১৬ জুলাই ২০২৪ তারিখে দুপুর ২টা থেকে ৩টার মধ্যে, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে। এই সময় আবু সাঈদ পুলিশের গুলিতে আহত হন এবং হাসপাতালে নিয়ে যাবার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়। এই ঘটনার পর তাঁর মৃত্যুর ছবি, সেই দুই হাত প্রসারিত করা শেষ মূহুর্তের ছবি সবার মনে আছে। সেই জুলাই আসছে। কাজেই আমাদেরও ফিরে দেখার সময় এগিয়ে আসছে। একটা বছর তো কম নয়, কী চেয়েছিল বাংলাদেশ? কী পেয়েছে বাংলাদেশ? ভারতের আধিপত্যবাদ, অগণতান্ত্রিক নির্বাচন, ফেসিস্ট প্রশাসন এসবই তো নানান সমস্যা।
যখন সেই স্বৈরশাসন জনগনের অভিব্যক্তির গটা টিপে ধরে, খেয়ে পরে বাঁচবার স্বাধীনিতা কেড়ে নেয়, তার দুটো সবল হাতের জন্য কাজ জোটে না ঐ স্বৈরতন্ত্রের তৈরি করা বৈষম্যের জন্য, যখন সেই দম বন্ধ করা রাষ্ট্র ব্যবস্থায় আম আদমি তার ভবিষ্যৎকে দেখতে পায় না, ভবিষ্যৎ এক ঘসা কাঁচের ওপাশে হারিয়ে যায়। তখন সে প্রতিবাদ করে, কারণ খুঁজতে চায় আর খুঁজে বার করে ঐ যে এই উপমহাদেশে এক ভারতীয় আধিপত্যবাদকে, দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে শেকড় গজিয়ে ওঠা এক প্রকান্ড স্বৈরতন্ত্রকে, তার বিরুদ্ধেই মানুষের প্রতিবাদ কখনও মিছিল আন্দোলন আলোচনাতেই শেষ হয়, কখনও তা অভ্যুথ্বান হয়ে ওঠে, সেদিন জুলাইয়ে সেটাই হয়েছিল।
গণতন্ত্রের প্রথম শর্ত নির্বাচন, এক অবাধ, স্বাধীন, মুক্ত নির্বাচন। না হয় নি। কিন্তু কবে হবে? তা কি জানতে পেরেছে মানুষ? সেনা প্রধান বলছেন ডিসেম্বারের মধ্যেই চাই, সরকারের তরফে আগামী জুন মাসের মধ্যে করা হবে বলে জানানো হচ্ছে, বিএনপি চাইছে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন। মানুষ তো চেয়েইছিল এক অবাধ গণতান্ত্রিক নির্বাচন। আসেনি। কারণ কী? কারণ তারজন্য সংস্কার প্রয়োজন। একমত, সংস্কার দরকার। তো সেই সংস্কার কোন পথে হবে? কতটা হয়েছে, সেই সংস্কারের রোডম্যাপ কোথায়? কারোর জানা নেই। হ্যাঁ এখানেই আছে সমস্যা। মানুষের মধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, সে প্রশ্ন আরও বড় আকার নেবে, নেবেই। কারণ এখনো অবাধ গণতান্ত্রিক নির্বাচনের স্বাদ মানুষ পায়নি সেই কবে থেকেই, ১৫ বছর হয়ে গেছে। না, জুলাই অভ্যুথ্বানের মূল দাবি অবাধ স্বাধীন গণতান্ত্রিক নিরপেক্ষ নির্বাচন আজও হয় নি, কবে হবে তাও জানেন না সাধারণ মানুষ।
তবে সরকারের পক্ষথেকে পরিস্কার করার দরকার কি কি সংস্কার হয়েছে? কতটুকু হয়েছে এবং আরো কতটুকু করা প্রয়োজন?
আংশিক সংকলিত অনিকেত চট্রপাধ্যায়ের লেখা থেকে।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুন, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭