অর্ধ দুনিয়ার অধিপতি হযরত উমর (রা)।
খলিফার বিশাল সাম্রাজ্যে সততা, নীতি ও নৈতিকতার কোন ঘাটতি ছিল না। সে সময় জুলুমের বিচার ছিল, অন্যায়ের জন্য দণ্ড ছিল আর অসত্যের জন্য ছিল সমুচিত শাস্তি। খলিফার রাজত্বে মানুষের উপর মানুষের কোন কর্তৃত্ব ছিল না। সুখ ও শান্তিতে মানুষের মন ছিল ভরপুর। তখন চলছিল ন্যায় বিচারের স্বর্ণযুগ।
খলিফার সাম্রাজ্যে এক মহামতি কাযী ছিলেন।
ন্যায়বান মানুষ হিসেবে তার বেশ নাম ডাক ছিল।
সত্যনিষ্ঠ এ কাযী সারা দেশ জুড়ে খুবই পরিচিত ছিলেন।
নাম তার শুরাই ইবনে হারেজ।
বিচারে তিনি কখনও পক্ষপাতিত্ব করতেন না। হোক সে খলিফা স্বয়ং অথবা তার কোন নিকটাত্মীয়। সবাইকে কাযী সাহেব সমান চোখে দেখতেন। আইনের কোন হেরফের করা হারেজের নিকট ছিল অসম্ভব।
একদিনের ঘটনা।
কাযীর ছেলের সাথে অন্য এক জনের ঝগড়া হল।
বাড়ীতে এসে ছেলে সব ঘটনা কাযী সাহেবকে খুলে বলল।
কাযী ছেলের অভিযোগ মন দিয়ে শুনলেন। পুত্র বলল, আব্বাজান! সবইতো শুনলেন। এ নিয়ে আমি মামলা করতে চাই। আপনি বলুন মামলায় জিতব কিনা। আর যদি হেরে যাই তাহলে মামলা করব না। শুরাই পুত্রের কথা শুনে চুপ রইলেন।
তিনি চাইলেন ঘটনাটির একটা বিচার হোক। তাই তিনি বললেন, ওহে পুত্র, তুমি বরং আদালতে গিয়ে মামলা রুজু করে দাও।
পিতার কথায় পুত্র চিন্তমুক্ত হল। সে ঠিক ঠিক মামলা ঠুকে দিল। সে ধরেনিল মামলায় নিশ্চিত সে জিতে যাবে।
বিচারের দিন তারিখ ঠিক করা হল। কাযী বাদী ও বিবাদী উভয়ের বক্তব্য শুনলেন। এবার রায় ঘোষণা করার পালা।
কাযীর ছেলে তো খুবই উচ্ছসিত। সে ভাবছে বিচারের রায় তারই পক্ষে যাচ্ছে। কিন্তু বিধি বাম। রায় গেল পুত্রের বিপক্ষে। রায় শোনার পর পুত্রের মন খুব খারাপ হয়ে গেল। পিতা হয়ে পুত্রের বিরুদ্ধে রায় দেবে সে ভাবাই যায় না। বাড়ী ফিরে পুত্র পিতা কাযীর উপর ক্ষুব্ধ হল।
বাড়ি গিয়ে পুত্র পিতাকে বলল, আব্বাজান! আপনি আমার উপর জুলুম করেছেন। আমিতো আপনাকে জানিয়েই মামলা করেছি। অথচ জেনে শুনেই আপনি মামলায় হারিয়ে আমাকে লজ্জিত করেছেন।
পুত্রের কথা শুনে কাযী হেসে ফেললেন।
তারপর তিনি বললেন,
হে বৎস! তুমি আমার প্রাণাধিক প্রিয়। কিন্তু তার চেয়েও প্রিয় হচ্ছেন আমার আল্লাহ। আল্লাহর উপর আস্থার কারণে আমি পক্ষপাতিত্ব করতে পারি না। তাই মামলায় তুমি হেরে যাবে জেনেও তোমাকে মোকদ্দমা করার পরামর্শ দিয়েছিলাম। এতে বিবাদীর অধিকার রক্ষা করার সুযোগ হয়েছে। অতএব তোমার রাগ করার কোন কারণ নেই। বরং অন্যের ন্যায্য অধিকার রক্ষা হবার জন্য তোমার খুশি হওয়াই উচিত।
পিতার বক্তব্য শুনে পুত্র ‘থ’ হয়ে গেল। পিতার মত ন্যায়বান কাযীর পুত্র হতে পেরে তার মনপ্রাণ উচ্ছাসে ভরে গেল।
আলোচিত ব্লগ
মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ



ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন
মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন
তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।
দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন
মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।