মিশরীয় ব্লগারের মুক্তিকে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল স্বাগত জানিয়েছে, সামরিক বাহিনীর অভ্যন্তরে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ করে ব্লগ লেখার কারণে তাকে কারাগারে আটক করা হয়েছিলো।
তবে আহমেদ মোস্তাফাকে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেয়ায় সংস্থা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। শর্ত অনুযায়ী তিনি ব্লগে প্রকাশিত লেখার জন্য ক্ষমা চাইবেন এবং তার ব্লগ মাথা আসাবাকা ইয়া ওয়াতান (ও দেশ, তোমার কি হলো?) থেকে মার্চ মাসে প্রকাশিত লেখাটি সরাবেন।
তার একটি সামরিক আদালতে দ্বিতীয়বারের মতো হাজির হওয়ার নির্ধারিত দিন ছিলো রোববার, ৭ মার্চ এবং তার সাড়ে নয়মাস সাজা হতে পারতো।
আহমেদ মোস্তাফা হলেন প্রথম মিশরীয় ব্লগার যিনি ব্লগ লেখার কারণে সামরিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন, মুক্তি পাওয়ার পর তিনি অন্য ব্লগারদের উপদেশ দিয়ে একটি ব্লগ লিখেছেন, সেখানে তিনি অন্যদের পরামর্শ দিয়েছেন তারা যাতে ব্লগ প্রকাশ করার আগে সেখানে প্রদত্ত তথ্যসমূহ ভালোভাবে যাচাই বাছাই করে নেয়।
মোস্তাফার আইনজীবিরা জানিয়েছেন যে, তার মুক্তির ব্যাপারে সামরিক আদালত কোনো কারণ জানায়নি এবং তারা মামলাটি ফাইলে রেখেছে, তার মানে হলো এই মামলাটি ভবিষ্যতে পুনরুজ্জীবিত করা যাবে।
কাফর আল শেখ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী আহমেদ মোস্তাফাকে সামরিক গোপন তথ্য অনলাইনে প্রকাশ করা এবং সেনাবাহিনী সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য প্রকাশ ও মিলিটারি একাডেমীর নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তাদের অপমান করার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
অভিযুক্ত পোস্টটিতে এক শিক্ষার্থীর কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে যাকে মিলিটারি একাডেমী থেকে জোরপূর্বক নিজেকে প্রত্যাহার করতে হয়েছে, যাতে করে তার ছেড়ে দেয়া জায়গায় অন্য একজন আবেদনকারীকে নেয়া যায়, সেখানেই স্বজনপ্রীতির ঘটনাটি ঘটেছে।
এরাবিক নেটওয়ার্ক ফর হিউম্যান রাইটস ইনফরমেশন এর আইনজীবিদের দেয়া তথ্য মতে, তাকে সামরিক গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তাগণ প্রথমে ১৭ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার করে এবং তার ব্লগ সম্পর্কে তাকে প্রশ্ন করে।
তাকে মার্চ মাসের ১ তারিখে সোমবার সামরিক আদালতে হাজির করা হয় যদিও তার পক্ষে কাজ করা হিশাম মুবারক ল সেন্টার এবং এসোসিয়েশন ফর দি ফ্রিডম অফ থট এন্ড এক্সপ্রেশন-এর আইনজীবিরা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে জানিয়েছে যে তারা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তার মামলার কাগজপত্র ২ মার্চ মঙ্গলবার পেয়েছেন।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল মোস্তাফাকে একজন বিবেক বন্দী হিসেবে গণ্য করেছিল এবং তাকে মুক্তি দিতে মিশরের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল।
অন্যান্য মিশরীয় ব্লগারগণও তাদের লেখার জন্য শাস্তি পেয়েছেন।
করিম আমের, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতে আরেক বিবেকবন্দী তার ব্লগে রাষ্ট্রপতি হোসনি মোবারক এবং মিশরের আল আজহার ধর্মীয় কর্তৃপক্ষকে সমালোচনা করে লেখার কারণে গত ২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে চার বছরের সাজা খাটছেন।
আরেকজন বিবেকবন্দী হানি নাজির তার ব্লগে মুসলমানদের অপমান করা হয়েছে এমন একটি বইয়ের প্রচ্ছদ প্রকাশ করার অভিযোগে ২০০৮ সালের অক্টোবর থেকে প্রশাসনিক বন্দীদশা কাটাচ্ছেন।