somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিদেশে কর্মরত মেধাবী বিজ্ঞানীদেরকে দেশমুখী করার লক্ষ্যে একটি পর্যালোচনা

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ৩:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সুত্র : Click This Link
মাত্র দিন কয়েক আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার অফিসিয়াল ওয়েব সাইটে দেখা যায় নাসায় অভ্যন্তরীণ গবেষণা ও উন্নয়ন বিষয়ক সেরা উদ্ভাবকের পুরস্কার পেয়েছেন বাংলাদেশের মেয়ে মাহমুদা সুলতানা। উল্লেখ্য যে নাসার গডার্ড মহাকাশ উড্ডয়ন কেন্দ্রের অভ্যন্তরীণ গবেষণা ও উন্নয়ন (আইআরএডি) কর্মসূচীর অধীনে নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য প্রতি বছর ‘আইআরএডি ইনোভেটর অব দ্য ইয়ার’ নামে একটি পুরস্কার দেয়া হয়। এবার মহাকাশে ব্যবহারযোগ্য ক্ষুদ্র ও কার্যকরভাবে আলোক তরঙ্গ শনাক্তকারী বর্ণালি মিটার উদ্ভাবন ও ন্যানো ম্যাটেরিয়ালের উন্নয়নে যুগান্তকারী অবদানের জন্য পুরস্কার পেয়েছেন মাহমুদা সুলতানা । নাসার ওয়েবসাইটে বাংলাদেশের এই তরুণীকে ২০১৭ সালের সেরা উদ্ভাবকের পুরস্কার দেয়ার ঘোষণাটি আসে গত ২৪ অক্টোবর ২০১৭তে । এই কৃতি বাংলাদেশী বিজ্ঞানীর প্রতি আমাদের অভিনন্দন রইল ।
ছবি: বাংলাদেশী বিজ্ঞানী মাহমুদা সুলতানা


ছবি : মাহমুদা সুলতানা উদ্ভাবিত যন্ত্র sensor platforms


উল্লেখ্য যে কৈশোরে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানো মাহমুদা সাদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক এবং ২০১০ সালে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি) থেকে পিএইচডি করেন। একটি বেল ল্যাবরেটরিতে শিক্ষানবিশ গবেষক হিসাবে কাজ করার সময় মাহমুদা এমআইটির একটি Job fair থেকে নাসায় যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ পান। তিনি নাসার গডার্ড ডিটেক্টর সিস্টেম শাখার গবেষক প্রকৌশলী হিসাবে যোগদান করেন ।
সুত্র : Click This Link

মেধাবী বাংলাদেশী বিজ্ঞানীদের দেশমুখী করা প্রসঙ্গ

আমরা সকলেই জানি বাংলাদেশের হাজার হাজার মেধাবী বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী , চিকিৎসক ও অন্যান্য সমাজ বিজ্ঞানী এবং পেশাজিবী বিদেশে গুরুত্বপুর্ণ অবদান ও কৃতিত্ব রেখে চলেছেন সুনামের সাথে । তাঁদের বিষিষ্টজনদের নামের তালিকা দিতে গেলে অনেক লম্বা হবে । আলোচনার সুবিধার্থে মহাকাশ গবেষনার সাথে সংস্লিষ্ট এ দেশের প্রথিতযশা একজন বিজ্ঞানীর কিছু কথা এখানে তুলে ধরা হলো যিনি দীর্ঘদিন বিদেশে থেকে দেশে ফিরে এসে যে মহতি কির্তী গড়েছেন তা দেখানোর জন্য ।

মৌলিক বিজ্ঞানে যে সমস্ত বিজ্ঞানী জগত বিখ্যাত তার মধ্যে বাংলাদেশী বিজ্ঞানী প্রফেসর জামাল নজরুল ইসলাম অন্যতম ।


ছবি সুত্র : Click This Link
১৯৩৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদশের ঝিনাইদহে তিনি জন্ম গ্রহন করেন । প্রায়োগিক গণিত ও তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানে পিএইচডি এবং সম্মানজনক ডক্টর অব সায়েন্স বা ডিএসসি ডিগ্রি অর্জনকারী এ বিজ্ঞানী জগত বিখ্যাত বিজ্ঞান-প্রতিভা স্টিফেন হকিং এর ঘনিষ্ট বন্ধু ছিলেন ।

জামাল নজরুল ইসলাম ১৯৬৩ থেকে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ডক্টরাল ফেলো, ১৯৬৭ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত কেমব্রিজ ইনস্টিটিউট অব থিওরেটিক্যাল অ্যাস্ট্রোনমিতে গবেষণা , ১৯৭১-৭২ ,ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে ভিজিটিং অধ্যাপক ,১৯৭৩-৭৪ সালে লন্ডনের কিংস কলেজে ফলিত গণিতের শিক্ষক, ১৯৭৫ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ে সায়েন্স রিসার্চ ফেলো এবং ১৯৭৮ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত মনে সিটি ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপনা করেছেন। তাঁর অনেক গবেষণা নিবন্ধ বিখ্যাত সব সাইন্স জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে । ১৯৮৩ সালে তাঁর গবেষণাগ্রন্থ দ্য আল্টিমেট ফেইট অব দ্য ইউনিভার্স কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত হলে সারা বিশ্বের কসমোলজিস্টদের মধ্যে হই চই পড়ে যায়। বইটি পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় দ্রুত অনূদিত হয়। পরের বছর কেমব্রিজ থেকেই প্রকাশিত হয় ক্লাসিক্যাল জেনারেল রিলেটিভিটি। তাঁর গবেষণা আইনস্টাইন-পরবর্তী মহাবিশ্ব গবেষণায় বিরাট অবদান রেখেছে। তিনি এই ধারায় গবেষণা অব্যাহত রেখে পরবর্তীকালে লেখেন ফার ফিউচার অব দ্য ইউনিভার্স বা মহাবিশ্বের দূরবর্তী ভবিষ্যৎ।
সুত্র : Click This Link

পাচ্যাত্তের উন্নত দেশে প্রায় ৩০ বছরের অভ্যস্ত জীবন, সম্মানজনক পদ, গবেষণার জন্য উন্নতমানের অনুকূল পরিবেশ, বিশ্বমানের গুণীজন সাহচর্য এবং আর্থিকভাবে লোভনীয় চাকরি ছেড়ে প্রফেসর ইসলাম দুই মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে দেশে ফিরে আসেন ১৯৮৪ সালে । দেশে ফিরে নীজ জেলা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত বিভাগে যোগ দিলেন মাত্র তিন হাজার টাকা মাসিক বেতনে।তিনি বলেছেন নিজের দেশে নিজের মানুষের মধ্যে যে গ্রহণযোগ্যতা এবং অবস্থা সেটা বিদেশে কখনোই সম্ভব নয় ।

দেশে ফিরে এসে জামাল নজরুল ইসলাম গড়ে তুলেছেন আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠান গাণিতিক ও ভৌতবিজ্ঞান গবেষণাকেন্দ্র বা রিচার্স সেন্টার ফর ম্যাথমেটিক্যাল অ্যান্ড ফিজিক্যাল সায়েন্স (আরসিএমপিএস), যেখানে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে খ্যাতিমান পদার্থবিজ্ঞানী, আপেক্ষিক তত্ত্ববিদ এবং বিশ্ব সৃষ্টি তাত্ত্বিকদের আগমন ঘটেছে । সেখানে অনেক আন্তর্জাতিক সেমিনারের আয়োজন হত নিয়মিতভাবে ,অনেক নোবেলজয়ীসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের পণ্ডিতগন যোগ দিয়েছেন তাতে । দুর্ভাগ্যের বিষয় ২০১৩ সনে তাঁর ইন্তেকালের পরে যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে এই সম্ভাবনাময় গবেষনা প্রতিষ্ঠানটি করতে পারছে না তার ভূমিকা পালন যথাযথভাবে ।

এটা অনস্বীকার্য যে বিদেশে কর্মরত বিজ্ঞানীরা মনঃকষ্টে ভুগলেও, দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা ,সমাজে হিংসা ও হানাহানি, ক্ষমতাবানের দৌরাত্ম্য, চরমপন্থা ও অসহিষ্ণুতা , অর্থিক অসচ্ছলতা , জীবনের নিরাপত্তা, মানুষের মধ্যে লোভ আর স্বার্থপরতা, বঞ্চনা ও বৈষম্যের অর্থনীতি, কালোটাকা ও অবৈধ সম্পদের ছড়াছড়ি প্রভৃতি বহুবিদ কারণে দেশে ফিরতে আগ্রহ বোধ করেন না । উন্নয়নের নামে প্রকৃতি, পরিবেশ ও গরিবের স্বার্থবিরোধী কাজ দেখে অনেকে হতাশ ও ক্ষুব্ধ হলেও দেশে এসে তাদের মেধা ও শ্রমকে কাজে লাগাতে পারছেন না । দেশে একদিকে চলছে বিলাসী ভবন নির্মাণ , যত্র তত্রভাবে মাথা তুলছে বেআইনীভাবে ব্যয়বহুল বহুতল ভবন, নির্মাণ শেষে বিবিধ কারণে তা ভেঙ্গে ফেলার বিশাল কর্মযজ্ঞও চলছে সমানতালে । এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ করা যায় যে ঢাকার হাতীরঝিল প্রকল্প এলাকায় বেআইনীভাবে স্থাপিত বহুতল বিশিষ্ট বিজিএমইএ ভবন আদালতের রায়ের প্রেক্ষিতে এখন ভেঙ্গে ফেলার চুড়ান্ত পর্যায়ে আছে ।

রাজধানীর হাতিরঝিল প্রকল্প এলাকায় পরিবেশের ক্ষতি করে বেআইনিভাবে প্রায় দুই দশক আগে গড়ে ওঠা ১৬ তলাবিশিষ্ট বিজিএমইএ ভবন ভেঙে ফেলার চূড়ান্ত রায় এসেছে। এই ভবনটি অবৈধ ঘোষণা করে তা ভেঙে ফেলতে হাই কোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে বিজিএমইএর আপিলের আবেদনটি প্রধান বিচারপতি নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ খারিজ করে দিয়েছেন কয়েকমাস আগেই । এখন এটা নিষ্চিত যে ভেঙ্গে ফেলাই হবে । বিচারের রায়ে হাই কোর্ট বলেছিল, “বিজিএমইএ ভবনটি সৌন্দর্যমণ্ডিত হাতিরঝিল প্রকল্পে একটি ক্যান্সারের মতো। এ ধ্বংসাত্মক ভবন অচিরেই বিনষ্ট করা না হলে এটি শুধু হাতিরঝিল প্রকল্পই নয়, সমস্ত ঢাকা শহরকে সংক্রামিত করবে।” যদিও বিজিএমইএর আইনজিবী ব্যারিস্টার রফিক আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছিলেন এটা ভেঙে দিলে অর্থনীতিতে খারাপ প্রভাব পড়তে পারে। কারণ অর্থনীতি দাঁড়িয়ে আছে গার্মেন্টস শিল্পের ওপরে।”

ভেঙ্গে ফেলার অপেক্ষায় হাতীর ঝিলের প্রান্তদেশে গড়ে উঠা বিজিএমই এ ভবন


আদালতের রায়ের প্রতি সম্মান দেখিয়ে ৬ মাসের মধ্যে বিজিএমইএ ভবনটি ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংগঠনের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান। জানা যায় উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরে ১০ বিঘার একটি প্লটে বিজিএমই এর নতুন ভবন নির্মাণ খুবই দ্রুততার সঙ্গে শুরু হবে ।

আদালদের বিজ্ঞ বিচারকদের প্রতি পুর্ণ শ্রদ্ধা রেখেই বলছি তাদের রায় কার্যকরী হোক। আইনের প্রক্ষিতে বিজ্ঞ আদালত সঠিক কাজটিই করেছেন । তবে কথা প্রসঙ্গে কিছু বিষয় এমনিতেই চলে আসে । বিজ্ঞ আদালত প্রাসঙ্গিক সকল বিষয়ই খুটিয়ে দেখেছেন বলে বিশ্বাস করি । বেআইনীভাবে পরিবেশের জন্য ঝুকিপুর্ণ ভবনের বিষয়ে যা প্রাপ্য বিজ্ঞ আদালত সে রকম রায়ই দিয়েছেন । এ রায়ের পরে আমরা এখন দুটি জলাজয়ের মাঝখানে এমন ভবন কিভাবে নির্মান করা হলো সে প্রসঙ্গে সচেতন জনতা হিসাবে কিছু আলোচনাতো করতেই পারি দায়িত্বে থাকা নগর পরিকল্পনাবিদদের বোধদয়ের জন্য ।

ভবন নির্মানের জন্য বেগুনবাড়ী খালের উপরে এ জায়গার মালিকানা সরকারী সংস্থা রপ্তানী উন্নয়ণ ব্যুরো বিজিএমইএকে হস্তান্তর করে বলে উল্লেখ দেখা যায় । রাজধানীর বুকে থাকা সংরক্ষিত জলাশয়ের এ জায়গার মালিকানা রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরো পেলোও বা কিকরে !!! আর এর উপরে ভবন নির্মাণের জন্য তারা বিজিএমইকে তা দিলই বা কি করে!!!

সর্বোপরী সকলের চোখের সামনে দিয়ে এমন জায়গায় বেআইনীভাবে বিজিএমইএ বছরের পর বছর লাগিয়ে এত বিশাল আকারের নির্মানযজ্ঞ চালিয়েই বা গেল কিভাবে। রাজউক কেন, বা কি কারণে চোখ মুখ বন্ধ করে রেখেছিল এর নির্মানকালে। বিষয়টি বিজ্ঞ আদালতের কাছেও নিশ্চয়ই প্রশ্নের সন্মুখীন হয়েছিল ।

রাজুকের বিল্ডিং প্লান অনুমোদনের জন্য নীতিমালার কিছু প্রাসঙ্গীক বিষয় তুলে ধরা হলো নীচে ।

ঢাকা নগরীতে ভবন তৈরীর জন্য আগ্রহীদেরকে ভবনের ডিজাইন অনুমোদনের জন্য নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হয় । বিবিধ কারণে রাজুক কতৃক্ষের অনুমোদন প্রক্রিয়া অস্বাভাবিক বিলম্বিত হয় কারণ রাজুককে অনুমোদন প্রক্রিয়ায় বেশ কিছু বিষয় পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখতে হয় ।

ভবন নির্মাণের জন্য প্রথমেই ভুমি ব্যবহার ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করতে হয়। এ সময় বেশ কিছু বিষয়ে আবেদন পত্রের সাথে তথ্য প্রদান করতে হয় । এ পোষ্টের আলোচনার জন্য প্রাসঙ্গীক গুরুত্বপুর্ণ কয়েকটি বিষয় তুলে ধরা হলো :
ক) আবেদনকারী স্বাক্ষরিত ১৫সেমি ঔ ২০সেমি মাপের সাইট ম্যাপ ( মৌজা ম্যপ হতে হতে ) এর তিন কপি
খ) নির্মানের জন্য প্রস্তাবিত জমির অবস্থান
গ) ২৫০ মিটার ব্যসার্ধের মধ্যে জমিটির ব্যবহার
প্রয়োজনীয় সকল তথ্য সম্বলিত প্রাথমিক আবেদন পাওয়ার পরে রাজুক সরজমিনে পরীক্ষা নিরীক্ষা পুর্বক সেই জায়গায় ভবন নির্মান করার জন্য যোগ্য মনে করলে আবেদনকারীকে ভবনটির বিস্তারিত ড্রইং ডিজাইন প্রনয়ন করে ২৪ মাস সময়ের মধ্যে দাখিলের জন্য অনুমোদন দেয়া হয় ।


ভবনটি যদি ১০ তলা বা ৩৩ মিটারের বেশী উচ্চতা সম্পন্ন হয় তাহলে নিন্মোক্ত ১০ টি সরকারী সংস্থা হতে মতামত বা ছাড়পত্র গ্রহন প্রয়োজন হয়ঃ
· Department of power division (DPDC) for electrical load requirement
· Water and sewage authority WASA for water consumption requirement
· Titas gas & Transmission authority for gas requirement
· Fire service for fire safety drawing clearance
· Civil aviation for building height permission
· Dhaka traffic control authority
· Dhaka City Corporation
· Department of environment
· DCC Ward Commissioner
· Dhaka Metropolitan Police (DMP)
সকল প্রয়োজনীয় বিষয়ে সন্তোষজনক মুল্যায়নের পর , রাজউক সংস্টিষ্ট কমিটির সদস্যগণ ভবনটির জন্য ড্রইং ডিজাইন অনুমোদন করে ডেভেলপার কোম্পানি বা আবেদনকারীকে অনুমোদন প্রদান করে।

যাহোক, বিজ্ঞ আদালত তাদের রায়ে বলেছেন ভবন নির্মানটি ছিল বেআইনী । তাতে পরিস্কার বুঝা যাচ্ছে ভবনটির নির্মানের অনুমোদন পক্রিয়ায় স্বচ্ছতার অভাব ছিল, যে জন্য এটা রাজুক হতে অনুমোদিত হতে পেরেছিল । এ বিষয়ে দায়ীদের সম্পর্কে আদালতের রায়ে কি আছে তা জানা যায়নি । নিশ্চয়ই এ বিষয়গুলি বিজ্ঞ আদালতের দৃষ্টি এড়ায়নি ।

এখানে উল্লেখ্য যে, হাতির ঝিলে এখনো মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে থাকা ২লক্ষ ৬০ হাজার বর্গফুটের এই বিজিএমইএ ভবনটির বর্তমান মুল্য দাঁড়াতে পারে আনুমানিক প্রায় ২৬০ কোটি টাকা ( প্রতি বর্গফুট ১০০০০ টাকা হিসাবে) যা এখন আইনের বিধান বলে ধংস করে দেয়া হবে । দায়ত্বশীল সংস্থাগুলি সচেতন হলে এই ২৬০ কোটি টাকার ভবনটি নির্মিত হতোনা , এর জন্য এখন জাতিকে নতুন করে যে মুল্য দিতে হবে তা দিয়ে দেশের বাইরে থাকা হাজার হাজার বাংলাদেশী বিজ্ঞানীকে অনায়াসে উচ্চ পারিশ্রমিক ও সুযোগ সুবিধা দিয়ে দেশে এনে বিজ্ঞান সাধনায় নিয়োজিত করা যেতে পারে !!

এছাড়াও বিজিএমই এর জন্য নতুন ভবন নির্মানের জন্য যে অর্থ ব্যয় হবে তা দিয়ে ঢাকার বাইরে গার্মেন্টস পল্লী / শিল্প এস্টেট গড়ে তুলে রাজধানীর কেন্দ্র হতে পোশাক শিল্প কারখানাগুলিকে সরিয়ে নেয়া যেতে পারতো অনায়াসে । তাতে করে পোশাক শিল্প শ্রমিকদেরকে রাজধানী এলাকার ঘিঞ্জি বস্তিতে গাদাগাদি করে করতে হতোনা বসবাস , অপরদিকে ঢাকার রাজপথে পোশাক শিল্প মালিকদের হাজার হাজার গাড়ীর যানজট, কালো ধোয়া আর শব্দ দুষনের শিকার হতে বেঁচে যেতো রাজধানীবাসী ।

যদিও বিকল্প ভাবনার কোন সুযোগ এখন আর নেই এবং আদালতেরর রায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতেই হবে তাই রায়ের বিষয়ে কিছু বলার কোন অবকাশ নাই। তবে দেশের সাধারণ নাগরিক হিসাবে কিছু প্রাসঙ্গীক ধারনাতো সকলের সাথে শেয়ার করে নেয়া যেতেই পারে ।

মানুষ বুদ্ধি খাটিয়ে যদি চাঁদে কিংবা মঙ্গল গ্রহে যেতে পারে, তাহলে একটু বুদ্ধি খাটিয়ে বিজিএমই এর এই ভবনটিকে আরো দৃষ্টি নন্দন করে ঝিলের শোভা বর্ধনকারী ও পরিবেশ বান্ধব করার চিন্তা ভাবনা করার কোন সুযোগ আছে কিনা তা দেশের বিজ্ঞ আইনজ্ঞরা একটু ভেবে দেখতে পারেন ? ঝিলের পারের ছোট কিছু স্থাপনাকে সরিয়ে দিয়ে হাতির ঝিল ও বেগুনবাড়ী খালের মধ্যে পানি প্রাবাহের নালাকে একটু বাঁকা করে দিয়ে নিন্মের চিত্রের মত করে বইতে দেয়ার বিষয়টি স্টাডি করে দেখার বিষয়টিও বিজ্ঞ জনেরা ভেবে দেখতে পারেন । এতে করে লেকের জল প্রবাহে বড় কোন বাধা কিংবা নান্দনীকতা খুব একটা দৃস্টিকটু দেখাবে কিনা সে বিষয়ে দেশের বিজ্ঞ নগর স্থপতি ডিজাইনারগন একটু ভেবে দেখতে পারেন । এমনটি হলে শত শত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ ভবনটিকে অক্ষত রাখার বিষয়ে কোন বিধি সন্মত ব্যবস্থা নেয়ার অবকাশ এখনো বাকি আছে কিনা তা বিজ্ঞ জনেরা ভেবে দেখতে পারেন।

তবে এটা নিশ্চিত যে ক্ষতির দায়টা এখন নিতে হবে সাধারণ জনতাকেই , কারণ এটা নির্মান করা হয়েছে ব্যাংকে রক্ষিত জনগনের সঞ্চিত আমানতের অর্থ হতে। বিজিএমইএ এবার হয়তো শত শত কোটি টাকা ঋন নিবে নতুন আলীশান ভবন তৈরী করতে । বিজিএমইএ কোন শ্রমিকের সংগঠন নয়, এটা শ্রমিকের রক্ত চোষা গার্মেন্টস মালিকদের সংগঠন । লোনের টাকায় নতুন আলীশান ভবন তৈরী করে তা ভাড়ায় খাটিয়ে সংগঠন সদস্যদের সুবিধার ভাগ দিবে বাড়িয়ে , আর অন্য দিকে ভেঙ্গে ফেলা ভবনের জন্য গৃহীত ঋণের দায়মুক্তির তরে ধর্ণা দিবে ব্যাংকের দুয়ারে । তাদের দাবী মেনেও নেয়া হবে সহজে কারণ বিজিএমইএর সদস্যগনের বেশীর ভাগই দেশের বড় দু’দলের প্রভাবশালি খেলোয়ার । তা ছাড়াও বিজিএমইএ তাদের ক্ষতি পোষাবে বিবিধ প্রকারে পোষাক শ্রমিকদের সুযোগ সুবিধা টেনে ধরে ।


পানি প্রবাহের নালাকে একটু বাঁক নিয়ে সম্প্রসারণ করা সম্ভবপর যদি নাও হয় তাহলে ভারতের জয়পুরের মান সাগর লেকের মাঝখানে জালমহল প্রাসাদের মত একে লেকের মাঝে পানির বুকে রেখেই ঝিলের শোভা বর্ধন করার বিষয়টি ভাবা যেতে পারে, এর ফলে হয়ত বেঁচে যেতে পারে দেশের সম্পদ। দেশের সম্পদ অক্ষুন্য রাখার বিষয়ে সচেতন জনতাদের কিছু চিন্তাভাবনাতো থাকতেই পারে ।
ছবি : মান সাগর লেকে জালমহল প্যালেস জয়পুর, ভারত


একটি বানিজ্যিক ভবন যা রামপালের বিদ্যুত কেন্দ্রের মত করবেনা ধোয়া নিশ্বরণ, তাকে পরিবেশ বান্ধব করা কি খুবই কঠীন কিছু বিষয় । রামপালে নির্মাণাধীন দৃষ্টিনন্দন বিদ্যুত কেন্ত্রটির কথাই ভাবা যাকনা একটুখানি ।


পরিবেশবাদীদের মতে সুন্দরবনের নিকটে রামপালে কয়লা বিদ্যুত কেন্দ্র হলে তা সুন্দরবনকে করবে বিপন্ন যা দেশের সার্বিক পরিবেশের উপরই প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করে সকলেই । বিষয়টি সরকারও অনুধাবন করে কেন্দ্রটিকে সেখান থেকে না সরিয়ে বরং সেটিকে জায়গায় রেখে পরিবেশ বান্ধব করার জন্য উপযুক্ত প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছেন দেশবাসীকে ।
কিন্তু যদি দেখা যায় বিজিএমইএ ভবনের মত রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মান হওয়ার একযুগ পরে তার ঘন ধুয়ায় সুন্দরবনকে করছে বিপন্ন, তখন এই বিজিএমই ভবনের মত একে ভেঙ্গে ফেলার জন্য আদালতের এই রায়কে রেফারেন্স হিসাবে টানা হতে পারে যুক্তিসঙ্গতভাবে, তখন কারো কিছু বলার থাকবেনা সে কথাতো বলাই যায় । তবে ক্ষতি হবে বিবিধ প্রকারে ।
ছবি : রামপাল প্রকল্পের প্রস্তুতি শেষ, কাজ শুরুর অপেক্ষা
A149


ছবি সুত্র: http://primenewsbd.com/news/110579
তাই বেআইনী ভাবে কোন ভবন কিংবা স্থাপনা যেন গজিয়ে উঠতে না পারে তা কঠোরভাবে তদারকির প্রয়োজন আছে , বেআইনি কোন স্থাপনা গড়ে উঠলে এর দায় দিতে হবে সংষ্লিষ্টদের ঘাড়ে । আর খেয়াল রাখতে হবে দেশের জাতীয় সম্পদ যেন নষ্ট না হয় অযোগ্যদের হাতে পরে , যারা কাজের সময় চোখ বুদে থাকে, পরে বিবিধ অযুহাত খুঁজে দায়মুক্তির তরে । মনে হয় তারা কোনদিন ভাবতে পারে নাই সরকারী খাল/লেক নিয়ে কোন একদিন জাতীয় পর্যায়ে হাতীর ঝিলের মত এমন সুন্দর প্রকল্প হতে পারে। হয়তবা মনে করেছিল পুরাটা লেকই তারা গিলে খাবে একে একে । সৌভাগ্য বা কারো কাছে দুর্ভাগ্যক্রমে হাতির ঝিল সৌন্দর্যকরণ প্রকল্পটি না হলে এটা কোনকালেই বেআইনী কিংবা ঢাকার পরিবেশের জন্য বিপন্ন বলে চিহ্নিত হত কিনা তাতে সন্দেহ জাগে ভীষণভাবে !!!

যাহোক, ফিরে যাই মুল প্রসঙ্গ মেধাবী বিজ্ঞানীদেরকে দেশে ফিরিয়ে এনে গবেষনা কাজে নিয়োগ প্রসঙ্গে । আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত বিদেশে থাকা মেধাবী বিজ্ঞানীদেরকে দেশে এসে কাজের জন্য প্রনোদনা দিচ্ছে বিবিধ প্রকারে । আমরাও এ লক্ষ্যে সামান্য একটু দৃষ্টি দিলে মেধাবী বিজ্ঞানীরা বিদেশে পড়াশুনা শেষে দেশে ফিরে আসবেন ধারণা করি । মেধাবী বিজ্ঞানী ও পেশাজিবীদের জন্য উচ্চ পারিশ্রমিক , উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ সকল প্রকার বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানে রিসার্চ ও ডেভেলপমেন্ট ইউনিট সৃজন , এবং merit based society প্রবর্তন করে গবেষনার অনুকুল পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারলে আমাদের মেধাবী বিজ্ঞানীরা দেশে ফিরে আসার আগ্রহ পাবেন বলে ধারনা করা যায় ।

এছাড়াও বাংলাদেশের বড় বড় সকল প্রকল্পেই বিভিন্ন ধরনের বিশেষজ্ঞ নিয়োগের জন্য একটি Component তথা অংগ অন্তর্ভুক্ত আছে । কিন্তু প্রকল্পের আওতায় বিশেষজ্ঞ নিয়োগের প্রক্রিয়াটি বিদেশী দাতা সংস্থার প্রভাবে এমনই তেলেসমাতিতে পরিপুর্ণ যে তাতে এমনকি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কোন বাংলাদেশী বিজ্ঞানীর পক্ষেও নিয়োগ পাওয়া বেশ দুরুহ ব্যপারই বটে। এ বিষয়টিকে একটু স্বচ্ছ , সহজ ও উদার করা হলে মাসে দশ হতে বিশ হাজার ডলার বেতনে হাজার হাজার বাংলাদেশী বিজ্ঞানী নিয়োজিত হতে পারেন অনায়াসে । হাজার হাজার কোটি টাকার বড় বড় প্রকল্পের আওতায় বিশেষজ্ঞ নিয়োগের বিষয়ে সরকারী প্রকিউরমেন্ট নীতিমালায় যথাযথভাবে একটু পরিবর্তন আনা গেলে কবিগুরু রবিন্দ্রনাথের ভাষায় বলা যাবে ‘পরিত্রাণকর্তা আসবেন দারিদ্র্য লাঞ্ছিত কুটিরে পূর্বাচলের সূর্যোদয়ের দিগন্ত থেকে’। পশ্চিমের দিকে আমাদের তাকিয়ে থাকতে হবেনা আর কোন কালে ।

ছবি সুত্র : গুগল অন্তরজাল
কথা সুত্র : যথাস্থানে যুক্ত হয়েছে লিংক আকারে ।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জানুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৪০
৫৬টি মন্তব্য ৫৬টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=বেনারসী রঙে সাজিয়ে দিলাম চায়ের আসর=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫২



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনে কি পড়ে সেই স্মৃতিময় সময়, সেই লাজুক লাজুক দিন,
যেদিন তুমি আমি ভেবেছিলাম এ আমাদের সুদিন,
আহা খয়েরী চা রঙা টিপ কপালে, বউ সাজানো ক্ষণ,
এমন রঙবাহারী আসর,সাজিয়েছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজ্ঞানময় গ্রন্থ!

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪২

একটু আগে জনৈক ব্লগারের একটি পোস্টে কমেন্ট করেছিলাম, কমেন্ট করার পর দেখি বেশ বড় একটি কমেন্ট হয়ে গেছে, তাই ভাবলাম জনস্বার্থে কমেন্ট'টি পোস্ট আকারে শেয়ার করি :-P । তাছাড়া বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

অস্ট্রেলিয়ার গল্প ২০২৪-৪

লিখেছেন শায়মা, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৫


চলে যাবার দিন ঘনিয়ে আসছিলো। ফুরিয়ে আসছিলো ছুটি। ছোট থেকেই দুদিনের জন্য কোথাও গেলেও ফিরে আসার সময় মানে বিদায় বেলা আমার কাছে বড়ই বেদনাদায়ক। সেদিন চ্যাটসউডের স্ট্রিট ফুড... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসের নায়িকাকে একদিন দেখতে গেলাম

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৫

যে মেয়েকে নিয়ে ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসটি লিখেছিলাম, তার নাম ভুলে গেছি। এ গল্প শেষ করার আগে তার নাম মনে পড়বে কিনা জানি না। গল্পের খাতিরে ওর নাম ‘অ’ ধরে নিচ্ছি।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

×