somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার মরন লাফ!

১২ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১২:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তখন ক্লাস সিক্স/সেভেন এ পড়ি। নদীতে গোসলে গেলে বিভিন্নভাবে পানিতে লাফিয়ে পরতাম। লাফ দেয়ার কমন বৈশিষ্ট ছিল যে যতটা দুরে গিয়ে পরা সম্ভব সেভাবে পরা। সাধারনত লাফানোর জন্য নদীর পাড়ের সেই অংশটি বেছে নেয়া হত যে অংশের কিনরা বেশ উচু।

বেশ কিছু অদভুত নামও ছিল লাফের। (ওরকম নামের কারন আসলে জানা নেই, অন্যরা বলতো, আমরাও বলতাম।)

১. ডুলাঃ দৌড়ে এসে লাফ দিয়ে দুই হাটু জরো করে দুহাত দিয়ে বেধে ফেলা। ওই লাফের ভেতরই পেছনে ঘুরার চেষ্টা থাকতো। এটা তুলনামূলকভাবে নিরাপদ লাফ ছিল। জড়ো হয়ে পা এবং পশ্চাদেশে নিচে অসমান থকাতে পানির সারফেস টেনসন ভেদ করতে কোনরুপ ব্যাথা পেতে হতো না।

২. ডিগবাজি/পল্টিঃ এটা অনেকটা মাটিতে ডিগবাজি খাওয়ার মতো, যেখানে শুন্যেই ঘুরতে হতো। এটা করতে গিয়ে অনেক সময়ই পানিতে বুক বা পিঠ সমান্তরালে পরতো, এত বেশি এরিয়ার পানির সারফেস টেনশন ভাঙতে গিয়ে প্রচন্ড ব্যথা পাওয়ার ঘটনা ঘটতো, পেট/বুক/পিঠ কখনো কখনো লাল হয়ে যেত। কখনো কখনো দম আটকে যেত।
(যারা লাফাতে চান তাদের জন্য টিপসঃ নিরাপদ লাফের জন্য এমনভাবে লাফ দিন, যেন পানির সংস্পর্শে যাওয়ার মুহুর্তে আপনার শরীরের সবচাইতে কম অংশ সংযুক্ত হয় এবং পর্যায়কৃমে বৃদ্ধি পায়। হঠাৎ করে বেশি পরিমান পানির সারফেস টেনশন ভাঙার জন্য বেশি বাধার সম্মুখিন হবেন, এতে প্রচন্ড ব্যথা লাগতে পারে, যেমন রক্ত জমাট বাঁধা, এমনকি কখনো কখনো স্কিন ফেটেও যেতে পারে)

৩. শাফাল (Shovel যা মাটি খুরতে ব্যাবহার হয়)-ঃ এতে দৌড়ে গিয়ে একদম সটান হয়ে পানিতে পরতে হয়। এ ধরনের লাফে মাধ্যমে পানির বেশ গভিরে পৌছে যেতাম। কখনো কখনো উপরে উঠতে কষ্ট হয়ে যেতো নিশ্বাস শেষ হয়ে আসার কারনে।

৪. সুইঃ সুইমিং পুলে সাতারুরা হাত দুটো সামনে রেখে যেভাবে সুচালো ভঙ্গিতে পানিতে পরে। মাঝে মাঝে হাত ছড়িয়ে কিংবা শরীরের সাথে সমানভাবে মিলিয়ে রেখেও লাফ দেয়া হত। তবে সাতারুদের চেয়ে আমাদের গতিটা আরও বেশি থাকতো কারন আমরা সব লাফই দূর থেকে দৌড়ে এসে দিতাম। আপাত দৃষ্টিতে এই লাফে ভয়ের তেমন কিছু নেই, তবে বিপত্তিটা তখন বাধতো যদি পানির গভীরতা থাকতো কম। জীবনে অন্তত ২বার এমন বিপত্তিতে পরেছিলাম।

এই ৪নং এর লাফই দুইবার আমার মরন লাফ হয়ে উঠছিল!
দুবারই ছিল বর্ষা। বড় খাল যেখানে নদীতে মিশেছে, লাফালাফি সেখানেই চলত। আমরা খেলতাম নদীর পাশেই থাকা একটা উচু খোলা জমিতে। খেলার ফাঁকে ফাঁকেই গিয়ে লাফিয়ে পরতাম খালের মুখ নদীতে। যখন জোয়াড় থাকতো, খালের মুখে অনেক অনেক পানি থাকতো, তাই সমস্যা হত না। তবে ঐ ২বারই চলছিল ভাটা। আর তাতে পানি ছিল কম। আর যেহেতু আমাদেরও বয়স কম ছিল, কোন কাজই যুক্তি দিয়ে ভেবে করা হতো না।
চলছিল ভাটা, কে রাখতো তার খবর! খেলার মধ্য থেকেই কজন দৌড়ে গিয়ে লাফিয়ে পরলো, আমিও দৌড়ে গিয়ে দিলাম 'সুই লাফ'! ওভাবে লাফিয়ে পরে মাথা সরাসরি মাটিতে আঘাত হানে। মাথার আঘাত শেষে কপাল-নাক হয়ে দাঁতেরও ঘর্ষণ হয় পানির নিচের বালির তলায়, এতে দাঁত মুখ ভরে গিয়েছিল বালিতে। তার উপর মাথায় ওভাবে আঘাতের ফলে দম বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, সোজা হয়ে দাড়িয়ে প্রায় ৬-৭সেকেন্ড শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ ছিল।
(একবার একজন বুঝতে পেরে পিঠে ঘসছিল। অন্যবার কেউ বুঝতে পারেনি, নিজে নিজেই ঠিক হয়ে গিয়েছিল।)
২য় বার ঘটার পর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, পানির গভীরতা পরিমাপ না করে এই লাফ আর দিবো না।

নেড়া বেলতলায় একবারই যায়, তবে আমি দুইবার গিয়েছিলাম!
:-P
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১২:৩১
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×