somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্মৃতিতে সমরেশ মজুমদার - কৈশোর ও যৌবন বয়সটা বই পড়ার সবচেয়ে উত্তম সময়

১০ ই মে, ২০১৬ রাত ১২:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার আগে বাবার হোটেলে থাকার সময় যে পরিমান গল্পের বই আর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক , দর্শনের উপর বই পরেছি । ভর্তি হওয়ার পরে আর সেই পরিমান পড়ার সময় পাওয়া যায় নাই । বিষয়টা এমন নয় যে পড়াশোনার চাপে সময় হয় নাই । আসলে মধুর ক্যান্টিন , হাকিম চত্বর, টিএসসি ঢু মারতে আর স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে মিছিল মিটিং , নিজ সংগঠনের সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাতে গিয়েই খাওয়া ঘুমের সময় পাওয়া যেত না । বই পড়ার সময় কোথায় । রাতে হলে ফিরে আর এক জগত । দুনিয়ার আড্ডা । যেই সেই আড্ডা নয় , রাত ২/৩ টা পর্যন্ত ১০/১২ জনের নিয়মিত আড্ডা আর সিগারেট , ফাকে ফাকে চা । এক পিচ্চি প্রতিদিন রাত ১১/১২ টায় দুই বার আসতো ফ্লাক্সে করে চা বিক্রি করতে। এই রাতের আড্ডার সাথে মিলিয়ে রুমমেট ঠিক করা হতো । বিশ্ববিদ্যালয়য় কতৃক যাকে রুমমেট বরাদ্ধ দেয়া হতো, সেই বেচারা যদি শুধু পড়ার জন্য আসতো তবে অবশ্যই তাকে রুম একচেঞ্জ করা হতো আর একজন আড্ডাবাজের সাথে । সেই কারনে হাউজটিউটর কদাচিৎ রুম চেক করতে আসলে দেখা যেতো বরাদ্দকৃত রুমে কেউ থাকছে না । প্রায় সবাইরি রুম চেঞ্জ হয়ে গিয়েছে । বিশেষ করে যারা ডাবল রুমে থাকতো । এই পরিবেশে নিয়মিত ক্লাসের পড়া পড়ারই কোন উপায় নেই ( ইচ্ছাও করতো না ) আবার আউট বই । যে কারনে পাশ করার জন্য যতটুকু পড়া দরকার তার জন্য দুপরের ক্যান্টিনের ডাল ভাত খেয়ে পাবলিক লাইব্রেরীতে চলে যেতাম । এক বই কেনার জন্য বাড়ি থেকে কতবার যে টাকা নিয়েছি সেই বই আর কেনা হয়নি । কাজেই পাবলিক লাইব্রেরী ছাড়া বিকল্প উপায়ও নেই । বিশ্ববিদ্যালয়য় লাইব্রেরীর পড়ার বই বেশির ভাগই শিক্ষকগন তুলে নিয়ে যায় । পাবলিক লাইব্রেরীতে আবার কমার্সের ভাল বই সংগ্রহ ছিল । সেই পরিবেশে হটাত হাতে আসলো উত্তরাধিকার বইটি । এক পাতা দুই পাতা উল্টাতে উল্টাতে ডুবে গেলাম । ২/৩ দিন কোন দিক দিয়ে চলে গেল টের পেলাম না । সকালে ক্লাসের পরে মধুর ক্যান্টিন আর বিকালে টিএসসি বাদ । উত্তরাধিকার শেষ হলে পরের সিরিজ কালবেলা । কিন্তু পাই কোথায় । ধার করে নিউ মার্কেট থেকে কিনলাম । তখনও আজিজ মার্কেটের বই এর দোকান গড়ে উঠেনি । আরও দুই তিন দিন কেটে গেল । তার পরের সিরিজ কালপুরুষ
। সেটাও একই পদ্ধতিতে কিনলাম । শেষ করলাম । আমার আচরনে সবাই বিস্মিত । রাতে সবাই আড্ডা দেয় আর আমি বই পড়ি । আর ভাবী কি অসাধারন লেখক এই সমরেশ মজুমদার । এইভাবেই সমরেশ মজুমদার এর প্রতি আকৃষ্ট হই । পরে এই লেখকের আরও অনেক বই পরেছি কিন্তু উত্তরাধিকার, কালবেলা , কালপুরুষ এর মত করে ডুবে যেতে পারিনি । সুনীল গংগ্যপাধায় এর সেই সময় ১ ও ২ অথবা পূর্ব পশ্চিম ১ ও ২ সমরেশ মজুমদারের এর আগেই পরেছি কিন্তু এমন করে এই ভাবে ডুবে যেতে পারিনি । একটু বয়স হলে আর একটি বইয়ে ডুবে গিয়েছিলাম, আবুল মনসুরের লেখা "আমার দেখা রাজনিতিত পঞ্চাশ বছর" । এখন আর বই পড়া হয় না । পড়তে বসলে মনও বসে না । কৈশোর ও যৌবন বয়সটা বই পড়ার সবচেয়ে উত্তম সময় । সেই সময় বই পরে যে জ্ঞান অর্জিত হয় সেই অর্জিত জ্ঞান এর উপরই নির্ভর করে তার আগামী ভবিষ্যৎ ।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মে, ২০১৬ রাত ১:০৪
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×