ছুটবেলা কত স্বপ্ন ছিল মেয়েটির চোখেমুখে। বড় হয়ে ডাক্তার হবে, ইঞ্জিনিয়ার হবে...আর ও কত কি!! সপ্নের আকাশে রঙ্গিন ভেলা ভাসিয়ে শুরু হল একাকি পথযাত্রা...মাঝপথে অনেক বাধাবিপত্তি নিয়েও এস এস সি পাস করল এক অজপাড়া গ্রাম থেকে।তাও আবার উপজেলার ১৩টি স্কুলের মধ্যে একমাত্র ভাল রেজাল্টধারী... কি হৈ চৈ ছড়িয়ে পড়ল সবদিকে...যেন আকাশ থেকে চাঁদটাকে নিয়ে এসেছে...ভাবখানা এমন। উচ্চশিক্কা লাভের আশায় ছুটে আসা শহরে...তারপর একে একে স্মৃতির গহবরে হারিয়ে যেতে লাগল নামকরা এক কলেজের দিন গুলি... আস্তে আস্তে বড় হয়ে ভতি হল দেশের প্রথম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে... পড়ার বিষয় ইঙ্গিনিয়ারিং...মনে মনে অনেক স্বপ্ন পাস করে মোটা বেতনের চাকরি...অনেক সম্মান ...আরও কত কি।। চার বছরের কোর্স শেষ হতে সময় লাগলো সাড়ে ৫ বছর। ৪/২ তে থাকা অবস্থায় ই বিভিন্ন জায়গায় সিভি ড্রপ...গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করার ৩ মাসের মধ্যেই একটা কোম্পানি থেকে ডাক... জীবনের প্রথম ইন্টারভিউ...উত্তেজনায় যেন রাত কাটে না...তাও আবার রমজান মাস (৩০ আগস্ট,২০১০)। যাই হোক...সকাল ১১টায় লিখিত পরিক্ষা...তারপর ভাইভা। ভালই হল লিখিত পরিক্ষা... কিছুক্ষণ পর ভাইভার জন্য ডাক পড়লো...অসম্ভব রকমের ভয়ানক চেহারার ৩ জন লোক ভাইভা নিচ্ছে তো নিচ্ছেই...পুরো ৪০ মিনিট জুড়ে...।প্রায় সব প্রস্নের উত্তর জানা ছিল...যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসের সাথে ফেস করল।এরপর এলো সেই কাংখিত প্রশ্ন...
জি এমঃ তুমি কি চাকরিটি করতে চাও
মেয়েটিঃ অবশ্যই
জি এমঃ বেতন কত চাও?
মেয়েটিঃ ২০০০০
এরপর প্রশ্নকর্তারা সবাই নিশ্চুপ... হঠাৎ জি এম বললেন...আমরা তুমি আসার আগেই তুমাকে সিলেক্ট করছি...তুমার বায়োডাটা দেখে...সেজন্য তুমি ফ্রেস গ্রাজুয়েট হওয়া সত্ত্বেও তুমাকে বড় পোষ্ট টি তে কল করেছি।আমি জানি তুমি নামকরা একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করছ...আমাদের এই ছোট কম্পানি তে তুমার মত লোক কেই দরকার। আমাদের কম্পানি থেকে তুমাকে ট্রান্সপোর্ট + লাঞ্ছ দেয়া হবে।তুমার দুইজন সহকারি থাকবে...ইত্যাদি, ইত্যাদি...
মেয়েটি তো এসব শুনে মহা খুশি...সঙ্গে সঙ্গে ই রাজি হয়ে গেল...১৮০০০ টাকায়...। জি এম বললেন ১ তারিখ জয়েন দিতে...। মেয়েটি অনেক চিন্তায় পড়ে গেল...যেহেতু বড় পোস্ট (কেমিস্ট), এক্টু প্রিপারেশন নিয়ে আসা দরকার...তার উপর আবার ১ দিনের মধ্যে ঢাকায় থাকার মত জায়গা মেনেজ করা কষ্টকর...আবার সব সার্টিফিকেট নিয়ে যেতে বলছে...।এপিয়ার্ড এখনও তোলা হয়নি...যেহেতু মেইন টা পেতে সময় লাগবে...
মেয়েটি সবকিছু খুলে জি এম কে বলল...
উনি এসব শুনে রাজি হলেন।।বললেন ঈদ র পরে জয়েন দিতে...,
আসার সময় আর এক্ টা কন্টাক্ট নাম্বার রাখলেন, যেন সহজেই কন্টাক্ট করা যায়...
সেই থেকে এখন পর্যন্ত ঐ কম্পানি থেকে আর কুনো ফোন আসে নি...জয়নিং ডেট আর জানায় নি...এক ঘনিষ্ট বন্ধুর মাধ্যমে জানতে পারলাম ওরা লোক নিয়ে নিছে...এক ডিপ্লোমাধারীকে ১২০০০ টাকা বেতনে...
কষ্ট লাগলো শোনার পর...
বাংলাদেশ এগোবে কিভাবে???যেখানে যোগ্যতার মূল্যায়ন হয় না......
সেই থেকে আর পণ করেছি কুনো কম্পানি তে আর ভাইভা দিতে যাব না...আজ ও একটা কম্পানি থেকে ডাক এসেছিল...কিন্তু ্যাব না...জীবনের প্রথম ইনিংসে ই যখন প্রতারণার শিকার... আমার মত অবস্থা যেন আর কার ও না হয়...।বড়ই মেন্টাল প্রেসারের মাঝে আছি...।ভয় হয়, আমার কি কোনো দিন ভাল চাকরী হবে না!!!!!!!!!!!!