somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মোহাম্মদ আলী আকন্দ
আমি ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে ১৯৭৭ সালে এস.এস.সি এবং আনন্দ মোহন কলেজ থেকে ১৯৭৯ সালে এইচ.এস.সি পাশ করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সালে এলএল.বি (সম্মান) এবং ১৯৮৫ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএল.এম পাশ করি।

আশাবাদী হওয়ার জন্য আসুন আমরা ইতিহাসের দিকে তাকাই।

০৩ রা এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আশাবাদী হওয়ার জন্য আসুন আমরা ইতিহাসের দিকে তাকাই।

এই সময়টা অনেকের কাছেই একটি ভীতিজনক সময়। করোনাভাইরাসকে বলা হয় “novel” করোনাভাইরাস। নভেল মানে অভিনব, অভূতপূর্ব, নূতন, অদৃষ্টপূর্ব। যেকোনো নতুন জিনিস প্রায়শই ভীতিজনক।

মানব জাতি তাদের নতুন মাইক্রোস্কোপিক শত্রু সম্পর্কে খুব বেশি জানে না। বিজ্ঞানী, চিকিৎসক, নীতিনির্ধারক এবং সাধারণ মানুষ সবাই সীমিত তথ্য দিয়ে এই ভাইরাস সম্পর্কে জানার অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। মনে রাখতে হবে যে আমরা নিয়মিত যে রোগগুলির মুখোমুখি হচ্ছি সেগুলি কয়েক দশক ধরে পর্যবেক্ষণ, অধ্যয়ন, গবেষণা এবং চিকিৎসা করা হচ্ছে; এমন কি কিছু কিছু রোগ আছে যেগুলি কয়েক শতাব্দী ধরে গবেষণা করা হচ্ছে যদিও সব কিছু পুরাপুরি জানা সম্ভব হয় নাই। অথচ করোনাভাইরাস এসেছে মাত্র ৪ মাস আগে।

প্রতিদিন গবেষক এবং বিজ্ঞানীরা এই ভাইরাস সম্পর্কে নতুন নতুন তথ্য জানতে পারছেন। দেখা যাচ্ছে, কখনো এমন তথ্য আসছে যা এই ভাইরাস দমনের ব্যাপারে বিজ্ঞানীরা আশাবাদী হয়ে উঠছেন। আবার এমন তথ্যও আসছে যা তাদেরকে বিস্মৃত হতে হচ্ছে। সংক্রমণ হার এবং মৃত্যুর হার যখন এক দেশে বাড়ছে তখন একই সময়ে আরেক দেশে সংক্রমণ এবং মৃত্যু হ্রাস পাচ্ছে।

প্রতিদিন পরিস্থিতি বদলে যাচ্ছে। আসলে কি হয়েছে এবং ভবিষ্যতে কি হতে যাচ্ছে শুধু এইটুকু পরিষ্কার ভাবে বুঝতেই আরো কয়েক মাস লেগে যাবে।

এখন আমাদের নার্ভকে শক্ত রাখতে হবে। আর নার্ভকে শক্ত রাখার অস্ত্র হচ্ছে অতীত ইতিহাস।



ইতিহাস ১. ৫৪১ সালের প্লেগ রোগে রোমান সাম্রাজ্যের ৫ কোটি মানুষ মারা যায়। যা মোট জনসংখ্যার ২৫%. প্রতিদিন ৫ হাজার মানুষ মারা যেত।
ইতিহাস ২. ষষ্ঠ শতাব্দীতে গুটি বসন্তে বিশ্ব জনসংখ্যার ৩০% মারা যায়। তবে সুখবর হল ১৯৮০ সালে গুটি বসন্ত পৃথিবী থেকে নির্মূল হয়েছে।
ইতিহাস ৩. চতুর্দশ শতাব্দীতে এই প্লেগ রোগে ইউরোপ এবং এশিয়াতে ৭.৫ কোটি থেকে ২০ কোটি পর্যন্ত মানুষ মারা যায়।
ইতিহাস ৪. প্রতিবছর ২০ কোটি মানুষ ম্যালেরিয়াতে আক্রান্ত হয় এবং ৬ লক্ষ মারা যায়।
ইতিহাস ৫. প্রাচীন রোগ যক্ষ্মা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব মতে প্রতিবছর ১৫ লক্ষ মানুষ যক্ষ্মায় মারা যায়।
ইতিহাস ৬. আমরা যারা এখন পৃথিবীতে বেঁচে আছি, আমাদের পূর্বপুরুষরা উপরে উল্লেখিত প্লেগ, গুটি বসন্ত, ম্যালেরিয়া এবং যক্ষ্মার মহামারী মোকাবেলা করে বেঁচে ছিলেন বলেই আমরা এখন পৃথিবীতে আছি।
ইতিহাস ৭. আমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে ছিল না এখনকার মত আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা। রোগটা কি ভাবে ছড়াচ্ছে তা তারা জানতো না। তাদের কাছে ছিল না বিশুদ্ধ পানি বা স্বাস্থ্যকর খাবার। তারপরেও রোগের সাথে যুদ্ধ করে তারা বেঁচে ছিলেন।



তবে এই কথা ঠিক করোনাভাইরাস কম বিপদজনক না। যে সব বৈজ্ঞানিক, ভাইরাস নিয়ে গবেষণা করেন, তারা করোনাভাইরাস নিয়ে একটু বিচলিত।

এটা মনে করে আশাবাদী হতে পারেন যে আমাদের পূর্বপুরুষরা যে ধরণের মহামারী মোকাবেলা করে বেঁচে ছিলেন করোনাভাইরাসে মৃত্যুর হার তার চেয়ে অনেক অনেক কম। তাছাড়া আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা তো আছেই।



অতএব ইতিহাস যদি কোনও ইঙ্গিত বা প্রমাণ বহন করে এবং অতীত যদি ভবিষ্যতকে দেখার কোনও লেন্স হয় তবে আশাবাদী হউন। মনে রাখবেন আমাদের পূর্বপুরুষরা মহামারী মোকাবেলা করে বেঁচে ছিলেন বলেই আমরা পৃথিবীতে বেঁচে আছি।

সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:৪৪
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×