রাসেল একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি করে। মালয়েশিয়ায় অবস্থিত তাদের আঞ্চলিক অফিসে একটি মিটিং এ যোগদান করার জন্য সে এবং তার বস গেল। মিটিং শুরু হবার পর তার বস বলল তাঁর জন্য একটি কলম এনে দেবার জন্য। সে মিটিং রুম থেমে বের হয়ে কাছেই বসে থাকা একজন মালয়েশিয়ান সহকর্মীকে জিজ্ঞেস করলো- আপনি কি আমাকে একটি কলম ধার দিতে পারবেন?
যেহেতু তারা একজন আরেকজনকে চিনে না তাই মালয়েশিয়ান সহকর্মী জিজ্ঞেস করলেন- আপনি আমার কলমটি ফেরত দিবেন তো?
- অবশ্যই, আমি এটি ফেরত দিব
সে কলমটি নিল এবং মিটিং রুমে ফিরে গেল। মিটিং শেষে সে কলম ফেরত দিতে ঐ মালয়েশিয়ান সহকর্মীর ডেস্কে গেল কিন্তু সে তাঁর ডেস্কে ছিল না।
সে একটি কাগজ নিল এবং লিখল-
"প্রিয় সহকর্মী, অসংখ্য ধন্যবাদ আমার প্রতি বিশ্বাস রেখে কলমটি ধার দেবার জন্য। আমি এই কলমটি অজস্র ধন্যবাদের সহিত ফেরত দিচ্ছি।
আনন্দে থাকুন!!
রাসেল"
সে ডেস্কে চিরকুটটির সাথে কলম রাখলো এবং চলে যাবার জন্য উদ্যত হচ্ছিল। রাসেল যখন এই কাজটি করছিল তখন দূর থেকে ঐ সহকর্মী খেয়াল করছিল যা রাসেল জানত না। ঐ সহকর্মী দৌড়ে তাঁর কাছে এল এবং জিজ্ঞেস করলো সে কাগজে কি লিখেছে? রাসেল তাকে চিরকুটটি দেখাল এবং সে পড়ে অবাক হলো যে সে আসলেই কলমটি ফেরত দিচ্ছে। সে জিজ্ঞেস করলো- তুমি কোন দেশ থেকে এসেছ?
- বাংলাদেশ
রাসেল নিজের পরিচয় দিল এবং বাংলাদেশ সম্পর্কে কিছু বর্ণনা দিল।
ঐ মালয়েশিয়ান সহকর্মী তাঁর সাথে পরিচিত হয়ে অনেক খুশি হল এবং বলল- মিটিং রুমের ঠিক পাশেই আমার ডেস্ক হওয়াতে অনেকেই আমার কাছে কলম ধার নেয় কিন্তু পরবর্তীতে সেই কলম আর কেউ ফেরত দেয় না। তুমি একজন দায়িত্ববান ও ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ব্যক্তি কারণ তুমি তোমার কথা রেখেছ এবং কলমটি ফেরত দিচ্ছ খুব সুন্দরভাবে।
একটি প্রশ্ন সততার সাথে উত্তর দিবেন- আপনি হলে কি আসলেই কলমটি ফেরত দিতেন??
গল্পটি থেকে শিক্ষাঃ
১) ছোট ছোট সহযোগিতা বা উপকার এর মাধ্যমে আমরা সবার হৃদয় জয় করতে পারি।
২) ছোট ছোট সততামূলক কাজের মাধ্যমে আমরা সমাজে পারস্পরিক বিশ্বাস প্রসার করতে পারি।
৩) ছোট ছোট দায়িত্বশীল কাজের মাধ্যমে আমরা আমাদের দেশ/ধর্মকে ইতিবাচক হিসেবে তুলে ধরতে পারি।
-------
আলামিন মোহাম্মদ
মোটিভেশনাল স্পিকার
মিশনপাড়া, যশোর