somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বারে বারেই ঘুঘু ধান খেয়ে যায়......!

১৫ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ৯:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



গত কয়েক বছর যাবত ধারাবাহিকভাবে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি, বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি, বাসাভাড়া বৃদ্ধি, পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধি, সন্তানের শিক্ষা ব্যয়বৃদ্ধি, আর নিত্য পণ্যের আকাশ ছোঁয়া উচ্চমূল্যের নিষ্পেষণে আমরা যারা চাকরি করি কিংবা যাদের সনাতনী মধ্যবিত্ত নামে আখ্যায়িত করা হয় তাদের প্রায় সবাইকে পরান যায় যায় অবস্থার মধ্য দিয়ে দিন গুজার করতে হচ্ছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব মতে ২০২২-২৩ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ০২ শতাংশ যা গত এক যুগের মধ্যে সর্বোচ্চ।

আগে দেখতাম রোজার আগে দেশের নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্য পণ্যের দাম নিয়ে সিন্ডিকেট বাণিজ্যে চাঙ্গা হতো। এখন প্রায় সারা বছর আচমকা, হঠাৎ হঠাৎ করে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির এই মহোৎসব মহাসমারোহে রীতিমতো উদযাপিত হচ্ছে ঐ সব অসাধু ব্যবসায়ীদের মহলে পুরোপুরি সিন্ডিকেটের কব্জায় চলে গেছে দেশের ভোজ্যতেল, চাল, পিয়াজসহ নিত্য পণ্যের বাজার। ব্যবসায়ীরা একে অপরের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে বাজার থেকে অতিরিক্ত মুনাফা তুলে নিচ্ছেন। চেষ্টা করলেও কিছুতেই তা সরকার নিয়ন্ত্রনে আনতে পারছে না। শুধু চাল তেল নয় মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, পিয়াজ সব কিছুর দাম এখন উর্দ্ধে। তাতে উচ্চবিত্তদের অবশ্য কোন সমস্যা নেই।

শুধু জনগণ নয় সরকারও এই সিন্ডিকেটের কাছে নতজানু। কারন আমরা দেখেছি এই সিন্ডিকেটের কথা বিভিন্ন সময়ে সরকারি মহল থেকেও স্বীকার করা হয়েছে।

তাহলে কি সিন্ডিকেটওয়ালারাই দেশ চালায়? তারা কি সরকারের চাইতেও পাওয়ারফুল?



এই দুর্বৃত্ত সিন্ডিকেটের কারসাজিতে এখন প্রায় প্রতি সপ্তাহেই কোন না কোন পণ্যের দাম বাড়িয়ে জনগণের পকেট নিয়ে যাচ্ছে। সরকারের একাধিক বাজার তদারকি সংস্থাও এটা নিয়ন্ত্রণে প্রায় অকার্যকর, যেমনঃ  বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তদারকি সেল, মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, কৃষি মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, বিএসটিআই, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তর, সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসন, র‌্যাবসহ সরকারের অন্যসব আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

সরকার ব্যবসায়ীদের ব্যাংক সুদের হার কমিয়েছে, কর্পোরেট ট্যাক্স কমিয়েছে, স্বয়ংক্রিয় করা হয়েছে বন্দরের শুলকায়ন পদ্ধতি। তারপরও তাদের কাছ থেকে ভালো কিছু পায়নি সরকারও জনগন। এই অত্যাচারের মহোৎসব যেন কিছুতেই থামাতেই পারছে না কেউ আর।

অর্থনীতিবিদ মিল্টন ফ্রিডম্যানের মতে- "বাজারের মূল আকর্ষণ হলো ক্রেতার বেছে নেয়ার স্বাধীনতা"। এখন কেউ কেউ হয়তো বলবেন ক্রেতার এক দোকান পছন্দ না হলে অন্য দোকানে গিয়ে কেনার স্বাধীনতা তো রয়েছেই। আসলেই কি তাই? সিন্ডিকেট করে যখন প্রতিযোগিদের মধ্যে প্রতিযোগিতা সৃষ্টির বদলে একে অন্যের সহযোগী হিসেবে তারা একত্রিত হয় এবং একক কর্তৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে তখন ভোক্তার সেই বেছে নেয়ার স্বাধীনতা আর থাকে না। অর্থনীতির ভাষায় পুঁজির ধর্ম হলো মুনাফা সর্বোচ্চ করন। কিন্তু আমার দেখছি পুঁজির ধর্ম এখন সুযোগ পেলেই ডাকাতি করে ভোক্তাকে নাজেহাল করা।

বাজারের একচেটিয়া আগ্রাসন থেকে জনগণকে রক্ষা করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। বাজারে প্রতিযোগিতা না থাকলে সরকারের সেটা নিশ্চিত করা জরুরী। বাজারকে প্রতিযোগিতামূলক করতে অবশ্যই বিকল্প বাড়াতে হবে। বাজারে যদি প্রবেশে কোন বাধা না থাকে তাহলে একচেটিয়া সিন্ডিকেটওয়ালারা ক্রেতার সাথে যা ইচ্ছে তাই করতে পারবে না।

সিন্ডিকেট শব্দটি এখন আমাদের মনে আতঙ্ক সৃষ্টিকারী একটি শব্দে পরিণত হয়েছে। যার দ্বারা প্রায় সারা বছর আমরা নিষ্পেষিত হচ্ছি। আমরা ভালো নেই। আমাদের  মাসিক আয়ের ৬০ ভাগ চলে যায় বাড়িভাড়ায়, আর ২০ ভাগ খাবারে। দুই বাচ্চার পড়াশোনা আর স্কুলে যাতায়াতে খরচ হয় আয়ের ১০-১৫ ভাগ। তারপর রয়েছে চিকিৎসা।

বর্তমান সিন্ডিকেট বানিজ্য নিয়ন্ত্রণ করে জনগণকে পরিত্রাণ দেওয়া সরকারের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ।

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ ফান হাউজ বাংলাদেশ, সোনালি নিউজ ডক কম, অন্তর্জাল।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ৯:১৫
১৭টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×