somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাজনৈতিক ফেসবুকঃ সস্তা হিপোক্রেসি

০৭ ই মে, ২০১৩ রাত ৩:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মাঝে মাঝে অনেক ফেসবুক ফ্রেন্ডের কোন স্ট্যাটাস আপডেট
দেখিনা। হয়ত ফেসবুকে আসলেও কিছু আপডেট দেয় না। আমার একটি স্বভাব আমি কাউকে তেমন নিজ থেকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাই না। নিজ থেকে তাদেরই ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাই যারা আমার ব্যক্তিগত ভাবে পরিচিত। পুরনো বন্ধু, অনেকদিন পর হঠাত দেখা হয়ে গেলে তখন নাম্বার বিনিময়ের সাথে ফেসবুক আইডিও বিনিময় হয়। সে সূত্রে একান্ত ঘণিষ্টজনদেরই আমি নিজ থেকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাই। আমি কোন ফেসবুক সেলিব্রিটি নই। রাজনৈতিক একটা দর্শন লালন করি। কিন্তু সে দর্শন রক্ষার জন্য জীবন দেয়ার মত ফিদা নই। আমার কাছে আমিই মূল্যবান। ব্যক্তি আমিই আমার কাছে বেশি প্রাধান্য পায়। ফেসবুক ইউজ করছি সেই ২০০৫ থেকে । এখন যে আইডি টা ব্যবহার করি সেটা খুলি ২০০৭ এ। তার মানে প্রায় ৭ বছরের ও অধিক সময় ফেসবুকে আছি।

এই দীর্ঘ সময়ে ২০১১ সাল পর্যন্ত আমার হোম পেইজে (নিউজ ফিডে) কোন রাজনৈতিক দলের সমর্থন কারী পেইজের কিংবা কোন ফেসবুক ফ্রেন্ডের স্ট্যাটাস আপডেটের কোথাও রাজনীতি সম্পর্কিত কোন স্টাটাস দেখিনি। ফেসবুক ছিল নির্মল ব্যাক্তিগত অনুভূতি শেয়ারের জায়গা । ছবি আপলোড, স্ট্যাটাস দেয়া , ইনবক্সে চ্যাট , ম্যাসেজ এসবেই ফেসবুক সীমাবদ্ধ ছিল আমার। মাঝে মাঝে ফটোগ্রাফীর কিছু গ্রুপের স্টাটাস , ছবি এসব নিয়েই ভালোই কাটিয়েছি ৬ বছরের ফেসবুক জীবন। এর পর হঠাত উল্কাপাতের মত ফেসবুকে আভির্ভূত হল ''পেইজ'' নামক ফ্ল্যাডিংয়ের বন্যা। ১৮+ পুদিনা পাতা, কচু পাতার পানি হাবি জাবি কত কিছু নিয়ে ''পেইজ '' এল ফেসবুকে। আমার কোন এক ফ্রেন্ডের এক্টিভিটিতেই এই পেইজ নামক জিনিসটি আবিষ্কার করি। মাই ব্যাড, একটিতে লাইক দেই। ব্যাস সেই শুরু। পেইজের স্টাটাসের ভিড়ে আমার পুরনো ফেসবুককে মিস করতে শুরু করি। লাইক জিনিসটাও আগে ছিল না। প্রথমে ছবির এলবাম, ছবি তে লাইক দেয়ার অপশন শুরু হয়। এর পরে ফেসবুকের অলি গলি যেখানেই যাই সেখানেই ''লাইক'' সাইনবোর্ড টা দেখি।

২০১২ এর মাঝা মাঝি থেকে সামু ব্লগে লেখালেখি শুরু করি।। বেশ ভালোই লাগত ব্লগিং । একদিন সামুর কোন এক পোস্টে একটি ফেসবুক লিঙ্ক পাই। ওই লিঙ্কে গিয়ে দেখি একটি ফেসবুক গ্রুপ ব্লগারদের। জয়েন দেই। সেদিনই আমি আমার সত্ত্বাকে সজ্ঞানে আত্মহত্যা করতে পাঠিয়েছি্লাম , যখন বুঝলাম তখন অনেক দেরী হয়ে গেছে। আমার মুভি নিয়ে লেখা গুলো অনেকের পছন্দ হওয়ায় অনেক ব্লগার আমাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠায়। একসেপ্ট করি। ফেসবুকে আমি যে গন্ডিতে প্রায় ৭ বছর কাটিয়েছি তার বাইরে যে একটি সম্পূর্ণ ''রাজনৈতিক ফেসবুক'' আছে সেটা ওই ব্লগারদের গ্রুপে জয়েন করেই জানলাম। কোন ব্যক্তি সারা জীবন পাহাড়ে কাটিয়ে হঠাত সমুদ্র দেখলে তার যে বিচিত্র অনুভূতি হয়, আমারো ঠিক একই অনুভূতি হয়েছে ব্লগ এবং ্রাজনীতি কেন্দ্রিক ফেসবুকে প্রবেশের পর। এর পর থেকে অনেক ব্লগার এবং রাজনীতি সংশ্লিষ্ট গ্রুপ থেকে অনেকের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাই। এদের মাধ্যমেই আমার ফ্রেন্ড লিস্টে এখন প্রায় ৩০/ ৪০ জনের মত ব্লগ এবং রাজনীতি রিলেটেড ফ্রেন্ড আছে। ২০১২ থেকেই ফেসবুক খুললেই প্রতিদিনই হোম পেইজ ভর্তি থাকে রাজনৈতিক পোস্টে। মনে হয় একটা সংবাদ পত্রের অনলাইন এডিশন পড়ছি। স্টাটাস বলেন কিংবা ছবি সব খানেই রাজনীতি সংশ্লিষ্ট বিষয়। আমাদের কি নিজেদের জগত বলতে কিছুই নেই। অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে আমার ফ্রেন্ড ওই সময় হয়ত অনেক কম ছিল তাই ফেসবুকের এই ভার্সনটা আমার জানার বাইরে ছিল। অনেস্টলি সেইং আমার ওই সময় আই মিন ফেসবুকের এই রাজনৈতিক এবং ব্লগীয় ভার্সনে প্রবেশের আগে ৪০০ জন ছিল ফ্রেন্ড লিস্টে। এখন কথা হলো আমি নাহয় ফেসবুকের এই ভার্সনে পরে প্রবেশ করেছি, ফ্রেন্ড লিস্টে থাকা ৪০০ জনও কি আমার মতই ছিল? ব্যাতিক্রম থাকলে তো আমি জানতামই। ওদের সব পোস্ট, শেয়ার তো আমার হোম পেইজে আসত। কোথাও রাজনীতি রিলেটেড ছবি, পোস্ট দেখিনি। এ ব্যাপারটি ভেবে মাঝে মাঝে অবাক হই।

এই লেখাটি লেখার উদেশ্য ছিল একটি। বাট চিন্তার মোড় অন্য দিকে ঘুরে গেল। ফেসবুকের এই রাজনৈতিক ভার্সনে ঢুকে অনেক কিছুই নতুন করে উপলব্ধি করতে শিখেছি। তার মধ্যে একটি হল ''ফ্রেন্ড''। এখানে দেখা যায় ''ফ্রেন্ড'' ই অন্য ''ফ্রেন্ডের স্ট্যাটাসে গালাগালি, নীচুতার বন্যা বইয়ে দিচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে ব্লগের মত সংঘবদ্ধ হয়ে আক্রমণ। কথা হচ্ছে যারা ''ফ্রেন্ড'' তারা কেমনে এরূপ আচরণ করতে পারে। রাজনৈতিক ফেসবুকে প্রবেশের আগের ফেসবুক ফ্রেন্ডের সাথে এ ফ্রেন্ডের পার্থক্য এখানেই। ঠিক এরকম একজন ব্যাক্তিগত ভাবে অপরিচিত ব্লগ সংশ্লিষ্ট ফ্রেন্ড আমাকে অনেক আগে ফ্রেন্ড রিকু পাঠায়। একসেপ্ট করি। উনি একজন বিখ্যাত ব্লগ সেলিব্রিটি এবং একসময় নাকি এই সামু ব্লগেও প্রচুর জনপ্রিয় ছিল। এখন অপাতত ফেসবুকেই আছেন। ওনার রাজনৈতিক দর্শন আমার বিপরীত। । কয়েকদিন আগে দেখি ওই ফেবু সেলিব্রেটির কিছুই আমার ওয়ালে আসছে না। ব্যাপার কি? ভাবলাম অপাতত ফেসবুকে আসছে না হয়ত। কিন্তু একজন মিউচুয়াল ফ্রেন্ডের স্ট্যাটাসে ওনাকে দেখে ওনার ওয়ালে গেলাম । লেখা আছে '' এড ফ্রেন্ড''। তার মানে উনি আমাকে রিমুভ করেছেন। এতে উনি হয়ত ভেবেছেন আমাকে এক দান দেখে নেওয়া গেল। এসব বিষয়ে কেয়ার করার সময় কি আমার আসলেই আছে? নাকি ওরা ভাবে এতে আমি গিলটি ফিল করব? এধরণের হিপোক্রেট গুলোকে দেখলে শুধু হাসি পায়।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মে, ২০১৩ রাত ৩:২৩
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষায় বসতে না পারার কষ্টটা সমালোচনার কোন বিষয়বস্তু নয়

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩৬

গতকালের একটি ভাইরাল খবর হচ্ছে কয়েক মিনিটের জন্য বিসিএস পরীক্ষা দেয়া হলো না ২০ প্রার্থীর !! অনেক প্রার্থীর কান্নাকাটির ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।এ বিষয়ে পিএসসি চেয়ারম্যান এর নিয়ামানুবর্তিতার জ্ঞান বিতরনের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বারবাজারে মাটির নিচ থেকে উঠে আসা মসজিদ

লিখেছেন কামরুল ইসলাম মান্না, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪০

ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার ইউনিয়নে মাটির নিচ থেকে মসজিদ পাওয়া গেছে। এরকম গল্প অনেকের কাছেই শুনেছিলাম। তারপর মনে হলো একদিন যেয়ে দেখি কি ঘটনা। চলে গেলাম বারবাজার। জানলাম আসল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরিবর্তন অপরিহার্য গত দেড়যুগের যন্ত্রণা জাতির ঘাড়ে,ব্যবসায়ীরা কোথায় কোথায় অসহায় জানেন কি?

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৭


রমজানে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীকে বেপরোয়া হতে দেখা যায়। সবাই গালমন্দ ব্যবসায়ীকেই করেন। আপনি জানেন কি তাতে কোন ব্যবসায়ীই আপনার মুখের দিকেও তাকায় না? বরং মনে মনে একটা চরম গালিই দেয়! আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×