somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সত্যের পক্ষে নিজের অবস্থানের কথাই তিনি বলতেন

২৫ শে আগস্ট, ২০১০ সকাল ৮:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শিল্পোদ্যোক্তা, মন্ত্রী কিংবা উপদেষ্টা, কলামিস্ট ও সম্পাদক অনেকেই হতে পারেন। পরিবারের উত্তরাধিকার সূত্রে উল্লিখিত পদগুলোর এক বা দুটি অলঙ্কৃত করার সংখ্যা বাংলাদেশে অগণিত। হাতেগোনা কিছু ব্যক্তি সম্পূর্ণ নিজের প্রচেষ্টায় এসব পদে আসীন হয়েছেন। তবে এসব পদে দায়িত্ব পালনের ইতিহাস এদেশে বিরল। আর এ বিরল ইতিহাস গড়েছেন আমার দেশ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। আপসহীন লড়াইয়ের মাধ্যমে তিনি এসব জয় করেছেন। সম্পূর্ণ নিজের মেধা ও মনন দিয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াকু হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন মাহমুদুর রহমান।
এটা নিঃসন্দেহে বলা যায়, লড়াকু ও আপসহীন পদক্ষেপই তার কারাদণ্ডের কারণ। বিচার বিভাগ নিয়ে লিখতে যেখানে গণমাধ্যম ভয় পায়, সেখানে তিনি বিচারপতিদের কার্যক্রমের ব্যাখ্যা দিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। এতে আদালত অবমাননা হয়েছে বলে তাকে যে দোষারোপ করা হয়েছে, তা নিয়ে কোনো ধরনের প্রশ্ন তোলার ক্ষমতা আমার নেই। আর আদালত অবমাননার আইন সম্পর্কে আমার তেমন কোনো জ্ঞানও নেই। তবে একজন নাগরিক হিসেবে, একজন শিক্ষক হিসেবে, একজন পেশাজীবী হিসেবে অনুধাবন করি— মাহমুদুর রহমানের কারাদণ্ড হওয়ায় দেশ ও জাতির কতটুকু ক্ষতি হয়েছে।
বিশেষ করে, আজকের বাংলাদেশের অস্তিত্ব নিয়ে যে নতুন কূটনীতি শুরু হয়েছে, এসব বিষয়ে জাতিকে সচেতন করতে একজন মাহমুদুর রহমানের দরকার ছিল যে কারও চেয়ে বেশি। ভারতীয় আধিপত্যবাদের চুক্তির আদলে নতুন দখলদারিত্ব রুখে দিতে এখন আর কেউ শক্তভাবে কথা বলতে পারছে বলে আমি মনে করি না।
একটি বিষয় স্পষ্ট, মাহমুদুর রহমানকে হত্যাচেষ্টা, একের পর এক মামলা দেয়া এবং গ্রেফতারের ঘটনা কোনো শক্তির পরিকল্পিত পদক্ষেপ। পত্রিকা অফিস থেকে গ্রেফতার করে জেলে ঢুকিয়েই তার বিরুদ্ধে মামলার পর মামলা, এমনকি রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা থেকে আয়কর রিটার্ন সঠিকভাবে না দেয়ার অভিযোগ পর্যন্ত ৪৭টি মামলা দায়ের করে। এর আগে কোথায় ছিল এসব মামলা? অনুসন্ধান রিপোর্ট গ্রহণ করার আগেই গ্রেফতার? মানুষটিকে খাঁচায় পুরে নির্যাতনের পেশাদারিদের হাতে তুলে দেয়া হয়। এ কেমন দেশে আমাদের বসবাস? ভাবলে কষ্ট লাগে।
এক-এগারো সরকারের বিরুদ্ধেও মাহমুদুর রহমান লড়াই করেছেন। তখনও তার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র হয়েছে। তাকে পর্যুদস্ত করার চেষ্টা হলেও একমাত্র সততার কারণে তাকে কাবু করা যায়নি। তখন তার লেখা কলাম পড়ে আমরাও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে উত্সাহী হতাম। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকরা ২০ আগস্টের ঘটনার জের ধরে সে সময়ে যে প্রতিবাদ গড়ে তুলেছিলেন, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে সে ঘটনা বিশেষ ভূমিকা রেখেছিল। কিন্তু এ ধরনের প্রতিবাদের পেছনেও মাহমুদুর রহমানের মতো কয়েকজন ব্যক্তির কলাম ইতিবাচক প্রভাব রেখেছিল।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ধারাবাহিকতায় তিনি বর্তমান সরকারের অন্যায়ের বিরুদ্ধেও প্রতিবাদী ভূমিকায় ছিলেন। কারাদণ্ড হওয়ার দিন পর্যন্ত তিনি সত্যের পক্ষে নিজের অবস্থানের কথা বলে গেছেন। সত্য উচ্চারণে মাহমুদুর রহমানকে বাংলার ভবিষ্যত্ বীরেরা দৃষ্টান্ত হিসেবে অনুসরণ করতে পারবে।
তাকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা যতই হোক না কেন—সে বিষয়ে আমার কোনো কথা নেই। তবে রাষ্ট্রীয় আইনের সর্বোচ্চ সুযোগটুকু ব্যবহার করে হলেও মাহমুদুর রহমানকে মুক্তি দেয়া দরকার বলে আমি মনে করি। এটা দেশের জন্য, জাতির জন্য, রাষ্ট্রের জন্য, সরকারের জন্য, বিরোধী দলের জন্য সর্বোপরি আগামী বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়ার জন্য অনেক বেশি ইতিবাচক হবে।
লেখক : ড. আখতার হোসেন খান
প্রফেসর, মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

বন্ডাই সৈকতের হামলাস্থল। ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সৈকত এলাকায় ইহুদিদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত মানুষের ওপর দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিতে গুলি চালিয়েছে। এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমাণ নন বলা কুফুরী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪



সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×