somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশ কারাগার - অনিয়ম (পর্ব - তের) :গাঁজা, হেরোইন ও মাদক দ্রব্য সেবন জেলের অন্যতম সমস্যা

১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রতিটি কারাগারে বর্তমানে গাঁজা হেরোইন মাদক দ্রব্য সেবনের প্রবণতা খুব বৃদ্ধি পেয়েছে। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার ও অন্যান্য কেন্দ্রীয় কারাগারে এর প্রকোপ খুব বেশী। জেলা কারাগারগুলোতে সেই অনুপাতে ততোধিক নয়। কারাগারগুলোতে হেরোইন, গাঁজা মাদক ট্যাবলেটের পাচার হয় বহুবিধ পথে।
ক) জেলের সি.আই.ডি জমাদার, কারারক্ষী শেষ পাহারার কারারক্ষীগণ রাতের আঁধারে হেরোইন, গাঁজা ও মাদক ট্যাবলেট জেলের ভিতরে নিয়ে আসে।
খ) দেয়ালের বাইরে হতে ছুড়ে মেরে ভিতরে পাঠানো হয় গাঁজা ও হেরোইন। যে সমস্ত কারারক্ষী দেয়ালের দায়িত্বে থাকেন, তাদের সাথে বাইরের মাদক ব্যবসায়ী ও জেলের ভিতরের মাদক ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট গড়ে উঠে। তাদের পূর্ব সিদ্ধান্ত মোতাবেক নিদৃষ্ট সময়ে গাঁজা ও হেরোইন বলের মতো করে বেধে দেওয়ালের উপর দিয়ে ভিতরে ছুড়ে মারা হয়। বিভিন্ন সংকেতের মাধ্যমে পরস্পরের সাথে যোগাযোগ সংযোগ ঘটে। এভাবে গাঁজা ও হেরোইন দেয়া হয় ভিতরের মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে। সেই মাদক ব্যবসায়ী বিশেষ দফা ও স্ইুপার দফার কয়েদীদের মাধ্যমে খুচরা বিক্রি করে দেয় সাধারণ বন্দীদের মাঝে।
গ) কিছু বন্দী প্রতিদিন কোর্টে যায়। সেখানে হেরোইন বা গাঁজা মলদ্বারে করে নিয়ে আসে এবং পরদিন তা পুনরুদ্ধার করে জেলের ভিতরে বিক্রি করে।
ঘ) দেখার গেট দিয়ে ভিতরে পাচার হয় গাঁজা, হেরোইন ও মাদক ট্যাবলেট। এই কাজে সহায়তা করে জমাদার ও কারারক্ষীগণ। দেখার সময় গুটলি করে লম্বা কাঠিতে বেঁধে দিয়ে হেরোইন ও গাঁজা ঢোকান হয়।
ঙ) দর্শনার্থীর পাঠানো খাদ্য সামগ্রীর সাথে হেরোইন, গাঁজা, মাদক ট্যাবলেট জেলের ভিতরে প্রবেশ করে।
চ) মহিলা বন্দীগণ তাদের ব্রা, পেটিকোটের সাথে বেঁধে নিয়ে আসে হেরোইন, গাঁজা, মাদক ট্যাবলেট।
ছ) মেয়ে রক্ষীগণ তাদের শরীরের বিভিন্ন অংশে বেঁধে নিয়ে আসে হেরোইন, গাঁজা ও মাদক দ্রব্য।
জ) ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ফাঁসীর আসামী ও শীর্ষ সন্ত্রাসীগণ কোর্ট হতে আসার সময় হেরোইন গাঁজা নিয়ে এসে এজেন্টদের মাধ্যমে সমগ্র জেলে বিক্রি করনে।
ঝ) বিভিন্ন হাজতী ও কয়েদী বন্দী যারা হেরোইন বা গাঁজা সেবন করে তারা যখনই কোর্টে মামলার হাজিরা দিতে যায় তাদের প্রায় সকলেই সিগারেটের ভেতর করে গাঁজার স্টীক তৈরী করে নিয়ে আসে। সাবানের ভিতরে করে হেরোইন নিয়ে আসে।
ঞ) সি.আই.ডি কারা রক্ষীদের যে কোন সময়ে জেলের বাইরে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে তাদেরকে তল্লাশী করার কোন ব্যবস্থা নেই। তাদের মাধ্যমেও হেরোইন ও গাঁজা প্রবেশ করে থাকে।
ট) দেখার বড় গেট দিয়ে গেট সার্জেন্ট ও গেট ওয়ার্ডের মাধ্যমেও গাঁজা ও হেরোইন আনার অনেক ঘটনা ঘটেছে।
জেলের অভ্যন্তরে গাঁজা ও হেরোইন সেবন একটি মারাত্মক ব্যাধিতে রুপ নিয়েছে। অধিকাংশ সেলে লক-আপের পর হতে গাঁজা সেবন শুরু হয় রাত ১২/১টা পর্যন্ত চলতে থাকে। সেলে গাঁজা ও হেরোইন সেবনের সুবিধা হলো; রাতে সাধারণত পাহারা কম থাকে, সেই সুযোগে সেলগুলোতে মাদক দ্রব্য সেবন বেশী মাত্রায় হয়ে থাকে। বিভিন্ন ওয়ার্ডে গাঁজা সেবন যতটুকু সম্ভব তার চেয়ে বেশী অসুবিধা হলো হেরোইন সেবন। তবে ধরা পড়লে পুট-আপ এড়ানোর জন্য দায়িত্বরত কারারক্ষী ও জমাদারকে ২/৩শ টাকা দিয়ে দিলেও সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।
কারাগারে প্রতি পুরিয়া গাঁজা পঞ্চাশ টাকা হারে বিক্রি হয়। ১০০ টাকা হলে হেরোইন সেবন করা যায়। প্রতি ১হাজার টাকার হেরাইন ১০ হাজার টাকা বিক্রি হয়; ১ হাজার টাকার গাঁজা ৫০ হাজার টাকা জেলের ভিতরে বিক্রি হয়। হেরোইন, গাঁজা ও মাদক ট্যাবলেট ব্যবসায়ীদের সাথে জেল প্রশাসনের রয়েছে খুবই সু-সম্পর্ক তার মূল কারণ হলো টাকা। তাদের নিজস্ব পেশী শক্তি সম্পন্ন বাহিনীও রয়েছে জেলের ভিতরে। ব্যবসায়ের দখল দায়িত্বের জন্য দরকার হলো নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়ার মতো অনেক ঘটনা জেল খানায় ঘটেছে। রক্তারক্তিও হয়েছে অনেক।
জেল প্রশাসন মাদক ব্যবসায়ী পালনে বেশ উৎসাহী; শুধুমাত্র অতিরিক্তি আয়ের লক্ষে অনেকটা জামাই আদর করেই লালন করা হয় জেলের অভ্যন্তরে মাদক-ব্যবসায়ীদের। (চলবে......)
বাংলাদেশ কারাগার - অনিয়ম (পর্ব -বার) পড়তে somewherein এখানে অথবা bd news এখানে ক্লিক করুন ।
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×