হাজার হাজর বছর ধরে পুরুষরা সব সময় নারীদের কে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে অত্যাচার নির্যাতন করে আসছে। কিন্তু হাজার অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করে কখনো কোন নারী সেই পুরুষদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়নি। পুরুষতান্ত্রিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে কথা বলেনি। যারা বলেছে তাদের মুখ বিভিন্ন ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে তখনও কিছু কিছু মানুষ কথা বলেছে। লিখা লিখি করছে। পুরুষতান্ত্রি নিলর্জিত মানুষ তাদের কুষংস্কার ধর্মকে ব্যবহার করে তাদের ও দমীয়ে দেওয়া হয়েছে। বর্তমান একবিংশ শতাব্দির মাঝা মাঝি সময় থেকে বেশ কিছু দেশে নারীদের তাদের অধিকারের বিষয়ে সচেতন হয়েছে। তারা আজ নির্ভয়ে তাদের অধিকার নিয়ে কথা বলছে। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তাদের মতামত নিয়ে আলোচনা করছে। কিন্তু বর্তমানেও কিন্তু তখনকার মত ধর্মীয় কুসংস্কার তেমন একটা কমেনি। মনে হচ্ছে তা আরো দিন দিন বাড়ছে। নারীবাদ যত বাড়ছে তত তাদের উপর আক্রমণ বাড়ছে। বর্তমানে একবিংশ শতাব্দির সবচেয়ে বিখ্যাত নারী বাদী লেখক হলেন তসলিমা নাসরিন। তসলিমা নাসরিন ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যেতম আপপোসহীন নারীবাদী লেখিকা। নারীবাদ ও লেখালেখির জন্য অসম্ভব জনপ্রিয়তা লাভ করেছেন সমালোচিতও হয়েছেন। নারীর অধিকার নিয়ে বলতে গিয়ে শুধু ধর্মীয় মৌলবাদীর শিকার হয়নি, পুরো রাষ্ট ব্যবস্থা ও পুরুষতান্ত্রিক সমাজ তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করে। এর পরিনামে তিনি কিন্তু ১৯৯৬ সালে নিজের প্রিয় স্বদেশ বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত। মানবতার পক্ষে লিখা তসলিমা নাসরিনের খুব বিখ্যাত ৫টি বই বাংলাদেশে নিষিদ্ধ। তসলিমা নাসরিন প্রচুর পুরুষ্কার ও সম্মান অর্জন করেছেন। সাহিত্যর জন্য দুই বার পেয়েছেন আনন্দ পুরষ্কার। ইওরোপিয়ান পার্লামেন্ট থেকে মুক্তচিন্তার জন্য পেয়েছেন শাখারভ পুরষ্কার, সহিষঞুতা ও শান্তি প্রচারের জন্য ইউনেস্কো পুরষ্কার, ফরাসি সরকারের মানবাদিকার পুরষ্কার, সিমোন দ্য বোভোয়া পুরষ্কার। বেলজিয়াম ও ফরাসি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৪ বার ডক্টরেট। এ রকম একজন লেখিকা কি ভুল বাল কিছু লিখতে বা বলতে পারেন। ্ঁ যিনি নিজের জন্য কিছু না চেয়ে নিজের দেশের ও পৃথিবীর নারী সমাজ কে পুরুষতান্ত্রিক নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য সব সময় লেখনির মাধ্যমে যুদ্ধ করে যাচ্ছে। যে নারীর জন্য তিনি নিজের দেশ ও স্বদেশ ত্যাগ করতে হয়েছে সে নারীরা তার বিরোধীতা করে। আর পুরুষদের কথা তো বাদই দিলাম। যারা সব সময় তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করে বসে আছে। আমার এমনই মনে হয় কখনো তসলিমাকে বাংলাদেশে পায় তাহলে তার মাংশ ও কেউ খুঁজে পাবেনা। কিছু অসাধু মানুষ তার পিছনে লেগে আছে ধমানোর জন্য। নিয়মিত ওনার ওয়ালে তিনি প্রতিদিন নারীদের কে নিয়ে আলোচনা করেন। তেমনি নিয়মিত সেই অসাধু মানুষ তার ওয়ালে বিভিন্ন নোংরা জিনিস দিয়ে তাকে ধমানোর চেষ্টা করছে। তসলিমা নাসরিন কে ধর্ষণ করার ইচ্ছা নিয়ে অকথ্য অশ্রব্য ভাষায় যারা ইনবক্সে মেসেজ পাঠায়, পুরুষাঙ্গের কুৎসিত ছবি পাঠিয়ে আনন্দ লাভ করে, নোংরা চিন্তা ছড়িয়ে সুস্থ মানুষকে অসুস্থ করে তোলে তাদের প্রোফাইলে ডুকে দেখা গেল আল্লাহ মুহাম্মদে, কাবায় মসজিদে, সুরা আয়াতে নামাজ রোজায়, হিজাবে বোরখায় তাদের টাইমলাইন ঠাসা। নিজেদের মুমিন বান্দা ভাবে। এজন্য বলি মুমিন বান্দা হলে এমন হয়। এক কথায় যে যত বেশী ধার্মীক সে তত বেশী অমানুষ। তসলিমা নাসরিন ধর্মীয় গোঁড়ামী ও নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে লেখেন, তা তসলিমা নাসরিন খারাব-অভদ্র-অশ্লীল; মুমিনরা তসলিমা নাসরিনের ইনবক্সে গালাগালি করেন, পুরুষাঙ্গের কুৎসিত ছবি পাঠায় তাই মুমিনরা ভালো-ভদ্র- শালীন।
অবকাশ। অবকাশ তসলিমা নাসরিনের স্বদেশ বাড়ি। যেখানে তিনি ৭ বছর থেকে ২৭ বছর পর্যন্ত কাটিয়েছেন। সেই অবকাশ নিয়ে তসলিমা নাসরিন দুটো বই লিখেছেন, ১. আমার মেয়েবেলা ২. উতল হাওয়া । আমার মেয়ে বেলা বই্িট নিষিদ্ধ করেছেন বর্তমান বাংলাদেশের অবৈধ সরকার, প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর উতল হাওয়া বই টি নিষিদ্ধ করেছেন ভারতীয় উপমহাদেশের ২য় মীরজাফর জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া। তারা বলেছেন বাংলাদেশের মানুষের তার এই বই দুটো পড়ার কোন অধিকার নেই। আর তারা যে একের পর এক অপকর্ম ও একটা গণতান্ত্রিক দেশকে অগণতান্ত্রিক পরিবেশে নিয়ে যাচ্ছে তা মানুষ মেনে নিবে।
একটা সময় ছিল, যখন তসলিমা নাসরিনের ভীষণ জনপ্রিয়তা ছিল বাংলাদেশে। তখন প্রখ্যাত লেখক বুদ্ধিজীবীরা তার প্রশংসা করে পত্রিকায় লিখতেন। তার সাথে পরিচিত হওয়ার জন্য অনেক কবি সাহিত্যিক উম্মুখ হয়ে থাকতো। একটা সময় ছিল হাসান আজিজুল হকের মত স্বনামধন্য লেখক তসলিমা দি কে সম্বর্ধনা দিতেন। কিন্তু তা আর বাংলাদেশে হয়না। না দিলে কি হবে, তসলিমা আজ পৃথিবীর বিখ্যাত বিখ্যাত দেশে ও মানুষের হাত থেকে সম্বর্ধণা গ্রহন করেন। তবুও একটা দুঃখ থাকে যে দেশে জন্ম গ্রহন করলেন সে দেশে তিনি নিষিদ্ধ ও বিতাড়িত।
আমরা যারা তসলিমা পক্ষ তারা শুধু চায় তসলিমা দেশে পিরে আসুক।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:০৫