somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অপ্রকাশিত কাজল-কথন : পর্ব ১

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাত দেড়টা বাজে ড্রয়িংরুমের ঘড়িটায় ।
আয়নায় উল্টো করে ঘড়ি দেখে যদিও সময়টা বুঝতে বেগ পেতে হয়েছে কাজলের ।
বেসিনের আয়নার সামনে দাড়িয়ে চুল আচড়াচ্ছে সে , ক্লাস এইট থেকে গভীর রাতে চুল আচড়ায় সে , ভূত দেখার আশায় ! ভেবে এখন হাসিই পায় কাজলের ।
" আচ্ছা , 'ও' যদি এখন এভাবে দেখত আমায় ? রাগ করতো কি ? নাকি ... " ভাবতে ভাবতে লজ্জা পেয়ে যায় কাজল। আয়নার দিকে চোখ তুলে তাকাতেও লজ্জা করে তার , কে জানে , হয়তো চেয়ে দেখল পেছনে 'ও'-ই দাড়িয়ে , তাকিয়ে আছে কাজলের দিকে , ঠোটের কোণে সেই রহস্যময় শয়তানি হাসি ... ভাবতে ভাবতে বেণী পাকানো হয়ে যায় , লাইট নিভিয়ে দিয়ে চুপচাপ গিয়ে বিছানায় মায়ের পাশে শুয়ে পড়ে কাজল ।

অন্ধকারে হাতড়ে হাতড়ে আগেই হেডফোনটা খুজে এনেছিল , মাথার কাছে রাখা মায়ের ফোনে হেডফোনটা লাগিয়ে গান শোনার পালা এবার । বাজছে " তোমাকে না লেখা চিঠিটা ডাকবাক্সের এক কোণে " , কাজলের খুব প্রিয় গান ... প্রতিবারই গানটা রীতিমত মুগ্ধ হয়ে শোনে সে , ক্লান্তি আসে না কখনো । যেমন ক্লান্তি আসে না 'ও' র কথা ভাবতে , 'ও'-কে ভাবতে , 'ও'-কে কল্পনা করতে । 'ও' ... মানে শুভ্র ... কাজলের শুভ্র । দেড় বছরের সম্পর্ক দুজনের । চোখের সামনে শুভ্রের চেহারাটা ভেসে উঠছে এখন , খুব স্পষ্ট ভাবে ... ভাগ্যিস , এভাবে শুভ্রকে দেখতে পায় , মন কিছুটা শান্ত হয় । শুভ্রের সাথে সামনাসামনি খুব বেশি সময় কাটানো হয়নি কাজলের .. যখনই শুভ্র সামনে থাকে , কাজলের খুব ইচ্ছে করে কেবলি শুভ্রের দিকে বড় বড় করে তাকিয়ে থাকতে , মন ভরে ওকে দেখতে । যদিও স্বাভাবিক নারীসুলভ লজ্জার কারণে কখনোই পারেনি এটা করতে । "আচ্ছা শুভ এখন কি করছে ? ঘুমাচ্ছে নাকি ? ঘুমন্ত অবস্থায় ওকে দেখতে ভারি নিষ্পাপ লাগবে নিশ্চয়ই " ভাবতে থাকে কাজল ।" শুভ্র চুল সবসময়ই ছোট ছোট রাখে , শুভ্র ঘুমিয়ে থাকলে ওর চুলে হাত বুলিয়ে দেবে কি কাজল ? যদি শুভ্রের ঘুম ভেংগে যায় ? ওর তো আবার পাতলা ঘুম .... " ইত্যাদি ইত্যাদি ।

এমনি হাজার ভাবনা সারাদিন শুভ্রকে নিয়ে.. অবসরে , কোনো কাজ করতে করতে , যেকোনো সময়ই শুভ্র দূরে থেকেও থেকে যায় কাজলের খুব কাছে । কাজলের অস্তিত্বের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে শুভ্র । কাজল চিরকালই একটা সংক্ষিপ্ত কিন্তু সুন্দর জীবন চেয়ে এসেছে , কিন্তু শুভ্র আসার পর অনেক দিন বাচতে ইচ্ছে করে তার , আলাদা করে সুন্দর জীবনের কামনা অপ্রয়োজনীয় । যে জীবনে শুভ্র আছে তা নি:সন্দেহে সুন্দর , স্বপ্নীল .. শুভ্রকে ঘিরে অনেক স্বপ্ন কাজলের । সাদা-কালোর জন্জালে ঢাকা মিথ্যে কথার শহরে লাল-নীল সংসার হবে দুজনের , দাম্পত্য যেখানে একঘেয়ে হবে না কখনো । ছোট ছোট চাওয়া-পাওয়া , মান-অভিমান , হাসি-কান্না নিয়ে একসাথে বাচবে ওরা । একসময় দুজনের ছোট্ট ছানাটি আসবে , গুটি গুটি পা ফেলে সারা ঘরে দৌড়ে বেড়াবে সে ... দিন শেষে ছোট্ট পুতুলটার দুষ্টুমি দেখতে দেখতে হঠাত যখন শুভ্র আর কাজলের দৃষ্টি বিনিময় হবে , সেখানে থাকবে দুজনের জন্য অফুরান্ত ভালোবাসা ...


কিন্তু যদি .... যদি শুভ্র কখনোই কাজলের না হয় ? যদি সময়ের প্রয়োজনে বা পারিপার্শ্বিকতার কারণে দূরে সরে যেতে হয় দুজনকে ? কি করে থাকবে তখন কাজল শুভ্রকে ছেড়ে ? শুভ্রও কি পারবে কাজলকে ছাড়া সুখী হতে ? কাজলের প্রতি শুভ্রের শান্ত অথচ গভীর ভালোবাসা , খুব গভীর , তল খুজে পাওয়াই দায় সেখানে । ওদের সুখ তো পরষ্পরের সাথেই .. কি হবে যদি এত ভালোবাসা , এত স্বপ্ন ধুলায় লুটায় ভাগ্যের নিষ্ঠুর পরিহাসেে ?


ভাবতে ভাবতে বিছানা ছেড়ে উঠে এসেছে কাজল নি:শব্দে । পড়ার ঘরের লাইট জ্বালিয়ে পদার্থবিজ্ঞান বইটা বের করলো সে । বইয়ের ভিতর রাখা শুভ্রের ছবি । হাতে নিয়ে খানিক ক্ষণ চেয়ে থাকলো কাজল ছবিটার দিকে । চোখ থেকে নিরবে ছবিটার উপর গড়িয়ে পড়লো অশ্রুবিন্দু । ছবিটাকে বুকের কাছে চেপে ধরলো কাজল । অনবরত জল গড়াচ্ছে চোখ থেকে । তবু মন বলছে শুভ্র শুধুই তার , একান্তই তার । কক্ষনো আলাদা হতে হবে না দুজনকে , কক্ষনো না ...


চলবে .....


বি:দ্র: পুরো গল্পের অর্ধেক যে , যার কথা না জানলে গল্পটা অসম্পূর্ণ থেকে যায় ,
তার বয়ান জানতে নিম্নের লিংকে ক্লিক করুন ।
শুভ্র আর তার অপ্রকাশিত জীবন( প্রথম পর্ব): Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:২১
৮টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×