শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। সবাই মুখে এক বাক্যে এই কথাটি স্বীকার করি। এই শিক্ষার মেরুদন্ডকেই আজ ভেঙ্গে দেয়ার পায়তারা চলছে। জাতি হিসেবে আমরা শোষিত ও বঞ্চিত একটি জাতি। অনেক শোষন, বঞ্চনা, রক্তপাতের মধ্যে দিয়ে একটি সুন্দর সপ্নের যে আশায় বাংলাদেশের সূচনা হয়েছিল, তা আজ হতাশায়র কালো ছায়ায় ঢেকে গেছে। দুর্নীতি করাল থাবা আজ আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে গ্রাস করেছে।
অনেক দিন আগে বিটিভিতে একটা প্রোগামে, ডেনামর্কের এক ভদ্র লোকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, আপনাদের প্রতিবেশি রাষ্ট্র গুলো স্ট্রং, কি স্ট্রাটেজি ফলো করে আপনারা তাদের সমকক্ষ হলেন? তিনি উত্তরে বলেছিলেন, একমাত্র শিক্ষাই আমাদের কে এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছে।
শিক্ষা সুরু হয় জন্মের পর থেকেই। শিক্ষা জীবনের অর্জিত জ্ঞানের পরিপুর্নতা আসে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে। বিশ্ববিদ্যালয় এমন একটা যায়গা, যেখানে একজন শিক্ষার্থি নিজেকে যা বানাতে যায়, তাই সে হতে পারে। এখন ভাল কিছু যদি তাকে নাই দেখানো যায়, তবে সেটা করার সুপ্ত ইচ্ছা তার মনে আসবে কি করে? সে দেখে মারামারি, কাটাকাটি, ভাংচুর, মিছিল, মিটিং, এসব দেখে সেও নিজেকে তাতে সামিল করে ফেলে। সে যদি দেখতে পেত, বিশ্ববিদ্যালয় একটা হেভেন, তাকে যদি বুঝানো যেত রিসার্চের কি মজা, নো ডাউট, সবাই একজন রিসার্চার হতে চাইত।
বিশ্ববিদ্যালয় গুলো হওয়া উচিত ছিল জ্ঞান বিকাশের উৎস। কিন্তু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় গুলো হয়ে পড়েছে দুর্নীতির অভয়ারন্য। সায়ত্বশাষিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাউকেই জবাবদীহি করতে হয়না। আমি দেখেছি, অনেক দলীয় ক্যাডার, পরীক্ষায় ফেল করেও ক্ষমতার কারনে পাশ করতে কোনো বেগ পেতে হয়নি। হলের সিট থেকে সুরু করে, গাছের ডাব খাওয়া নিয়ে সেখানে চলছে ক্ষমতার অপব্যবহার।
নিয়োগ বানিজ্য এই দুর্নীতিকে আরো এক ধাপ এগিয়ে দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে লবিং এর কারনে ফার্ষ্ট ক্লাস ফার্ষ্ট রা টিচার হিসেবে ঢুকতে পারছে না। চাকরীর বাজারে যে পরিমান কনটেষ্ট এই কারনেই এরকম লোভনীয় চাকরী পেতে চলে টাকার খেলা। ফার্ষ্ট ক্লাস ফার্ষ্ট রা স্কলারশিপ নিয়ে বাইরে চলে যাচ্ছে, যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরী না পাওয়ায়। এভাবেই মেধা গুলো পাচার হয়ে যাচ্ছে। খোজ নিয়ে দেখুন, কত গুলো বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থিরা আন্দোলন করছে টিচারদের বিরুদ্ধে। অযোগ্য, মেধাহীনরা আজ দুর্নীতিকে সাথে করে বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে অবস্থান করে নিয়েছে। আসলেই কি এমন হওয়া উচিত ছিল? আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাষন, দেশের মাথা, আমরা কি করে দুর্নীতি ও টাকার কাছে নিজেদের বিবেককে বিক্রি করে দিচ্ছি। এই কি ছিল আমাদের শিক্ষা? এর জন্যেই কি ৩০ লাখ তাজা প্রান ও দুই লাখ মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে আমরা আমাদের দেশকে স্বাধীন করেছিলাম।
সম্মানিত শিক্ষক, যাহারা বেশির ভাগই বিদেশি ডিগ্রি অর্জন করেছেন, আপনারা জানেন একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ কি রকম হওয়া উচিত। দেশের মাটিতে নামার পরপরই কেন তা ভুলে যান? আপনাদের একটু একটু প্রচেষ্টাই পারে এই মাটিকে স্বর্গ করে তুলতে। আজ এই জাতি আপনাদের দিকে তাকিয়ে আছে। প্লীজ আর চুপ করে সহ্য করবেন না। যেখানেই দু্র্নীতি সেখানেই প্রতিবাদ করুন।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




