somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জাত ফাতের বিভেদ বারণ

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ৯:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার মতে ভারতীয় সর্বকালের অন্যতম সেরা মুভি আর্টিকেল ১৫. এই মুভি ভারতীয় সমাজ ব্যবস্থার নগ্ন অবস্থা খুব সুন্দর করে তুলে ধরেছে। আর একটা মুভি প্রিয়দর্শনের আরাকশান। এই দুটো মুভি দেখলে বোঝা যায় ভারতের ৭০ শতাংশ জনসংখ্যা যারা সংখ্যা লঘু তাদের কে আরও হাজার টা জাতের মধ্যে ফেলে সংখ্যা লঘু তকমা লাগিয়ে শত শত বছর ধরে শোষন করা হচ্ছে এবং যেই ধারা এখনো অব্যাহত আছে।
মাঝে মধ্যে বাংলাদেশে কিছু বন্ধুর মধ্যে গর্বের সাথে জাত ফাত নিয়ে আলোচনা হয়। কলেজে থাকতে এক বন্ধু নিজেকে উচু জাতের ব্রাহ্মণ বলে অন্যান্য হিন্দু ছাত্র দের এড়িয়ে চলতো। টাচ করতে দিতনা। তখন এতো কিছু বুঝতাম না। তাই কিছু বলতাম না।

যারা বছররের পর বছর শাসন শোষন নিয়ে হা হুতাশ করে তারাই যখন জাত ফাতের কথা বলে গায়ে ছোয়া বারণ চপকায় তাদের আমার মানুষ মনে হয় না। মানুষে মানুষে বিভেদ থাকার কথা ছিলনা। কথা ছিলনা এতো ঘৃণার।

এই উপমহাদেশে এমন একটা এইন ছিলো জামাই মরলে বউ কে দাহ হতে হতো, না জানি কত হাজার নারী পুড়ে অঙ্গার হয়েছে জীবিত। অ্যানেমারি শিমেলের মতে, মুঘল সম্রাট আকবর ( ১৫৫৬ - ১৬০৫ ) সতীদাহ প্রথার বিরুদ্ধে ছিলেন; যাইহোক, তিনি " যেসকল বিধবা তাদের মৃত স্বামীর সাথে নিজেকে দাহ করতে চেয়েছিলেন" তাদের প্রশংসা প্রকাশ করেছিলেন। তিনি অপব্যবহারের প্রতি বিরূপ ছিলেন এবং ১৫৮২ সালে আকবর একটি আদেশ জারি করেন যাতে সতীদাহ প্রথার ব্যবহার রোধ করা যায়। কিন্তু তাও পুরো পুরি বন্ধ করা যায় নাই। এমন কি কাশ্মিরের মুসলিম নারী দের জীবন্ত কবর দেয়া হতো মৃত স্বামীর সাথে। পরে জাহাঙ্গীর কাশ্মীরে এই ধরনের সতীদাহ এবং অন্যান্য প্রথাগত প্রথা নিষিদ্ধ করেছিলেন। ঔরঙ্গজেব ১৬৬৩ সালে আরেকটি আদেশ জারি করেন, কাশ্মীর থেকে ফিরে আসার পর শেখ মুহাম্মদ ইকরাম বলেন, "মুঘল নিয়ন্ত্রণাধীন সমস্ত জমিতে, কর্মকর্তারা আর কখনও একজন মহিলাকে পুড়িয়ে মারার অনুমতি দেবেন না"। আওরঙ্গজেবের আদেশে বলা হয়েছে, আনুষ্ঠানিক ইতিহাসে উল্লেখ থাকলেও ইকরাম আওরঙ্গজেবের সময়ের সরকারি নথিতে লিপিবদ্ধ আছে। যদিও আওরঙ্গজেবের আদেশ আধিকারিকদের ঘুষ প্রদানের মাধ্যমে এড়ানো যেতে পারে, ইকরাম যোগ করেন, পরে ইউরোপীয় পর্যটকরা রেকর্ড করেন যে মুঘল সাম্রাজ্যে সতীদাহ প্রথা খুব বেশি ছিল না এবং সতীদাহ ছিল "খুবই বিরল, কিছু রাজার স্ত্রীদের ছাড়া, ভারতীয় মহিলাদের পুড়িয়ে মারা হত এমনকি আওরঙ্গজেবের রাজত্বের শেষের দিকে। ঠিক যে সময় গুলোতে এই সতীদাহ চালু হয়েছে এই সময়ের দিকের এতো বিভেদের প্রচলণ হয়েছে। সতীদাহ বিদায় নিলেও এই বিভেদ গুলোর বিদায় এখনো হয় নাই।

এখন আমার প্রশ্ন হলো আর কতটুকু বোকা হলে আমরা এখনো প্রাচীন বিভেদ মেনে চলবো! আর কত টুকু বুদ্ধি হলে আমরা সবাই এক হবো।

এই পোস্ট লেখার কারণ, আজকে দেখলাম এক ভদ্রলোক একজনের গায়ের সাথে লাগতে গিয়ে ছ্যা ছ্যা করে দূরে সরে গেলো, হঠাত ইন্টারের সেই ছেলেটার কথা মনে পড়ে গেলো আর আমার মনে হলো আমি ১৫০০ শতাব্দী তে এসে দাঁড়িয়েছি। দুনিয়ার বয়স বাড়ছে, কিন্তু এখনো যে আমরা অন্ধকারে রয়ে গিয়েছি।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ৯:৪১
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×