somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

‘এপ্রিল ফুল’

৩১ শে মার্চ, ২০১৩ দুপুর ২:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মুসলমানদের স্পেন বিজয় একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। স্পেন বিজয়ের পূর্বমুহূর্তে সেখানে উইতিজা নামক এক রাজা রাজত্ব করত। হঠাৎ উইতিজাকে সিংহাসনচ্যুত করে রডারিক সিংহাসন অধিকার করে। রডারিক ছিল অত্যন্ত উচ্চাভিলাষী ও অত্যাচারী ব্যক্তি। রডারিক সম্রাট উইতিজাকে নৃশংসভাবে হত্যা করে।
অতঃপর রডারিকের দৃষ্টি নিবদ্ধ হয় ক্ষুদ্র স্বাধীন রাষ্ট্রগুলোর প্রতি। রডারিক প্রথমে আক্রমণ করে স্পেনের দক্ষিণাঞ্চলের সিউটা দ্বীপের স্বাধীন রাজা কাউন্ট জুলিয়ানকে। জুলিয়ান প্রথমে পরাজিত হয়ে রাজ্য ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। পরবর্তীতে জুলিয়ান সিউটা ও আলজিসিরাসের গভর্ণরের দায়িত্ব পালন করতে থাকে। ইউরোপের সমসাময়িক নিয়ম ছিল যে, প্রদেশের গভর্ণর অথবা সামন্তরাজাদের পুত্র-কন্যাকে কেন্দ্রীয় রাজ দরবারে প্রেরণ করা। সম্ভবতঃ এর দু’টি কারণ ছিল। গভর্ণর অথবা সামন্তরাজাগণ যেন সহজেই বিদ্রোহ ঘোষণা করতে না পারে। অন্য কারণটি ছিল, রাজকীয় পরিবেশে আদব-কায়দা, সৈন্য-পরিচালনা ও রাজনীতি সর্ম্পকে সঠিক জ্ঞান ও ধারণা অর্জন করা। তাই কাউন্ট জুলিয়ান তার অত্যন্ত সুন্দরী কন্যা ফ্লোরিন্ডাকে রাজধানী টলেডোতে প্রেরণ করে। রাজধানীতে অবস্থানকালে রাজা রডারিক ফ্লোরিন্ডার সৌন্দর্যে বিমুগ্ধ হয়ে পড়ে। জুলিয়ান তনয়ার প্রতি সে কামনার হাত প্রসারিত করে। এই আচরণ ছিল যেমন গুরুতর তেমনি মর্যাদাহানিকর। এই অপমানজনক ঘটনার বিবরণ দিয়ে ফ্লোরিন্ডা গোপনে তার পিতার নিকট সংবাদ পাঠায়। এমনিতেই কাউন্ট জুলিয়ানের সঙ্গে রাজার সম্পর্ক ভাল ছিল না। রাজ্য হারানোর বেদনার সঙ্গে যুক্ত হ’ল কন্যার অবমাননা। প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য এবং রডারিক নামক নরপশুর হাত থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য জুলিয়ান মূসা ইবন নুসাইরকে স্পেন আক্রমণের সাদর আমন্ত্রণ জানান। এবার সেনাপতি মূসা বিন নুসাইর প্রথমে পরীক্ষামূলক অভিযানের জন্য তারিফ বিন মালিককে চারশ’ পদাতিক এবং একশ’ অশ্বারোহী সৈন্য নিয়ে স্পেনের আলজিসিরাসে সফল অভিযান চালান। তারিফের এই সফল অভিযানের সংবাদ পেয়ে মূসা বিন নুসাইরের সহকারী সেনাধ্যক্ষ তারিক ইবনু যিয়াদ সাত হাযার সৈন্য সমন্বয়ে গঠিত এক মুজাহিদ বাহিনী অতি সফলতার সাথে ভূমধ্যসাগর ও আটলান্টিক মহাসাগর সংযোগকারী প্রণালিটি অতিক্রম করে ৯২ হিজরীর রজব অথবা শা‘বান মোতাবেক ৭১১ খ্রীষ্টাব্দের এপ্রিল অথবা মে মাসে স্পেন ভূখন্ডে অবতরণ করেন। যে পাহাড়ের পাদদেশে তারিক অবতরণ করেছিলেন তার নামকরণ করা হয় ‘জাবালুত তারিক’ (Gibralter)।
এ সংবাদ স্পেনের শাসনকর্তা রডারিকের কর্ণগোচর হওয়া মাত্র তিনি যথাসাধ্য প্রস্ত্ততি নিলেন আক্রমণ প্রতিরোধের জন্য। অন্যদিকে সেনাপতি তারিকও তাঁর অভিযানকে স্পেনের মূল ভূখন্ডের দিকে পরিচালনা করলে সেনাধ্যক্ষ মূসা পাঁচ হাযার সৈন্য প্রেরণ করেন। সর্বমোট ১২০০০ সৈন্যসহ সেনাপতি তারিক অগ্রসর হন। ১৯ জুলাই ৭১১ খ্রীষ্টাব্দে মুসলিম বাহিনী এবং গথিক রাজা রডারিকের নিয়মিত বাহিনীর মধ্যে ওয়াদী লাজু নামক স্থানে এক তুমুল যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এই যুদ্ধে গথিক বাহিনী ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে পলায়ন করে। হাযার হাযার গথিক সৈন্য মৃত্যুবরণ করে। রডারিক উপায়ান্তর না দেখে পলায়ন করতে গিয়ে নদীবক্ষে ঝাঁপ দিয়ে প্রাণ হারান। তারিক আরো অগ্রসর হওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তিনি মুসলিম বাহিনীকে উদ্দেশ্য করে এই ভাষণ দেন যে, ‘তোমাদের সম্মুখে শত্রুদল এবং পিছনে বিশাল বারিধি। তাই আল্লাহ্র কসম করে বলছি, যে কোন পরিস্থিতিতে ধৈর্যধারণ ও অবিচল থাকা এবং আল্লাহ্র সাথে কৃত ওয়াদা বাস্তবায়ন করা ব্যতীত তোমাদের বিকল্প কোন পথ নেই’। সৈনিকগণও সেনাপতির ভাষণের জবাব দেয়, জয় না হওয়া পর্যন্ত আমরা সংগ্রাম চালিয়ে যাব। কারণ আমরা সত্য প্রতিষ্ঠায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
মুসলিম সৈনিকদের প্রচন্ড আক্রমণের ফলে গথিক রাজ্যের একটির পর একটি শহরের পতন হ’তে থাকে। ৭১১ খ্রীষ্টাব্দের অক্টোবরে মুসলমানরা কর্ডোভা জয় করেন। মুসলমানরা স্পেন জয় করার পর প্রথমে সেভিল (Seville) কে রাজধানী হিসাবে ঘোষণা করেন। কিন্তু সোলাইমান ইবনু আব্দিল মালিকের যুগে স্পেনের গভর্ণর সামাহ বিন মালেক খাওলানী রাজধানী সেভিল থেকে কর্ডোভায় স্থানান্তরিত করেন। এরপর এই কর্ডোভা শতাব্দীর পর শতাব্দী স্পেনের রাজধানী হিসাবে থেকে যায়। এভাবে পযার্য়ক্রমে বৃহত্তর স্পেন মুসলমানদের নেতৃত্বে চলে আসে। ইসলামী শাসনের শাশ্বত সৌন্দর্য ও ন্যায় বিচারে মুগ্ধ হয়ে হাযার হাযার মানুষ ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করে। সাথে সাথে জ্ঞান-বিজ্ঞান, সাহিত্য-সংস্কৃতি ও শিল্প-সভ্যতার ক্ষেত্রে বিস্ময়কর উন্নতি সাধিত হ’তে থাকে।
এদিকে ইউরোপীয় খ্রীষ্টান রাজাদের চক্ষুশূলের কারণ হয় মুসলমানদের এই অগ্রগতি। ফলে ইউরোপীয় মাটি থেকে মুসলিম শাসনের উচ্ছেদ চিন্তায় তারা ব্যাকুল হয়ে উঠে। অতঃপর আরগুনের ফার্ডিন্যান্ড এবং কাস্তালিয়ার পর্তুগীজ রাণী ইসাবেলা এই দু’জনই চরম মুসলিম বিদ্বেষী খ্রীষ্টান নেতা পরস্পর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। তাঁরা সর্বাত্মক শক্তি প্রয়োগ করে মুসলমানদের উপর আঘাত হানবার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। তারা মুসলমানদের দুর্বলতার সুযোগ খুঁজতে থাকে। এমন এক মুহূর্তে ১৪৮৩ সালে আবুল হাসানের পুত্র আবু আব্দিল্লাহ বোয়াবদিল খ্রীষ্টান শহর লুসানা আক্রমণ করে পরাজিত ও বন্দী হন। এবার ফার্ডিন্যান্ড বন্দী বোয়াবদিলকে গ্রানাডা ধ্বংসের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে। একদল সৈন্য দিয়ে বোয়াবদিলকে প্রেরণ করে তাঁরই পিতৃব্য আল-জাগালের বিরুদ্ধে। বিশ্বাসঘাতক বোয়াবদিল ফার্ডিন্যান্ডের ধূর্তামি বুঝতে পারেননি এবং নিজেদের পতন নিজেদের দ্বারাই সংঘটিত হবে এ কথা তখন তার মনে জাগেনি। খ্রীষ্টানরাও উপযুক্ত মওকা পেয়ে তাদের লক্ষ্যবস্ত্তর উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে পরিকল্পনা কার্যকর করতে থাকে। বোয়াবদিল গ্রানাডা আক্রমণ করলে আজ-জাগাল উপায়ন্তর না দেখে মুসলিম শক্তিকে টিকিয়ে রাখার মানসেই বোয়াবদিলকে প্রস্তাব দেন যে, গ্রানাডা তারা যুক্তভাবে শাসন করবেন এবং সাধারণ শত্রুদের মোকাবেলার জন্য লড়াই করতে থাকবেন। কিন্তু আজ-জাগালের দেয়া এ প্রস্তাব অযোগ্য ও হতভাগ্য বোয়াবদিল প্রত্যাখ্যান করেন। শুরু হয় উভয়ের মাঝে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ।
ফার্ডিন্যান্ড ও রাণী ইসাবেলা মুসলমানদের এই আত্মঘাতী গৃহযুদ্ধের সুযোগ গ্রহণ করে গ্রাম-গঞ্জের নিরীহ মুসলিম নারী-পুরুষকে হত্যা করে গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিতে দিতে ছুটে আসে শহরের দিকে। অতঃপর রাজধানী গ্রানাডা অবরোধ করে। এতক্ষণে টনক নড়ে মুসলিম সেনাবাহিনীর। তারা গা ঝাড়া দিয়ে উঠে। তাতে ভড়কে যায় সম্মিলিত কাপুরুষ খ্রীষ্টান বাহিনী। সম্মুখ যুদ্ধে নির্ঘাত পরাজয় বুঝতে পেরে তারা ভিন্ন পথ অবলম্বন করে। তারা আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয় শহরের বাইরের সকল শস্য খামার এবং বিশেষ করে শহরের খাদ্য সরবরাহের প্রধান উৎস ‘ভেগা’ উপত্যকা। ফলে অচিরেই দুর্ভিক্ষ নেমে আসে শহরে। খাদ্যাভাবে সেখানে হাহাকার দেখা দেয়। এই সুযোগে প্রতারক খ্রীষ্টান রাজা ফার্ডিন্যান্ড ঘোষণা করে, ‘মুসলমানেরা যদি শহরের প্রধান ফটক খুলে দেয় এবং নিরস্ত্র অবস্থায় মসজিদে আশ্রয় নেয়, তাহ’লে তাদেরকে বিনা রক্তপাতে মুক্তি দেয়া হবে। আর যারা খ্রীষ্টান জাহাজগুলোতে আশ্রয় নিবে, তাদেরকে অন্যান্য মুসলিম রাষ্ট্রে পাঠিয়ে দেয়া হবে। অন্যথা আমার হাতে তোমাদেরকে প্রাণ বিসর্জন দিতে হবে’।
দুর্ভিক্ষতাড়িত অসহায় নারী-পুরুষ ও মাছুম বাচ্চাদের কচি মুখের দিকে তাকিয়ে মুসলিম নেতৃবৃন্দ সেদিন খ্রীষ্টান নেতাদের আশ্বাসে বিশ্বাস করে শহরের প্রধান ফটক খুলে দেন ও সবাইকে নিয়ে আল্লাহ্র ঘর মসজিদে আশ্রয় নেন। কেউবা জাহাজগুলোতে আশ্রয় গ্রহণ করেন। কিন্তু শহরে ঢুকে খ্রীষ্টান বাহিনী নিরস্ত্র মুসলমানদেরকে মসজিদে আটকিয়ে বাহির থেকে প্রতিটি মসজিদে তালা লাগিয়ে দেয়। অতঃপর একযোগে সকল মসজিদে আগুন লাগিয়ে বর্বর উল্লাসে ফেটে পড়ে নরপশুরা। আর জাহাজগুলোকে মাঝ দরিয়ায় ডুবিয়ে দেয়া হয়। কেউ উইপোকার মত আগুনে পুড়ে ভস্ম হয়ে গেল, কারো হ’ল সলিল সমাধি। প্রজ্জ্বলিত অগ্নিশিখায় দগ্ধীভূত ৭ লক্ষাধিক অসহায় মুসলিম নারী-পুরুষ ও শিশুদের আর্তচিৎকারে গ্রানাডার আকাশ-বাতাস যখন ভারী ও শোকাতুর হয়ে উঠেছিল, তখন হিংস্রতার নগ্নমূর্তি ফার্ডিন্যান্ড আনন্দের আতিশয্যে স্ত্রী ইসাবেলাকে জড়িয়ে ধরে ক্রূর হাসি হেসে বলতে থাকে, Oh! Muslim! How fool you are! ‘হায় মুসলমান! তোমরা কত বোকা’।
যেদিন এই হৃদয় বিদারক, মর্মান্তিক ও লোমহর্ষক ঘটনা ঘটেছিল, সে দিনটি ছিল ১৪৯২ খ্রীষ্টাব্দের ১লা এপ্রিল। সেদিন থেকেই খ্রীষ্টান জগৎ প্রতি বছর ১লা এপ্রিল সাড়ম্বরে পালন করে আসছে April fools Day তথা ‘এপ্রিলের বোকা দিবস’ হিসাবে। মুসলমানদের বোকা বানানোর এই নিষ্ঠুর ধোঁকাবাজিকে স্মরণীয় করে রাখার উদ্দেশ্যে সমগ্র ইউরোপে প্রতিবছর ১লা এপ্রিল ‘এপ্রিল ফুল’ দিবস হিসাবে পালিত হয়।
পৃথিবীর ইতিহাসে ঠান্ডা মাথার এই নিষ্ঠুর প্রতারণা ও লোমহর্ষক নির্মম হত্যাকান্ডের আর কোন নযীর নেই। কিন্তু এত বড় ট্রাজেডীর পরেও আজ পর্যন্ত খ্রীষ্টান বিশ্ব কখনোই অপরাধ বোধ করেনি। বরং উল্টা তারা গত ১৯৯৩ সালের ১লা এপ্রিল তারিখে গ্রানাডা বিজয়ের পাঁচশ’ বর্ষপূর্তি উপলক্ষে স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের বিশ্ব নেতৃবৃন্দ আড়ম্বরপূর্ণ এক সভায় মিলিত হয়ে নতুন করে শপথ গ্রহণ করে একচ্ছত্র খ্রীষ্টীয় বিশ্ব প্রতিষ্ঠার। বিশ্বব্যাপী মুসলিম জাগরণ প্রতিহত করার জন্য গড়ে তোলে ‘হলি মেরী ফান্ড’। বিশ্বের বিভিন্ন খ্রীষ্টান রাষ্ট্র উক্ত ফান্ডে নিয়মিত চাঁদা জমা করে মুসলমানদের নিশ্চিহ্ন করার জন্য বিশ্বব্যাপী গড়ে তুলেছে অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক নেটওয়ার্ক। আজ এই জঘন্য উৎসব আমাদের মুসলমানদের জাতীয় জীবনেও প্রবেশ করেছে। প্রতি বছর ইংরেজী মাসের ১লা এপ্রিল ভোরে উঠেই একে অপরকে ধোঁকা দিয়ে বোকা বানানোর ন্যক্কারজনক কাজে শরীক হয়ে বেশ আনন্দ উপভোগ করে থাকে ছেলে থেকে শুরু করে বুড়ো পর্যন্ত অনেকে। লক্ষ্য করা যায়, গ্রামে-গঞ্জে-শহরে শিক্ষিত-অশিক্ষিত, স্বল্পশিক্ষিত এমনকি সর্বোচ্চ শিক্ষিত জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই একে অপরকে নানাভাবে বিভিন্ন কৌশলে বোকা বানিয়ে আনন্দ পায়। শ্রেণীকক্ষের টেবিল-চেয়ার উল্টিয়ে, কলমের নিব সরিয়ে ইত্যাদি বিবিধ কৌশলে শিক্ষকদের বোকা বানানো হয়। আর শিক্ষক কিংবা শিক্ষিকারাও একটু মুচকি হাসির মাধ্যমে খুব সহজেই তা বরণ করে নেন। এ দিনটিতে মানুষকে বোকা বানানোর জন্য প্রতারণা, ধোঁকাবাজি, ছলনা ও মিথ্যা বলার মাধ্যমে নিজেকে চালাক প্রমাণ করার মানসে একশ্রেণীর মানুষকে খুব তৎপর দেখা যায়। তারা ধোঁকার এই নাটক রচনা করে প্রচুর কৌতুকও উপভোগ করে থাকে। এই নিমর্ম কৌতুকের কারণে প্রত্যেক বছর কত যে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে, তার কোন ইয়ত্তা নেই।
১লা এপ্রিলের ঐতিহাসিক ঐ হৃদয়বিদারক ঘটনায় কার না মন শিউরে উঠে, কার না হৃদয় কেঁদে উঠে। কিন্তু মুসলমানদের মধ্যে কোন প্রতিক্রিয়া নেই, নেই কোন ভাবনা। ১লা এপ্রিলের ঘটনা স্মরণ করে মুসলমানরা সতর্ক হবে, শিক্ষা নিবে এমন কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বরং এর উল্টো প্রভাবই বিরাজ করছে। ১লা এপ্রিল অনেক মুসলিম অমুসলিমদের হাতে হাত মিলিয়ে বিজাতীয় আনন্দ-উল্লাসে মেতে উঠে। খ্রীষ্টান সংগঠন এ দিনে যখন বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে, তখন মুসলমানেরাও তাতে অংশ নেয়। মুসলিম সমাজের জন্য এর চেয়ে দুঃখ ও লজ্জার কারণ আর কি হ’তে পারে? মুসলমানরা কেন ‘এপ্রিল ফুল’ দিবস পালন করবে? তারা কি ইতিহাস জানে না? যদি ইতিহাস না জেনে পালন করা হয়, তাহ’লে বলতে হবে, আমরা আসলেই বোকা। কারণ না যেনে কেন একটা দিবস পালন করব? আর যদি ইতিহাস জেনেই পালন করা হয়, তাহ’লে এটাই প্রমাণিত হয় যে, আমাদের মত অনুভূতিহীন অসচেতন জাতি গোটা বিশ্বে দ্বিতীয়টি নেই।
দেশের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও যখন এরূপ বোকা বানানোর সংস্কৃতি চোখে পড়ে, তখন লজ্জায় বিস্মিত হ’তে হয়। কারণ উচ্চ ডিগ্রী অন্বেষণকারী শিক্ষিত সমাজ কেন গোলক ধাঁধায় পড়বে? এসব শিক্ষিতজনদের নিকট থেকে এই দেশ ও জাতি কোন্ সংস্কৃতি শিক্ষা লাভ করবে? ১লা এপ্রিল আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, আমাদের পূর্বপুরুষদের ৭৮০ বছরের গৌরবোজ্জ্বল স্পেনে মুসলিম সভ্যতার ইতিহাসের কথা, খ্রীষ্টানদের প্রতারণার
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×