somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কোটি মানুষের আওয়াজ

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এক নতুন রূপে ও চেতনায় এবার বিজয় দিবস উদ্যাপন করল দেশবাসী। এমন নতুন প্রজন্মের বাঁধ ভাঙ্গা উচ্ছ্বাস অনেক দিনই দেখা যায়নি। রাজাকার-আলবদর ও স্বাধীনতাবিরোধীমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণের শপথে একাত্তরের মতোই যেন গর্জে উঠেছিল তারা। বুধবার বিজয়ের চুয়াল্লিশ পেরিয়ে পঁয়তাল্লিশ বছরে পদার্পণের দিনে দেশবাসী যেন দ্বিতীয় যুদ্ধজয়ের আনন্দেই ছিল মাতোয়ারা। আর সেই দ্বিতীয় যুদ্ধজয় হচ্ছে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও ক’জন রাজাকার শিরোমণির ফাঁসির রায় কার্যকর। এ কারণে এবারের বিজয় দিবসে কোটি মানুষের মনে ছিল প্রশান্তি আর স্বস্তির হাসি।
পূর্তির দিনে মাত্র এক বছর আগেই দেশের পথে-প্রান্তরে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে প্রকম্পিত ছিল যে রাজপথ, মাত্র ১২ মাসের ব্যবধানেই তা যেন মিইয়ে গেছে। কারণ সেই দাবি অনেকটাই পূরণ হয়েছে। পাঁচ শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী ঝুলেছে ফাঁসির দড়িতে, ক’জন রাজাকার শিরোমণি কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে গুনছে মৃত্যুর প্রহর। তাই এবারের বিজয় দিবসে স্বস্তির আমেজে থাকা মানুষের সেøাগান ও দাবিও যেন বদলে গেছে। বিজয় দিবসের প্রতিটি অনুষ্ঠানে মানুষের কণ্ঠে এবার নতুন সেøাগান। আর তা হলোÑ জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ, পরাজিত পাকিস্তানীদের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন এবং সকল ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত মোকাবেলা করে রাজাকারমুক্ত অসাম্প্রদায়িক নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের সূচনার।
মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তির গণজাগরণ আর স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে নতুন প্রজন্মের তীব্র ঘৃণা ও গণধিক্কার ভিন্নমাত্রা যোগ করেছিল এবারের মহান বিজয় দিবসে। বিজয়োৎসবে মাঠে নামা কোটি মানুষের একাত্তরের বীর শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধায় অবনত শির আর চোখে ছিল একাত্তরের ঘাতক রাজাকার-আলবদর-যুদ্ধাপরাধী ও তাদের দোসরদের প্রতি তীব্র ঘৃণার আগুন। এসব প্রমাণ করে দেয়, সেই রক্তক্ষয়ী ৯ মাসের প্রতিটি ক্ষণ কৃতজ্ঞ জাতি এক মুহূর্তের জন্যও ভুলতে পারে না, ভোলেনি। কৃতজ্ঞ বাঙালী জাতি গভীর শ্রদ্ধায় ফুলে ফুলে ভরিয়ে দিয়েছে ত্রিশ লাখ শহীদের স্মৃতির মিনার।
বিজয় দিবসে গোটা দেশই মেতে উঠেছিল বাঁধভাঙ্গা বিজয়োৎসবে। নেচে-গেয়ে উঠেছিল বিজয়ের আনন্দে। একাত্তরের পর বিজয়ের এত আনন্দ আর নতুন প্রজন্মের বাঁধভাঙ্গা উচ্ছ্বাস আর দেখা যায়নি। বিজয়ের আনন্দে মাতোয়ারা হতে রাজপথে নেমে আসা লাখ লাখ শিশু-কিশোর থেকে আবালবৃদ্ধবনিতার চোখে-মুখে যেমন ছিল বিজয়ের আনন্দ, ঠিক তেমনি ছিল একাত্তরের স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে ঘৃণা-ধিক্কার আর সব যুদ্ধাপরাদীর বিচারের রায় দ্রুত কার্যকর ও জামায়াত নিষিদ্ধের প্রচ- দাবি। মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের পর রাজাকারমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণের শপথ নিয়ে বুধবার বিজয়ের ৪৪ বছর পূর্তি উদ্যাপন করেছে বাংলাদেশ। তবে আনন্দমুখর এ উৎসবে বরাবরের মতো এবারও অন্তঃস্রোত বয়ে গেছে স্বজনহারানোর বেদনা।
বিজয় দিবসের নানা আয়োজন তরুণ প্রজন্মকে দোলা দিয়েছে, স্মৃতির ঝাঁপিতে নাড়া দিয়েছে ইতিহাসের সেদিনের সাক্ষীদের। বাংলাদেশের সোঁদাগন্ধময়ী মাটির যে হৃদস্পন্দন সেখানে এই বাংলার প্রতিটি সন্তানের ভিন্ন মাত্রিক সম্পর্ক দেশপ্রেমের দর্শনকে ক্রমাগত শাণিত করেছে। রাজধানী ঢাকা থেকে ওঠা রাজাকার-আলবদরমুক্ত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণের এই দাবি বিজয়ের দিনে ঢেউয়ের মতো আছড়ে পড়ে গোটা দেশে। এভাবেই স্বস্তির পরিবেশে মুক্ত আকাশে মুক্ত বিহঙ্গের মতো লাখো জনতার বাঁধভাঙ্গা আনন্দ-উচ্ছ্বাস, মহান শহীদদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার দৃঢ় অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে বুধবার জাতি পালন করল মহান বিজয় দিবস। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অলিগলি, পাড়া-মহল্লা, রাজপথে বিনা বাধায় দিনভর বেজেছে জাতির জনকের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের বজ্রকঠিন ভাষণের রেকর্ড আর কালজয়ী দেশাত্মবোধক গানগুলো।
বাঙালী জাতি আনন্দ, বেদনা আর বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করেছে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান একাত্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও লাখো শহীদকে, স্বাধীন রাষ্ট্রের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। দিবসটির মূল অঙ্গীকারই ছিল পরাজিত অপশক্তি ও তাদের দোসরদের সকল ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত রুখে দিয়ে জঙ্গীবাদমুক্ত, সুখী-সমৃদ্ধ-স্বনির্ভর মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার। রাজধানীর জাতীয় প্যারেড স্কোয়ারে সম্মিলিতবাহিনীর দৃষ্টিনন্দন-মনোলোভা কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানমালা ছিল উল্লেখ করার মতো। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশও নানা কর্মসূচীর মাধ্যমে বিজয় দিবস পালন করেছে।
দিবসটি ঘিরে আলোচনা, সেমিনার, বক্তৃতা ও যুক্তিতর্কসহ সবকিছুতেই ঘুরেফিরে প্রাধান্য পায় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হওয়ার স্বস্তি, আর পাকিস্তানের ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তৃতা-বিবৃতির বিরুদ্ধে তীব্র ঘৃণা-ধিক্কার ও সম্পর্ক ছিন্নের প্রচ- দাবি। জঙ্গীবাদ-মৌলবাদ, ক্ষুধা-দারিদ্র্য ও দুর্নীতিমুক্ত মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নতুন এক জন্মভূমির স্বপ্নের কথাও ধ্বনিত হয়েছে সর্বত্র। রাজধানীসহ সারাদেশের রাস্তাঘাট, অফিস-আদালত, দোকানপাট, যানবাহন এবং বাসাবাড়িতে পতপত করে উড়েছে রক্তস্নাত লাল-সবুজ পতাকা। ছোট ছোট কাগজ বা কাপড়ের তৈরি পতাকা হাতে নিয়ে বা বুকে-পিঠে লাগিয়ে শিশু-কিশোররা বেরিয়েছিল ঘরের বাইরে। কেউ কেউ মুখে এঁকেছিল লাল-সবুজ পতাকা। যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষায় এক বছর আগেও দেশজুড়ে পরিকল্পিত সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও তা-ব চালালেও বুধবার বিজয়ের দিবসে কোথাও সেই জামায়াত-শিবিরের টিকিটিও খুঁজে পাওয়া যায়নি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শাণিত নতুন প্রজন্মের সাহসী পথচলায় এবারের বিজয় দিবসে রাজনৈতিক বিতর্ক বা স্বাধীনতাবিরোধীদের কোন আস্ফালন ছিল না।
তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দর এলাকায় সূর্যোদয়ের সময় ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে বুধবার ভোরে বিজয় দিবসের কর্মসূচী শুরু হয়। ভোর থেকেই সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধ এবং ধানম-িস্থ বঙ্গবন্ধুর বাসভবনের সামনে নামে জনতার ঢল, সন্ধ্যা পর্যন্ত মানুষের ভিড় ছিল লক্ষণীয়। অন্যদিকে রাজধানীজুড়ে বিজয় দিবস ঘিরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা। পথে পথে সঙ্গীত, নাটকসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিকথা এবং সব কর্মসূচীতে স্বাধীনতাবিরোধীদের প্রতি ঘৃণা ও ধিক্কার প্রকাশ পায়।
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বুধবার ছিল সরকারী ছুটি। শিশু-কিশোরসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানমালা ঘুরে ঘুরে উপভোগ করে। রাজধানীসহ বিভিন্ন বিভাগীয় এবং জেলা সদরের প্রধান প্রধান সড়ক মোহনা জাতীয় ও উৎসব পতাকা দিয়ে সাজানো হয়। বেতার-টেলিভিশনে বিজয় দিবস উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান এবং সংবাদপত্রে ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে দিবসটির মাহাত্ম্য তুলে ধরা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে হাসপাতাল, শিশুসদন, কারাগার ও এতিমখানায় উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়। এছাড়া জাতির সুখ, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে মসজিদে মসজিদে অনুষ্ঠিত হয় বিশেষ মোনাজাত। মন্দির, গির্জা, প্যাগোডায় বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ভাষণের স্থান ঐতিহাসিক সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে লাখো কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত ও শপথ বাক্য পাঠ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিকেল ৪টা ৩১ মিনিটে জাতীয় সঙ্গীত শুরু হয়। এ সময় লাখো মানুষ অংশ নেন। পরে শপথ বাক্য পাঠ করান অর্থনীতিবিদ আবুল বারকাত।
জাতীয় স্মৃতিসৌধে জনতার ঢল ॥ ‘জামায়াত-শিবির রাজাকার, এ মুহূর্তে বাংলা ছাড়’, ‘স্বাধীন এই বাংলায়, রাজাকারের ঠাঁই নাই’, সাম্রাজ্যবাদ সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গীবাদ রুখে দাঁড়াও’, ‘বিজয় দিবসের অঙ্গীকার, রুখতে হবে জামায়াত-শিবির-রাজাকার’. ‘সফল হোক সফল হোক, বিজয় দিবস সফল হোক’, একাত্তরের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার’Ñ বুধবার ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের ৪৪ বছর পূর্তিতে আগত লাখো মানুষের বলিষ্ঠ কণ্ঠে উচ্চারিত এ সকল ধ্বনিতে মুখর হয়ে উঠেছিল সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধ এলাকা। আগতদের বিনম্র শ্রদ্ধায় এদিন একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বীর শহীদদের গভীরভাবে স্মরণ করা হয়। বিজয়ের আনন্দ আর উচ্ছ্বাসে জাতীয় স্মৃতিসৌধকে ঘিরে গোটা সাভার যেন পরিণত হয় উৎসবের নগরীতে।
সাভার থেকে সৌমিত্র মানব জানান, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে এদিন ভোরে শীতের মধ্যে কুয়াশায় ঘেরা স্মৃতিসৌধের সামনে জড়ো হয় হাজার হাজার মানুষ। সকালের প্রথম প্রহরে ভোর সাড়ে ৬টার পরে জাতীয় স্মৃতিসৌধের শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে লাখো শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তিন বাহিনীর সুসজ্জিত একটি দল গার্ড অব অনার প্রদান করেন। বিউগলে বেঁজে ওঠে করুণ সুর।
শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে তাঁরা শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং এক মিনিট নীরবতা পালন করে শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। প্রায় একই সময় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে লাখো শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর মধ্য দিয়ে শুরু হয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানানোর আনুষ্ঠানিকতা। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে রাষ্ট্রপতি স্মৃতিসৌধের পরিদর্শন বইতে স্বাক্ষর করেন। এরপর তারা স্মৃতিসৌধ এলাকা ত্যাগ করেন। এ সময় মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবৃন্দ, কূটনৈতিক নেতৃবৃন্দ, তিন বাহিনীর প্রধান, মুক্তিযোদ্ধা এবং পদস্থ সামরিক এবং বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এরপরই জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের নিয়ে বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্য, বিচারপতি, তিন বাহিনীর প্রধান, মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ভারতীয় সশস্ত্রবাহিনীর সদস্য ও কূটনীতিকরাও শহীদ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে স্মরণ করেন একাত্তরের বীর শহীদদের। জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেনস ব্লুম বার্নিকাট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের ব্যানারে হাজারও রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধারা স্মৃতিসৌধের শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন।
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ১০টা ৫২ মিনিটের দিকে জাতীয় স্মৃতিসৌধের শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলটির সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া কাকডাকা ভোর থেকে দুপুর অবধি জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়Ñ কেন্দ্রীয় ১৪ দল, শহীদ পরিবারের সন্তান ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা, জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, গণফোরাম, সাম্যবাদী দল, ন্যাপ, বাসদ, সিপিবি, গণআজাদী লীগ, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধ ৭১, জাতীয় পার্টি, জাতীয় পার্টি জেপি, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ, যুব ইউনিয়ন, ছাত্র ইউনিয়ন, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, মুক্তিযোদ্ধা যুব কমান্ড, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, জাকের পার্টি, মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদ, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতি, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশন, বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদ পরিষদ, বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট বার এ্যাসোসিয়েশন, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, অগ্রণী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, ঢাকা আইনজীবী সমিতি, নজরুল ইনস্টিটিউট, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খ্রীস্টান এ্যাসোসিয়েশন, বিল্পবী ওয়ার্কার্স পার্টি, কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরসহ বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন হল শাখাসহ অজস্র সংগঠন স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়।
বঙ্গবন্ধু ভবনেও জনতার ঢল ॥ মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বুধবার সকালে জনতার ঢল নেমেছিল রাজধানীর ধানম-ির ৩২ নম্বর সড়কের বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে। স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই জনতার ঢল নামে সেখানে। সকাল সাড়ে ৭টা থেকে রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা মিছিল করে ৩২ নম্বর সড়কের পূর্ব ও পশ্চিম পাশের মোড়ে জমায়েত হতে থাকে। সকাল সাড়ে ৮টার মধ্যেই সর্বস্তরের মানুষের ভিড়ে গোটা এলাকা কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।
কেউ এসেছে মাথায় বিজয় দিবসের ব্যান্ড বেঁধে, কেউ এসেছে লাল-সবুজের জাতীয় পতাকার রঙের পোশাক পরে, রক্তস্নাত জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে। তাদের সবার মুখে উচ্চারিত হচ্ছিল একই সেøাগাণÑ ‘জামায়াত-শিবির-রাজাকার, এই মুহূর্তে বাংলা ছাড়’, ‘মুজিবের বাংলায় রাজাকারের ঠাঁই নাই।’ হাজার হাজার যুবক-যুবতী, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা এবং শিশু-কিশোরসহ সর্বস্তরের নারী-পুরুষ বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণের জন্য তাদের নিজ নিজ সংগঠনের ব্যানার সামনে নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে।
সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমে সরকার প্রধান হিসেবে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় তিনি সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। পরে তিনি আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দকে সঙ্গে নিয়ে দলীয় প্রধান হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে মোনাজাতে অংশ নেন। এরপর সাধারণ মানুষের জন্য স্থানটি উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। এরপর দিনভর অজস্র সংগঠন বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করে। -
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:১৭
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রোড জ্যাম ইন ভিয়েতনাম

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৭



আমার ধারনা ছিল জটিল জ্যাম শুধু বাংলাদেশেই লাগে । কিন্তু আমার ধারনা ভুল ছিল । ভিয়েতনামে এরকম জটিলতর জ্যাম নিত্য দিনের ঘটনা । ছবিটি খেয়াল করলে দেখবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!

লিখেছেন মাঈনউদ্দিন মইনুল, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬



এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×