হেইট ও ডুসপিক কে?
ঢাকার দৈনিক বাংলার রিপোর্টে দেখা যায়, হেইট ১৯২৮ সালে জন্মগ্রহণ করেছে। সে ১৯৪৬ থেকে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত সৈন্যবাহিনীতে চাকরি করত। ১৯৫৩ সাল থেকে সে সামরিক গোয়েন্দাবিভাগের সঙ্গে যুক্ত ছিল। ১৯৫৪ সাল থেকে সে আমেরিকান দূতাবাসের রাজনৈতিক কূটনীতিবিদ হিসেবে বহুদেশ ভ্রমণ করেছে। সে কলকাতা এবং কায়রোতেও ছিল।সিআইএ এজেন্ট ডুসপিকের সঙ্গে গত বছর সে ঢাকা ফিরে আসে এবং রাওফরমান আলীর সঙ্গে তিনহাজার বুদ্ধিজীবীর একটি তালিকা তৈরি করে।জেনারেলের শোবারঘরে এই তালিকা পাওয়া গেছে।
নিহত বুদ্ধিজীবীদের আত্মীয়স্বজনদের সাক্ষ্য থেকে জানা যায় যে আলবদরদের পরিকল্পিত হত্যার কাজে বিদেশি মুখো, ছদ্মপোশাক ও ছোরা ব্যবহার করা হয়েছে।গণহত্যা তদন্ত কমিটির রিপোর্ট থেকে এই তথ্য পাওয়া যায়। স্বভাবতই পাকিস্তানি সেনাপতি ও সিআইএ চরদের মধ্যেকার এই যোগাযোগ গোপন ব্যাপার ছিল। আলবদরবাহিনীর সাধারণ কর্মীরা এ সম্পর্কে কিছুই জানতনা। বুদ্ধিজীবী হত্যার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী ‘নিউইয়র্ক টাইমস’ পত্রিকায় সে সময় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন দেখুন– (দৈনিক ‘অবজারভার’-এর সেই প্রতিবেদন যেটিতে বুদ্ধিজীবী হত্যার ব্যাপারে জহিররায়হানের দাবি তুলে ধরা হয়েছে।)
আবার এই সন্ত্রাস বাদী সংস্থার হোতারা এবং জামায়াতে ইসলামী দলের নেতারা অনুগামীদের মনোবল বাড়ানোর আশায় আমেরিকা ও পিকিং নেতাদের সঙ্গে পাকিস্তানের সামরিক একনায়কের ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সম্পর্কের কথা প্রচার করত।১৯৭১সালের ১২ ডিসেম্বর ঢাকার জামায়াতে ইসলামীর সম্পাদক প্রকাশিত এক প্রচার পত্রের ভাষা হল:
‘‘বিদেশেআমাদেরবন্ধুরাআছেন।চীনওআমেরিকাআমাদেরসমর্থকবন্ধুদেশ।’’
উল্লেখ্য, রাও ফরমান আলীর ডায়েরিতে যে দুজন সিআইএ এজেন্টের নাম পাওয়া গিয়েছিল তারা ইন্দোনেশিয়াতে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড পরিচালনা করেছিল এবং ইন্দোনেশীয় সরকার সে জন্য তাদের অনুপস্থিতিতে বিচারও করেছিল।
এই সব অনুসন্ধানের সূত্রকী, নাকি নেহাত ই আন্দাজে তীর ছোঁড়া তা জানার কোনো উপায় নেই।
অনেক ঘাঁটাঘাটি করে ডুসপিক সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। হেইট সম্পর্কে খানিকটা জানা গেছে। জুলিয়াস ম্যাডার ১৯৬৮ সালে একটি বুকলেট বের করেছিলেন ৩ হাজার সিআইএ এজেন্টের নাম ও কর্মস্থল সম্পর্কে জানিয়ে।ধারণা করা হয় কেজিবির ইন্ধনে বইটি প্রকাশিত হয়েছিল এবং এখন এটি পাওয়া পায় অসম্ভব। ‘হুইজ হু ইন দ্য সিআইএ’ নামে বইটিতে হেইটের উল্লেখ পাওয়া গেছে।(৩)
Click This Link
তার পুরো নাম হেইট হিউ গ্রিনোউ (Haight Hue Greenough)।১৯৫৪ সাল থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সিআইএর নানা তৎপরতায় যুক্ত ছিলেন তিনি। মাঝে ১৯৬১ সাল থেকে ১৯৬৫ পর্যন্ত ছিলেন ভারতে। হেইট ও ডুসপিকের উল্লেখ কি আসলেই তাদের সম্পৃক্ততার নির্দেশনা নাকি আর কারও থেকে নজর সরানোর জন্য তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কারণ গোটা মুক্তিযুদ্ধকালে অন্য একজন সিআইএ এজেন্টের সম্ভাব্য তৎপরতা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিল প্রবাসী বাংলাদেশ ও ভারত সরকার। সে আলোচনায় একটু পরেই আসছি।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে বুদ্ধিজীবীদের লাশ আবিষ্কারের পরপরই ভারতীয় বিভিন্ন পত্রিকায় সিআইএর যুক্ত থাকার ব্যাপারটি বার বার উঠে আসে।এনিয়ে উদ্বেগ জানায় যুক্তরাষ্ট্র, বিশেষ করে তাদের ধারণা হয় কেজিবি এই উস্কানিটা দিচ্ছে।
রহস্যময় রবার্ট জ্যাকসন
একটা প্রশ্ন সবার মনে জাগতেইপারে।মুক্তিযুদ্ধের সময় সিআইএ-র কেউ নিজের হাতে কোনো বাঙালিকে খুন করেনি।তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সহযোগিতার, স্বাধীনতাকামী বাঙালিদের নামের তালিকা সরবরাহের। এখন একটা দেশের জন্য কারা বিপজ্জনক সেটা সেই দেশের গোয়েন্দাদের চেয়ে সিআইএ বেশি জানবে! উত্তর, হ্যাঁ, জানবে।কারণ তারা প্রতিটা দেশের গুরুত্বপূর্ণ লোকজনের (তাদের জন্য উপকারী এবং বিপজ্জনক) ওপর ফাইল সংরক্ষণ করে যাকে বলা হয় বায়োগ্রাফিকাল রিপোর্টিং। নানা গোয়েন্দা সূত্র থেকে তথ্য দিয়ে সাজানো হয় প্রতিটি ফাইল। তাই পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জন্য সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য তাদের সরবরাহ করা তালিকামানা। এটাও চুক্তিরই অংশ। ব্যাপারটা এবং বায়োগ্রাফিকাল রিপোর্টিংয়ের পদ্ধতি দলিল সহ বোঝানো হবে সামনের পর্বগু লোতে।
Collection From N.shaws webmail.CA/COPY Editor BD News24-Omi R Pial
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১:৪৪