শুরুতেই আমি রাসুল সাঃ এর জন্মদিন উপলক্ষে মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি এবং দোয়া করছি মহান আল্লাহ তাকে যেনো জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থানে অধিষ্ঠিত করেন । অতঃপর মহান আল্লাহ সৃষ্টিজগতে যতো কিছু সৃষ্টি করেছেন এবং ভবিষ্যতে করবেন , তার মধ্যে মহান আল্লাহর নিকট সবচাইতে প্রিয় বস্তু হলো - মুহাম্মদ সাঃ । পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তেই , যেসমস্ত লোক রাসুল সাঃ এর জন্মদিন উপলক্ষে উৎসব পালন করেন , আমি তাদের সাধুবাদ জানাই এবং তাদের জন্য পূর্ণ হেদায়েত কামনা করি । মহান আল্লাহ তাদেরকে কবুল করুন , আমীন ।
অসাম্প্রদায়িক বলতে একেকজন একেকটা বুঝেন । এমন অনেক মুসলিম আছেন , যারা একেবারেই নামাজ রোজা করেন না , তাদের নিকট অসাম্প্রদায়িকতা হলো - অন্য ধর্মের সাথে মিশে তাদের ধর্ম পালন করা এবং তারা বিশ্বাস করে এটাতে কোনো পাপ নেই । বাংলাদেশের অনেক ব্যাক্তিই এমন কাজ করে থাকেন । এই কাজ ইসলাম কোনোভাবেই অনুমোদন দেয় না । তারা অন্য ধর্মের লোকের সাথে মিলে মিশে তাদের ইবাদত পর্যন্ত করছে । যদি এটা কেউ করে থাকেন , তাহলে সে এখন আর মুসলিম নন । এমন কাজ ভারতে অনেক নায়ক নায়িকারা করে থাকেন , ফলে তারা ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে গেছেন । কবি নজরুলও কিছুটা এমন ছিলেন , এজন্য আমি তাকে পরিপূর্ণ মুসলিম মানতে পারি না ।
আমি মনে করি ভারত যতদিন না পরিপূর্ণ ধর্মনিরপেক্ষ হয় , ততদিন মুসলমানরা কিছু কষ্ট করুক , কিন্তু হিন্দুদের সাথে গিয়ে মুসলমানরা পূজা অর্চনা করবে , যেটা সম্পূর্ণ ইসলাম বিরোধী কাজ এবং এটা ইসলাম কখনো অনুমোদন দেয় না । তবে পূজা দেখতে যাওয়া বড়ো অপরাধ না।
তাহলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বা অসাম্প্রদায়িকতা কি জিনিস , আমার নিকট অসাম্প্রদায়িকতা হলো যার যার ধর্ম সে পালন করবে এবং স্বাধীনভাবে পালন করবে , কোনোরকম বাধা বিপত্তি ছাড়াই । প্রয়োজনে একজন অন্যজনের নিকট যাবে এবং সে ব্যাক্তি কোনোরকম হয়রানি ছাড়াই প্রয়োজন মিটিয়ে দিবে , তবে অবশ্যই ধর্মকে মান্য করে । এছাড়া কেউ কারো সাথে অধিক সখ্যতা গড়ে তুলবে না । আর এতেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় থাকবে এবং বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে ইনশাআল্লাহ ।
আজকে বাংলাদেশে যে সাম্প্রদায়িক হানাহানি দেখা দিয়েছে , তা কিছুটা ভারতের সরকারি দলের মুসলিম বিদ্বেষী রাজনীতির জন্য । তারা যেভাবে মুসলিম বিদ্বেষী তথা বাংলাদেশ বিদ্বেষী রাজনীতি করে , বাংলাদেশের বর্তমান কর্মকান্ড , কিছুটা তার প্রতিফল ।
আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি , বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা যে শ্রদ্ধা সম্মান ও অধিকার পায় , তা পৃথিবীর কোনো দেশেই পায় না । আপনি বর্তমান সরকারের প্রশাসনের দিকে তাকালেই প্রমাণ পেয়ে যাবেন এবং অনেক ক্ষেত্রে সংখ্যালঘুরাই বাংলাদেশে রুলিং করে , তাছাড়া তারা অনেক ক্ষেত্রেই বেশি অধিকার লাভ করে থাকে । যা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক হিন্দু অধ্যাপক অকপটে স্বীকার করেছেন ।
সে যাইহোক , সরকারের কর্তব্য হচ্ছে - সবার জন্য সমান অধিকার নিশ্চিত করা । কোনো দেশে যদি সংখ্যালঘুরা বেশি অধিকার লাভ করে , তাহলে সেদেশেও দাঙ্গা লাগার সম্ভাবনা দেখা দেয় । এজন্য সরকারকে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং ন্যায়ভাবে পদোন্নতি দিতে হবে এবং অন্যায়ভাবে পদোন্নতি দেওয়া যাবে না । তাছাড়া সবার জন্য ধর্মীয় স্বাধীনতা কায়েম করুন । মৌলবাদী উগ্রবাদী এবং জঙ্গিবাদীদের সমূলে ধ্বংস করুন । গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করুন । গনতন্ত্র এবং মৌলবাদ উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদ একসাথে থাকতে পারে না । যারা গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রে ধর্ম প্রতিষ্ঠা করতে চায় , তাদেরকে নিষিদ্ধ করুন । রাষ্ট্রে ধর্ম প্রতিষ্ঠা এবং গনতন্ত্র একসাথে থাকতে পারে না ।
রাষ্ট্রে সবার জন্য সমান অধিকার নিশ্চিত করুন এবং নাস্তিকদের জন্যও সমান অধিকার নিশ্চিত করুন । তবে নাস্তিকরা যাতে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানতে না পারে , সেদিকে সর্বোচ্চ লক্ষ্য রাখুন । ধর্মীয় অনুভূতিতে সবচাইতে বেশি আঘাত করে আহলে হাদিসরা , এজন্য আমি সরকারের নিকট আবেদন জানাবো , এই আহলে হাদিসদের কথা বলা একেবারে নিষিদ্ধ করুন । আমি মনে করি আহলে হাদিসদের একেবারে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া উচিত , তবে কেউ আইন হাতে তুলে নিবেন না , এটা সরকারের দায়িত্ব । আহলে হাদিসরা এতটাই জঘন্য যে , তারা সারা দিনরাত্রি শুধু অপরের দোষ ত্রুটি খোঁজে বেড়ায় , যেটা সরাসরি অপরের অনুভূতিতে আঘাত হানে । পৃথিবীর সকলেই কখনও একমত হবে না এবং ভিন্নমত থাকবেই , তাই ভিন্নমতকে মানতে হবে এবং শ্রদ্ধা করতে হবে , তাহলেই পৃথিবীতে শান্তি আসবে । তাছাড়া সব ইসলামিক দলেরই কিছু না কিছু ভিত্তি আছে , তাই কারো বিরুদ্ধে কিছু বলার পূর্বে একশোবার ভাবতে হবে এবং সরকারকে এটাই নিশ্চিত করতে হবে ।
কুমিল্লায় যে ঘটনা ঘটেছে , তা সম্ভবত উগ্রবাদী রাজনৈতিক কোনো প্রচেষ্টা এবং এটা কোনো বিপথগামী মুসলমানের কাজ হওয়ারই সম্ভাবনা । এই ঘটনার পর হিন্দুদের উপর আক্রমণ কিছুটা রাজনৈতিক । আমি সরকারের নিকট আবেদন জানাচ্ছি , উভয় ঘটনারই প্রকৃত তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিত করুন । হিন্দুদের উপর আক্রমণ যেমন ইসলাম সমর্থন করে না , তেমনি মুসলমানদেরকে নির্বিচারে গুলি করে হত্যাও ইসলাম সমর্থন করে না । গুলিগুলো কোমরের নিচে করা যেতো । কোনো মুসলমান অন্য মুসলমানকে ইচ্ছাকৃত হত্যা করলে , সে আর মুসলমান থাকে না । এজন্য আমি বলবো সবার জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করুন । কারো প্রতি বেশি ঝুঁকে যাবেন না , এটা ন্যায়ের বিপরীত ।
( ডাঃ আকন্দ ) ।