somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

৪। ঈমান

১২ ই জুন, ২০২১ দুপুর ১:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

৪.১) হাদীস :
হযরত উবাদা ইবনে সামিত (রাঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেছেন : আমি নবী করীম (সাঃ) কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি সাক্ষ্য দিবে যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোন মা’বুদ নাই এবং মুহাম্মদ আল্লাহর রাসূল আল্লাহ তার উপর জাহান্নাম হারাম করে দিবেন।
৪.২) হাদীস :
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলূল্লাহ (সাঃ) বলেছেন : সত্তরের ও কিছু বেশি ঈমানের শাখা–প্রশাখা রয়েছে। তম্মধ্যে সর্বশেষ্ঠ শাখাটি হচ্ছে, কালেমা শরীফ লা–ইলাহা ইল্ল্ল্লাাহহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহর স্বীকৃতি আর সর্বাপেকক্ষা ক্ষুদ্র শাখাটি হচ্ছে, মানুষের চলাচলের রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে দেওয়া এবং লজ্জা ঈমানের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা। (বুখারী, মুসলিম)
৪.৩) হাদীস :
হযরত আবু উমামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলূল্লাহ (সাঃ) বলেছেন যে, ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির প্রতি লক্ষ্য করেই কাউকে ভালোবাসলো বা কারও প্রতি শক্রতা পোষন করল, আল্লাহ ওয়াস্তেই কাউকে দিল এবং গোনাহর পথে কিছু দেওয়া বা গোনাহর পথে খরচ করতে পারে এই আশঙ্কায় কাউকে কিছু দেওয়া থেকে বিরত রইল, সে তার ঈমান পরিপূর্ণ করে নিল। (আবু দাউদ)
৪.৪) হাদীস :
কোন সৎকাজ করতে পারলে যদি মনে প্রফুল্লতা সৃষ্টি হয়, আর কোন মন্দ কাজ করে ফেললে যদিমনের মধ্যে অনুশোচনা সৃষ্টি হয় তবে বুঝতে হবে; তুমি ঈমানদার।
ভূমিকা
মুসলমানের জীবনার্দশের মূল ভিত্তি হচ্ছে ঈমান। গাছ যেমন তার মূলের উপর দাড়িয়ে থাকে, কোন অট্রালিকা যেমন তার ভিতের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকে তেমনি একজন মুসলিম প্রতিষ্ঠিত থাকে ঈমানের ভিতের উপর। যার ঈমান হতে যত মজবুত মুসলমান হিসাবে তিনি হবেন ততোটা খাঁটি ও উন্নত। প্রত্যেক মুসলমনের সে সর্ম্পকে স্বচ্ছ ধারণা থাকা ধরকার ঈমানিয়াতের প্রতিটি দিক ও সেগুলোর শাখা প্রশাখা সর্ম্পকে অনাবিল বুঝ ও ধারণা না থাকলে মুসলমানের জীবনে বিপর্যয় সৃষ্টি হওয়ার সমুহ আশংকা থেকে যায়।
ঈমান :
ঈমান আরবী শব্দ। শাব্দিক অর্থ হলো বিশ্বাস স্থাপন। শরীয়তের ভাষায় ঈমান হলো অন্তরে বিশ্বাস, মৌখিক স্বীকৃতি ও কার্যে পরিণত করার নাম। অর্থাৎ কোন বিষয়েক গ্রহণ ও বাস্তবায়নের অঙ্গীকার নিয়ে তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন ও স্বীকৃতি দানই ঈমান। গ্রহণ ও বাস্তবায়নের সদিচ্ছা না থাকলে মৌখিক স্বীকৃতির দ্বারা মু’মিন হওয়া যায়না।
যা দেখা যায়না বা সরাসরি যে বিষয়ে জ্ঞান নেই পরোক্ষ জ্ঞানের মাধ্যমে যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় তার নাম ঈমান।
1.ঈমান আননে হবে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে।
11.ঈমান হতে হবে খালেস ও শেরক মুক্ত।
111.ঈমান হতে হবে ঘোষণার বাস্তবায়ন।
ঈমান হলো একটি ঘোষণা যা আমরা কালেমা তইয়্যেবার মাধ্যমে দিয়ে থাকি।
কালিমা তাইয়্যিবা “লা–ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ”।
অর্থাৎ “আল্লাহ ছাড়া আর কেউ সার্বভৌমত্বের মালিক নয়, হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর রাসূল”।
এই কালেমার দুইটি অংশ আছে–
১। “লা–ইলাহা ইল্লাল্লাহু”
২। “মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ”
উপরোক্ত দুইটি দিককে :
১। গ্রহন করা– মানিয়া লওয়া
২। এলমী দিক– আমলি দিক।
কালেমা তাইয়্যেবার প্রথম অংশের অর্থ–
1.আরবি ভাষায় ইলাহ শব্দের অর্থ হচ্ছে–ইবাদতের যোগ্য। শ্রেষ্ঠত্ব, গৌরব মহত্বে সে সত্তা উপাসনার যোগ্য। বন্দেগী ও ইবাদতের যার সামনে মাথা নত করা যায়।
11.ইলাহ শব্দের অর্থ তিনি হবেন অনন্ত শক্তির অধিকারী, যে শক্তির উপলিব্দি মানুষের জ্ঞান–বুদ্ধির সীমানা অতিক্রম করে যায়।
111.ইলাহ শব্দের অর্থ আইনদাতা, হুকুমদাত। জীবনের সকল ক্ষেত্রে তার মুখাপেক্ষী হবে। তাঁর কাছেই সাহায্য ভিক্ষা করতে হবে।
কালেমার প্রথম অংশকে দুইভাবে ভাগ করা যায়–
১। প্রথমভাগ হচ্ছে “নিতিবাচক” বা ‘তাত্বিক’ দিক না বোধক অর্থে অর্থাৎ কোন মাবুদ নেই, প্রভু নেই, সৃষ্টিকর্তা নেই, আমি কাউকে মানিনা। কারো দয়া অনুগ্রহ সাহয্য আমি চাইনা। কাউকেও উচ্চতর ক্ষমতার অধিকারী স্বীকার করি না। কারো ইবাদত বন্দেগী করিনা, কারো সাথে আমার কোন সর্ম্পক নেই।
২। আর দ্বিতীয় দিকে হচ্ছে ‘ আস্থা বাচক’ বা ‘বাস্তবিক দিক’ হাঁ বাচক অর্থে অর্থাৎ এসব দিক দিযে আমি একমাত্র আল্লাহকেই স্বীকার করি ও মানি।
কালেমা তাইয়েবার দ্বিতীয় অংশের অর্থ :
লাইলাহা ইল্লাল্লাহু বলার পর মুহাম্মদ (সাঃ) এর মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার রিসালত বা শরীয়ত মানুষের কাছে পাঠিয়েছেন। একথা স্বীকার করি। আল্লাহকে নিজেদের মনিব মালিক বাদশাহ স্বীকার কার পর একথা অবগত হওয়া একান্ত দরকার যে, সেই বাদশাহর আইন ও হুকুম কী ? আমরা কোন কাজ করলে আল্লাহ খুশি হবেন আরব কোন কাজ করলে আল্লাহ নারাজ হবেন। কোন আইন অনুসরণ করলে তিনি আমাদের ক্ষমা করবেন, আর কোন আইনের বিরোধিতা করলে তিনি আমাদের শাস্তি দিবেন। এসব জানার জন্য আল্লাহতায়ালা হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে তার নবী হিসেবে মনোনীত করেছেন। তাঁর মাধ্যমে তিনি আমাদের প্রতি তার কিতার (আলা কুরআন) নাযিল করেছেন। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর হুকুমমত কিরুপে জীবন যাপন করতে হয় তা বাস্তব ক্ষেত্রে দেখিয়ে গেছেন। কাজেই আমরা যকন বলি “ মুহাম্মদুর রাসূলূল্লাহ” তখন এ দ্বারা একথাই স্বীকার করা হয় যে, যে আইন যে নিয়মে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) জীবন যাপন করতে বলেছেন সেই নিয়মেই আমার অনুসরণ করে চলবো। আর সে আইন এর বিপরীত হলে তাকে অমান্য করব।
1.তাই সকল অবস্থাতেই আল্লাহর আইন মেনে চলা আমাদের একান্ত কর্তব্য।
11.শুধু মেনে চললে দায়িত্ব শেষ হবে না। আল্লাহর আইন জারী না থাকলে আমাদের তা জারী করার জন্য চেষ্টা করতে হবে।
111.আর এই চেষ্টা করাটাই ফরয।
ঈমানদারকে পুনরায় ঈমান আনতে বলার তাৎপর্য :
মুখে মুখে শুধু ঈমাননের দাবীকেই যথেষ্ট মনে কার ঠিক হবে না, বরং ঈমানের উপর টিকে থাকার জন্য সকল প্রকার ত্যাগ ও কুরবানীর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। আখেরাতের কঠিন আযাব থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সুখময় জান্নাত পাওয়ার জন্য যে ব্যবসার কথা আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করেছেন তার মূল পুঁিজ হলো ঈমান ও জিহাদ। দুর্বল ঈমান নিয়ে আল্লাহর ঘোষিত ব্যবসা করা কোন মুসলমানের পক্ষেই সম্ভব নয়। তাই আল্লাহ তায়ালা ঈমানদার লোকদেরকে জিহাদের ডাকে সাড়া দেয়ার জন্য প্রথমেই “ত’ুমিনুনা বিল্লাহি ওয়ারাসূলিহি” বলে মযবুত ঈমান আনার শর্ত আরোপ করেছেন। আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য বর্তমান কালে ইসলামী আন্দোলনই এই জেহাদের একটি স্তর।
মযবুত ঈমানের প্রধান শর্ত দুটো :
১। শিরকমুক্ত ঈমান বা নির্ভেজাল তাওহীদ।
২। ইমানের দাবিদারকে তাগুতের কাফির হতে হবে।
সুতারং মযবুত ঈমানের অধিকারীকে
১) তাওহীদ
২) শিরক ও
৩) তাগুত সর্ম্পকে সুষ্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে ।
১। তাওহীদ :
তাওহীদ শব্দের অর্থ হলো অদ্বিতীয়তাবাদ। অদ্বিতীয় মানে যার কোন সমকক্ষ নেই, এমনকি যার সাথে তুলনা করার মতোও কেউ নেই।
২। শিরক :
শিরক শব্দটির অর্থ হলো শরীক করা। যারা শিরক করে তারা আল্লাহকে অস্বীকার করে না। তারা আল্লাহকে বিশ্বাস করে বটে, কিন্তু আল্লাহর সাথে অন্যান্য সত্তা বা শক্তিকে বিভিন্নভাবে শরীক করে। আল্লাহর সাথে কী কী ভাবে শরীক করা হয় তা বুঝতে হলে শিরক সর্ম্পকে ধারনা থাকতে হবে তাহলেই শিরক থেকে বেচেঁ থাকাও সজহ হবে।
ক) শিরকুন ফিয–যাত অর্থাৎ আল্লাহর সত্তা
খ) শিরকুন ফিস–সিফাত অর্থাৎ আল্লাহর গুনাবলি
গ) শিরকুন ফিল এখতিয়ারাত অর্থাৎ আল্লাহর ক্ষমতা
ঘ) শিরকুন ফিল হুকুক অর্থাৎ আল্লাহর অধিকার
তাওহীদকে বুঝতে হলে শিরককে বুঝতে হবে। শিরকের বিপরীতই তাওহীদ। ঈমান শিরকমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত তাওহীদের দাবী পূরণ হতে পারে না।
শিরকুন ফিয–যাতের উদাহরণ :
আল্লাহর সত্তাকে শরীক করা যেমন কাউকে আল্লাহর পুত্র, স্ত্রী মনে করা। ফেরেশতা, দেব–দেবী ইত্যাদিকে আল্লাহর বংশধর বলে বিশ্বাস করা।
শিরকুন ফিস সিফকাতের উদাহরণ :
যে সব গুন একান্তই আল্লাহর সে সবগুন কারোর মধ্যে আছে বলে বিশ্বাস করা শিরক। আল্লাহ ছাড়া কাউকে সকল রকম দুর্বলতা ও দোষক্রটি থেকে পাক মনে করা। যেমন-গায়েবী ইলম বা অদৃশ্য সর্ম্পকে জ্ঞান। কারো সর্ম্পকে এমন ধারণা করা যে, তিনি সবকিছু জানেন, দেখেন বা শুনেন এবং সব দোষ ত্রুটি থেকে মুক্ত।
শিরকুন ফিল এখতিয়ারাতের উদারহণ :
আলৌকিকভাবে উপকার বা ক্ষতি করার ক্ষমতা, প্রয়োজন পূরণ ও হেফাযত করার যোগ্যতা, মানুষের ভাগ্য গড়া ও ভাঙ্গা, দোয়া করা, মানব জীবনের জন্য আইন কানুন রচনা করা, সন্তান দান করা, রোগ ভাল করা, গুনাহ মাফ করা, হায়াত ও মওত দেয়া, রিযক দান করা ইত্যদি।
শিরকুন ফিল হুকুকের উদাহরণ :
কাউকে রুকু, সিজদা ও পূঁজা পাওয়ার অধিকারী বা হাত বেঁধে নত হয়ে দাড়িয়ে ভক্তি করার পাত্র মনে করা, কারো আস্তানাকে চুমু দেয়ার যোগ্য মনে করা, কুরবানী ক, নযর, নিয়য, মানত পেশ করার যোগ্য মনে করা। নিয়ামতের শুকরিয়া পাওয়ার অধিকারী বা আপদে বিপদে সাহায্যের জন্য আবেদন গ্রহনের যোগ্য, সব অবস্থায় যাকে ভয় করা যায় বা যার জন্য আর সব মহ্বত ত্যাগ করা যায় বলে মনে করা।
৩। তাগুতঃ
তাগুত শব্দের অর্থ সীমা লঙ্ঘন কারী। আল্লাহর নাফরমানীর দুটো সীমা রয়েছে–
ক) প্রাথমিক সীমা হলো পিসক
খ) আর চূড়ান্ত ও শেষ সীমা হচ্ছে কুফর
যে আল্লাহর হুকুম স্বীকার করে বটে কিন্তু পালন করে না সে ফাসিক। আর যে আল্লাহর হুকুমকে স্বীকারই করেনা সে কাফির। যে নাফরমানীর এ দুটো সীমা লঙ্ঘন করে সেই তাগুত।
১। যে নিজে কাসেক এবং অন্য মানুষকেও ফাসেক বানাবার চেষ্টা করে সেই তাগুত। সে নাফরমানীর প্রাথমিকম সীমা লঙ্ঘন করলো।
২। যে নিজে কাফির এবং অন্যকেও কাফির বানাবার চেষ্টা করে সে তাগুত। সে আল্লাহর নাফরমানীর শেষ সীমাও লঙ্ঘন করলো।
কোনআনের অসংখ্য জায়গায় ঈমান সর্ম্পকে আলোচনা করা হয়েছে। আলোচনায় পাঁচটি বিষয়ের উপর ঈমান আনার জন্য বলেছেন।
১। আল্লাহর প্রতি ঈমান
২। ফেরেশতার প্রতি ঈমান
৩। আল্লাহর অবর্তীণ কিতাব সমূহের প্রতি ঈমান
৪। নবী ও রাসূলগণের প্রতি ঈমান
৫। পরকালের প্রতি ঈমান
হাদীসেও ঈমান সর্ম্পকে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আলোচনায় ৭টি বিষয়ের উপর ঈমান আনার জন্য বলা হয়েছে।
“আমানতুবিল্লাহি ওয়ামালাইকাতিহি, ওয়াকুতুবিহি, ওয়ারাসুলিহি,ওয়াল ইয়াওমিল আখিরি, ওয়াল ক্কাদরি খাইরিহি, ওয়াশাররিহি মিনাল্লাহি তাআলা ওয়াল বা’ছি বা’দাল মাউতি”। অর্থাৎ আমি নিম্ম বিষয় সমুহের প্রতি ঈমান আনলাম : ১) আল্লাহ, ২) তার ফেরেস্তাগন, ৩) তাঁর কিতবাসমুহ, ৪) তাঁর রাসূলগন, ৫) শেষদিন (পরকাল), ৬) তাকদীরের ভাল ওমন্দ আল্লাহর পক্ষ থেকেই হয় এবং ৭) মৃত্যুর পর পুনরুজ্জীবন।
ঈমানের প্রধান বিষয় তিনটি :
১। তাওহীদ
২। রিসালত
৩। আখেরাত
১। তাওহীদ :
তাওহীদ মানে একত্ববাদ, অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালাকে এক বলে জানা ও এক বলে স্বীকার করা। আল্লাহ তায়ালঅ তাঁর অস্তিত্ব ও গুনাবলীতে সম্পূর্ণ এক ও একক । তার সত্ত্বা একক ও অনন্য কারো সাথে তার কোন আতœীয়তা নেই। নেই কারো সাথে তাঁর কোন রক্তের বন্ধন। তাঁর বিশাল খোদায়ীত্বে কারো সামন্যতম অংশীদারিত্ব নেই। তাঁর উপর প্রভাব খাঁটাতে পারে এমন কোন শক্তি নেই।
২। রিসালত :
নবী–রাসূলের প্রতি ঈমান ঈমানিয়াতের মৌলিক অংগ। “নবুয়্যত” শব্দের অভিধানিক অর্থ হচ্ছে সংবাদ বাহন করা আর নবী অর্থ সংবাদ বাহক। রিসালত শব্দের অর্থ বাণী বহন করা আর রাসুল শব্দের অর্থ বাণী বাহক। মর্মগত দিক থেকে দু’টি শব্দের মধ্যে তফাত নেই। ইসলামের পরিভাষায় নবী বা রাসূল বলা হয় তাঁদেরকে, যারা আল্লাহর বাণী তাঁর বান্দাহদের কাছে পৌছে দেন এবং আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী তাদের সৎপথে চালিত করেন। সৎ পথে চলার সুপরিনামের সুসংবাদ দেন। অসৎ পথে চলার ভয়াবহ পরিনামের ভয় প্রদর্শন করেন এবং মানুষকে অজ্ঞতার অন্ধকার থেকে সত্য ও জ্ঞানের আলোকে উজ্জ্বলতায় বের করে নিয়ে আসেন। এ জন্যে নবীকে কোরআনে ‘হাদী’(পথ প্রর্দশক) বাশীর (সুসংব্দাদাত) নাযীর (ভয় প্রর্দশনকারী) ও সিরাজাম মুনীরা (উজ্জ্বল প্রদীপ) ইত্যাদি নামে আখ্যায়িত কর হয়েছে।
৩। আখেরাত :
আখেরাত হচ্ছে মৃত্যুর পরবর্তী জীবন। বাংলায ‘পরকাল’ ও ‘পরজীবন’ ও বলা হয়। মৃত্যুর পর থেকে এ জীবন শুরু হয়ে আর শেষ হয় না। অনন্তকাল এ জীবন চলতে থাকবে। সে জীবনে আর কারুর মৃত্যু ঘটবে না। পরকাল সর্ম্পকে কোরআন যে ধারণা পেশ করেছে, তার সংক্ষিপ্ত নমুনা হচ্ছে এই যে–
ক) মৃত্যুর পর সমস্ত মানুষ একটা বিশেষ স্থানে নিদির্ষ্ট সময়ের জন্যে অবস্থান করবে–এটাকে বলা হয় আলমে ‘বরযখ”।
খ) একদিন নিখিল বিশ্ব ধ্বংশ করে দেয়া হবে। কোরআনে এটাকে ‘সায়াত’ ও কিয়ামত বলা হয়েছে।
গ) এ ধ্বংশের পর পরই দুনিয়ার প্রথম থেকে শেষ পর্যন্তকার সকল মানুষকে একস্থানে পুনরুঙ্খিত করা হবে। এটাকে বলা হয় হাশর।
ঘ) এ স্থানে আল্লাহ মানুষের পাপ পূণ্যের হিসাব নেবেন।
ঙ) হিসাবের পর পাপীদের জাহান্নামে এবং নেককারদের জান্নাতে পাঠানো হবে।
চ) জাহান্নাম কঠিন শাস্তির জায়গা।
ছ) জান্নাত পরম সুখের স্থান।
১। তাওহিদের মধ্যে শমিল রয়েছে তিনটি :
ক) আল্লাহ
খ) ফেরেস্তাগন
গ) তাকদীর
ঈমান বিল্লাহ বা আল্লাহর প্রতি ঈমান :
আল্লাহর প্রতি ঈমান হচ্ছে বুনিয়াদী ঈমান। বাকী আর যতো ঈমান ও প্রত্যয় আছে তা ঐ একই মুল কান্ডের শাখা প্রশাখা মাত্র। তাই প্রত্যেক মুসলিমকেই ঈমান বিল্লাহর বিস্তৃতি ও সুষ্পষ্ট ধারণা নিজ অন্তরে বদ্ধমুল করে নিতে হবে।
ঈমান বিল্লাহর তাৎপর্য :
আল্লাহর প্রতি ঈমান আনার তাৎপর্য এই যে, মানুষকে আল্লাহর অসিত্ব; তাঁর গুনরাজি, তাঁর অধিকার, তাঁর ক্ষমতা ও তাঁর একত্ব সর্ম্পকে সিঠক ও স্বচ্ছ জ্ঞান লাভ করতে হবে। এগুলোর উপর পূর্ণ প্রত্যয় লাভ করতে হবে। এগুলোর প্রতি মৌখিক স্বীকৃতি, আন্তরিক বিশ্বাস ও প্রত্যয় এবং বাস্তব কর্মে এগুলোর প্রতিফলন ঘটাতে হবে। এইভাবেই আল্লাহর প্রতি পূর্ণ ঈমান আনতে হবে।
ক) ঈমান বিয–যাত (আল্লাহর অস্তিতের উপর ঈমান)
খ) ঈমান বিস–সিফাত (আল্লাহর গুনরাজির উপর ঈমান)
গ) ঈমান বিল হুকুক (আল্লাহর ক্ষমতার উপর ঈমান)
ঘ) ঈমান বির ইখতিয়াত (আল্লাহর অধিকারে উপর ঈমান)
ক) ঈমান বিয–যাত (আল্লাহর অস্তিতের উপর ঈমান) :
অর্থাৎ আল্লাহর অসিত্বে বিশ্বাস স্থাপন করা। এই বিশ্ব–জাহান এর সৃষ্টি, এর সুনিয়ন্ত্রিত বিধি সম্মত ব্যবস্থাপনা, হাওয়ার গতি, বৃষ্টির আগমন, দিন–রাতের আবর্তণ, চাঁদ সূর্য, গ্রহ–উপগ্রহের গতিশীলত, ঋতুর পরিবর্তন, বীজ থেকে বৃক্ষের জম্ম, অনু–পরমানু মহা শক্তি ইত্যাদিতে আল্লাহর অস্তিত্বে পূর্ণ আস্থা ও প্রত্যয় লাভ। প্রত্যেক মুসলিমকেই পরিপূর্ণ প্রশান্তি ও প্রত্যয় সহকারে আল্লাহর অস্তিত্বে আস্থা স্থাপন করতে হবে। বস্তুত এটাই ঈমানের বীজ। এখান থেকে ঈমানিয়াতের যাত্রা শুর হয়। এখান থেকে গজিয়া উটবে ঈমানের মূল কান্ড ও শাখা প্রশাখা।
খ) ঈমান বিস সিফাত (আল্লাহ গুণরাজির উপর ঈমান) :
সিফাত মানে গুণরাজি। প্রত্যেক মুসলিমকে আল্লাহর গুণরাজির উপর পরিপূর্ণ ঈমান আনতে হবে। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় আমাদের সমাজে আল্লাহর গুণরাজি সম্পর্কে ওয়াকিবহল লোক খুব কমই আছেন। অনেকে আবার আল্লাহর গুণবাচক নামগুলো শুধু আরবীতেই জানেন। কিন্তু এগুলোর মর্ম ও তাৎপর্য় সম্পর্কে কোন ধারণাই রাখে না। এ জন্যে প্রত্যেক মুসলিমকে অবশ্য অবশ্যই আল্লাহর গুণাবলী ও বৈশিষ্টসমূহ জানতে হবে। আল্লাহ তায়ালার গুণাবলরি স্বচ্ছ ও সুস্পষ্ট ধারণা মগজে বদ্ধমূল করতে হবে। সেই হিসাবে নিজের আকীদা–বিশ্বাস ও মন–মানসিকতা তৈরী করতে হবে এবং আলোকে নিজ আচার আচরণ চরিত্র ও পরিবেশ তৈরী করতে হবে।
বস্তুত: চিরকাল আছেন চিরদিন থাকবেন, তিনি বেনিয়াজ, পরমুখাপেক্ষীহীন, আত্মনির্ভরশীল ও চিরঞ্জীব। তিনি সার্বভৌমত্তের মালিক, একচ্ছত্র শাসক ও সর্বোচ্ছ ক্ষমতাবান। তাঁ জ্ঞান সর্বত্র সর্বব্যাপী, তাঁর রহমত ও অনুগ্রহ সবার জন্য প্রসারিত। তাঁর শক্তি সকলের উপর বিজয়ী। তাঁর হিকমাত ও বুদ্ধিমত্তার কোন ত্রুটি–বিচ্যুতি নেই। তার আদল–ইনসাফে যুলুমের লেশমাত্র নেই। তিনি জীবনদাতা এবং জীবন ধারণের জন্যে প্রয়োজনীয় উপকরণাদির সরবরাহকারী। তিনি ভালমন্দ ও লাভ–ক্ষতির তার শক্তির অধিকারী। তাঁর অনুগ্রহ ও হিফাজতের সবাই মুখাপেক্ষী। সকল সৃষ্ট বস্তু তাঁর দিকেই প্রত্যাবর্তনশীল। তিনি সবার হিসাব গ্রহণকারী। শাস্তিও পুরস্কার দানের অধিকার তাঁরই এবং তাঁর সকল গুণাবলী সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা ও আন্তরিক প্রত্যয় যদি আজকের মুসলিম সমাজের থাকতো তাহলে মুসলমানদের এ বিপর্যয় কোনো অবস্থাতেই ঘটতো না।
গ) ঈমান বিল হুকুক (আল্লাহর ক্ষমতার ঈমান :
বান্দাহর উপর আল্লাহর কি কি অধিকার রয়েছে সেগুলো জানা ও সেগুলোর প্রতি আন্তরিক বিশ্বাস স্থাপন করাই হচ্ছে ঈমান বিল ‘হুকুক’। প্রত্যেক ব্যক্তিকেই জানতে হবে আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী জীবন যাপন করার সঠিক পন্থা কি? তাকে আরো জানতে হবে কি কি জিনিস আল্লাহ পছন্দ করেন। যা তাকে পালন করতে হবে এবং কি কি জিনিস আল্লাহ অপছন্দ করে যা থেকে তাকে বিরত থাকতে হবে। এ উদ্দেশ্যে খোদায়ী আইন ও বিধানের সাথে পরিপূর্ণ পরিচয় করতে হবে। আল্লাহর গুণবাচক নামসমুহের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি এসব নামের মধ্যে কি কি দাবী ও অধিকার রয়েছে বান্দাহর উপর।
বস্তুৃত মানুষের উপর আল্লাহর প্রধানতম হক হচ্ছে এই যে, মানুষ উলুহিয়াত (খোদায়ত্ব ও সার্বভৌমত্ব)কে নিরঙ্কুশভাবে আল্লাহর জন্য ঘোষণা দেবে এবং এ ব্যাপারে কখনো কোনো অবস্থাতেই অন্য কাউকেও তাঁর সাথে শরীক করবে না, শুধু ঘোষণা দিলেই চলবে না। এ হতে হবে তার আন্তরিক প্রত্যয় ও ঈমান এবং তার বাস্তব (জীবনে) যিন্দিগীতে বাস্তবভাবে রূপায়িত হতে হবে।
এ আলোচনার সার সংক্ষেপ হচ্ছে এই যে, মানুষের উপর আল্লাহর অধিকার (১) ইবাদত (২) খিলাফতের দায়িত্ব পালন করা। অথবা কথাটা এ ভাবে বলা যায় যে, আল্লাহ, তায়ালার সমস্ত হুকুম পালন করাই হচ্ছে মানুষের উপর আল্লাহর অধিকার আর এটাই হচ্ছে মানুষের সঠিক মর্যাদা।
ঘ) ঈমান বিল ইখতিয়াত (আল্লাহর অধিকারের উপর ঈমান :
অর্থাৎ আল্লাহ শক্তি ও ক্ষমতার উপর পূর্ণ ঈমান ও আস্থা পোষণ করা। প্রত্যেক ব্যক্তিকেই ঈমান রাখতে হবে যে, আল্লাহর তায়ালার শক্তি ও ক্ষমতার বাইরে কিছুই নেই। তাঁর শক্তি ও ক্ষমতা সর্বত্র কার্যকর। মানুষকে জানতে হবে আল্লাহর ইচ্ছার বিরুদ্ধে চলার পরিণতি কি? রুকু ও সেজদা করা, হাত বেঁধে নত হওয়া, ভক্তি শ্রদ্ধা দেখানো, পশু কুরবাণী করা, আপদে বিপদে কাতর ভরে দোয়া করা, দয়া ও অনুগ্রহ পাওয়ার অধিকার, কোন কিছু দান করা ইত্যাদি একমাত্র আল্লাহর প্রাপ্য বা হক।
খ) ফেরেশতাগণ :
ফেরেশতারা আল্লাহর কর্মচারী, তাঁরা ভালো ও মন্দ সম্পর্কে জানেন। কিন্তু তাঁরা সব সময়ই আল্লাহর হুকুম পালন করেন। তাঁরা কখনও আল্লাহর ইচ্ছার বিরুদ্ধে চলেন না। আল্লাহর কোনো গুণের সাথেই তাঁরা কোনো দিক দিয়ে শরীক নন। তাঁরা শুধুই কর্মচারী। আল্লাহ তায়ালা তাঁর বিশাল সৃষ্টি জগত পরিচালনার কাজে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করার জন্য তাদের সৃষ্টি করেছেন। তারা নারী বা পুরুষ নয়। তাদের ক্ষুধা, তৃষ্ণা, ঘুম–নিদ্রা ও কামনা বাসনা নেই। তাদের আকৃতি ও সংখ্যা মানুষকে জানানো হয়নি। তারা শুধু আল্লাহর নির্দেশ পালন এবং তাঁর গুণগান বর্ণনায় নিয়োজিত রয়েছে। ফেরেশতাদের সম্পর্কে কুরআনের ধারণা এটাই। অসংখ্য ফেরেশতা রয়েছে এর মধ্যে হাদীসে চার জন বড় ফেরেশতা নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
ক) হযরত জিব্রাইল (আঃ)
খ) হযরত মীকাঈল (আঃ)
গ) হযরত ইস্রাফিল (আঃ)
ঘ) হযরত আজরাঈল (আঃ)
গ) তাকদীর :
এ শব্দটির অর্থ হলো যা নির্ধারিত হয়ে আছে। এ কথা বিশ্বাস করতে হবে যে, দুনিয়ায় তাই ঘটে যা আল্লাহ ঠিক করে রেখেছেন। ভালো ও মন্দ যা–ই ঘটে আল্লাহর ফায়সালামতেই ঘটে থাকে। তাঁর ইচ্ছা ছাড়া গাছের পাতাও নড়ে না। তাকদীর সম্পর্কে ধারণা স্পষ্ট হওয়া ঈমানের জন্য খুবই জরুরী। দুটো কথা বুঝে নিলেই এ বিষয়ে কোনো অষ্পষ্টতা থাকবে না।
ক) আল্লাহ তাআলা মানুষকে কোনো কাজ সমাধা করার ক্ষমতা দেননি। মানুষ কোন কাজের জন্য ইচ্ছা ও চেষ্টা করতে পারে মাত্র। কাজটি পুরা হওয়া আল্লাহর ইচ্ছার উপর নির্ভর করে। যদি তাকদীরে থাকে তাহলে সমাধা হবে। তাকদীরে না থাকলে কাজটা সম্পন্ন হবে না।
খ) কোনো কাজের শুধু ইচ্ছা ও চেষ্টা করার ক্ষমতাই মানুষকে দেয়া হয়েছে। তাই যদি মানুষ কোনো ভালো কাজের ইচ্ছা ও চেষ্টা করে তাহলে কাজটা সমাধা না হলেও সে কাজটা পুরা করেছে বলে পুরষ্কার পাবে। তেমনিভাবে যদি কোনো খারাপ কাজের ইচ্ছা চেষ্টা করে তাহলে কাজটা পুরা না হলেও সে শাস্তি পাবে। কাজটা সমাধা করার ক্ষমতা তো মানুষকে দেওয়াই হয়নি। যেটুকু ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে এ ভিত্তিতেই পুরষ্কার বা শাস্তি পাবে।
২। রিসালতের মধ্যে শামিল রয়েছে দুইটি :
ক) কিতাবসমূহ
খ) রাসূলগণ
ক) কিতাবসমূহ :
রাসূলগণের নিকট ওহীর মাধ্যমে আল্লাহ কিতাব নাযিল করেছেন। শেষ রাসূলের নিকট কুরআন নাযিল করা হয়েছে। পূর্বে কিতাবগুলোর কোনোটাই আসল অবস্থায় নেই। আল্লাহ তাআলা কুরআনকে কিয়ামত পর্যন্ত আসল যে সব কওম ও জনপদে নবী এসেছিলেন যে, সে সবগুলোরই নাম কুরআনে উল্লেখ্য হয়নি। মাত্র কয়টির নামই উল্লেখ হয়েছে। যেমন : ইরাক, ফিলিস্তিন, জর্ডান, মক্কা, মিসর, আদ জাতি, সামুদ জাতি, মাদায়েনবাসী, বনী ইসরাঈল ইত্যাদি।
মোট কথা যে সব নবীর নাম কুরআনে উল্লেখ করা হয়েছে তাঁদের প্রত্যেকের প্রতি বিশেষভাবে এবং যাদের নাম কুরআনে উল্লেখ করা হয়নি তাদের প্রতি সাধারণভাবে প্রত্যেক মুসলিমকে ঈমান রাখতে হবে।
অবস্থায় হেফাযত করার দায়িত্ব নিয়েছেন। আমাদেরকে হুকুম করা হয়েছে; যেন আমরা একমাত্র কুরআনকে মেনে চলি। কিন্তু আমাদেরকে বিশ্বাস করতে হবে যে, আল্লাহ সকল নবী ও রাসূরে কাছেই ওহী পাঠিয়েছেন। কিতাবের ভাষা ও অর্থ কোনটাতেই পয়গম্বরগণের নিজস্ব বুদ্ধি ও চিন্তা এবং ইচ্ছা ও আকাংখার বিন্দুমাত্র সংমিশ্রণ থাকে না। কিতাব হচ্ছে নিরেট ও বিশুদ্ধ খোদায়ী কালাম। প্রত্যেক নবী নিজে যে ভাষায় কথা বলতেন তাঁর নিকট সে ভাষায় কিতাব নাযিল হয়েছে। কিতাব নাযিল হয়েছে মানুষের হেদায়েতের জন্য। অর্থাৎ মানুষের জীবন বিধান হিসেবে। কুরআন হচ্ছে আল্লাহর বিধান। সে কারণে কুরআনের কোনো বিধানকে অমান্য করার অর্থ দাঁড়ায় আল্লাহকে অমান্য করা। আল কুরআনে যে কয়েকটি কিতাবের কথা উল্লেখ করা হয়েছে তা হলো।
ক) তাওরাত : হযরত মুসা (আঃ)
খ) যবুর : হযরত দাউদ (আঃ)
গ) ইঞ্জিল : ইসা (আঃ)
ঘ) কুরআন : হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)
খ) রাসূলগণ :
একথা বিশ্বাস করতে হবে যে, আল্লাহ যুগে যুগে অসংখ্য নবী ও রাসূল পাঠিয়েছেন। তবে একমাত্র শেষ নবীকেই মেনে চলতে হবে। প্রত্যেক জাতির মধ্যে নবী ছিলেন। কুরআনের ভাষণ অনুযায়ী দুনিয়ার এমন কোনো জনপদ নেই যেখানে নবী প্রেরিত হননি। এমন কোনো জাতি নেই যাদের মধ্যে নবীর আবির্ভাব ঘটেনি। কুরআনে সকল নবীর নাম উল্লেখ করা হয়নি। কয়েক জনের নামই উল্লেখ হয়েছে।

৩। আর আখেরাতের মধ্যে শামিল রয়েছে দুইটি :
ক) শেষ দিন
খ) মৃত্যুর পর পুনরুজ্জীবন
ক) শেষ দিন :
যে দিন সব মানুষকে হাশরের ময়দানে একত্র করা হবে, সে দিনকেই আখিরাতের দিন বলা হয়েছে। সেখানে সব মানুষের বিচার হবে এবং ফয়সালা হবে যে, কে বেহেশতে যাবে, আর কে দোযখে যাবে।
খ) মৃত্যুর পর পুনরুজ্জীবন :
মানুষের শরীরটা শুধু মরে। আসল মানুষ রূহ মরে না। কিয়ামতের পর সব মানুষকে হাশরের ময়দানে জমা করা হবে। দুনিয়ার কাজের হিসাব নেয়ার হবে এবং বিচারের পর বেহেশ কিংবা দোযখে পাঠিয়ে দেওয়া
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুন, ২০২১ দুপুর ১:০৪
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০



'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×