“ড. ইউনূসের ‘মেগাফোন কূটনীতি’, স্তম্ভিত ভারত” এটি আজ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে ইত্তেফাক পত্রিকার একটি শিরোনাম। হাসিনা সরকারের দেশ ছেড়ে পালানোর পর ড. ইউনূস সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের পর ইনূসের ভারতের সাথে কূটনৈতিক যে বিষয়টি গণমাধ্যমে সবেচেয়ে বেশি গুরুত্ব পায় তাহলে ‘মেগাফোন কূটনীতি’। প্রকৃতপক্ষে এই ‘মেগাফোন কূটনীতি’ (megaphone diplomacy) আসলে কি? তা নিম্নে আলোচনা করা হলো:
‘মেগাফোন কূটনীতি’ (megaphone diplomacy) বলতে বোঝায় যখন কোনো রাষ্ট্র বা তার প্রতিনিধি গোপন বা আনুষ্ঠানিক আলোচনার পরিবর্তে প্রকাশ্যে গণমাধ্যমে বা জনসমক্ষে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক বিষয়াদি নিয়ে বক্তব্য দেয়। এটি সাধারণত চাপ প্রয়োগ বা জনগণের মনোযোগ আকর্ষণ করার উদ্দেশ্যে করা হয়, যাতে সমঝোতার পরিবর্তে নিজেদের অবস্থান জোরালোভাবে তুলে ধরা যায়।
এই ধরনের কূটনৈতিক কার্যক্রমে দুই পক্ষের মধ্যে সরাসরি আলোচনা না করে, মিডিয়ার মাধ্যমে বক্তব্য প্রদান করে পরস্পরের উপর চাপ সৃষ্টি করা হয়।
‘মেগাফোন কূটনীতি’ (megaphone diplomacy) শব্দটির উৎপত্তি সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো সময় বা স্থান নির্ধারণ করা কঠিন। তবে ধারণাটি ১৯৭০ এবং ১৯৮০-এর দশক থেকে কূটনৈতিক প্রসঙ্গে জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করে। এর উৎপত্তি মূলত গণমাধ্যমের প্রসার এবং রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক বিষয়ে গণমাধ্যমের সক্রিয় ভূমিকা থেকে আসে।
'মেগাফোন' হলো এমন একটি যন্ত্র, যা মানুষের কণ্ঠস্বরকে উচ্চমাত্রায় বাড়িয়ে জনসমক্ষে পৌঁছে দেয়। এই ধারণা থেকে ‘মেগাফোন কূটনীতি’ শব্দটি তৈরি হয়েছে, যেখানে কোনো দেশ বা নেতা তাদের অবস্থান বা বক্তব্য সরাসরি গোপন কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে না করে জনসমক্ষে বা গণমাধ্যমের মাধ্যমে প্রকাশ করে।
এ ধরনের কূটনীতির পেছনে মূল উদ্দেশ্য হলো জনমত তৈরি করা বা প্রতিপক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সোভিয়েত ইউনিয়ন, এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক শক্তিগুলো মাঝে মাঝে প্রকাশ্যে কূটনৈতিক বার্তা প্রদান করে জনমতকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করত, যা এই ধরনের কূটনীতির জনপ্রিয়তার পিছনে ভূমিকা রেখেছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৫