বিবেক মানে যে ভাল মন্দ বোঝার ক্ষমতা সেটা নিয়ে কোন দ্বিমত নেই, তবে যেটা নিয়ে ভয়ঙ্কর রকমের দ্বিমত সবসময় ছিল এবং আছে সেটা হল আসলে ভাল কোনটা আর মন্দ কোনটা। কেউ যদি একটু ভাল করে খেয়াল করেন তাহলে দেখবেন এই বিবেক ব্যাপারটার মধ্যে বিরাট কিছু গোলমাল আছে। আপনার একটা জিনিষকে ভাল মনে হতে পারে, কিন্তু এটা যে আসলেই ভাল সেটার কোন গ্যারান্টি নেই। মানুষের বিবেক কখনই কন্সট্যান্ট না, এটা vary করে, time to time, place to place.
আমি যদি আপনাকে প্রশ্ন করি, রেপ জিনিষটা কি ভাল না খারাপ ? আপনার বলার কথা , “জঘন্য অপরাধ”কিন্তু আপনি যদি নিম্নমানের কমিউনিস্ট বা naturalist হন তাহলে এটা কে ক্রাইম নাও বলতে পারেন।http://www.newscientist.com/article/dn907-insult-to-injury.html
ধরে নিলাম এটা একটা ক্রাইম, তাহলেও আপনার “বিবেক” কিছু অদ্ভুত আচরন করে বসতে পারে। রেপ এর শাস্তি কি হওয়া উচিত? – এই প্রশ্নের উত্তরে রেপড মেয়েটা বা তার নিকটাত্মীয় বলবে, “মৃত্যুদন্ড” ,কিন্তু রেপিস্টের মা বলবে, “শাস্তি দেন, কিন্তু মৃত্যুদন্ড ছাড়া অন্য কিছু”।মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মায়া দয়া বেশি কিনা ! তাদের বিবেক আবার capital punishment এর বিপক্ষে। আমেরিকার বিচার বিভাগ আবার চমৎকার বিবেক রাখে ! রেপ কেসে তারা প্রথমবারের মত করা রেপিস্টকে ক্ষমা করেন এই যুক্তিতে, “প্রথমবার হয়েছে , ভুল হয়েছে , এবারের মত ছেড়ে দেয়া উচিত”।
বড়জোর এই বেবেকবান বিচারকরা ৮ মাসের জেল দেন।।
আচ্ছা মদ খাওয়া কি খারাপ ? – হ্যা খারাপ। তবে আগে খারাপ ছিল, এখন না, তাই আগে নিষধাজ্ঞা ছিল, এখন নাই। তারপরেও যদি বলেন না এটা খেলে শরীরের ক্ষতি হয়, তাই খারাপ, তাহলে যারা খায় তাদের বিবেক বলে বসতে পারে, “ভাই আমি আমার শরীরের বারটা বাজাই, আপনার কি ?”
পতিতাবৃত্তিকে আপনার কি মনে হয় ? খারাপ ? নারীর অপমান ? আচ্ছা কেউ যদি স্বেচ্ছায় যায়, তাহলে ? অনেক মডেল-অভিনেত্রী তো যায় ! যে পতিতার কাছে যাচ্ছে সে তো টাকা দিচ্ছে নাকি ? এটা তাদের ব্যাপার। আমাদের মহামান্য আদালত মনে করেন, এটা একটা বৈধ পেশা। নারীবাদীরা “নারীর সম্মান চাই” বলে চিৎকার চেচামেচি করে অভ্যস্ত, তবে তাদের বিবেকে এটা অসম্মানের কিছু না, কিছুদিন পরপরই পত্রিকায় দেখা যায়, তারা পতিতাদের বিভিন্ন অধিকার নিয়ে লাফালাফি করছে, তবে পতিতবৃত্তি বন্ধের কথা বলছে না।
বিয়ের আগে একটা ছেলে আর মেয়ের সম্পর্ককে আপনারা কিভাবে দেখেন ? “করাই তো যায়”- তাই না ? কলেজ লেভেলে আমার বিবেকও তাই বলত ! কিছুদিন আগে একটা ছেলের সাথে কথা হচ্ছিল, সে কিছুটা apologetic ভঙ্গিতে বলল, “তার gf আছে, তবে তারা “ঐ” পর্যন্ত যাবে না”। “এটা ঐ ছেলের ঐ”টা যে আসলে কতটুকু সেই বিবেক person to person আবার ব্যাপকভাবে vary করবে। কথা হচ্ছে “ঐ”টা করতে সমস্যা কি ? “ঐটা করতে সমস্যা নাই”- এই বিবেক নিয়ে বসে আছে হাজারখানেক পোলাপান ঘুরাঘুরি করছে। “ধরব আর ছাড়ব”-এটাও অনেকের কাছে গ্রহনযোগ্য। এক মেয়ের কথা শুনেছিলাম, ছেলে নাচিয়ে অনেক মজা পেত, তার বিবেক/যুক্তি ছিল অনেকটা এমন, “আমি নাচালেই নাচতে হবে নাকি ?”
বাড়াবাড়ি মনে হচ্ছে? কেন ? তাহলে বিয়ে সম্পর্কটা অপবিত্র হয়ে যায় তাই? আরে আজব ! বিয়ে ব্যাপারটা এত জরুরি সেটা কে বলল ? সম্মানিত অনেক বুদ্ধিজীবিদের বিবেকে বিয়ে একটা সমস্যা। আনিসুল হক তো পরকীয়াকে দোষ মনে করেন না, “ভালবাসার জন্য” স্বামী-বাচ্চাকে ত্যাগ করাই যায়। তসলিমা নাসরিনের বিবেক বলে, “একটা মেয়ে দশটা ছেলের সাথে সেক্স করলেও সে অনেস্ট”
যদি শারীরিক সম্পর্কটা বিয়ের বাহিরে নিতে পারেন, তাহলে আপনার বিবেক আরও নতুন নতুন জিনিষের সন্ধান দিয়ে বসবে। যেমন মনে করেন হোমসেক্সুয়ালিটি, সমস্যা কি ? বিভিন্ন দেশের সরকারের বিবেকবান আদালত তো এটাকে বৈধতা দিচ্ছে ! সুইজারল্যান্ডের আদালতের বিবেক বলছে ইনসেস্টে কোন সমস্যা নেই। http://www.telegraph.co.uk/news/worldnews/europe/switzerland/8198917/Switzerland-considers-repealing-incest-laws.html
ইভ টিজিং ব্যাপারটা কেমন ? –খুব খারাপ। আচ্ছা, মানলেন এটা খারাপ, সমাধান কই ? সমাধান হল, “ছেলেমেয়েদের অবাধ মেলামেশা বাড়িয়ে দাও”-বলছেন দেশের মাথারা, সেই বুদ্ধিজীবিরা। এটা পশ্চিমা বিশ্ব অবশ্য apply করেছে, তবে রেপ কেস নাকি দিনদিন বাড়ছে। কিন্তু না ,”বিবেক” অনেক হিসেব নিকেশ করেই কথা বলছে, তারা বুদ্ধিজীবি, না বুঝে কথা বলেন না, বুদ্ধি বিবেচনা করে বলেন।
ইভ টিজিং করা নিষিদ্ধ হলেও ইভ টিজিং শিখিয়ে দেয় এরকম গান গাওয়া বিবেকের বিরুদ্ধে যায় না।
চুমকী চলেছে একা পথে
সঙ্গী হলে দোষ কি তাতে
রাগ কোর না সুন্দরী গো
রাগলে তোমায় লাগে আরো ভাল ওওওওওওওওওও
বিবেকের কাছে গ্রহনযোগ্য হচ্ছে ছেলেমেয়েদের free-mixing, pornography এইসব, তবে এইসবের consequence অর্থাৎ ইভ টিজিং গ্রহণযোগ্য না। “পথ দেখিয়ে উসকে দিলাম তবে হাটতে পারবে না”
যেটা সেকুলারদের বিবেকের বিরুদ্ধে যায় সেটা হল বিয়ে। ২০ বছর ১১ মাসে আপনি বিয়ে করতে পারবেন না, ২১ বছর পার করলে বিয়ে করতে পারবেন তবে ১টার বেশি হলে মহা অপরাধ করে ফেলবেন, তবে ১৫ বছর বয়সে আপনি একাধিক মেয়ের সাথে বিছানায় গড়াগড়ি করতে পারেন, কাজী অফিসে না গেলেই হয়। এর নামও বিবেক। কার বিবেক ? মহামান্য কোন মানবের গড়া মহামান্য আদালতের social system এর বিবেক।
কিছুদিন আগে দেশে “বোরকা পরতে বাধ্য করা যাবে না”-এই আইনটা হল, কারণটা হল, এদেশে ব্যাক্তিস্বাধীনতা থাকতে হবে। খুবই উচ্চমার্গীয় কথা। তবে পুলিস হতে হলে ইউনিফর্ম পরতে হবে, উকিল হলে গায়ে গাউন চড়াতে হবে, কর্পোরেট চাকরি হলে hotty naughty পোষাক পরে বসদের খুশি না করলে চাকরি থাকবে না, আর্মিরা দাড়ি রাখতে পারবেনা- এই জায়গাগুলোতে আবার ব্যাক্তিস্বাধীনতা নেই, কেন নাই এটা আমি বুঝলাম না, শুধু বুঝলাম এটাই সরকারের বিবেক।
এই ইস্যুটা নিয়ে যখন এক ভাইয়ের সাথে কথা বলছি (উনি একজন মুসলিম, তবে পশ্চিমাদের liberal চিন্তাভাবনা দিয়ে ইনফ্লুয়েন্সড), তিনি এর পক্ষে, তাকে বললাম , “ভাই, কাউকে কোন পোষাক পরতে বাধ্য করা যাবে না বুঝলাম, এখন কেউ যদি কোন কাপড় পরতে না চায়, সে কি সেটা পারবে? তিনি ভ্যাবাচেকা খেয়ে বললেন, “না না, সেটা করা যাবে না। একটা মিনিমাম থাকতে হবে”।কা?কথা হল এই মিনিমামটা কি ? বোরকা ?শাড়ি, সালোয়ার কামিজ, শার্ট প্যান্ট, নাকি বিকিনি ? কে ঠিক করবে ? তার বিবেক যে ঠিক হবে সেটা কে বলেছে ? শুনেছিলাম এক নারীবাদীদের দল আন্দোলন করেছিল, মেয়েদের টপলেস থাকার স্বাধীনতার জন্য।বোরকা
আচ্ছা, এখন ধরেন, আপনার শিক্ষক ছাগলদাড়ি রাখেন, এখন আপনি তাকে কি সবার সামনে বলতে পারেন, “স্যার আপনাকে ছাগলের মত লাগছে”। -না , এটা অপমান। অপমান করা ঠিক না। এটা অপমান হলেও আপনি মুহাম্মদ (সাঃ) কে নিয়ে যা খুশি তা বলতে পারেন, তাকে নিয়ে কার্টুন আকতে পারেন,গালি দিতে পারেন, এটা কোন সমস্যা না, কারন এটা হল freedom of speech, এটাও মৌলিক অধিকার।
আপনার কাছে freedom কনসেপ্টটা কে অনেক alluring মনে হয় ? আপনি কতটুকু স্বাধীনতা চান ? abortion করার স্বাধীনতা চান ? যদি চান তাহলে সেটা দেয়া আছে, চিন্তার কিছু নেই। তবে অনেকে চান না, কারণ মানবসন্তান হত্যা করা ঠিক না। খুবই ভাল কথা। এখন বলেন, তাহলে ভ্রুণ কখন মানব সন্তানে পরিণত হয় ? জাইগোট কে ? সেটা তো একটা মাংস পিন্ডও নয়। তাহলে যখন মস্তিষ্ক হয়েছে সে অবস্থাকে “মানুষ” বলবেন নাকি যখন চোখ-কান হয়েছে তখন কে ? সেকুলারদের মধ্যে এটা নিয়ে ডিবেট অনেক পুরানো, তারা এখনো দ্বিধার মধ্যে আছে, কখন একটা মাংসপিন্ডকে মানুষ বলা হয়। পশ্চিমা বিশ্ব আরও কিছু চমৎকার delusion এর মধ্যে আছে, তারা এখনও বুঝতে পারছে না কাজগুলো ঠিক না ভুল, এরকম কয়েকটা হল [একটা বই থেকে কপি করা, হুবহু তুলে দিচ্ছি]-
- Is abortion murder or a women’s right? In this case the conflict of freedom is between the mother and her child. - Should cannabis be legalised/decriminalised? In this case the conflict of freedom I societal.
- Is education a right or a privilege? Should students be asked to pay fees for University education? In this case the conflict of freedom is national.
- Should one nation invade another nation if it would guarantee oil reserves, a clear strategic advantage and multiple billion-dollar contracts for its industry? Should a dictator be sold arms if it will help boost domestic trade? In these cases the conflict of freedom is international.
- Is it acceptable for countries that aim to produce anti-retroviral drugs to combat HIV/Aids to be threatened with international sanctions if it harms the profits of conglomerates and multinationals? In this case the conflict of freedom is between corporate interests and millions of lives.
- Can there be any excuse for a country to ignore desperate warnings about global warming just because of the potential unpopularity, loss of jobs and economic downturn if significant action was to take place? In this case the conflict of freedom is global.
মনে আছে কয়েকবছর আগে তালেবানরা বামিয়ানদের কিছু মুর্তি ধ্বংস করায় তুমুল হইচই শুরু হল? “তালেবানরা দুনিয়ার অসভ্য, বর্বর, কৃষ্টি-কালচারের বালাই নেই”। সে বছরে আফগানিস্তানে খাদ্য সংকট ছিল, তালেবানরা সাহায্য চেয়েছিল কোন এক মানবাধিকার সংস্থার কাছে (খুব সম্ভবত ইউনেস্কো অথবা UN এরই কোন একটা প্রতিষ্ঠান, ঠিক মনে করতে পারছি না), তারা দেয় নাই। তবে সেই একই সংস্থা ঐ বছরে এইসব মুর্তি উদ্ধার আর সংরক্ষনের জন্য সাহায্য করতে রাজি হয়েছিল। তালেবানদের কাছে এই মানবাধিকার সংস্থার “মানবতা” পছন্দ হয়নি, তারা মুর্তি ভেঙ্গে ফেলেছে, বাচ্চা বাচে না, মুর্তি বাচিয়ে কি হবে ?
সুদ খাওয়াকে আপনার কি মনে হয় ? আপনি মুসলিম হলে আপনার না বলার কথা। এক ভাইয়ের সাথে কথা বলছিলাম, সদ্য সে ব্যাংকিং নিয়ে কিছু পড়াশোনা করেছ, সে এটার পক্ষে যুক্তি দেয়া শুরু করল, “সুদ থাকার কারণে লোন হয়, এর ফলে দেশে ইনভেস্টমেন্ট হয়, দেশের উন্নতি হয় ইত্যাদি ইত্যাদি … পশ্চিমা অর্থনীতি বইতে লেখা মুখস্থ কথা”, আমি এই আর্গুমেন্টের fallacy গুলো না হয় নাই বললাম, যদি ধরেও নিই তার কথা সত্যি, তাহলে মুসলিমদের বিবেক একটা দোটানায় পড়ে যায়- “দেশের স্বার্থে” সুদ চালু করা উচিত নাকি সৃষ্টিকর্তাকে খুশি করা উচিত?
এবার আসেন ইউনুসেরই কথায়। তার micro-credit সিস্টেমের আওতায় অনেক মানুষ দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর হয়েছে, তাকে কি এজন্য দোষ দেয়া যায় ? সে তো কাউকে বাধ্য করে নাই লোন নেয়ার জন্য। মিউচুয়াল কনসেন্ট তো ছিল। যে যুক্তিতে আপনার বিবেক বলে premarital sex বৈধ, সেই একই যুক্তিতে কিন্তু ক্ষুদ্র-ঋনের জন্য ইউনুসকে বা বড় বড় ব্যাঙ্ককে আপনি কিছু বলতে পারবেন না, সবই মিউচুয়াল কনসেন্টের ফাক দিয়ে চলে যাবে, এটা দেশের রাস্ট্রব্যবস্থার বিবেক। দেশের অর্থনীতির বিবেক বলে, আপনি যদি ১০০টা কালো টাকা ইনকাম করেন, তাহলে ৩০টাকা সরকারকে দিলে সেটা সাদা হয়ে যাবে।
গণতন্ত্র-এটা তো সবচেয়ে ভাল শাসনব্যবস্থা তাইতো ? আচ্ছা, এই মহান গণতন্ত্র প্রতিষ্টার জন্য বোমা ফাটানো কি বিবেকজাত কাজ ? “বৃহত্তর স্বার্থের” জন্য কিছু মানুষ তো মারাই যায় নাকি বলেন ? নিচের ছবিটার মত করে আপনার কাছে গণতন্ত্র আসবে
"mighty" আমেরিকা আর ইউরোপের বিবেক তাই বলে, তবে আফগানিস্তান আর ইরাকের মুসলিমদের বিবেক ইসলাম চেয়েছিল, গণতন্ত্র না।
আপনি বাঙ্গালী হিসেবে অনেক গর্বিত তাই কি ? আপনার ভালোবাসার তাহলে একটা সীমারেখা আছে। এক corporate চিন্তাভাবনায় ইনফ্লুএন্সড এক জাতীয়তাবাদী ভাই বলেছিল, দেশের জিডিপি বাড়াতে 0.0000000000১% বাড়াতে পারলেও নাকি জীবন অনেক সফল ! জাতীয়তাবাদী এই ভাইয়ের বিবেক শুধু বাঙ্গালীদের জন্য কাজ করে, অন্যদের জন্য না। আফ্রিকা না খেয়ে মরে যাক, ফিলিস্তিন ধ্বংস হয়ে যাক, তাদের ব্যাপারে কোন দায়িত্ব নেই, ভ্রু উচিয়েই শেষ, কারণ তারা বাঙ্গালী না।
বিবেকঘটিত জটিলতার শেষ উদাহারণটা দিই। ধরেন ২০০ জন একটা ছোট জাহাজে, আপনি এর ক্যাপ্টেন। নৌকায় উঠতে পারে ৫০ জন, কিন্তু ব্যাপারটা না জানায় অতিরিক্ত ১৫০ জন উঠে পড়ায় সমস্যা হয়েছে, এই নৌকাটা এখন ডুবে যাবে। আপনাকে কিছু একটা করতে হবে।
সমাধান কি ?
যদি আপনি একজন humanist হন তাহলে আপনার বিবেক বলবে ১৫০জন কে ফেলে দিতে, কারণ মেজরিটি বাচিয়ে রাখতে হবে।
আপনি যদি ক্যাপিটালিস্ট হন তাহলে খুজে খুজে তাদেরকে বাচিয়ে রাখবেন যাদেরকে use করে আপনার পুজিপাট্টা আরও বৃদ্ধি পাবে।
আপনি যদি কমিউনিস্ট হন, তাহলে হয়ত বিবর্তনবাদের থিওরি কপচাবেন, “survival for the fittest” ওরফে “জোর যা মুল্লুক তার”।
আপনি যদি ফালতু টাইপের জাতীয়তাবাদী হন তাহলে আপনি আপনার জাতির লোকজনকে রেখে দিয়ে অন্যদের ফেলে দেয়ার জন্য খুজবেন
আপনি যদি ইয়ো টাইপ কোন ছেলে হন তাহলে সুন্দরী-লাস্যময়ী মেয়েদের প্রেফার করে বাকিদেরকে ফেলবেন ১৫০ জনের লিস্টে।
বিবেককে পচানো আমার উদ্দেশ্য না, আমার উদ্দেশ্য হল এটা বোঝানো যে মানুষের বিবেকের পক্ষে ভাল মন্দের absolute সংজ্ঞা নির্ধারণ করা সম্ভব না, সম্ভব না একটা পূর্নাংগ জীবনব্যবস্থা দাড় করিয়ে ফেলা। মানুষ চেষ্টা করেছে, পারে নাই, morality এর বিষয়টা subjective রয়ে গেছে, objective হতে পারে নি। কারণ বিবেক জিনিষটা টেম্পোরারি কাজ করতে পারে, পারমানেন্টলি না।
এর কারণ হল, human mind এর কিছু সীমাবদ্ধতা আছে, ব্যাপারটা পছন্দ না হলেও সত্য। একটা মানুষের চিন্তার অনেকগুলো variable আছে, সেগুলো স্থান-কাল-পাত্রে ভিন্ন হয়, তাই absolutely correct রেফারেন্স পয়েন্টে পৌছানো যায় না। একজন মানুষ যখন চিন্তা করে তখন সে তার জানা বাস্তবতার ভিত্তিতে চিন্তা করে। যেমন- ইউরোপের রেনেসার সময়ে তারা দেখল, চার্চভিত্তিক জীবনব্যবস্থাতে এই এই সমস্যা, তারা আনল তখন সেকুলারিজম। কিন্তু সেকুলারিজমে কি সমস্যা আছে সেটা তাদের “জানা বাস্তবতার” বাহিরে ছিল। কার্ল মার্ক্স পুজীবাদী সমাজের সমস্যা দেখে কিছু সমাধান দিল কিন্তু কমিউনিজমের সমস্যাগুলো সে বুঝল না, সেগুলো ধরা গেল অনেক পরে।
বিবেক খাটিয়ে সমাধান করতে গেলে সে কিছু বিষয়কে basic হিসেবে নেয়। পশ্চিমাদের জীবনাদর্শের একটা বিষয় হল individualism, তারা এটাকে সঠিক ধরে নিয়ে তারপরে সমাধান করতে চেষ্টা করে, কিন্তু তারা এটা চিন্তা করে না তাদের চিন্তার এই ভিত্তি individualism একটা false premise হতে পারে, একই সাথে ভুল হতে পারে তাদের অন্য universal value গুলো – democracy, liberalism , capitalism, freedom, secularism, human rights, rule of law –এগুলো এসেছে একটা অসুস্থ অবস্থা যখন সেটা শুধু ইউরোপেই বর্তমান ছিল, তখন তাদের “মনে হয়েছিল” এগুলো সমাধান দেবে। সমাধানগুলো ontologically এবং practically false.
শুধু তাই না, মানুষের মধ্যে ইমোসন আছে, বিবেকের মধ্যে ইমোসন ঢুকে গেলে ভারি সমস্যা। ইমোসন ছাড়াও আছে লোভ আর ভোগ। আছে তার সংস্কৃতি। হিন্দি সংস্কৃতির অশ্লীল অংশটাকে বর্জন করার জন্য অনেকে বাংলা সংস্কৃতিতে ফিরে আস্তে বলেন, কিন্তু বাংলা সংস্কৃতিতে সমস্যা নেই তা কে বলেছে ? বাংলা সংস্কৃতিকে কেন আমরা correct reference point হিসেবে নিচ্ছি ?
একটা মানুষ কোনটাকে ভাল বলবে আর কোনটা কে খারাপ বলবে সেটা তার জীবনদর্শন আর জীবনের উদ্দেশের উপরে নির্ভর করে। আমি যখন এই নোটটা লিখছি তখন বাজে ১১:৩০, ৩১ ডিসেম্বর, একটু পর নতুন বৎসরকে বরণ করা হবে। এই রাতে একটা ছেলে একটা মেয়ের সাথে শুয়ে থাকবে নাকি নফল নামাযের জন্য আল্লাহর সামনে দাঁড়াবে এটা নির্ভর করে জীবনদর্শনের উপরে।
আপনি হন মুসলিম বা অমুসলিম বা মানবতাবাদী আস্তিক, আপনার ভেবে দেখে দরকার, ভাল-খারাপের ব্যাপারটা আপনি ভালো বোঝেন নাকি সৃষ্টিকর্তা ? ভাল-মন্দের ব্যাপারে আপনি যা ভাবছেন এবং বলছেন তার সবটাই অনুমানের ভিত্তিতে।
“জিজ্ঞেস কর, আছে কি কেউ তোমাদের শরীকদের মধ্যে যে সত্য-সঠিক পথ প্রদর্শন করবে? বল, আল্লাহই সত্য-সঠিক পথ প্রদর্শন করেন, সুতরাং এমন যে লোক সঠিক পথ দেখাবে তার কথা মান্য করা কিংবা যে লোক নিজে নিজে পথ খুঁজে পায় না, তাকে পথ দেখানো কর্তব্য। অতএব, তোমাদের কি হল, কেমন তোমাদের বিচার? বস্তুতঃ তাদের অধিকাংশই শুধু আন্দাজ-অনুমানের উপর চলে, অথচ আন্দাজ-অনুমান সত্যের বেলায় কোন কাজেই আসে না। আল্লাহ ভাল করেই জানেন, তারা যা কিছু করে।“ [ইউনুস ৩৫-৩৬]
“তারা কেবল অনুমানের উপর চলে। অথচ সত্যের ব্যাপারে অনুমান মোটেই ফলপ্রসূ নয়।” [নাজম ৫৩-২৮]
আমাদের একটা ব্যাপার পছন্দ হলেই সেটা ভাল আর অপছন্দ হলে সেটা খারাপ, এটা কি সঠিক চিন্তা?
“…পক্ষান্তরে তোমাদের কাছে হয়তো কোন একটা বিষয় পছন্দসই নয়, অথচ তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর হয়তোবা কোন একটি বিষয় তোমাদের কাছে পছন্দনীয় অথচ তোমাদের জন্যে অকল্যাণকর। বস্তুতঃ আল্লাহই জানেন, তোমরা জান না।” [বাক্বারা-২১৬]
আল্লাহ আয ওয়া জাল আমাদের কাছে তার কিতাব নাযিল করেছেন যেন আমরা ভাল-মদ সঠিক ভাবে শিখতে পারি
“আলিফ-লাম-রা; এটি একটি গ্রন্থ, যা আমি আপনার প্রতি নাযিল করেছি-যাতে আপনি মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে বের করে আনেন-পরাক্রান্ত, প্রশংসার যোগ্য পালনকর্তার নির্দেশে তাঁরই পথের দিকে।“ [ইউনুস-১]
“… আমি আপনার প্রতি গ্রন্থ নাযিল করেছি যেটি এমন যে তা প্রত্যেক বস্তুর সুস্পষ্ট বর্ণনা, হেদায়েত, রহমত এবং মুসলমানদের জন্যে সুসংবাদ।” [নাহল-৮৯]
মুসলিমরা আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন কিছুকে ইলাহ হিসেবে নিতে পারেনা। দাসত্ব শুধু আল্লাহর প্রতি, আনুগত্য শুধু আল্লাহর প্রতি। একজন মুসলিম ইসলাম ছাড়া অন্য কোন জীবনব্যবস্থাকে গ্রহণ করতে পারে না, হোক সেটা গন্ততন্ত্র, সেকুলারিজম, পুজিবাদ, সমাজতন্ত্র, বৈরাগ্যবাদ … হালাল-হারামের সংজ্ঞা দেয়ার ক্ষমতা শুধু আল্লাহই রাখেন, কোন শাসক রাখে না, রাখে না কোন বুদ্ধিজীবি বা কোন আলেম। যদি এরপরেও নিজের প্রবৃত্তির আনুগত্য করেন তাহলে আল্লাহ বলছেন,
“আপনি কি তার প্রতি লক্ষ্য করেছেন, যে তার খেয়াল-খুশীকে স্বীয় উপাস্য স্থির করেছে? আল্লাহ জেনে শুনে তাকে পথভ্রষ্ট করেছেন, তার কান ও অন্তরে মহর এঁটে দিয়েছেন এবং তার চোখের উপর রেখেছেন পর্দা। অতএব, আল্লাহর পর কে তাকে পথ প্রদর্শন করবে? তোমরা কি চিন্তাভাবনা কর না?” [জাসিয়া-২৩]
বরং তাদের কাছে সত্য [কুরআন] আগমন করার পর তারা তাকে মিথ্যা বলছে। ফলে তারা সংশয়ে [ভাল এবং মন্দের বিষয়] পতিত রয়েছে। [ক্বাফ-৫]
মহান আল্লাহর কাছে বিবেকের সংশয় থেকে মুক্তি চাই
মূল লেখক Zim Tanvir |যা তার ফেইসবুক নোট থেকে সংগ্রহীত |মূল লিংক
Zim Tanvir[link|https://www.facebook.com/notes/zim-tanvir|[https://www.facebook.com/notes/zim-tanvir]]

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




