ইমাম গাজ্জালী একদিন লিখতেছিলেন , হঠাৎ লিখা বন্ধ করে কলম ফেলে দিলেন । লিখা বন্ধ করার কারণ ছিলো - ইমাম গাজ্জালীর হৃদয়ে লিখার মাধ্যমে মান ইজ্জতের আকাংখার উদয় হয়েছিলো । অতঃপর কান্নাকাটি শুরু করলেন এবং মহান আল্লাহর নিকট লিখার দায়িত্ব থেকে মুক্তি চাইলেন । এমন সময় মহান আল্লাহ তাকে ইলহাম নাযিল করলেন যে , হে গাজ্জালী তুমি যদি লিখা বন্ধ করো তাহলে তুমি জাহান্নামি হয়ে যাবে । আর এই ঘটনার পর গাজ্জালী লিখলেন - যদি কেউ কোনো বই লিখে এবং সেই বই অন্য কেউ চুরি করে দ্বিতীয় কোনো ব্যাক্তির নামে ছাপিয়ে দেয় , আর প্রথম ব্যাক্তি নিজের নাম না থাকার কারণে যদি সামান্যটুকু কষ্টও পায় , তাহলে প্রথম ব্যাক্তি বই লেখার কারণে সওয়াব তো পাবেই না , উল্টো তার গুনাহ হবে । প্রিয় বিশ্ববাসী উপরোক্ত ঘটনার প্রথম অংশ কোনো বইয়ে পাবেন না , কিন্তু প্রত্যেকের ভিতর যে ফেরেশতা আছে , সে তাকে এই ঘটনা বিশ্বাস করার তাগিদ দিবে ।
মূল আলোচনায় আসি - প্রায় সব দলই নিজেদেরকে মধ্যপন্থী মুসলিম দাবি করে । কিন্তু জাতে হক্বের কসম করে বলছি , আমার নীতিমালা অনুযায়ী "মডারেট মুসলিম"ই হচ্ছে একমাত্র মধ্যপন্থী দল ।
প্রিয় বিশ্ববাসী , আমার দলের শত্রু শুধু মৌলবাদীরা নয় বা জঙ্গিবাদীরা নয় , বরং আধুনিক মুসলিমরাও । বিশেষ করে বাংলাদেশের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠিত মুসলিম বুদ্ধিজীবীরা , যারা হিন্দু ধর্মের একজন বড়ো পন্ডিত রবীন্দ্রনাথকে নবীর মতো মান্য করে ( নাউজুবিল্লাহ ) । কথায় কথায় এইসব বুদ্ধিজীবীরা রবীন্দ্রনাথকে রেফারেন্স দেয় । যেখানে প্রত্যেক মুসলিমের রেফারেন্স দিতে হবে কোরান হাদিস বা পূর্ণ ইসলামিক স্কলারদের থেকে । আসলে এইসব বুদ্ধিজীবীরা রবীন্দ্রনাথের উম্মত ( নাউজুবিল্লাহ ) । আব্দুল গাফফার চৌধুরী , মুহাম্মদ জাফর ইকবাল , আনিসুল হক , অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সাঈদ , একাত্তর টিভির সাংবাদিকগনসহ অনেকেই নামে মুসলিম , কিন্তু কাজে মুশরিক এবং এরা রবীন্দ্রনাথের সর্বোচ্চ মাত্রার অনুসারী । আর আমাদের জন্য তথা মডারেট মুসলিমের জন্য মৌলবাদীরা বা জঙ্গিবাদীরা যেমন প্রতিবন্ধক , তেমনি প্রায় সমান প্রতিবন্ধক এই রবীন্দ্রনাথের অনুসারীরা ।
বর্ণিত বুদ্ধিজীবীরা বাংলাদেশের যেসব দলকে বুদ্ধি দিয়ে থাকেন , এরা অবশ্যই মডারেট মুসলিমকে প্রবল বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করবেন । সন্দেহ নাই । কিন্তু মহান আল্লাহর দয়ায় আমরা সব বাঁধা পেরিয়ে যাবো ইনশাআল্লাহ ।
এবার গাজ্জালীর ঘটনা বলার কারণ বর্ণনা করছি - বর্তমানে রমজান চলছে , বেশিরভাগ মানুষই ২০ রাকাত তারাবি পড়ছেন । কিন্তু আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি এখন মানুষের ২০ রাকাত তারাবি পড়ার ক্ষমতা নেই । দলীল - কোরানের ৮ নম্বর সুরার ৬৫ , ৬৬ আয়াত । তবে যেকোনো ব্যাক্তির জন্য ১০০ রাকাত নফল নামাজ পড়তে কোনো কষ্ট নেই , কারণ ২০ রাকাত তারাবিকে আবশ্যিক ধরা হয় , আর ১০০ রাকাত নফল নামাজ ঐচ্ছিক । অতএব ২০ রাকাত তারাবি যারা পড়ছেন , তারা সুস্পষ্ট পরোক্ষ শিরক করছেন তথা লোক দেখানো ইবাদত করছেন । আমি ৮ রাকাত পড়ছি এবং পরম শান্তি ও তৃপ্তি নিয়ে অত্যন্ত মোহাব্বতের সাথে আদায় করছি । অথচ এমন জায়গায়ও আছে যেখানে এক রমজানের তারাবিতে কয়েক খতম কোরান পড়া হয় , আল্লাহর কসম করে বলছি এটা ইবাদত নয় , বরং চরম জুলুম এবং শিরক । এজন্যই লোকমান হিকিম শিরককে চরম জুলুম বলেছেন ।
প্রিয় মুসলিম , গাজ্জালীর সামান্য সময় ইজ্জতের আকাংখা উদয় হওয়ার কারণে লিখা বাদ দিতে চেয়েছিলেন , অথচ তুমি লোক দেখানো নামাজ পড়ছো , রমজানের মতো মহাপবিত্র ও মহারহমতের মাসে । ধিক এবং শত ধিক তোমার জন্য ।
প্রিয় মুসলিম , এই ইবাদতের নামে শিরক করার জন্যই রবীন্দ্রনাথ অনুসারীদের চাইতে মৌলবাদীরা বেশি ভয়ংকর । আব্দুল গাফফারদের শত্রুতা দেখা যায় , কিন্তু মৌলবাদী বা জঙ্গিবাদীদের শত্রুতা দেখা যায় না । আর একারণেই মৌলবাদীরা মডারেট মুসলিমের বড়ো শত্রু , তবে রবীন্দ্রনাথ অনুসারীরাও কম যায় না ।
এদের ছাড়াও মুসলমান নামের মুনাফিকরা মডারেট মুসলিমের জন্য চরম আতংক , কারণ এদেরকে সবাই চিনতে পারে না । এদেরকে চেনার জন্য আল্লাহ প্রদত্ত বিশেষ নুরের প্রয়োজন হয় এবং মুনাফিকদের সাথে কিছু সময় কথোপকথনের প্রয়োজন হয় । সত্যিকার অর্থে মডারেট মুসলিমের জন্য এক মহাপরীক্ষার নাম মুনাফিকের দল ।
এসব ছাড়াও বর্তমানে সকল কাফের মুশরিকরা আমাদের চরম শত্রু । কারণ কাফের মুশরিকরা সর্বোচ্চ মাত্রায় জেদি , অহংকারী , লোভী , হিংসুক এবং চরম ঈর্ষাপরায়ণ । তাছাড়া কাফির মুশরিকরা ছাড়াও এখন সকল মানুষের মাঝেই এই খারাপ গুণগুলো সর্বোচ্চ মাত্রায় বিরাজমান । ইনশাআল্লাহ এই খারাপ গুণগুলোকে নিয়ন্ত্রণের জন্য মহান আল্লাহ আমাকে দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন ।
অতএব , আমার দল মডারেট মুসলিমে যোগ দিন এবং আমার পূর্ণ আনুগত্য করুন ।
( ডাঃ আকন্দ ) ।