প্রাচীন চীনাবাসী শত্রুর আক্রমণ থেকে বাচঁতে এবং শান্তিতে থাকার জন্য সিদ্ধান্ত নিল উঁচু দেয়াল গেঁথে মহাপ্রাচীর নির্মান করবে। তারা ভেবেছিল কেউ এই সুউচ্চ দেয়াল টপকে ভেতরে প্রবেশ করতে পারবে না। কিন্তু মহাপ্রাচীর নির্মানের প্রথম একশ বছরের মধ্যে চীন তিনবার শত্রু দ্বারা আক্রমণের শিকার হয়েছে। প্রতিবার শত্রু উঁচু দেয়াল টপকে বা দেয়াল ভেঙে প্রবেশ করেনি বরং তারা মূল ফটক দিয়ে প্রবেশ করেছে। ফটকের রক্ষীদের ঘুষ দিয়ে তারা ভেতরে প্রবেশ করে যেত।
চীন দেয়াল নির্মান করেছে কিন্তু ভুলে গেছে তার সৈন্যদের চরিত্রগঠনে। সুউচ্চ দেয়াল নির্মানের পূর্বে উচিত ছিল চরিত্র নির্মানের প্রতি মনোযোগী হওয়া।
একটি সমাজ বা দেশকে সুরক্ষিত করার বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ার পূর্বে প্রয়োজন দেশের তরুণ সমাজের চরিত্র গঠনে মনোযোগী হওয়া। ওরিয়েন্টালিস্ট দের মতে একটি সমাজ তিন কাজের মাধ্যমে ধ্বংস হয়। দুঃখের বিষয় হচ্ছে আমরা এই তিনটি কাজ অনেক আগে থেকেই শুরু করেছি। এই তিনটি কাজ নিম্নরূপঃ
১) পরিবারের গাঁথুনি নড়বড়ে করে দেয়া
২) শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করা
৩) রোল মডেলদের খাটো করা
পরিবারের গাঁথুনি নড়বড়ে করার জন্য একজন গৃহিনীর কাজকে অবমূল্যায়িত করতে হবে। নারী ঘরে রান্না বান্না থেকে শুরু করে বাচ্চাদের দেখাশোনা পর্যন্ত যে কাজ করে এটাকে কাজ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া যাবে না। একজন শিক্ষিত নারী গৃহিনী হতে যেন লজ্জাবোধ করে। একজন নারী যেন ঘর সংসার ছেড়ে নিজের ক্যারিয়ার এর প্রতি বেশি মনোযোগী হন।
শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করার জন্য স্কুল কলেজে শিক্ষকের ভূমিকাকে খাটো করতে হবে। শিক্ষার্থীরা যেন মনে করে স্কুল কলেজে না গেলেও চলবে, কোচিং তো আছেই। সমাজে শিক্ষকের মর্যাদাকে ম্লান করতে হবে। কেউ যেন শিক্ষককে বিশ্বাস না করে।
রোল মডলদের খাটো করার জন্য তাদের যথাযথ সম্মান দেয়া যাবে না। তাদের নামে মিথ্যা রটনা ছড়াতে হবে যেন কেউ তাদের কথা না শুনে
একজন তরুণ যখন আদর্শ মা পাবে না, আদর্শ শিক্ষক পাবে না, আদর্শ রোল মডেল পাবে না তখন কে তাকে চরিত্র গঠনে ভূমিকা পালন করবে?
----------
আলামিন মোহাম্মদ
মোটিভেশনাল স্পিকার
মিশনপাড়া, যশোর।