ঢাকা ১
চিকিৎসার জন্য আম্মাকে তখন সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভর্তি করা হল। মহিলা ওয়ার্ড।আমার খুব খারাপ লাগলো, আমাকে সেখানে দিনে থাতে হবে বলে। সারা দিন এদিক সেদিক ঘুরি আর মাঝে মাঝে আম্মার সাথে দেখা করি। একদিন দুপুর বেলা তাকে দেওয়া ভাত খেতে বলেন। আমি না বলি, তার পরও তিনি জোরাজুরি করতে লাগলেন, শেষ পর্যন্ত তাঁর জোরাজুরিতে খেতে বসি তার পাশে। খাওয়ার সময় একজন লেডি ডাক্তার আসেন আম্মাকে দেখতে। তিনি আমাকে দেখেই রাগত স্বরে বলেন "আপনি পুরুষ হয়ে মহিলা ওয়ার্ডে বসে খাচ্ছেন?"
আমি বিব্রত, আম্মাও বিব্রত।
এরপর প্রায় মাসখানেক পর্যন্ত ভাত খেতে পারতাম না।
ঢাকা ২
কলেজ শেষ করে স্যারের বাসায় যেতাম। এরপর বাসায় ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা হতো। আসার সময় আরঙ থেকে খামার বাড়ি এই পথটুকু হেটে আসতাম। খামার বাড়ির মোরে আসলেই চোখে পরতো কিছু মেয়ে সাজুগুজু করে দাড়িয়ে আছে খদ্দরের অপেক্ষায়। দামদরে বুনলে খদ্দরদের সাথে চলে যেতো। পরের দিন আবার খদ্দরের অপেক্ষায়।
যে ফুটপাথের উপর অপেক্ষা করতো খদ্দরের জন্য সেটি সংসদ ভবন এর ফুটপাথ।
ঢাকা ৩
কোর্ট এর রায়ে হয়েছে এক বছর আগে। আসামী ধরা পরেছে অন্য মামলায়। এই মামলায়ও এরেস্ট দেখানো জরুরী। কোর্টের নথি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, সেটি স্টোর রুমে, সময় লাগবে। এক সপ্তাহ গেলো, নথি এখনো খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ওদিকে আসামীর জামিনের জোর তৎপরতা। দ্রুত কাজ করা দরকার। মালের কথা মত পরদিন কর্মচারীদের কিছু স্পীড মানি দিলাম। পরদিনই নথি পাওয়ার খবর।
কুমিল্লা ১
কাজিন দুই জনই পরস্পরকে ভালোবেসে বিয়ে করলো। বার বছরের ভালোবাসার ফসল দুই মেয়ে, দুই জনই স্কুলে পড়ে। ওয়াইফ জব করতো একটি প্রতিষ্ঠানে। এক পর্যায় তিনি সিনিয়ার কর্মকর্তা হলেন। মাঝে মাঝে তাকে প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনে বিদেশ ভ্রমন করতে হতো। সঙ্গী হতো তার হাজবেন্ড এর বাল্য বন্ধু। ধীরে ধীরে হাজবেন্ড এর সাথে দূরত্ব বাড়লো। হাজবেন্ড এর বাল্য বন্ধু নিকট হলো। এক পর্যায় ছাড়াছাড়ি। বাল্য বন্ধুকে বিয়ে করলো । বছর খানেক পর সেখানেও ছাড়াছাড়ি। এখন তিনি তার সাবেকের কাছে ফিরতে চান। কিন্তু সাবেকও বিয়ে করেছেন, এক সন্তানের জনক। কি এক গিট্টু লাগলো?
ঝালকাঠি ১
নানা বাড়িতে সবাই কোন এক জনের বিয়ে উপলক্ষে উপস্থিত। আমি আর আমার মামাতো ভাই ফন্দি আটি কুট্টি নানার (মায়ের একমাত্র ছোট চাচা) ডাব চুরি করে খাবো। রাত হলে আমরা বাগানে গেলাম, বেশ অন্ধকার, মামাতো ভাই সামনে আর আমি পিছনে। কোন মতে একটি ডাব গাছে উঠে ৪-৫ টা ডাব পারলো ভাইটি। কুড়িয়ে নিয়ে সবগুলো ওসসা ঘরের মাচায় রাখলাম। পরে খাবো বলে তখনকার মত অনুষ্ঠানে গেলাম। পরে সেই ডাব আর খাওয়া হয় নাই। সেই আফসোস এখনো যায় নাই।
ঝালকাঠি ২
সেই কুট্টি নানা খবর শুনলেন পাশের ঘরে ডাকাত এসেছে। তিনি দোতালার মাচায় উঠে দা ধার দিতে শুরু করলেন। সবাই সেই স্থানে ঘুরে এসে দেখে তিনি তখনও দা ধার দিতেছেন।
আবার ডাকাতের সংবাদ। তিনি আবার মাচায় উঠে দা ধার দেওয়া শুরু করলেন। এবার তাকে ডাকলে, তিনি বলেন "তোরা আগা আমি দা ধার দিয়া আসতেছি।"
এই ধরনের কোন ঘটনা ঘটলেই তিনি মাচায় আর দা ধার দেওয়া শুরু করেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:০৬