্লাহর জিকির করা। তাই আল্লাহর স্মরণ বা জিকিরের মাধ্যমে তাঁর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা প্রত্যেকের ঈমানি দায়িত্ব। জিকির হচ্ছে সফলতার সোপান। জিকিরের মাধ্যমে আল্লাহর সঙ্গে বন্ধুত্ব সৃষ্টি হয় আর জিকির বিমুখতায় আল্লাহর সঙ্গে বান্দার দূরত্ব সৃষ্টি হয়। আল্লাহর সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি হওয়া মানব জীবনের বড় ব্যর্থতা।
প্রকৃত জ্ঞানী ও বুদ্ধিমান সেই ব্যক্তি, যে দাঁড়ানো বা বসা অবস্থায়, শয়নাবস্থায় আল্লাহর জিকির করে এবং মহাকাশ ও পৃথিবীর যাবতীয় সৃষ্টি সম্পর্কে চিন্তাভাবনা ও গবেষণা করে।
আল্লাহর জিকিরে অন্তর পরিতৃপ্ত হয় ও মানসিক শক্তি বৃদ্ধি পায়। যে ব্যক্তি বেশি বেশি আল্লাহর জিকির করে, তার দোয়া অবশ্যই কবুল হয়ে থাকে।
১. আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘সুতরাং তোমরা আমাকেই স্মরণ করো, আমিও তোমাদের স্মরণ করব। আর তোমরা আমার প্রতি কৃতজ্ঞ হও এবং অকৃতজ্ঞ হয়ো না’ (বাকারা : ১৫২)।
২. আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ কর, যেন তোমরা সফল হতে পার।’ (আনফাল : ৪৫)।
৩. আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘মোমিনরা! তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্তুতি যেন তোমাদের আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফেল না করে। যারা এ কারণে গাফেল হয়, তারাই তো ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত।’ (মুনাফিকুন : ৯)।
৪. অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, (তরজমা) যারা ঈমান আনে এবং আল্লাহর স্বরণে যাদের অন্তর প্রশান্ত হয়, জেনে রাখ আল্লাহর যিকির দ্বারাই অন্তরসমূহ শান্তি পায়।( রা’দ : ২৮)
৫. আরো বলা হয়েছে, (তরজমা) যারা ঈমানদার তারা এমন যে যখন তাদের সামনে আল্লাহর নাম নেওয়া হয় তখন তাদের অন্তর ভীত হয়ে পড়ে। (আনফাল : ২)
৬. আল্লাহ তা’আলা আরো বলেন, যাদের হৃদয় ভয়ে কম্পিত হয় আল্লাহর নাম স্মরণ করা হলে।(হজ্ব : ৩৫)
৭. অন্য আয়াতে বলেন, (তরজমা) আল্লাহর স্মরণ সর্বশ্রেষ্ঠ। (আনকাবুত : ৪৫)
৮. আল্লাহর অধিক যিকিরকারী পুরুষ ও যিকিরকারী নারী, তাদের জন্য আল্লাহর প্রস্ত্তত রেখেছেন ক্ষমা ও মহাপুরস্কার। (আহযাব : ৩৫)
৯. হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ কর। (আহযাব : ৪১)
১০. আরো বলেছেন, স্মরণ করতে থাক স্বীয় পালনকর্তাকে আপন মনে ক্রন্দনরত ও ভীত সন্ত্রস্ত অবস্থায়। (আরাফ : ২০৫)
১১. মুমিনদের সর্ম্পকে বলেছেন, যারা আল্লাহ তা’আলা কে স্মরণ করে দাঁড়িয়ে, বসে ও শায়িত অবস্থায় এবং চিন্তা-ভাবনা করে আসমান যমিন সৃষ্টির বিষয়ে। হে আমাদের প্রতিপালক! এসব তুমি অনর্থক সৃষ্টি করনি। (ইমরান : ১৯৯)
১২. মুনাফিকদের বিষয়ে বলেছেন, যখন তারা নামাযে দাঁড়ায় তখন তারা শিথিলভাবে লোক দেখানোর জন্য দাঁড়ায় এবং তারা আল্লাহকে অল্পই স্মরণ করে। (নিসা : ১৪২)
১৩. আরো বলেন, যারা আল্লাহ ও আখেরাতের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে তাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মাঝে রয়েছে উত্তম আদর্শ। (আহযাব : ২০)
১৪ অন্য আয়াতে বলেন, যে তার পালনকর্তার নাম স্মরণ করে অতপর নামায আদায় করে। (আ’লা : ১৫)
১. একবার একজন সাহাবী আরজ করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আপনি আমাকে এমন একটা জিনিস শিক্ষা দিন, যার ওপর আমি রীতিমতো আমল করতে পারি।’ নবী করিম (সা
২. হযরত আবু দারদা (রা
৩. নবী করিম (সা
৪. নবী করিম (সা
৫. একদিন প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এক আরব বেদুইন এসে বলল, ‘হে আল্লাহর রাসূল (সা
৬. হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে আমার সর্বশেষ যে কথাটি হয়েছিল, যে কথাটি বলে আমি তাঁর থেকে শেষ বিদায় নিয়েছিলাম তা হলো- আমল (কাজ) কোনটি? তিনি বলেছিলেন, ‘আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় কাজ যে, তুমি যখন মৃত্যুবরণ করবে তখনো তোমার জিহ্বা আল্লাহর জিকিরে সিক্ত (আদ্র) থাকবে।’ অর্থাৎ সব সময় মুমিনের মুখে আল্লাহর জিকির চলতে থাকবে।
৭. উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রা
৮. হযরত আবু হুরায়রা (রা
৯. হযরত আবু মুসা (রা
১০. হযরত আবু হুরায়রা (রা
১১. হযরত আবূ দারদা (রা
১২. হযরত আবু হুরায়রা (রা
১৩. হযরত মুআয (রা
১৪. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস (রা
১৫. হযরত আবু হুরায়রা (রা
১৬. হযরত আবু হুরায়রা (রা
১৭. হযরত মুআয ইবনে জাবাল (রা
১৮. হযরত আনাস রা: থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যখন কিছু মানুষ আল্লাহর যিকিরের জন্য একত্রিত হয় এবং আল্লাহর সন্তুষ্টিই একমাত্র উদ্দেশ্য হয় তখন আসমান হতে একজন ঘোষক ঘোষণা করেন, তোমাদেরকে মাফ করে দেওয়া হয়েছে এবং তোমাদের গোনাহসমূহ নেকীতে পরিণত হয়েছে। (মুসনাদে আহমদ : ১২৪৫৩; শুআবুল ঈমান : ৫৩৪)
১৯. হযরত আনাস (রা
২০. হযরত মুয়ায ইবনে জাবাল (রা
২১. হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা
২২. হযরত আবু হুরায়রা (রা
সুতরাং মানুষের উচিত জিকিরের উল্লেখিত বিষয়গুলো প্রতি যথাযথ খেয়াল রাখা। সে আলোকে জিকির করা। জিকিরে মানুষের জবান, ক্বলব ও আত্মাকে আদ্র রাখা।
জিকির করবেন কীভাবে? জিহ্বায়, ক্বলবের স্মরণে নাকি অর্থ বুঝে? জিকিরের পরিপূর্ণতাই বা আসে কীভাবে? না বুঝে জিকির করলে সাওয়াব পাওয়া যাবে কি? সব সময় জিকির করা প্রসঙ্গে বিশ্বনবির বক্তব্যই বা কী ছিল?
ইমাম বুখারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ‘আল্লাহর জিকিরের ফজিলত’ নামে একটি অধ্যায় হাদীসের বিখ্যাত গ্রন্থ বুখারীতে সংযোজন করেছেন। এ জিকির দ্বারা কী উদ্দেশ্য, তা বর্ণনা করে ইবনে হাজার আসকালানি বলেছেন, ‘এ জিকির হলো ওই সব শব্দ বা বাক্য, যা বললে সাওয়াব পাওয়া যায়।
এসব জিকিরের মধ্যে ‘সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার, লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ, বিসমিল্লাহ, হাসবুনাল্লাহ, আসতাগফিরুল্লাহসহ দুনিয়া ও পরকালের কল্যাণ কামনায় যে কোনো দোয়া করাই জিকিরের শামিল।
এ ছাড়াও নিয়মিত ফরজ নামাজ ও কাজ, কুরআন তেলাওয়াত, জ্ঞানার্জন এবং নফল নামাজ আদায় করাকেও জিকির হিসেবে গন্য করা হয়।
জিকির শুধুমাত্র মানুষের জিহ্বার উচ্চারণের মাধ্যমেও হতে পারে। আবার জিহ্বার উচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গে অন্তরের স্মরণ বা উপলব্দি সংযুক্ত হলে তা উত্তম ও পরিপূর্ণতার জিকিরে পরিণত হবে। অন্তরের স্মরণের সঙ্গে সঙ্গে যদি জিকিরের অর্থ উপলব্দি করে মুমিন তবে তা হবে আরো উত্তম এবং ফজিলতপূর্ণ।
সুতরাং জিকির জিহ্বার দ্বারা উচ্চারণ হোক আর অন্তরের স্মরণের সঙ্গে হোক কিংবা অর্থ উপলব্দির মাধ্যমেই হোক, সব ধরনের জিকিরেই সাওয়াব পাবে মুমিন। সাওয়াব পাওয়ার জন্য অন্তরের সম্পর্ক ও অর্থের সম্পর্ক জরুরি নয়। তবে পরিপূর্ণ ও উত্তম জিকিরের জন্য এসবই প্রযোজ্য।
জিকিরের প্রকারভেদঃ
জগৎ বিখ্যাত ইসলামিক স্কলার ইমাম ফখরুদ্দিন রাজি রহমাতুল্লাহি আলাইহি জিকিরকে ৩ ভাগে ভাগ করেছেন। যথা- ১.মুখের জিকির, ২.কলবের জিকির, ৩.অঙ্গপ্রত্যঙ্গের জিকির।
মুখের জিকিরঃ
কোনো চিন্তা-গবেষণা ছাড়াই জিহ্বার উচ্চারণে জিকির করা। ‘সুবহানাল্লাহ, ‘আলহামদুলিল্লাহ’, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’, ‘আল্লাহু আকবার’, ‘লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ’, ‘বিসমিল্লাহ, ‘হাসবুনাল্লাহ’, ‘আসতাগফিরুল্লাহ’, ‘কুরআন তেলাওয়াত’ ইত্যাদি মুখে উচ্চারণ করা।
কলবের জিকিরঃ
আল্লাহর জাত, সিফাত (গুণাবলী), বিধানাবলী, আদেশ, নিষেধ ইত্যাদি বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তা ও গবেষণা করার মাধ্যমে অন্তর দিয়ে আল্লাহকে স্মরণ করা।
অঙ্গপ্রত্যঙ্গের জিকিরঃ
সব সময় মানুষের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ আল্লাহর আনুগত্যে রত থাকা বা পরিচালিত হওয়া। আর এ জন্যই নামাজকে কুরআনে জিকির বলা হয়েছে। নামাজে মানুষের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ আল্লাহর নির্দেশ পালনে জিকিরে রত থাকে।
অনেকে আবার জিকিরকে ৭ ভাগে ভাগ করেছেন। আর তাহলো-
১. চোখের জিকির : আল্লাহর ভয়ে চোখ দিয়ে প্রবাহিত হওয়া।
২. কানের জিকির : মনোযোগ দিয়ে আল্লাহর কথা শোনা।
৩. মুখের জিকির : আল্লাহর প্রশংসা করা।
৪. হাতের জিকির : দান-সাদকা ও কল্যাণকর কাজ করা।
৫. দেহের জিকির : আল্লাহর বিধান পালন করা।
৬. ক্বলবের জিকির : আল্লাহর ভয়ে ভিত হওয়া বা তাকওয়া অর্জন করা। আল্লাহর রহমতের আশা করা।
৭. আত্মার জিকির : আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত তাকদির ও ফয়সালার উপর পরিপূর্ণ রাজি ও সন্তুষ্ট থাকা।
সব যুগের ইসলামি স্কলারগণ জিকিরের বিষয়ে একমত হয়েছেন যে-আল্লাহর জিকিরের অর্থ হলো ওই সব জিকির, যা যপ বা উচ্চারণ করলে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জিত হয়। কুরআন তেলাওয়াত, নামাজ আদায়, তাসবিহ-তাহলিল, পিতামাতার জন্য দোয়াসহ কুরআন-সুন্নাহর মাসনুন দোয়া ও আল্লাহর ফরজ বিধান পালন।
সুবহানাল্লাহঃ
১. ‘সুবহানাল্লাহর’ ফজিলতের ব্যাপারে অসংখ্য হাদীস সাব্যস্ত হয়েছে। এতে তো অসামান্য সওয়াবের কথা বলা হয়েছে। সুবহানাল্লাহ সম্পর্কে রাসূল (সা
২. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, এ বাক্যটির অর্থ হলো- আল্লাহ পবিত্র অর্থাৎ আল্লাহ তা’আলা যাবতীয় মন্দ ও সকল প্রকার দোষ-ত্রুটি থেকে সম্পূর্ণ পবিত্র।
৩. একবার হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহুর নিকট প্রশ্ন করেছিলেন, আমরা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু’র অর্থ জানি। কিন্তু সুবহানাল্লাহ’র তাৎপর্য কি? তখন হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু জবাব দিয়েছিলেন, ‘আল্লাহ তা’আলা এ বাক্যটি নিজের জন্য পছন্দ করেছেন। তিনি এ বাক্য দ্বারা সন্তুষ্ট হন। এ বাক্যটির জিকির আল্লাহ তা’আলার মহান দরবারে অত্যন্ত পছন্দনীয়।
৪. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়াসাল্লাম এর অন্যতম একজন সাহাবী বর্ণনা করেছেনঃ যে ব্যক্তি সকালে ১০০ বার এবং সন্ধ্যায় ১০০ বার সুবহানাল্লাহ এর যিকির করবে সে যেন ১০০ বার হজ্জ আদায় করল!
৫. হযরত সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট ছিলাম। তিনি বললেন, তোমাদের কোনো ব্যক্তি প্রত্যেক দিন ১০০০ নেকি অর্জন করতে সক্ষম কি? তন্মধ্যে একজন বললেন, আমাদের মধ্যে কোনো ব্যক্তি কিভাবে ১০০০ হাজার নেকি অর্জন করবে? তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ১০০ বার سُبْحَانَ اللهِ (সুবহানাল্লাহ) বললে, তার জন্য ১০০০ হাজার নেকি লেখা হবে। অথবা তার ১০০০ পাপ মোচন করা হবে।
(মুসলিম: ২৬৯৮, তিরমিযী: ৩৪৬৩, আহমাদ: ১৪৯৯, ১৫৬৬, ১৬১৫)
৬. হযরত উম্মু হানী (রাঃ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট এসে বললেনঃ হে রাসূলুল্লাহ! আমাকে এমন একটা আমল বলে দিন। কেননা আমি এখন বৃদ্ধ হয়ে পরেছি, দুর্বল হয়ে গেছি এবং আমার দেহও ভারী হয়ে গেছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ তুমি শতবার ‘আল্লাহু আকবার’ শতবার ‘আলহামদুলিল্লাহ’ ও শতবার ‘সুবহানাল্লাহ’ পড়ো। তা জিনপোষ ও লাগামসহ একশ ঘোড়া আল্লাহর পথে (জিহাদে) দান করার চেয়ে উত্তম, একশ উটের চেয়ে উত্তম এবং একশ গোলাম আজাদ করার চেয়ে উত্তম। (সুনানে ইবনে মাজাহ: ৩৮১০)
৭. যে ব্যক্তি ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি’ প্রতিদিন ১০০ বার পাঠ করবে সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ (সগিরা) গোনাহ থাকলে ও তাকে মাফ করে দেওয়া হবে। (বোখারী : ৭/১৬৮, মুসলিম : ৪/২০৭১)।
৮. সকালে ১০০ বার ও বিকালে ১০০ বার সুবহানাল্লাহিল আজিম ওয়া বিহামদিহি পরলে সৃষ্টিকুলের সমস্ত মানুষ থেকে বেশি মর্যাদা দেয়া হবে। (সহীহ আবু দাউদ : ৫০৯১)
৯. হযরত জাবের (রা
১০. সকালে ১০০ বার ও সন্ধ্যায় ১০০ বার সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি পাঠ করলে কিয়ামতের দিন তার চেয়ে বেশি সওয়াব আর কারো হবে না। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নম্বর- ২৬৯২)।
১১. সকালে ও বিকালে ১০০ বার সুবহানাল্লাহ, ১০০ বার আলহামদুলিল্লাহ, ১০০ বার আল্লাহু আকবার এবং ১০০ বার লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া ‘আলা কুলি¬ শাই’ইন কাদীর পাঠ করলে অগণিত সওয়াব হবে। (নাসাই, সহীহ তারগিব : ৬৫১)।
১২. নবী মুহাম্মদ (সা
১৪. হযরত আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,, “যে ব্যক্তি দিনে একশবার ‘সুবহানাল্লাহি অবিহামদিহ’ পড়বে তার গুনাহসমূহ মোচন করা হবে; যদিও তা সমুদ্রের ফেনা বরাবর হয়।” (বুখারী-মুসলিম)
আলহামদুলিল্লাহঃ
‘আলহামদুলিল্লা এর মূল অর্থ দুটি। আলহামদুলিল্লাহ এর দুটি অংশ রয়েছে। প্রথমটি হল-আপনি আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ (আল্লাহকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন), কৃতজ্ঞতা (শুধুমাত্র) আল্লাহর জন্য। আর দ্বিতীয় অংশ হলো-প্রশংসা; প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
১. ‘আলহামদুলিল্লাহ’ মিজানের পাল্লাকে ভারি করে দেয় এবং সর্বোত্তম দোয়া। (তিরমিজি : ৫/৪৬২; ইবনে মাজাহ : ২/১২৪৯, হাকিম: ১/৫০৩,সহীহ আল জামে’: ১/৩৬২)
২. হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, সর্বোত্তম জিকির হচ্ছে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এবং সর্বোত্তম দোয়া হলো ‘আল-হামদুলিল্লাহ’। (তিরমিজি, ইবনে মাজাহ, নাসাঈ, ইবনে হিব্বান)
৩. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ তুমি শতবার ‘আল্লাহু আকবার’ শতবার ‘আলহামদুলিল্লাহ’ ও শতবার ‘সুবহানাল্লাহ’ পড়ো। তা জিনপোষ ও লাগামসহ একশ ঘোড়া আল্লাহর পথে (জিহাদে) দান করার চেয়ে উত্তম, একশ উটের চেয়ে উত্তম এবং একশ গোলাম আজাদ করার চেয়ে উত্তম। (ইবনে মাজাহ : ৩৮১০)
৪. হযরত আবূ মালেক আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,“পবিত্রতা অর্ধেক ঈমান।আর ‘আলহামদু লিল্লাহ’(কিয়ামতে নেকীর) দাঁড়িপাল্লাকে ভরে দেবে এবং ‘সুবহানাল্লাহ’ ও ‘আলহামদু লিল্লাহ’ আসমান ও যমীনের মধ্যস্থিত শূন্যতা পূর্ণ করে দেয়।”
৫. ‘‘সুবহানালা-হি ওয়াল হামদু লিলা-হি, ওয়ালা ইলা-হা ইলালাহ-হু আলাহু আকবার’’ এই কালিমা গুলো বলা, সূর্য যে সমস্ত জিনিসের ওপর উদিত হয়, সেই সমুদয় জিনিসের অপেক্ষা অধিকতর প্রিয়।’ (মুসলিম)
৬. হযরত আবূ মালেক আশআরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “পবিত্রতা অর্ধেক ঈমান। আর ‘আলহামদু লিল্লাহ’ (কিয়ামতে নেকীর) দাঁড়িপাল্লাকে ভরে দেবে এবং ‘সুবহানাল্লাহ’ ও ‘আলহামদু লিল্লাহ’ আসমান ও জমিনের মধ্যস্থিত শূন্যতা পূর্ণ করে দেয়।” (মুসলিম, তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, আহমাদ, দারেমী)
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহঃ
কালেমা অর্থ হলো ঈমান বা বিশ্বাস। যিনি আসমান, জমিন, জিন ও ইনসানসহ হাজারো মাখলুকাত সৃষ্টি করেছেন। তিনি সবার রব বা প্রতিপালক। তাঁর উপর সর্বপ্রথম বিশ্বাস স্থাপন করার নামই হলো ঈমান। ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ কালেমা হলো ঈমানের মূল ভিত্তি। আল্লাহ তায়ালাকে একমাত্র উপাস্য মেনে ইবাদত-বন্দেগি কিংবা দান-সাদকা না করলে, ওইসব আমল ও দান-সাদকা পরকালে কোনো কাজে আসবে না। ইসলামের পাঁচটি মূল স্তম্ভের প্রথমটি হলো ঈমান। ঈমানের অনেকগুলো শাখা-প্রশাখা রয়েছে। এর মধ্যে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ হলো সর্বপ্রথম। ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ হলো ঈমানের চাবি। ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ পাঠ করলে ঈমান মজবুত হয়। যে ব্যক্তি কালেমা পাঠ করে মৃত্যুবরণ করবে, ওই ব্যক্তি জান্নাতি হবে। মুমিন বান্দার কাছে কালেমার জিকির সর্বত্তোম জিকির। ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’র জিকিরে মুমিন বান্দার অন্তর প্রশান্তি লাভ করে। যে ব্যক্তি বেশি বেশি কালেমার জিকির করবে ওই ব্যক্তির জন্য আল্লাহ তায়ালা পরকালে জাহান্নামের আগুনকে হারাম করে দেবেন এবং আকাশের সব রহমতের দরজা খুলে দেবেন। যে ব্যক্তি সবসময় লা ইলাহা ইল্লাহর জিকির করবে, আল্লাহ তা’আলা তাকে ঈমানের সঙ্গে মৃত্যু নসিব করবেন।
১. হযরত আবু হোরায়রা রা: থেকে বর্ণিত হয়েছে, হযরত রাসূল সা: ইরশাদ করেছেন, ‘ঈমানের ৭০টির বেশি অথবা ৭৩টি শাখা-প্রশাখা রয়েছে। তার মধ্যে সর্বাপেক্ষা উত্তম শাখা হচ্ছে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলা, আর সর্বনিম্ম শাখা হচ্ছে পথে বা রাস্তার মধ্য থেকে কষ্টদায়ক বস্তু দূর করে দেয়া এবং লজ্জা হলো ঈমানের একটি শাখা।’(মুসলিম:১/৩৫)
২. হযরত মুয়ায রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি খালেস অন্তরে একনিষ্ঠতার সঙ্গে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (মুসনোদে আহমদ)
৩. হযরত ইতবান বিন মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি একমাত্র আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলবে, ক্বিয়ামাতের দিন সে এমনভাবে উপস্থিত হবে যে, তার উপর জাহান্নাম হারাম হয়ে গেছে। (বুখারি-মুসলিম, মুসনাদে আহমদ)
৪. হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কিয়ামাতের দিন আল্লাহ তা’আলা বলবেন, হে মুহাম্মাদ! সৃষ্টির মধ্য হতে আপনার উম্মতের মধ্যকার এমন ব্যক্তিকে জান্নাতে প্রবেশ করান যে ব্যক্তি একদিন হলেও ইখলাসের সঙ্গে এ সাক্ষ্য দিয়েছে যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নাই এবং সে এর উপর মৃত্যুবরণ করেছে। (মুসনাদে আহমদ)
৫. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন- ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি: আল্লাহ ব্যতীত আর কোন মাবুদ নেই এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তা'আলার রাসূল এ কথার সাক্ষ্য দেয়া, সালাত কায়েম করা, যাকাত আদায় করা, হজ্ব আদায় করা এবং রমযানের রোযা রাখা । (বোখারী)
৬. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আমি এবং আমার পূর্বের নবীরা সর্বোত্তম যে কথাটি বলেছেন তা হচ্ছে- আল্লাহ ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই। তাঁর কোন শরীক নেই। রাজত্ব এবং প্রশংসা তাঁর। তিনি সকল বস্তুর উপর ক্ষমতাবান। (তিরমিযী)
৭. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আল্লাহর নবী নূহ আ: মৃত্যুর পূর্বমুহুর্তে তার সন্তানকে বলেছিলেন, আমি তোমাকে 'লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ'এর নির্দেশ করছি। নিশ্চই এক হাতে সাত আসমান ও সাত যমীন যদি রাখা হয়, আর অপর হাতে 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ' রাখা হয়, তবে কালিমা বহনকারী হাতটি ভারি হবে। আর সাত আসমান ও যমীনকে যদি একটি রিং এর মতো করে তৈরি করা হতো, তবে 'লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ' কালিমাটির মর্মের ভারত্ব সেটাকে ভেঙ্গে ফেলতে সক্ষম হতো। (আদাবুল মুফরাদ।)
৮. হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা
৯. হযরত ওসমান (রা
১০. হযরত উবাদা ইবনে সামিত (রা
১১. হযরত আবু হোরায়রা (রা
১২. হযরত আবু হোরায়রা (রা
১৩. হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা
১৪. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন (কেয়ামতের দিন) আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করবেন, জাহান্নাম থেকে এরূপ প্রত্যেক ব্যক্তিকে বের করে নাও যে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলেছে এবং তার অন্তরে বিন্দু পরিমাণও ইমান আছে। এবং এরূপ প্রত্যেক ব্যক্তিকে বের করে নাও যে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলেছে অথবা আমাকে (যে কোনোভাবে) স্মরণ করেছে কিংবা কোনো অবস্থায় আমাকে ভয় করেছে। (হাকেম)
১৫. ইবনে হেব্বান এবং আল হাকেম আবু সাইদ খুদরী (রা
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু এর শর্তসমূহ:
১. এর মর্ম সম্পর্কে অবগত হওয়াঃ
আর তা হল এই বাক্যের উক্তিকারী এর মর্ম ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়াদীকে রপ্ত করবে। যথা, গাইরুল্লাহর মাবুদ হওয়াকে অস্বীকার করা এবং আল্লাহকেই একমাত্র উপাস্যরূপে গ্রহণ করা ইত্যাদি। আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন-অত:পর জেনে রাখ যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই। (মুহাম্মাদ : ১৯)
২. দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করাঃ
অর্থাৎ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের প্রতি এর সাক্ষ্যদানকারীর অন্তরে কোন সন্দেহ পতিত না হওয়া। আল্লাহ তা'আলা বলেন: তারাই মুমিন, যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ঈমান আনার পর সন্দেহ পোষণ করে না এবং আল্লাহর পথে প্রাণ ও ধন-সম্পদ দ্বারা জেহাদ করে। তারাই সত্যনিষ্ঠ। (হুজরাত : ১৫)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যখন কোন বান্দা কোন ধরনের সন্দেহ ও সংশয় ব্যতিরেকে 'আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবুদ নেই এবং মুহাম্মাদ সা. আল্লাহর রাসূল' এই মর্মে সাক্ষ্য দিবে এবং এই বিশ্বাস নিয়েই আল্লাহর দরবারে উপস্থিত হবে, সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে। (মুসলিম)
৩. এই বাক্যের দাবীকে অন্তরিক এবং মৌখিকভাবে স্বীকার ও গ্রহণ করাঃ
এখানে অন্তর থেকে এবং মৌখিকভাবে গ্রহণ করা বলতে উদ্দেশ্য হলো এই বিশ্বাসকে প্রত্যাখ্যান না করা। আল্লাহ তা'আলা বলেন : অপরাধীদের সাথে আমি এমনি ব্যবহার করে থাকি। তাদের যখন বলা হত, আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই, তখন তারা ঔদ্ধত্য প্রদর্শন করত। (আস-সাফ্ফাত : ৩৪- ৩৫)
৪. কালিমাতুত তাউহীদের আলোকে প্রমাণিত বিষয়াদীর সম্মুখে নিজেকে সমর্পন করাঃ
অর্থাৎ বান্দা আল্লাহর নির্দেশিত বিষয়ের উপর আমল করবে এবং তাঁর নিষিদ্ধ বিষয়কে বর্জন করবে। আল্লাহ তা'আলা বলেন: যে ব্যক্তি সৎকর্মপরায়ণ হয়ে স্বীয় মুখমন্ডলকে আল্লাহ অভিমূখী করে, সে এক মজবুত হাতল ধারণ করে, সকল কর্মের পরিণাম আল্লাহর দিকে। (লুকমান : ২২)
প্রকৃত গোলামী হচ্ছে অন্তরের গোলামী ও দাসত্ব। সুতরাং যে তাঁর দাসত্ব গ্রহণ করবে সে তাঁর বান্দা হিসেবে বিবেচিত হবে।
৫. সত্যায়ন করাঃ
অর্থ হলো বান্দা “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু” অন্তর থেকে বলা এবং তার কথা ও কাজের মাধ্যমে ইহাকে সত্যায়ন করা। আল্লাহ তা'আলা বলেন: আর মানুষের মধ্যে কিছু লোক এমন রয়েছে যারা বলে, আমরা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান এনেছি অথচ আদৌ তারা ঈমানদার নয়। তারা আল্লাহ এবং ঈমানদারগণকে ধোঁকা দেয়। অথচ এতে তারা নিজেদেরকে ছাড়া অন্য কাউকে ধোঁকা দেয় না অথচ তারা তা অনুভব করতে পারে না। (বাক্বারাহ : ৮- ৯)
(৬) ইখলাসঃ
ইখলাস হলো এই কালিমার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের ইচ্ছা করা। আল্লাহ তা'আলা বলেন: তাদেরকে এছাড়া কোন নির্দেশ করা হয়নি যে, তারা খাঁটি মনে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর এবাদত করবে, নামায কায়েম করবে এবং যাকাত দেবে। এটাই সঠিক ধর্ম। (বায়্যিনাহ : ৫)
(৭) কালিমা ও কালিমা ধারণকারীদের মুহাব্বত করাঃ
এই কালিমা ও কালিমা ধারণকারীদের মুহাব্বত করা যারা এর উপর আমল করে এবং তার শর্তসমূহের সাথে অঙ্গিকারাবদ্ধ। আল্লাহ তা'আলা বলেন: আর কোন লোক এমনও রয়েছে যারা অন্যান্যকে আল্লাহর সমকক্ষ সাব্যস্ত করে এবং তাদের প্রতি তেমনি ভালবাসা পোষণ করে, যেমন আল্লাহর প্রতি ভালবাসা হয়ে থাকে। কিন্তু যারা আল্লাহর প্রতি ঈমানদার তাদের ভালবাসা ওদের তুলনায় বহুগুণ বেশী। (বাক্বারাহ : ১৬৫)
যখনই অন্তরে আল্লাহর ভালোবাসা বৃদ্ধি পায়, তখন তাঁর বন্দেগীর চাহিদা বৃদ্ধি পায়, এবং তিনি ছাড়া অন্য বিষয় থেকে নিজেকে মুক্ত মনে করার অভ্যাস গড়ে ওঠে।
এগুলো লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু এর তাৎপর্য। আর বর্ণিত শর্তাবলী আল্লাহর নিকট নাজাতের কারণ হিসাবে বিবেচিত হবে। একদা হযরত হাসান বসরী (রা
“লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু” পাঠকারী যতক্ষণ না কালিমার দাবি পূর্ণ সম্পাদন না করবে এবং তার শর্তসমূহ পূরণ না করবে ততক্ষণ সেই কালিমা তার কোন উপকারে আসবে না। কালিমা উচ্চারণের সাথে সাথে আমলও যুক্ত হতে হবে, তবেই কেবল সে উপকৃত হতে পারবে কালিমা দ্বারায়।
আল্লাহু আকবারঃ
১. হযরত আবু হুরাইরা (রা
২. সুবহানাল্লাহ’ ও ‘আল্লাহু আকবার’ পৃথিবী ও আকাশ মণ্ডলী ভরে দেয়। (সুনানে ইবনে মাজাহ : ২৮০)
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ৯:৩৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




