জীবনচক্রের বিভিন্ন স্তর যথা- গর্ভাবস্থা, শৈশব, হামাগুড়ির বছর,
বয়ঃসন্ধি, কৈশোর, যৌবনকাল , মধ্য বয়স এবং জ্যেষ্ঠ/প্রৌঢ় সময়
কোথা থেকে শুরু করি জীবন কাব্যের স্মৃতিচারণ, ভেবে হই আকুল।
শুনেছি গর্ভাবস্থাতেই নাকি মাকে হাত পা নেড়ে করেছি বেশ জ্বালাতন
মৃত্যু ছাড়া জীবনচক্রের সকল স্তরই করেছি পার ধরে মুর্তী বিবিধ রকম
লম্বা এই জীবনের স্মৃতি চারণ করতে গেলে রূপ ধরতে পারে বিশালাকার
সীমিত পরিসর আর সামুর পাতায় থাকা দিক নির্দেশনাগুলি মাথায় রেখে
এখানে করলাম কেবল ফেলে আসা শৈশবের গুটি কয়েক স্মৃতিচারণ ।
শৈশবের স্মৃতিচারণ কেবলী নয় যেন একরাশ এলোমেলো কথার ফুল ঝুরি
স্মৃতির পাতায় জমে থাকা কথা বলা যতনা সহজ,ততোধিক কঠিন তা লেখা
বুঝার বয়সে মাসি পিশির কাছে শৈশবের গল্প শুনে লজ্জায় ঢাকি মুখখানি
শুনেছিনু যা,তা লজ্জার মোরকে ভরে রেখে দিয়েছিনু দাদুর থলিতে যত্নকরি।
বয়সকালে দাদুর দেয়া সেই থলে খুলে পাই শুধু রাক্ষস খোক্কস ভুত প্রেত ডাইনিদের কথা
বয়োজেষ্ঠদের কাছে শৈশবের কথা জিজ্ঞাসিলে মিলে যায় অম্ল মধুর বেশ কিছু গল্প গাথা,
বছর দুয়েক বয়স কালে সকলের অগোচরে বোতলে ভরা পাকা জামের রস ভেবে খেয়েছিনু
দাদুর গ্যটোবাতে মালিসের তরে বোতলে ভরা তারপিন,ফলে ধাবমান ছিলাম অন্তিমের পানে।
ডাক্তার ওজা পীর ফকির ধরে, মুরগি মানত করে, মসজিদে ফিরনী দিয়ে মোনাজাতে বসা
মায়ের ভালবাসা আর সকলের দোয়ার বদৌলতে বিধাতার দয়ায় অন্তিম যাত্রার পথ হয় রুদ্ধ,
বয়োবৃদ্ধির সাথে দাদার গড়গড়া হুক্কায় তামাক ঠাসা কলকেতে টিক্কা জ্বালিয়ে আনার পথে
গোপনে চোখ বুজে কষে দিয়ে টান কাশির সাথে বুদ্ধির দরজা একটু একটু করে যায় খুলে।
শুপারি গাছের মগডালে উঠে বাগানের এ প্রান্ত হতে ও প্রান্তের গাছে দোল খাওয়া
সেতো ছিল নিত্য দিনের অভ্যেশ ,কাজটি ছিল যে কত কঠীন জীবনের এ লগনে
পায়ে বেড়ি বেধে তর তর করে লাফিয়ে লাফিয়ে আকাশ ছোয়া গাছের মাথায় চরা
সেসব কথা ভাবতে গেলে নীজকে এখন নীজের কাছেই মনে হয় অচেনা একজন
চেনা জগতের সে পরিবেশে বিচরণ করতে মনে জাগে বীর পুরুষের মত শিহরণ।
দুরন্তপনা ক্রমেই যায় বেড়ে মানেনা বাঁধন, নদীতে স্নানের কালে গরুর লেজ ধরে করেছি সন্তরণ
কোন ফাকে মনের ভুলে গরুর লেজ ছেড়ে হারিয়ে যাই গায়ের ছোট নদীর ঘোলা পানির তলে,
জানি না কেমন করে চাউর হয় পাড়াময় জুড়ে
নদীর জলে ডুবে মরে কিংবা হারিয়ে গেছি আমি
সাথীসহ নদীপাড়ের লোকজন ডুব সাতারের পর
সম্বিতহীন দেহখানি মোর তুলে আনে কুলে করে
বুক চেপে মোর উদর ভর্তী পানি করে নিস্কাসন,
বন্ধুগনে ধরা ধরি করে পরে ছেড়ে আসে মোরে
চোখের জলে ভাসা দিশা হারা মায়ের কোলে ।
বর্ষাকালে বিলের জলে ভাসা শাপলার ফল
কোমরে গুজে ডুব দিই নীচে শালুকের খুঁজে
ফিরতি পথে দেখা হয়ে যায় পানিতে লুকানো
শত কাঁটাযুক্ত জলজ পদ্ম ফল মাখনার সাথে
কৌশলে তালু বন্দী করে কতেক তার নিয়ে এসে
জুড়ে দিই পানির উপরে ভাসা স্বজাতি ফুলেরই সাথে
আর চেয়ে দেখি কাঁটার ঘা সয়েও তাদের মুখের হাসি।
ডিংগী নৌকায় বসে হিজলের ফুল ছিড়ে সাথীদের সাথে হৈ-হুল্লুর করি
মজা করে কোশা নৌকায় চড়ে শাপলা ফুটা বিলে করতাম নৌবিহরণ
চোরা পথে পানি ঢুকে বিলের জলে কোশা নৌকা ঢুবে চিৎ হয়ে গেলে
নীজকে ভুলে ডুবো নৌকাটিকে বাঁচানোর তরে লরতাম মরণ পণ ।
এভাবে দলবেধে নাহিবার কালে দিনমান কেটে যেত বিলে শালুকের খুঁজে
বিলের জলে শালুক খঁজে না পেলেও যে শাপলা মালা হয়ে লুটেছিল গলে
বুঝতে তাকে পারিনি,পরে বুঝেছিনু ব্যথা যখন দানা বেধেছিল হৃদয় জুড়ে
হঠাৎ করে একদিন রাতের আঁধারে তারা সপরিবারে বিদেশ চলে গেলে ।
কুমোর পাড়ার হাড়ি পাতিল নিয়ে গল্পটাইতো সেই স্মৃতি জাগানিয়া
হাটু গেড়ে বসে কাদা মাটি দিয়ে কুমোরগন শত শত পাতিল গড়ায়
বাড়ীর কাছে হরকৃষ্ণ কুমোরের উঠানের কোণে মাটির তলে পাঞ্জার
আগুনে কেমন করে চাকতিতে গড়া হাড়িপাতিল পুড়ায় দেখার তরে
খালি পায়ে পাঞ্জা ঘরের খুব কাছে গেলে গরমে পায়ের পাতা যায় পুড়ে
পরম মমতায় কুমারনী মৃদু ধমকের সাথে পায়ে মলম লাগায় যত্ন করে
পয়শট্টি সালে পাক ভারত যুদ্ধের সময় হিন্দু মুসলিম রায়ট বেধে গেলে
একদিন রাতের আঁধারে কুমার কুমারনীরা বাড়ীঘর ফেলে জীবন বাঁচাতে
তাদের ছেলেমেয়ে নিয়ে চলে যায় ভারতে খবর চাউর হয় সুর্যোদয় কালে
আর কুমারের শুন্য সে ভিটামাটি চলে যায় গ্রাম্য মুড়লের দখলে
খেলার সাথী শাপলা পালের চলে যাওয়া বুকে শেলের মত বিঁধে।
মনে পড়ে লেখা পড়ায় হাতে খড়ি মায়ের হাত ধরে অ আ পড়ে
লেখার শুরু স্লেটের উপরে সরু পেন্সিল দিয়ে আঁকা আঁকি করে,
শুরু হয়ে গেল কয়লা দিয়ে ছবি আঁক ঝোক বাড়ী ঘরের দেয়ালে
সারাক্ষন খেলা বাদ দিয়ে লেখাপড়ার জ্বালাতন টের পেল সকলে।
ঈদের দিন কাক ডাকা ভোরে ভাই বোন চলে যেতাম শিউলি তলে
প্রতিযোগীতা ফুল কুড়ায়ে কে কত বড় মালা পড়াব বাবা মার গলে
সেমাই খেয়ে নতুন জামা কাপড় পড়ে ঈদের মাঠে নামাজ শেষে
কে কত বেশী কোলাকুলি করেছি বন্ধুদের সাথে হত প্রতিযোগিতা
এ সকল বিষয় আজকের এই ব্যস্ততার যুগে কেবলী স্মৃতিকথা।
বৈশাখী মেলা আর পুজা পার্বনে হিন্দু মুসলমান বন্ধুগনে একসাথে
মিলে মজা করে দুলতাম নাগর দোলায়,মেলায় কেনা কাটার তরে
মায়ের হাতে কাটা বাশের চোঙগায় পয়শা জমাতাম সারা বছর ধরে
পয়শার জন্য ঘরের মুরগীম ডিম মাকে লুকিয়ে বাজারে দিতাম বেচে।
পাাঁচ বছর বয়সকালে দাদাকে সাথে নিয়ে পাঠশালার পথ ধরি
টিনের চালার নীচে বেড়াহীন পাঠশালায় প্রথম শ্রেণীতে পড়ি ।
সকালে খাওয়ার পর স্কুলে দৌড়ানো, ক্লাস শুরুর আগে সমাবেশ
সমাবেশে প্রথমেই সুর করে জাতীয় সঙ্গীত পরে নিয়ম পিটি করা
পিটি শেষে লাইন ধরে এক এক করে নীজ শ্রেণী কক্ষে গিয়ে বসা
পড়াশুনা,মারামারি খেলা ধুলা আর বন্ধুগন সনে করি মাতা মাতি।
মাঝে মাঝে ছুতো নাতায় স্কুল কামাই দেয়াতেও ছিলনা কোন কমতি
খেলার সাথীর অসুখ হলে বলতাম তাকে স্কুলে যাবি , উত্তর না হলে
বলতাম আমিউ যাবো না, ফলে করতে হত অনেক তেলেস মাতি ।
ঘর বাড়িতে যত বড় কাগজ সুতা ছিলো সব সরিয়ে নিয়ে বানাতাম ঘুড়ি
সুতায় মাঞ্জা দেওয়ার তরে ভালো কাঁচের গ্লাস লুকিয়ে ভেঙে ফেলতাম,
মায়ের কাছে ধরা পরে সেই রকমের বকুনী খাওয়া। ফের ঘুড়ি উড়াতে গিয়ে
কাটাকুটিতে হেরে মারামারি করে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফেরা, বাড়ি ফিরে
মায়ের হাতে আরেক দফা উত্তম মধ্যম, সে মারেও আনন্দ যে কত ছিলো ,
পরের দিন আবারো বিপুল বিক্রমে ঘুড়ি তৈরির কাজে লেগে পরা, যার সাথে
আগেরদিন হয়েছে ঝগড়া তার সাথেই জোট করে অন্যের ঘুড়ির সুতা কাটা।
পড়াশুনা আর খেলা ধুলায় দিনমান কাটে
এরি মাঝে তাল পাতার ফালি দিয়ে গড়া
ছাউনি তলে খেলার সাথীদের বাসর ঘর
সাজানোর কথা যায়না ভুলা ভেঙ্গে ছিল যা
এক রাতে নিদারুন কাল বোশেখীর ঝড়ে ।
ভাঙ্গা ঘরের সাথে হারিয়ে গেছে এক জনা
খরি মাটি দিয়ে দেয়ালের গায়ে লিখে গেছে
ফের হবে দেখা পশ্চিমের কোন এক দেশে।
উল্লেখ্য ষাটের দশকের বাল্যবিবাহ সে যে কত শত মানুষের জীবনের করুন গাথা
ক’দিন আগে শপিংমলে করছিলাম কেনাকাটা হঠাৎ পিছন থেকে এক নারী কন্ঠ –
আলী নাকি! চমকে আমি উঠি। আমাকে ওই নামে ডাকে হাতে গোনা কয়েকজনা
পিছনে তাকাই, চিনতে না পারি। মহিলার চোখে মুখে অনেক কৌতুহল আর অভিমান
আমি চিনি না। মৃদু কন্ঠে সে বলে আমি- মিনতি।আমার স্মৃতির বন্ধ দরজা যায়যে খুলে।
পঞ্চম হতে ষষ্ঠ শ্রেণীতে উঠার কালে প্রথম স্থানটি না পেয়ে
মনের দুখে বাড়ী না ফিরে গাছ তলায় বই রেখে পলায়ন করি
শুনেছি লুঙ্গি পড়া বড় চুলদাড়ি ওয়ালারা নাকি কামেল ফকির
ভাগ্য ভাল হলে তাঁদের কাছে চাইলে নাকি খুলে যায় তগদির।
করলাম পণ যে করেই হোক খুঁজে পেতে হবে তেমন ফকির।
মনে পড়ে আমাদের এলাকায় লেংটা ফকির নামে তেমন একজন মানুষ ছিল
হাতে ছোট এক দা নিয়ে ঘুরে বেড়াত তবে তা দিয়ে করতনা কারো কোন ক্ষতি
শুধু পায়ে চলা পথের পাশের কাঁটা ঝোপঝাড় কেটে দিত মানুষের সুবিধার লাগি
লোকে বলে তিনি নাকি আসলে ছিলেন খোদা প্রেমিক একজন বড় কামিল দরবেশ
তিনি যদি মুখ ফুটে কাওকে কিছু বলতেন, তাই নাকি তার জীবনে ঠিক ঠিক ফলত।
একদিন রাতে এলাকার বড় বট গাছের নীচে তিনি নাকি দেখা পান এক ভুতের
ভুতকে দা দিয় কোপাতে কোপাতে গ্রাম ছাড়া করে তিনিও হয়ে যান নিরোদ্দেশ
তার পর থেকে লেংটা ফকীরকে আর যায়নি দেখা আমাদের গ্রামের এলাকাতে।
তাঁকে খুঁজতে মাঠের পরে মাঠ পেরোলাম গ্রামের মেঠো পথ ধরে
দুপুর গড়িয়ে সুর্য হেলে যাওয়ার কালে দেখা পেলাম খুঁজছি যারে,
পিছে পিছে যাই কথা বলতে ভয় পাই, পাছে যদি তিনি যান রেগে
খানিক বাদে তিনি পিছন ফিরে বললেন এই খোকা তুই চাছ কিরে?
ক্ষুধায় কাতর মিন মিনে গলায় বললাম ফার্স্ট হতে চাই পরীক্ষাতে
কথা শুনে ফকির বললেন এবয়সেই ফাস নিতে চাছ তুই কোন দুখে
দুখ্যের মুলকথা বললাম তাকে, তিনি বললেন চল খেয়ে নিই আগে।
এই কথা বলে তিনি আমাকে সাথে নিয়ে ঢুকলেন পাশের বাড়ীতে
হক মাওলা বলে চিৎকার দিতেই বাড়ীর বউ ঝিড়া আসল তরিতে
হাত মুখ ধোয়ার তরে বদনায় পানি দিয়ে পিড়ি পেতে দিল বসতে
বেশ আদর যত্ন করে ঘরে যা ছিল পাত পেতে খেতে দিল মোদেরে।
খাওয়া শেষে ফকির বললেন ফাস নিয়ে কাজ নেই,বাড়ি যা ফিরে
মন দিয়ে পড়াশুনা কর দেখবে ওপরওয়ালা ভাল ফল দিবে তোরে,
কি আর করা, মনে ভরসা রেখে বাড়ী ফিরে দেখি শোকের মাতম
পাড়াময় খুঁজাখোজি নিখোঁজ আমার তরে খাল বিল তছ নছ করে
পানিতে ঢুবে মারা গিয়াছি কিনা সেটাই জানতে চেয়েছিল সকলে।
কপাল গুণে উত্তম মধ্যমের হাত হতে বেঁচে যাই মায়েরি কল্যানে
তারপর লেংটা ফকিরের দোয়া কিনা জানিনা, তবে পিতামাতা সহ
সকলের সহায়তায় স্কুলকলেজ ভার্সিটির সর্বশেষ স্তর দিয়েছি পাড়ি।
শৈশব কালের একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনার কথা এখনো বুকের মাঝে শেলের মত বাজে
১৯৬৫ সনে পাক- ভারত যুদ্ধের সময় প্রচন্ড শব্দ করে দ্রুত গতিতে দুইটি ফাইটার
বিমান মাথার উপর দিয়ে যায় উড়ে। দ্রুত গতির কারণে একই সময়ে মাথার উপরে
সামন পিছন দুদিক হতেই রেল গাড়ীর মত পরিচিত ইঞ্জিনের শব্দ গিয়েছিল শুনা ।
ঢাকা-ময়মনসিং রেল লাইন বরাবর খুবই নীচ দিয়ে ফাইটার দুটি উড়ে যাওয়ার সময়
গোলাঘাট রেল ব্রীজের উপর দিয়ে হেটে চলা মানুষ হয়ে যায় দিকবিদিক জ্ঞান শুন্য ।
তারা মনে করে এই বুঝি দুদিক হতে দুটি ট্রেন দ্রতবেগে উঠে আসবে ব্রীজের উপরে
জীবনের ভয়ে তারা তখন নীচে নদীর পানিতে ঝাপ দেয় ও পরে ১জন মৃত্যুবরন করে
পরে জীবিত মানুষটির নিকট হতে নদীতে ঝাপিয়ে পড়ার কারণ জানা যায় সবিস্তারে।
পরে বড় হয়ে জানতে পেরেছি অনেক সামরিক উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা তাদের বই কিংবা
প্রকাশনায় লিখে গেছেন ১৯৬৫ সনে পাক ভারত যুদ্ধে পুর্ব পাকিস্তান সেকটরে কোন
যুদ্ধই হয় নাই । পশ্চিম সেকটরে পাকিস্তান একতরফা যুদ্ধ শুরু করলেও ভারত তাতে
৬ই সেপ্টেম্বর অংশ নেয়, যাকে যুদ্ধ শুরুর তারিখ বলা হয়ে থাকে। পুর্ব পাকিস্তান অংশে
তাদের রণ কৌশল ছিল ভিন্ন । তাদের টার্গেট ছিল সকল সরবরাহ পথ ছিন্ন করা। এ জন্য
তাদের পদাতিক বাহিনী ব্যবহারের দরকার ছিলনা।তাই সপ্টেম্বরে পশ্চিম বঙ্গের মেদিনীপুর
জেলার খরগপুরের এয়ারবেজ হতে দুটি ক্যনবেরা ফাইটার উড়ে যায় চট্গ্রাম বিমান বন্দরে
উদ্দেশ্য আক্রমন, একটি বিমান থেকে রানওয়ের মাঝে ফেলা হয় বোমা কিন্তু সে বোমাটি
বিস্ফোরিত হয় নাই। পরে ক্যানবেরা ২টি খরগপুরের দিকে যায় উড়ে।এই খবর জানাজানি
হলে তার কিছু ক্ষন পরেই ঢাকা বেজ হতে ৪ টি সেবর জেট খরগপুরের বেজ আক্রমন করে
ক্যানবেরা ২ টি দেয় ধ্বংস করে।এরপরে আবার তাদের সেবর জেট আক্রমন করতে গেলে
উড্ডিয়মান ভারতীয় ২টি হান্টার তাদের ধাওয়া করে।এবার পাকিস্তান তাদের ১টি সেবর জেট
হারায় (ভারতীয় দাবী)।
ভারতীয় হান্টার দিয়ে পাকিস্তানী সুপারিয়র সেবর ফাইটার জেট আক্রমন করার একটি ছবি
Source Click This Link
ঢাকার খুবই কাছে রেল লাইনের পাশে আমাদের গ্রামের বাড়ীর হওয়ায় মাথার ঠিক উপর দিয়ে
ঢাকা ময়মনসিং রেল লাইন বরাবর বেশ নীচু দিয়ে হান্টার দুটি উড়ে যাওয়ার সময় গোলাঘাট রেল
ব্রীজের উপর হতে দুজন মানুষ দিক বিদিক জ্ঞানশুন্য হয়ে নীচে নদীর পানিতে ঝাপ দিয়ে পরে।
তথ্য সুত্র https://songramernotebook.com/archives/10956
মাত্র ১৭ দিনের মাথায় তাশখন্দে লাল বাহাদুর শাস্রীর সাথে আয়ুব খানের চুক্তির ফলে যুদ্ধ যায় থেমে
তবে যুদ্ধ থেমে গেলেও দেশের বহু স্থানে হিন্দু- মুসলমান রায়ট যায় বেধে , মারা মারির চেয়ে জোড়
করে হিন্দুদের জায়গা জমি দখলের আয়োজন চলে বিবিধ প্রকারে যার কিছুটা বলা হয়েছে উপরে ।
সে সময় হঠাৎ করে একদিন বিকট শব্দ করে ইয়া বড় একটি হেলিকপ্টার মাথার উপরে চক্কর দিয়ে
নেমে পড়ে আমাদের স্কুলের খেলার মাঠে , এতবড় উড়ো জাহাজ এলাকার মানুষ জীবনেও দেখেনি
তাই মহুর্তেই দল বেধে গ্রাম হতে গ্রামান্তরের মানুষজন ছুটে আসে স্কুলের মাঠে হেলিকপটার দেখতে
হেলিকপটার হতে ইয়া বড় একজন সেনাপতি নেমে এসে হাত মাইকে দিলেন বেশ গরম এক ভাষন
বললেন যুদ্ধ শেষ, ভারত গিয়াছে হেরে এখন কোন মারামারি নয় শান্তি বজায় রাখতে হবে ঘরে ঘরে
সেনাপতির ভাষনের চেয়েও কাছ থেকে জীবনে প্রথম হেলিকপ্টার দেখার স্মৃতিটাই বেশী মনে পড়ে।
শৈশবকালেই টের পাই পাকিস্তানী উর্দু ভাষীদের শাসন শোষন বঞ্চনার বিষয়াবলি
ঢাকা হতে সৈয়দপুর গামী রেল গাড়ীতে যাতায়াতকারী বিহারীগন আমাদের বসার
সীট গুলি পুর্ব হতেই রাখত তাদের দখলে শুয়ে বসে বিবিধ প্রকারে, ট্রোনের টি টি
ড্রাইভার, গার্ড, রেল পুলিশ সবাই ছিল উর্দুভাষী বিহারী, ফলে তাদেরই ছিল দাপট
শোষণ বষ্ণনার সাথে এসব কারণও বাঙ্গালী মানষে জন্ম দিয়েছিল স্বাধিকার বাসনা
তাইতো ১৯৭১ এ স্বাধিনতার ঘোষনায় লাখো জনতা হাতে তুলে নিয়েছিল রাইফেল।
শৈশব হতে কৈশোরে পা দিতে না দিতেই দেখেছি দেশের শিশু কিশোরদের চেতনা
সে সব কাহিনী পরে কোন সময় বলা হবে যদি সামু মুক্তি যুদ্ধ নিয়ে কিশোর কালের
ব্লগারদের (যুদ্ধে অংশ গ্রহন ও দর্শনকারীসহ) স্মৃতি চারণের কোন আয়োজন করে ।
শৈশব ও বাল্যের আনন্দঘন দুরন্তপনার বৈচিত্রময় পথ মারিয়ে
কৈশোর থেকে যৌবন পেরিয়ে,বার্ধক্যের দোর গোড়ায় দাঁড়িয়ে
অন্তর্জালের পাতায় পাতায় এখন বিবিধ প্রকারে সারা দুনিয়া জুরে
অগনিত মানব মানবীর সাথে কথা চালাচালি করে কাটাই জীবন
বারে বারে শৈশবে ফিরে নানা রঙ্গের মধুময় স্মৃতিগুলি করি মন্থন
কামনা করি সেকালের দুরন্তপনার দিনগুলির হোক পুণরাগমন
সাথে ভাবি, বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখে যেই শৈশবটা থেকে পাড়ি দিলাম
আজ দু:খ একটাই কেনযে বড় হয়ে সেই প্রিয় শৈশবটাই হারালাম।
শৈশবের ফেলে আসা হারানোকে আবার ফিরে পাওয়ার তরে কত কি যে করি
এই তো সেদিন দিগন্ত প্রসারী সাগরের ডেউ তোলা জলে কিছু বন্ধুদের সনে
আনন্দ উচ্ছাসে ব্যাক পেইন ভুলে মেতে উঠেছিলাম শৈশবের স্মৃতি চারণে
এটা সহ শৈশবের কতেক স্মৃতিকথা সপে দিলাম ব্লগবাসী বন্ধুদের শ্রীকমলে।
ব্লগ কতৃপক্ষরের এই আয়োজন ব্লগবাড়ী সহ সামুর সকল ব্লগারকে চাঙ্গা করে
তোলবে মর্মে আশাবাদী হয়ে এতক্ষন ধৈর্য্য ধরে সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
ছবি সুত্র :কিছু নীজের কিছু গুগল ও বিবিধ অন্তরজাল মাধ্যম হতে সংগৃহীত
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জুন, ২০২৩ রাত ৩:০৭