তো আবার সেই গোবর্ধন।
বেশ কিছুদিন তাহার সহিত আমার কোনোরুপ দেখা সাক্ষাত হয়নি।তো হঠাৎ একদিন কেশ কাটাইবার হেতুতে নরসুন্দরের কার্যালয়ের দিকে হাটিতেছিলাম,তখন দেখিলাম গোবর্ধন একখান চশমা পরিধান করিয়া হন্ত-দন্ত হইয়া কোথায় যেন যাইতেছিলো।শুধু চশমাই নহে,সে সলুদ বর্নের একখানা প্যান্টলুন ও লাল বর্নের একখানা শার্ট ও পড়িয়াছে।লক্ষ্য করিয়া দেখিলাম এবং বুঝিলাম জামা কাপড় গুলো সদ্য খরিদকৃত।ইহার কারণ স্বরুপ বলা যাইতে পারে,সে তাহার সদ্যকৃত চশমার ট্যাগখানা খুলিতেও ভুলিয়া গেছে।তাহা কি নিতান্তই ভুল কিংবা সদ্য খরিদকৃত বুঝানোর ভঙ্গিমা কিনা,তাহা বুঝিবার ক্ষমতা কিংবা অভিলাষ কোনোটাই ছিলো না আমার মধ্যে।
যাই হোক,আমি গোবর্ধনের সহিত বাকচিত করিবার হেতু তাহাকে সজরে ডাক প্রদান করিলাম।সে শুনিতে পাইলো না,নাকি শুনিতে চাইলো না বুঝিতে পারিলাম না।আমি তাহার সামনে যাইয়া বলিলাম।
কিরে দোস্ত গোবর্ধন,কই যাস?
উত্তরে তাহার কথা আমার ভাবনার ৩ মাইল বাইরের ছিলো।
সে বলিলো,
ও ম্যান,ডোন্ট কল মি গোবর্ধন।ইটস গ্যাব।
আমি বলিলাম,ওকে যা,গাব।তা কই যাস।
নো ম্যান,ইটস নট গাব,ইটস গ্যাব।
by the way,i'm in a hurry now.talk to you later
পরবর্তীতে আমি কিছু বলিবার পুর্বেই সে প্রস্থান করিলো।তো আমি আমার কার্য উদ্ধারের হেতু,নরসুন্দরের কার্যালয়ে প্রবেশ করিলাম।সাতচল্লিশ মিনিট তেত্রিশ সেকেন্ডের মাথায় আমার সব ধরনের কেশ উৎসর্গ সম্পন্ন হইলো।নরসুন্দরের সম্মানি দেওয়ার হেতু,পকেট থেকে টাকার ব্যাগ খানা বের করিতে যাইবো,ঠিক তখন কোথা থেকে যেন শতকরা ৯৭ দশমিক ১২ ভাগ নগ্ন অবস্থায় পোড়া গোল আলুর মত চেহারা বিশিষ্ট এক আগন্তুক আসিয়া আমার পা দুখানা জড়াইয়া ধরিলো।
আমি বলিলাম,মাফ করেন এখন।খুচরো নাই।
আগন্তুক বলিলো, আমি ভিক্ষুক না।
তখন ভাবিতে লাগিলাম,হায়রে দেশ কোথায় চলিয়া গিয়াছে।এখন আন্ডারওয়ারের এ্যাড ও লাইভ সম্প্রচার করা হয়।
তবুও তাহাকা জিজ্ঞেস করিলাম,কী চাই।
উত্তরে সে বলিলো,আমাকে চিনোস নাই দোস্ত?
আমি বলিলাম,না,কে আপনি?
সে কাঁদিয়া কাঁদিয়া বলিলো,আমি গোবু।
আমি বলিলাম,কোন গোবু।
সে বলিলো ,আরে গোবর্ধন।
আমি টাশকিত হইয়া তাহাকে উঠাইয়া বলিলাম,তো এই অবস্থা হইলো ক্যামনে।
সে তাহার চশমা খানা খুলিয়া আন্ডারওয়ারের সাথে লটকাইয়া,বলিতে আরম্ভ করিলো।
দোস্ত আর বলিস না,কয়দিন আগে এক মাইয়ার লগে পরিচয় হইছে ফেসবুকে।হেরপর আমার নম্বর নিছে।আমার লগে সুক-দুক্কের হক্কল কতা কইতো।আমার কাছ দিয়া সাড়ে তিনশো টাকাও নিছে।হেরপর একদিন কইলাম,জান আমি তোমার সাথে দেখা করবো।
হে কইলো,আইচ্ছা,অমুক দিন,অতটার সময়,অমুক ঠিকানায় চইলা আইও।আমি হের লগে দেখা করতেই গেছিলাম রে দোস্ত।
৩ ঘন্টা রসায়ন ক্লাসের সমাপ্তির পর যেই অবস্থা হয়,গোবর্ধনের কথা শুনিয়া আমার ও ঠিক সেইরুপ অবস্থা হইলো।যাই হোক,এই অবস্থা কাটাইয়া উঠিয়া আমি তাহাকে পুনরায় বলিলাম,তারপর কি হইলো রে দোস্ত।
সে বলিতে আরম্ভ করিলো।
হেই এলাকায় যাইয়া,হেতিরে মেসেজ দিলাম।হে রিপ্লাই দিলো,অমুক বিল্ডিং এর অমুক তালায় চইলা আইও।আমি গেলাম।
হেরপর যা অইলো,হেইয়া আর কি কমু।তিনডা পোলা আইয়া আমার বস্ত্রহরণ করিলো রে দোস্ত।বাপজানের কিন্যা দেওয়া মোবাইল,আমার পকেটের একশত ছাপ্পান্ন টাকা সব নিয়া গেলো।
অতপর কিছু বলিলাব্র ভাষা অন্বেষন করিয়া ব্যার্থ হইয়া আমি তাহাকে তাহার চশমা খানা পড়াইয়া দিলাম,আর তাহার হস্তে বিশ টাকার একখানা চকচকে নোট গুজাইয়া দিয়া বলিলাম,সামনে মুচির দোকান আছে।ঐখান থেইক্কা আন্ডারওয়ার টা সেলাই কইরা নে।নাইলে সেকেন্ড ইনিংস যেকোনো সময় শুরু হইতে পারে।
অতপর আমি আমার গৃহের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করিলাম আর ভাবিতে লাগিলাম,
দুনিয়া টাকে যতখানি খারাপ ভাবিয়াছিলাম,ইহা ততোখানি খারাপ নহে।