অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল গত ২০ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনীর গুলিতে নিহত পাবর্ত্য চট্টগ্রামের বাসিন্দা দুইজন জুম্মা আদিবাসীর মৃত্যুর ঘটনা অনতিবিলম্বে স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
যদিও সরকারি কর্মকর্তাগণ মাত্র দু্ইজনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছে কিন্তু স্থানীয় জনগণের দেয়া তথ্য মতে অন্ততপক্ষে ছয়জন আদিবাসী জুম্মা ২০ ফেব্রুয়ারির ঘটনায় মারা গিয়েছেন, যদিও তাদের লাশ উদ্ধার করা যায়নি।
ঘটনার দিন নিহত দুইজন পুরুষসহ কয়েক শত জুম্মা আদিবাসী তাদের ঘরবাড়িতে বাঙালি বসতিস্থাপনকারীদের হামলার শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করছিলো। তারা নিরাপত্তার দাবী জানাচ্ছিল কারণ ১৯ তারিখ রাতে রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি এলাকায় অন্ততপক্ষে ৪০টি জুম্মা আদিবাসী বাড়িতে বাঙালি বসতিস্থাপনকারীরা আগুন ধরিয়ে দেয়। জুম্মা আদিবাসী জনগণ তাদের আদিভূমিতে বাঙালি বসতি স্থাপনকারীদের অবৈধভাবে ভবন নির্মাণের প্রতিবাদ জানালে তাদের বিরুদ্ধে আক্রমণ করা শুরু হয়। প্রতিবেদনগুলো থেকে জানা যায়, এরপর বাঙালি বসতিস্থাপনকারীগণ জুম্মা আদিবাসীদের বাড়িঘরে আক্রমণ চালায় এবং আদিবাসীদের ঘরবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
২০ ফেব্রুয়ারি জুম্মা আদিবাসীরা বাঙালি বসতিস্থাপনকারীদের আক্রমণের প্রতিবাদে তাদের গ্রামগুলোতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে এবং সেনাবাহিনী তাদের বিক্ষোভ থামাতে সেখানে আসে। সেনাবাহিনীর একজন কমান্ডার আদিবাসী জনগণকে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বললে তারা বিরোধীতা করে। জানা যায়, বিক্ষোভকারীদের একজন ছুরি নিয়ে সেনা কমান্ডারকে আক্রমণ করে এবং তাকে জখম করে। সেনাবাহিনী তখন বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে তাজা গুলি ছুড়লে অন্তত দুইজন আঘাত পান, যারা পরবর্তীতে মারা যান। গোলাগুলিতে অন্ততপক্ষে ২৫ জন ব্যক্তি জখম হয়। জুম্মা আদিবাসীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যেতে শুরু করে কিন্তু বাঙালি বসতিস্থাপনকারীরা তখন তাদের এলাকায় ঢুকে অন্ততপক্ষে ১৬০টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। সেনা সদস্যরা তাদেরকে থামাতে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।
আরো পড়ুনঃ https://bangla.amnesty.org/bn/reports/cht/bd