somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আকাশলীনা- ৬ [ভিন্ন আয়োজনে অন্য সাময়িকী]

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ৩:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আকাশলীনা
পৌষ ১৪১৭] ডিসেম্বর ২০১০] সংখ্যা ০৬] বর্ষ ০১]
--------------------------------------------------------------------------
পাঠ-পূর্বক বিজ্ঞপ্তি]

আকাশলীনা মূলত একটি ছোট পত্রিকা; এটি প্রতি বাংলা মাসের প্রথম সপ্তাহে মুদ্রণ কাগজে প্রকাশিত হয়।
বলা যেতে পারে, সাদা-কালোয় প্রকাশিত এটি আমাদের রঙিন এক স্বপ্নের গল্প!
এখানে মূল পত্রিকার বর্তমান সংখ্যাটি অনলাইন পাঠকদের জন্য সরবারাহ করা হয়েছে। ভালোলাগা-মন্দলাগা বিষয়ে যে কেউই মন্তব্য করতে পারেন...
পত্রিকাটির মুদ্রিত কপি নিয়মিত পেতে চাইলে; ফোন নম্বরসহ আপনিও ঠিকানা লিখে জানান।
আমাদের সম্পাদনা পরিচিতি এবং সরাসরি যোগাযোগ করার ঠিকানা এই লেখার নিচে উল্লেখ আছে।

সকলকে ধন্যবাদ।
- সম্পাদক, আকাশলীনা
--------------------------------------------------------------------------
মূল পত্রিকা এখান থেকে শুরু-
--------------------------------------------------------------------------
সম্পাদকীয়]

বর্ষক্রমে আবার ফিরে এসেছে বিজয়ের মাস। শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি সেইসব সূর্যসন্তানদের। হয়তো সত্যি, স্বাধীনতার পর এতোগুলো বছর পার হলো- অথচ কাক্সিক্ষত সেই স্বাধীনতা এখনও অধরাই রয়ে গেছে। তবু, সাহসী বাঙালি হিসেবে যে জাতি সারাবিশ্বে একদিন নাম কুড়িয়েছিলো, আজ আমরা হতাশ যেনো না হই; একদিন সোনালি সূর্য ঠিকই ধরা দেবে- এই হোক আমাদের শক্তি।
ঊনিশ শতকের সাহিত্যের প্রবাদপুরুষ কাউন্ট লেভ নিকোলাইভিচ তলস্তয়; যাঁর অমর সৃষ্টি- ওয়্যার অ্যান্ড পিস, আনা কারেনিনা। বিশ্বসাহিত্যের আরেক কিংবদন্তি- মার্ক টোয়েন; যিনি লিখে গেছেন, দ্য অ্যাডভেঞ্চারস অব হাকলবেরি ফিন, দ্য অ্যাভেঞ্চারস অব টম সয়ার, দ্য প্রিন্স অ্যান্ড দ্য পপার-এর মতো জগদ্বিখ্যাত বই।
মার্ক টোয়েন-কে যদি বিশ্বসাহিত্যের গুরু বলা যেতে পারে, তবে নিঃসন্দেহে লেভ তলস্তয় লেখকদের ঈশ্বর। ৩০ নভেম্বর ছিলো মার্ক টোয়েনের জন্মদিন; আর ২২ নভেম্বর লেভ তলস্তয়ের মৃত্যু দিবস।
আকাশলীনা একটু দেরিতে হলেও, এ দু-মহীয়সীকেই শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে।
--------------------------------------------------------------------------
কবিতা]
নায়ক শূন্য একটি গল্প
রিয়াজুল আলম শাওন

তোমার মাঝে নিজেকে হারানো
এখনও হয়নি ইতিহাস,
বর্ধিষ্ণু স্বপ্নের রেশ
এখনও দিগি¦দিক ছোটা বাতাস।

তোমার কিশোরী মনে, ভিড় জমায় তরুণের দল
আমি তোমার স্বপ্নপুরুষ হবো
যার সুরে পুড়ে বাঁধ মানবে চোখের জল।

হঠাৎ রৌদ্র- এমন রৌদ্রই সব পোড়ায়,
তাই স্বপ্নেরা হয় উজ্জ্বল
উজ্জ্বল স্বপ্নই দুঃখ বাড়ায়।

আমার রক্ত টগবগে ফোটে, বিবেক উন্মুক্ত হয়
তোমার মিষ্টি চোখের দিশেহারা অধ্যায়
আমি ভরাতে চাই শুভ্র আলোয়।

তোমারই গন্ডি, ভীরু ভীরু কাঁপুনি- সবই বুঝি
তবু অপেক্ষা করি তোমার জন্য,
নির্বোধ বলেই ধৈর্য্যরে যুদ্ধ করি
পরিশেষে গল্পটি হয় নায়ক শূন্য। []
>
অধ্যাপক রোকন উদ্দিন সড়ক, মিস্ত্রিপাড়া, খুলনা
[email protected]
--------------------------------------------------------------------------
জীবজগৎ]
বাঘ বেঁচে থাকুক বাঘের মতোই
আলতাব হোসেন

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বৈশ্বিক উষ্ণতা বেড়ে যাওয়া ও বন উজাড়সহ নানা কারণে হুমকির মুখে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য। সে সঙ্গে খাদ্যাভাব, নির্বিচারে বন্যপ্রাণী নিধন, আবাসস্থল ধ্বংস করায় গভীর সংকটে পড়েছে সুন্দরবনের বাঘ। বিপন্ন থেকে বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীর তালিকায় উঠেছে আমাদের জাতীয় গর্বের প্রতীক রয়েল বেঙ্গল টাইগার। বাঘ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাঘকে বাঘের মতো বাঁচতে দিলে সুন্দরবনের বাঘ বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং অর্থনৈতিক উন্নতির চাবিকাঠি হতে পারে।
এ প্রেক্ষাপটে এবারও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও বিশ্ব বাঘ দিবস উদযাপন করা হয়। এবারের বিশ্ব বাঘ দিবসের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ছিলো- বিপন্ন বাঘ বাঁচান, সুন্দরবন রক্ষা করুন।
সুন্দরবনের আয়তন ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার। এ বনাঞ্চলে বাঘের ঘনত্ব পৃথিবীর মধ্যে সর্বাধিক। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বাঘ আছে বলেই সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষিত এবং প্রাণীদের খাদ্যচক্র টিকে আছে। বর্তমানে বিশ্বের মাত্র তেরোটি দেশে ৩ হাজার ২০০টি বাঘ রয়েছে। এর মধ্যে সুন্দরবন বাঘের সংখ্যায় শীর্ষে। ২০০৪ সালে বাংলাদেশ ও ভারতের বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় বাঘের পাগমার্ক বা পদচিহ্নের ওপর ভিত্তি করে একটি জরিপ পরিচালিত হয়। এ জরিপে বাঘের সংখ্যা ৪৪০টি নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে পুরুষ বাঘ ১২১, বাঘিনী ২৯৮ ও বাচ্চা ছিলো ২১টি। বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘গত একশো বছরে পৃথিবী থেকে প্রায় ৯৭ হাজার বাঘ হারিয়ে গেছে। বর্তমানে বেঁচে থাকা তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার বাঘ হারিয়ে যেতে খুব বেশি সময় যে লাগবে না, তা সহজেই অনুমান করা যায়।’
জুয়োলজিক্যাল সোসাইটি অব লন্ডন-এর আওতায় পরিচালিত সুন্দরবনে প্রান্তীয় এলাকায় বণ্যপ্রাণী ও মানুষের ট্রাস্ট শীর্ষক একটি চলমান গবেষণায় দেখা গেছে, সুন্দরবনের বাঘের সবচেয়ে প্রিয় খাদ্য হরিণ এখনও যত্রতত্র শিকার হচ্ছে। ফলে বাঘ পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোতে গরু ও অন্যান্য গবাদিপশু শিকার করতে চলে আসছে। বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চল, বন অধিদফতরের বন সংরক্ষক তপন কুমার দে বলেন, ‘বাঘ, একটি বনের জীববৈচিত্র্যের অবস্থা বোঝার অন্যতম নিয়ামক। যে বনে বাঘ বেশি, ধরে নেওয়া হয় সে বনের অবস্থা ভালো। বাঘ কমে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে বনাঞ্চলের অবস্থা বিরূপ পরিস্থিতির মুখোমুখি।’ তাই বিলুপ্তির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে থাকা বাঘ রক্ষার জন্য বিভিন্ন দেশের সরকার এবং আন্তর্জাতিক নানা সংস্থা সোচ্চার হয়ে উঠেছে। ইতিমধ্যে বাঘের আবাসস্থল হিসেবে বিবেচিত ১৩টি টাইগার রেঞ্জ দেশ বাঘ সংরক্ষণের জন্য যৌথ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। দেশগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, চীন, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, লাওস, ভুটান, নেপাল ও রাশিয়া।
সম্প্রতি থাইল্যান্ডের হুয়া হিন-এ বাঘ সংরক্ষণ বিষয়ে মন্ত্রিপর্যায়ের সভা হয়েছে। প্রতিটি দেশে বিপন্ন বাঘের আবাসস্থল রক্ষায় প্রাকৃতিক বনের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলার জন্য টেকসই কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সভায় ২০২২ সালে বাঘের বর্তমান সংখ্যা দ্বিগুণ করাসহ টাইগার রেঞ্জ কান্ট্রির জন্য ১৯ দফা কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
ওয়াইল্ড লাইফ ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়ার রণথম্বোর ফাউন্ডেশন ও ওয়ার্ল্ড ন্যাচার ইনস্টিটিউটের তথ্য মতে, গত একযুগে বিশ্বে বাঘের সংখ্যা ৭০ শতাংশ কমে গেছে। একশো বছরের মধ্যে পৃথিবীতে বাঘের সংখ্যা এক লাখ থেকে কমে তিন হাজার ২০০টিতে নেমে এসেছে। একমাত্র বাংলাদেশের সুন্দরবনের বাঘের সংখ্যা দীর্ঘদিন ধরে স্থিতিশীল রয়েছে। বণ্যপ্রাণী বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ড লাইফ ফান্ড সম্প্রতি বাঘ বিষয়ক তিনটি প্রতিবেদনে এ তথ্য উপস্থাপন করে বলেছে- সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির হার অব্যাহত থাকলে ২০৭০ সাল নাগাদ সুন্দরবনের বাঘের সংখ্যা ৯৬ শতাংশ কমে যাবে। এছাড়ও, বাঘ লোকালয়ে চলে আসায় মানুষ বাঘ পিটিয়ে হত্যা করছে।
দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার মেকং অববাহিকায় গত ১২ বছরে ৭০ শতাংশ বাঘ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। কম্বোডিয়া, লাওস, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামে ১৯৯৮ সালে ১ হাজার ২০০টি বাঘ ছিলো। চলতি বছর জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে, সেখানে বাঘের সংখ্যা কমে ৩৫০টিতে দাঁড়িয়েছে। ১৯১০ সালে বিশ্বে বাঘের সংখ্যা ছিলো এক লাখ, ১৯৮০ সালে তা কমে ২০ হাজার ও ২০১০ সালে ৩ হাজার ২০০তে নেমে এসছে। এ প্রক্রিয়া চলতে থাকলে ২০১১ সালের মধ্যে মেকংসহ পৃথিবীর বেশকিছু এলাকা থেকে বাঘ বিলুপ্ত হয়ে যাবে। বাঘ বিশেষজ্ঞরা মোটামুটি একমত, পূর্ব এশিয়াই হলো বাঘের আদি নিবাস। দক্ষিণ চীনের বাঘই আধুনিক বাঘের পূর্বসূরি। বাঘের মাথার খুলির আকার থেকে তারা এ বিষয়ে একমত হন। তাদের ধারণা, ২০ লাখ বছর আগে দক্ষিণ চীন থেকে দু-দল বাঘ বের হয়। এক দল চলে যায় উত্তর রাশিয়ার দিকে, অন্য দল দক্ষিণ দিকে। দক্ষিণ দিকের দলটি ইন্দোনেশিয়া আর বাংলাদেশ-ভারতের দিকে চলে আসে। এ দলের বাঘই রয়েল বেঙ্গল টাইগার নামে পরিচিত। []
>
রচনাটি আমাদের বিশেষ সংগ্রহ থেকে প্রকাশিত।
--------------------------------------------------------------------------
গল্প]
নবজন্ম
মো. জাবেদ হোসেন

আজ সকালটা একটু অন্যরকমভাবেই শুরু হলো জলির। যদিও অন্য সকালগুলোর মতোই ছিলো আজকের পরিবেশ, শুধু প্রতিবেশটাই যা ছিলো ভিন্ন। বিয়ের দু-বছরে এই প্রথম হাসান তাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে তুলেছে। এমনিতে সামান্য খুট করে শব্দ হলেও জলির ঘুম ভেঙে যায়, অথচ আজ কী যে হলো- হাসান এতোকিছু করে ফেললো অথচ কিছুই টের পায়নি সে? শুধু আধো ঘুম আর আধো জাগরণের মাঝে বুঝেছে- একটা হাত, তার কপালের অবিন্যস্তভাবে ছড়িয়ে থাকা কেশরাজিকে দু-কানের ভাঁজে গুজে দিচ্ছে; কিছুটা শক্ত গোছের হাতটার সরু আঙুলগুলোর একটি ওর কপাল থেকে নাক হয়ে ঠোঁট ছুঁয়ে যেতেই জলি চোখ মেলে। দেখে হাসান, যে এখন তার চোখের দিকে চেয়ে মিটিমিটি হাসছে। আচমকা মানুষটা তার কপালে গভীর এক চুমু এঁকে দিয়ে বলে, ‘শুভ জন্মদিন!’ অপার্থিব এক ভালোলাগায় ভরে গেলো জলির মন। হাসানের ইশারায় পাশে ফিরে দেখে, বেড টেবিলে সাজানো আছে ছাব্বিশটা লাল গোলাপ। বলে দিতে হয়নি- জলি নিজেই বুঝেছে এর প্রতিটি গোলাপ ওর জীবনের এক-একটি বসন্ত উদযাপনের স্মারক। গোলাপগুলোর পাশে দু-কাপ চা। চা পেয়ে খুব বিস্মিত হয় জলি। কারণ, এই বাড়িতে বেড টি-র প্রচলন নেই। নিজের শ্বশুর-শ্বাশুড়ি, এমন কি হাসানকেও কখনও বেড টি পান করতে দেখেনি। ওকে চমকে দিতে নিশ্চয় হাসানের এই ব্যতিক্রম আয়োজন। চায়ে পাতার চেয়ে পানি একটু বেশিই হয়ে গেছে। তবুও হাসানের অপটু হাতে তৈরি চায়ে চুমুক দিতে দিতে, স্বামীর প্রতি কৃতজ্ঞতায় জলির দু-চোখ ভিজে ওঠে। বেচারা হাসান নিশ্চয় অনেক ভোরে বিছানা ছেড়েছিলো। তারপর স্ত্রীর জন্য ছাব্বিশটা তাজা গোলাপ জোগাড় করতে হয়েছে; চা তৈরি করেছে। আর এ সবকিছুই করতে হয়েছে বাবা-মায়ের অগোচরে। স্বামী-স্ত্রীর নিজস্বতা কি আর বাবা-মায়ের সামনে আনা যায়? হাসান এতোসব করেছে- এটা ভাবতেই তো জলির লজ্জা লাগছে! চা পান শেষে হাসান তাকে দু-হাত টেনে বিছানা থেকে নামিয়ে, ড্রেসিং টেবিলের দিকে নিয়ে গেলো। কলা পাতা রঙের নতুন একটা শাড়ি জলির কাঁধে জড়িয়ে দিয়ে, ড্রেসিং টেবিলের আয়নার দিকে অপলক তাকিয়ে রইলো হাসান। নতুন শাড়ির খসখসে স্পর্শ আর ঘ্রাণ, জলির দেহমনে অদ্ভুত এক আবেশ ছড়িয়ে দেয়। আয়নায় দুষ্টু চোখে জলিকে দেখছিলো হাসান; আর পেছন থেকে কোমর জড়িয়ে ধরে, জলির পেলব গ্রীবা ঠোঁটের আলতো ছোঁয়ায় রাঙিয়ে দেয়। মানুষটা পুরোপুরি বন্য হয়ে ওঠার আগেই, জলি নিজেকে স্বামীর হাত থেকে ছাড়িয়ে বাথরুমে ছুটে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। তখন হাসান বেশ শান্তভাবেই দরজায় টোকা দেয়। জলি বললো, ‘দশ মিনিট সময় দাও, জান! আমি এখুনি আসছি।’

হাসান ফিরে এসে গোলাপগুচ্ছটি নিয়ে নাকের কাছে এনে লম্বা একটা শ্বাস নেয়। গোলাপের মিষ্টি সুবাস তার মস্তিষ্কের নিউরণে ভালোলাগার ঢেউ তোলে। তার মনে হয় এ যেনো শুধু গোলাপের সুবাস নয়, তার জীবনের মধুরতম মূহুর্তগুলোর মিষ্টি সুবাস! দেখতে দেখতে তাদের বিবাহিত জীবনের দু-টি বছর কেটে গেলো। অথচ বিয়ে হওয়াটা এতো সহজ ছিলো না। মা-বাবার অমতে পছন্দের মেয়েকে ঘরে তোলা অনেক কঠিন ব্যাপার হয়েছিলো তার জন্য। লেখাপড়া শেষ হয়নি, জলিদের পরিবার থেকে বিয়ের জন্য প্রচন্ড চাপ; হাসানের বাবার চাওয়াটাও অযৌক্তিক ছিলো না। তার মতে, ছেলে লেখাপড়া শেষ করে আয়-রোজগার করবে; তবেই না বিয়ে থা। মানুষের জীবনে সবকিছু হয়তো কঠিন শৃংখলার মধ্য দিয়ে যায় না- এই সত্যটি তিনি বুঝতে চাননি। হাসানের মা বুঝেছেন বলেই রক্ষে; সবকিছু ছাপিয়ে জলি এখন হাসানের। স্নান শেষে জলি এসে দেখে, হাসান গোলাপগুলো হাতে নিয়ে তন্ময় হয়ে কি যেনো ভাবছে। স্বামীর কাঁধে হাত রেখে সে জিজ্ঞাসু চোখে তাকায়। পেছন ফিরে জলিকে দেখলো কিছুক্ষণ হাসান। স্নানের পর জলিকে এখন কী অপরূপ-স্নিগ্ধ দেখাচ্ছে! ভেজা চুল থেকে বিন্দু বিন্দু জল গড়াচ্ছে। যেনো ভোরের শিশিরে ভেজা পত্র-পল্লব দেখছে সে; হাসান আর নিজেকে ধরে রাখতে পারে না- গভীর আবেগে বুকে টেনে নেয় জলিকে। দীর্ঘ আলিঙ্গন আর চুম্বনে ওদের ভালোবাসা গাঢ় হতে থাকে...

সকালের নাশতা শেষে হাসান বেরিয়ে পড়ে কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে। যাবার আগে বলে যায় তাড়াতাড়ি ফেরার চেষ্টা করবে, ফিরে এসে দু-জনে অনেক গল্প করবে। জলি মাথা দুলিয়ে স্বামীকে বিদায় জানায়। রসুইঘরে সকালের এঁটো থালাবাসন পরিষ্কার করতে করতে জলি শ্বাশুড়ীকে বলে, ‘আম্মা, আজ আমাকে মোরগ-পোলাউ রান্না করাটা একটু শিখিয়ে দেবেন।’ বৌমার ধুয়ে দেয়া কাপ-পিরিচ তুলে রেখে হাসানের মা নূরজাহান বেগম জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললেন, ‘আজ হঠাৎ মোরগ-পোলাউ কেনো! বৌমা?’ জলি তার জন্মদিনের বিষয়টি সচেতনে এড়িয়ে গিয়ে বলে, ‘এমনি। ও খেতে চেয়েছিলো।’ একমূহুর্ত কি যেনো ভাবলেন নূরজাহান বেগম। তারপর বললেন, ‘ফ্রিজ থেকে মাংসের প্যাকেটটি নিয়ে এসো। আমি পোলাউর চাল নামিয়ে নিচ্ছি।’ জলি ফ্রিজ থেকে মাংস আনতে ছুটে গেলো। খুশির ঝিলিক তার চোখে-মুখে। বিধাতা যেনো আজকের দিনটি তার জন্য বিশেষ করে দিয়েছেন। চাহিবা মাত্র পৃথিবীর সকল সুখ তার হাতে এসে ধরা দিতে বাধ্য থাকিবে- এমনটিই নির্ধারিত হয়েছে। মনে মনে সৃষ্টিকর্তার কাছে অশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করলো। সমস্ত ঘর মোরগ-পোলাউর গন্ধে মাতিয়ে বৌ-শ্বাশুড়ী মিলে রাতের খাবারের আয়োজন সম্পন্ন করলেন। বৌমার বালিকা সুলভ উচ্ছ্বাস বেশ ভালো লাগলো নূরজাহান বেগমের। হাসানের বাবার ঘরে তিনি যখন বউ হয়ে এসেছিলেন তখন তিনিও অনেক কিছু রাঁধতে জানতেন না। তার শ্বাশুড়ী তাকে শিখিয়েছেন। এখন তিনি বৌমাকে শেখাচ্ছেন। পারিবারিক পরম্পরা বুঝি একেই বলে?

রাত আটটা বেজে পঁয়তাল্লিশ মিনিট। হাসানের প্রতিশ্রুতি মোতাবেক আর তাড়াতাড়ি ফেরা হলো না। ফিরবেই বা কি করে, প্রাইভেট ফার্মের চাকরিতে সময়ের কোনো বালাই নেই। যেদিন ফেরার তাড়া থাকে, সেদিন আরও দেরি হওয়াটা যেনো অত্যাবশ্যকীয় নিয়ম। বাসায় ফিরতে ফিরতে তাই সাড়ে নয়টা। সাড়ে দশটায় সবাই একসাথে খাবার টেবিলে বসেছে। মোরগ-পোলাউ হাসানের ফেবারিট ডিশ। জলির দিকে তাকিয়ে চোখের ইশারায় সে ধন্যবাদ জানায়। ‘কি ব্যাপার! আজ হঠাৎ মোরগ-পোলাউ?’ হাসানের বাবা আমিন সাহেব জানতে চাইলেন। ‘এমনি, হাসান খেতে চেয়েছে, তাই।’ নূরজাহান বেগম জবাব দিলেন। হাসান আড়চোখে জলির দিকে তাকায়। তার মানে, মাকে বলা হয়নি জন্মদিনের কথাটা। ‘রোজগার করছো ভালো কথা, তাই বলে বিলাসিতা করে সব একদিনেই উড়িয়ে দিও না।’ আমিন সাহেব হাসানকে উদ্দেশ করে বললেন। হাসান তার উত্তর দিতে গিয়ে বলে, ‘বাবা, আজ জলির জন্মদিন। ওকে ঘরে তোলার দু-বছরেও কোনো আনুষ্ঠানিকতা করা হয়ে ওঠেনি। তাই ভাবলাম, ওর জন্মদিন উপলক্ষে একটু ভালো খাবারের আয়োজন করি।’ বাবার দিকে না তাকিয়েই কথাগুলো বলল হাসান। জলির জন্মদিনের কথা শুনে নূরজাহান বেগম যারপরনাই বিস্মিত হন। সারাদিন দু-জনে মিলে এতোকিছু করলেন, কই, বৌমা একবারও তো বলেনি আজ তার জন্মদিন! অবশ্য তাকে দোষ দিয়ে লাভ কি। বৌ হয়ে সে কি আর ঢোল পিটিয়ে বলে বেড়াবে যে, জন্মদিন-জন্মদিন! হাসান তো অন্তত বলতে পারতো। ব্যথাতুর দৃষ্টিতে তিনি জলির দিকে তাকালেন। লজ্জায় সে প্লেট থেকে চোখ তুলতে পারছে না, আবার খেতেও পারছে না। বিব্রত আমিন সাহেব দ্রুত খাওয়া শেষ করে নিজের কক্ষে ফিরে গেলেন। নূরজাহান বেগম তাঁকে অনুসরণ করেন।

নূরজাহান বেগম স্বামীর জন্য পানের খিলি তৈরি করছেন। আমিন সাহেব চিন্তিত ভঙ্গিতে বসে আছেন। জলিকে ঘরে তোলার দু-বছরেও কোন আনুষ্ঠানিকতা করা হয়ে উঠেনি- হাসানের কথাটা তাঁর কানে বারবার বেজে চলেছে। ছেলেকে তিনি অপরিপক্ক ঠাওরেছিলেন। কিন্তু সে যথেষ্ট পরিপক্কতার পরিচয় দিয়েছে আজ। তিনিই বরং বালকসুলভ আচরণ করে এসেছেন এতোদিন। ছেলে নিজের পছন্দে বিয়ে করেছে, তিনি মেনে নিতে বাধ্য হয়েছেন। বাবা হিসেবে তাঁর শখ থাকতে পারে নিজে পছন্দ করে ছেলেকে বিয়ে করানোর। কিন্তু কাজটা যেহেতু ছেলে নিজে করেই ফেলেছে, এরপর আর মনে রাগ পুষে রাখাটা ঠিক হয়নি। ছোটরা ভুল করবে, বড়রা যদি ক্ষমাসুলভ দৃষ্টিতে দেখতে না পারেন, তবে তারা বড় কোন অর্থে। ‘কি এতো ভাবছেন,’ স্ত্রীর এ প্রশ্নে সংবিত ফিরে পেলেন তিনি। ‘আমাদের বড্ড ভুল হয়ে গেছে, হাসানের মা! হাসানের বিয়েটা আমরা মন থেকে মেনে নিতে পারিনি। নিজেদের অজান্তেই ওদের সাথে বিমাতাসুলভ আচরণ করে এসেছি।’ আমিন সাহেবের এ কথায় তাঁর স্ত্রী বললেন, ‘যা হবার তা হয়েছে, আপনি ওসব নিয়ে মন খারাপ করবেন না তো। দেরি হয়েছে ঠিকই, তবে সময় ফুরিয়ে যায়নি। আপনি চাইলে আমরা আজই বৌমাকে বরণ করে নিতে পারি।’ নূরজাহান বেগম সান্ত¡না দিয়ে স্বামীকে বললেন। ‘তুমি ঠিকই বলেছো হাসানের মা, অনেক দেরি হয়ে গেছে। তবে আর দেরি করাটা ঠিক হবে না। ওদের ডাকো। আমি ওদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেবো। বাবা হিসেবে যতো খারাপ হই না কেনো, ওরা নিশ্চয় আমাকে ক্ষমা করতে পারবে।’

অফিস থেকে ফিরে এসে দু-জনে অনেক গল্প করার কথা থাকলেও, হাসান আর জলির কক্ষে দুঃসহ নীরবতা। খাবার টেবিলে কিছুক্ষণ আগে ঘটে যাওয়া ঘটনায় দু-জনই বেশ বিব্রত। হাসান বিছানায় শুয়ে ছাদের দিকে তাকিয়ে আছে। আর জলি বিছানার কিনারায়। কেউ কথা বলছে না। অবশেষে দরজায় কড়া নাড়ার শব্দে অবসান হলো দীর্ঘ নীরবতার। জলি দরজা খুলে দিলে নূরজাহান বেগম ভেতরে ঢোকেন। ‘বৌমা, সারাদিন দু-জন মিলে এতোকিছু করলাম, একবারও বললে না আজ তোমার জন্মদিন। তোমাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানোর অধিকার কি আমার নেই?’ নূরজাহান বেগমের অনুযোগে জলি মাথা নিচু করে বলে, ‘আম্মা, আসলে তা না। আমি আপনাকে বলবো বলবো করে ভুলে গিয়েছিলাম।’ নূরজাহান বেগম এবার ছেলেকে বললেন, ‘খোকা, তুইও তো বলতে পারতি।’ হাসানকে তিনি খোকা বলেই ডাকেন। হাসান নিশ্চুপ রইলো। নূরজাহান বেগম জলির দু-হাতে এক জোড়া সোনার বালা পরিয়ে দিয়ে বললেন, ‘বৌমা, আমি যখন এ বাড়ির বউ হয়ে আসি, তোমার দাদী শ্বাশুড়ী আমাকে এই বালা জোড়া পরিয়ে দিয়েছিলেন। আজ থেকে এগুলো তোমার। আর ক-দিন পরে তোমার কোল জুড়ে আমার নাতি আসবে। নাতবৌ দেখে যাওয়ার সৌভাগ্য কি আর আমার হবে! আমার নাতবৌয়ের হাতে তুমি এই বালা জোড়া পরিয়ে দেবে। আমার শ্বাশুড়ীর দেয়া আমানত আমি এতোদিন আগলে রেখেছি। এখন তোমার পালা। এই আমানতটুকু তুমি যত্ন করে রেখো বৌমা।’ আনন্দের আতিশয্যে জলি অশ্রু সংবরণ করতে পারেনি। মা বলে ঝাপিয়ে পড়ল শ্বাশুড়ীর বুকে। হাসানের চোখেও জল। কান্না জড়ানো কন্ঠে সে বলল, ‘আমার ছেলের বৌ না দেখে তুমি কোথাও যেতে পারবে না, মা!’ নূরজাহান বেগম হাসানকেও বুকে টেনে নিলেন। ‘পাগল ছেলে,’ বলে খোকার কপালে চুমু এঁকে দিলেন।

হাসান ও জলি আমিন সাহেবের সামনে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে। ওদের পেছনে নূরজাহান বেগম দাঁড়িয়ে। ‘বৌমা, তোমার মা-বাবা অনেক আশা করে, আমাদের ওপর অনেক আস্থা রেখে তোমাকে এ ঘরে পাঠিয়েছেন। আমি তাদের সে বিশ্বাসের অবমূল্যায়ন করেছি। আমাকে তুমি ক্ষমা করে দিও, বৌমা। আমার ছেলেটা বড্ড অবুঝ আর সরল। সুখে-দুঃখে তুমি ওর পাশে থেকো, মা! আমার দোয়া তোমাদের সাথে থাকবে।’ আমিন সাহেব এক নাগাড়ে কথাগুলো বলে গেলেন। হাসান ও জলির যেনো আজ শুধু অবাক হবার পালা। শ্বশুরের পা ছুঁয়ে সালাম করতে গেলে, তিনি জলিকে বুকে টেনে নেন। হাসানকে ডেকে নিয়ে চারটি পাঁচশ টাকার নোট হাতে দিয়ে বললেন, ‘কাল তো ছুটির দিন। তোমরা কোথাও বেড়িয়ে এসো।’ অশ্র“সজল চোখে হাসান ‘জ্বি আচ্ছা,’ বলে, বাবাকে জড়িয়ে ধরে। ‘বাবা, আপনি আমাকে ক্ষমা করে দেবেন। আমি আর কখনও আপনার অবাধ্য হবো না।’ সন্তানকে জড়িয়ে ধরতে পেরে আমিন সাহেবের বুক যেনো হালকা হয়ে গেলো। তিনি চোখের জল লুকাতে পারলেন না। নূরজাহান বেগমেও কাঁদছেন। তবে এ কান্না বিষাদের নয়। অনেক খুশির, অনেক আনন্দের... []
>
ডি টি রোড, পাহাড়তলী, চট্টগ্রাম-৪২০২
[email protected]
--------------------------------------------------------------------------
বিজয় দিবস বিশেষ]
আমার মুক্তি আমার একাত্তর
সালমান তারেক

আমার সৌভাগ্য আমি বাংলাদেশে জন্মেছি, আমার দুর্ভাগ্য আমি বাংলাদেশে বেঁচে আছি। যে মাটিতে লাখো শহীদের প্রাণ মিশে আছে, মিশে আছে দেহের রক্ত, মিশে আছে বিজয়া নারীর সম্ভ্রামের ছোপ ছোপ কালো রক্ত, যে মাটিতে শুয়ে আছে আজন্ম প্রাণসঞ্চারী জাতির জনক, যে মাটিতে নাক শুঁকলে পাওয়া যায় ভাসানীর গন্ধ; সে মাটিতে জন্ম নিলে কে আছে নিজেকে সৌভাগ্যশীল দাবি করবে না।
আমিও একজন। নিখিল অজপাড়াগায়ে জন্ম নিলেও গ্রাম এখন গ্রাম নেই। কথিত উন্নয়নশীলতার ছোঁয়ায় হা-ডু-ডু আজ হাওয়া, গোল্লাছুটের গল্প শুনে ক্লাস টেনের জোবায়ের মুচকি হাসে- ক্যাটরিনা কাইফের চেয়ে নিশ্চয় সুন্দর নয়? ...সেই গ্রামে জন্ম নিয়ে, যার পাশ দিয়ে বয়ে গেছে হাঁটুজল নদী সোনাই- বিজয়ের মাসে গর্বরা পতপত করে উড়ে; কিন্তু এ বাতাস কতক্ষণ? মুষড়ে পড়ি বেঁচে থাকার যন্ত্রণায়। নিজেকে জীবন্ত দেখার আলো কেমন মিইয়ে আসে। আসবে না? যে দেশে দেখতে হয় মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী লম্পটদের গাড়িতে লাল-সবুজের অহঙ্কার, যে দেশে দেখতে হয় নব্য বেনিয়াদের গ্যাস বিক্রির পাঁয়তারা, যে দেশে দেখতে হয় বাড়ির জন্য ধর্মঘট, যে দেশে ধর্মান্ধতা হয় ধার্মিকতা; সে দেশে জন্ম নিয়ে বেঁচে থাকার সাধ ক্রমেই তেতো হয়ে আসে, বেঁচে থাকা কেমন যন্ত্রণা, বিষাক্ত যন্ত্রণাই লাগে।
বায়ান্নর পথ ধরে ভাষার স্বাধীনতার সঙ্গে যখন জাতীয় মুক্তির লড়াই তীব্রতর হয়, যখন এ দেশের কোটি জনগণ নিজেদের খুঁজে ফেরে মুক্তির আনন্দে। এরই মধ্যে জনগণের আকাক্সক্ষার মাঝখানে চালিয়ে দেয় কথিত ধর্মের করাত। ধর্ম আর কথিত জাতীয়তাবাদের ধুয়া তুলে বুদ্ধি, অস্ত্র, দালালি- সব কুবৃত্তিপনা দিয়ে ঠেকাতে চায় আহারের নিয়ন্ত্রাকে। লাখো শহীদের রক্তের অধিকারে আদায় করা এ আমাদের বাংলাদেশ কতটা নিরাপদ? আমরা কি এখনও মুক্তির আলোয় জীবনের আনন্দ, বেঁচে থাকার পূর্ণতা লব্ধ করতে পারি না? এভাবে আর কতো দাসত্বপনার রাজত্ব চলবে? আবারও ঘুরে এলো বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। গান-কবিতা-প্রবন্ধ-আলোচনায় রেডিও-টিভি-পত্রিকায় আবারও মাতবো ১৬ কোটি জনগণ। তবুও বুভুক্ষা, সাহায্য ভিক্ষুক এ বাংলাদেশের মানুষের ভেতরের মানুষ জাগবে না? তাই বেঁচে থাকি খুব যন্ত্রণাভরে। দুর্ভাগ্যবশত। তবু বিজয়ের আনন্দ অমর হোক। []
--------------------------------------------------------------------------
শ্রদ্ধাঞ্জলি]
মার্ক টোয়েন : জন্ম-শতবার্ষিকী
আকাশলীনা ডেস্ক

কালজয়ী ঔপন্যাসিক মার্ক টোয়েন-এর মৃত্যুর একশো বছর পর, তাঁর আত্মজীবনীর বাকি অংশ প্রকাশিত হলো ১৫ নভেম্বর, সোমবার।
পশ্চিমা সংবাদমাধ্যম থেকে জানা গেছে, মার্ক টোয়েন তাঁর জীবদ্দশায় একটি পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে আত্মজীবনী লিখেছিলেন। প্রকাশিত ওই লেখাগুলো নিয়ে ৩০৭ পৃষ্ঠার একটি ভলিউম প্রকাশিতও হয়েছিলো সে সময়। তবে শেষ দিকে এসে তিনি আর কোনো পত্রিকা বা প্রকাশনা সংস্থার কাছে আত্মজীবনীর বাকি অংশের পাণ্ডুলিপি দেননি। পরবর্তীতে জানা যায়- মৃত্যুর আগে একটি প্রকাশনা সংস্থার সঙ্গে তিনি চুক্তি করেন যে, তাঁর মৃত্যুর ১০০ বছর পর ছাড়া তা ছাপানো যাবে না। ১৯১০ সালে মার্ক টোয়েনের মৃত্যু হয়। সেই হিসাবে ১০০ বছর পূর্ণ হওয়ায় বইটির বাকি অংশ এবার প্রকাশ করা হয়েছে। নতুন এই ভলিউমে আরও নতুন ৪২৯ পৃষ্ঠা যুক্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে নতুন বইয়ের পৃষ্ঠাসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৩৬।
ডেইলি টেলিগ্রাফ-এর এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, অপ্রকাশিত অংশে মার্ক টোয়েন তাঁর একান্ত সহকারি ইসাবেল ভ্যান ক্লিক লিওন-কে শঠ, চোর, মাতাল, প্রতারক, চক্রান্তকারিণী ও নোংরা মেয়েমানুষ বলে রীতিমতো গালি দিয়েছেন। স্ত্রী মারা যাওয়ার পর, ইসাবেলকে তাঁর সম্পত্তি হস্তান্তরের আমমোক্তারনামা বা পাওয়ার অব অ্যাটর্নি-র ক্ষমতা দেন মার্ক। তবে এর দুই বছর পরই তিনি তা প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন।
মার্কের অপ্রকাশিত পাণ্ডুলিপিতে তিনি দাবি করেছেন, ইসাবেল তাঁকে দুই থেকে তিন বছর প্রায় মোহগ্রস্ত করে রেখেছিলেন। তবে ইসাবেলের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা কোন পর্যন্ত গড়িয়েছিলো, সে বিষয়ে তিনি পরিষ্কার কোনো ধারণা দেননি। ডেইলি টেলিগ্রাফ-এর সাংবাদিক ও সংবাদ বিশ্লেষক ফিলিপ শেরওয়েল বলেছেন, ‘মার্ক টোয়েন ইসাবেলের বিরুদ্ধে যেভাবে বিষোদ্গার করেছেন, তা ১০০ বছরের পুরোনো ক্ষতকে আবার জাগিয়ে দিয়েছে। এটা টোয়েনের ব্যক্তিগত চরিত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।’
১৮৩৫ সালের ৩০ নভেম্বর মার্ক টোয়েন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় জন্ম নেন। ১৯১০ সালের ২১ এপ্রিল তাঁর মৃত্যু হয়। দি অ্যাডভেঞ্চারস অব হাকলবেরি ফিন, দি অ্যাভেঞ্চারস অব টম সয়ার, দি প্রিন্স অ্যান্ড দ্য পপার-সহ তাঁর বহু বিশ্বখ্যাত গ্রন্থ প্রধান প্রধান প্রায় সব ভাষাতেই অনূদিত হয়েছে। []
--------------------------------------------------------------------------
শ্রদ্ধাঞ্জলি]
লেভ তলস্তয় : মৃত্যু-শতবার্ষিকী
আন্দালিব রাশদী

একবার এক জার অসুস্থ হয়ে পড়লেন। সুস্থ হয়ে ওঠার এমনই আকুল আগ্রহ তাঁর, তিনি রাজ্যে ঘোষণা দিলেন, ‘যে আমাকে সুস্থ করে তুলতে পারবে, তাকে আমার রাজত্বের অর্ধেক অংশই দিয়ে দেবো।’ রাজ্যের সব জ্ঞানী লোক একত্রে মাথা খেলাতে শুরু করলেন, কেমন করে জারকে সারিয়ে তোলা যায়- কিন্তু কেউই নিশ্চিত নন। জ্ঞানী লোকদের একজন বললেন, ‘সত্যিকার এক সুখী মানুষের গায়ের জামা যদি জারকে পরিয়ে দেওয়া যায়, তাহলে জার সেরে উঠবেন।’ এবার জার আদেশ করলেন, ‘এখনই একজন সুখী মানুষ খুঁজে বের করা হোক।’ প্রজারা গোটা রাজত্বের ভেতর-বাহির, যত জায়গায় যাওয়া সম্ভব, হন্যে হয়ে সুখী মানুষ খুঁজে বেড়ালো। কিন্তু কারও সঙ্গেই সবকিছু পুরোপুরি মিলছে না। একজন ধনী তো স্বাস্থ্য খারাপ, অন্যজন সুস্বাস্থ্যের অধিকারী কিন্তু পকেট ফাঁকা। একজনের স্বাস্থ্য ও সম্পদ দুই-ই আছে কিন্তু বউটা ভীষণ খিটিমিটি প্রকৃতির। কোনো না কোনো ব্যাপাওে প্রত্যেকেরই ক্ষোভ ও অসন্তোষ রয়েছে। একদিন জার-পুত্র অনেক দূরের কোনো এলাকা থেকে রাজপ্রাসাদে ফিরছিলো। হঠাৎ শুনলো, একটি কুটিরের ভেতর থেকে কে যেনো বলছে, ‘হে খোদা, তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। তুমি আমাকে এমন চমৎকার একটি দিন দিয়েছ। আজ আমি কিছুটা কাজকর্ম করতে পেরেছি, খাওয়ার মতোও কিছু জুটেছে। এখন আমি শান্তির সঙ্গে একটা দারুণ ঘুম দেবো। তোমার কাছে আমার আর চাওয়ার কিছু নেই। আমার আর কোনো কিছুর প্রয়োজনও নেই।’ এইসব কথা শুনে জার-পুত্র আনন্দে চিৎকার করে উঠলো, ‘সুখী মানুষ পেয়ে গেছি!’ প্রাসাদে ফিরে এসে রাজদূতদের অনেক টাকা-পয়সা দিয়ে বললো, ‘সে যা চায় তা-ই দেবে, তার শার্টটা এখনই কিনে নিয়ে এসো।’ রাজদূতেরা টাকা নিয়ে রওনা হলো, লিটল ফাদারকে সেই সুখী লোকটির শার্ট পরিয়ে রোগমুক্ত করা হবে। সে আমলে প্রজারা জারকে ছোট বাবাই বলত। কিন্তু তারা যখন পৌঁছালো, দেখলো সেই সুখী লোকটির পরার মতো কোনো শার্টই নেই! এই ছিলো গল্প- লেভ তলস্তয় ব্যক্তিগত জীবনে নিজের জন্যও চেয়েছিলেন সবচেয়ে সস্তা ও অতি সাধারণ কফিন।

শতবর্ষ আগে : ১৯১০
ভার্জিনিয়া উলফ মনে করেন- ১৯১০, আরও সুনির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে ডিসেম্বর ও এর কাছাকাছি সময়ে মানব চরিত্র বদলে গিয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘যখন মানুষের সম্পর্ক প্রভু ও ভৃত্যের, স্বামী ও স্ত্রীর, পিতামাতা ও সন্তানের মধ্যে পাল্টে যেতে থাকে, তখন একই সঙ্গে ধর্ম, আচরণ, রাজনীতি এবং সাহিত্যেও মানুষের সম্পর্ক বদলে যায়।’

তাহলে, ১৯১০-এ কী ঘটেছে?
লেভ তলস্তয় মৃত্যুবরণ করেছেন। হ্যালির ধূমকেতু দেখা দিয়েছে। চিত্রকলায় কিউবিজম বিকাশ লাভ করতে শুরু করেছে।
পিটার স্ট্যাভিনস্কি-র ব্যালে দ্য ফায়ারবার্ড তখন ইউরোপ মাতিয়ে তুলেছে। আধুনিকতার চাপ ঐতিহ্যগত রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করেছে। পোস্ট-ইম্প্রেশনিস্টদের প্রদর্শনী শুরু হয়েছে।
আরও অনেক ঘটনা- অটোমান শাসনবিরোধী আন্দোলনে আলবেনিয়া স্বাধীন হয়েছে, নিহত হয়েছেন মিসরের প্রথম দেশিয় প্রধানমন্ত্রী বুট্রোস ঘালি, নতুন দেশ সাউথ আফ্রিকা ইউনিয়নের জন্ম, ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের মৃত্যু, লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস ভবনে বোমা বিস্ফোরণ এবং ২৭ জনের মৃত্যু, উড়োজাহাজের প্রথম বাণিজ্যিক ব্যবহার, অটোমোবাইল বিপ্লব, হেনরি ফোর্ডের ১০ হাজার গাড়ি বিক্রি, মার্ক টোয়েন এবং ও-হেনরির মৃত্যু।
ঘটনা অনেক। কিন্তু সবকিছু ছাপিয়ে লেখালেখির জগতে কালো বর্ডারে মুদ্রিত হয়ে আছে লেভ তলস্তয়ের মৃত্যুর কথা।

অর্থ ব্যবস্থাপনা :
বাবা নিকোলাই ইলিচ তলস্তয়ের জমিদারি যখন, তখনকার রুশ বিধান অনুযায়ী তাঁদের সম্পত্তি ভাগ করা হলো; চার ভাইয়ের মধ্যে লেভই পেলেন সবচেয়ে কম উৎপাদনশীল অংশ। তাঁর ভাগে পড়ে চার হাজার একর জমি ও ৩৩০ জন ভূমি দাস। এই জমি পছন্দের কারণ জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেন, ‘যেহেতু আমার বেশি টাকার দরকার নেই, সেই জন্যই কম আয়ের ভাগটা নিয়েছি।’
লেভ তলস্তয় তাঁর জীবনের লিখিত প্রতিজ্ঞাগুলোর একটি হচ্ছে, যতটা সম্ভব কম খরচে জীবন পরিচালনা করা। অন্যটি নিজের সব কাজ নিজে করা।
হায়াৎ মামুদ-এর লেখা থেকে উদ্ধৃত করা যেতে পারে যে- ১৮৫১ : ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হিসেবে লেভ লিখেছেন, আর্থিক উন্নতির যে সব উপায় আমার সামনে খোলা আছে, তা হলো-
১. জুয়াড়ির দলে যোগ দেওয়া এবং পয়সা থাকলে জুয়া খেলা
২. সমাজের উঁচু মহলে ঘোরাফেরা এবং অবস্থা মতো হলে বিয়ে করে ফেলা
৩. দামি একটা চাকরি বাগানো
উল্লেখ্য, জুয়ার নেশায় লেভকে প্রচুর টাকা হারতে হয়েছে। ১৮৫৭ সালে জার্মানি এসে দিনরাত জুয়া খেলেছেন এবং সর্বস্বান্ত হয়ে পুনরায় ধার করে আবার জুয়ার টেবিলে হাজির হয়েছেন। আবার এটাও সত্য, মৃত্যুর দশদিন আগে লাখ লাখ মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ ফেলে অজানার উদ্দেশ্যে যেদিন ঘর ছাড়েন, সেদিন তাঁর হাতে ছিলো মাত্র ৩৯ রুবল! []
--------------------------------------------------------------------------
আকাশলীনা
পৌষ ১৪১৭] ডিসেম্বর ২০১০]
সংখ্যা ০৬] বর্ষ ০১]

কৃতজ্ঞতা] হিমেল অনার্য
সম্পাদক] নোমান ভূঁইয়া

শব্দ বিন্যাস ও সমন্বয়] সৈয়দা সুধন্যা
প্রচ্ছদের ছবি] প্রথম আলো-র সৌজন্যে
প্রচ্ছদ পরিকল্পনা ও পৃষ্ঠাসজ্জা] রঙছুট
বিশেষ সহযোগিতায়]
শফিক হাসান, মহিবুল হাসান কাউসার
সাবরিনা আহমেদ

যোগাযোগ]
+88 018 18 731377 [সাইফুল আমিন]
[email protected]

মূল্য] ১০ টাকা
[স্বপ্নের কোনো মূল্য হয় না।
তবু যাঁরা এই স্বপ্ন কিনতে চান,
তাঁদের জন্য এই নামমাত্র মূল্য নির্ধারণ]

সম্পাদক ও প্রকাশক
নোমান ভূঁইয়া কর্তৃক সার্কুলার রোড, ধানমন্ডি, ঢাকা থেকে প্রকাশিত;
এবং হাতিরপুল, ধানমন্ডি, ঢাকা- ১২০৫
থেকে মুদ্রিত

একটি প্রজন্ম প্রকাশনা
=============================================
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!

লিখেছেন মাঈনউদ্দিন মইনুল, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬



এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×