বিশ্বের খ্যাতনামা বিজ্ঞানী চার্লস ডারউইনের বিবর্তনবাদ তত্ত্ব ‘সবচেয়ে সুন্দর তত্ত্ব’ হিসেবে বিজ্ঞানীদের একটি তালিকায় স্থান পেয়েছে। আর এর পরই রয়েছে আলবার্ট আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতাবাদ। তালিকাটি তৈরি করা হয়েছে খ্যাতনামা বিজ্ঞানী ও চিন্তাবিদদের মতামতের ভিত্তিতে।
বিজ্ঞানীদের তৈরি এই তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ডারউইনের বিবর্তনবাদ তত্ত্ব—‘অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ব্যক্তিত্ব গড়ে ওঠে দৈবক্রমে’।
বিজ্ঞানীদের অনলাইনভিত্তিক সংস্থা এজ ডট ও আর জি-এর সভাপতি জন ব্রকম্যান প্রতিবছরের জানুয়ারি মাসে বিজ্ঞানী, কম্পিউটার-শিল্প ও অনলাইন কমিউনিটির অভিজাত ব্যক্তি এবং বিজ্ঞ পণ্ডিত ও বিদ্বান ব্যক্তিদের কাছে একটি প্রশ্নের উত্তর চেয়ে থাকেন।
আগের বছরগুলোতে যেসব প্রশ্নের উত্তর চাওয়া হয়েছিল তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে: ‘ইন্টারনেট কীভাবে আপনার চিন্তার ধরনই বদলে দিচ্ছে?’ ও ‘বিগত দুই হাজার বছরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার কোনটি?’ তবে চলতি বছর তিনি একটি খোলা প্রশ্ন করেন। সেটি ছিল: ‘আপনার কাছে সবচেয়ে প্রিয় গভীর, মার্জিত বা চমৎকার ব্যাখ্যা কোনটি?’।
এই প্রশ্নের ওপর প্রায় ২০০ জন বিদ্বান ব্যক্তির মতামতের ভিত্তিতে যে তত্ত্বগুলো নির্বাচন করা হয়েছে, তা গত রোববার রাতে প্রকাশ করা হয়। মতামত প্রদানকারীদের মধ্যে রয়েছেন: জোতির্বিদ রয়্যাল মার্টিন, পদার্থবিদ ফ্রিম্যান ডাইসন ও বিবর্তনবাদী জীববিজ্ঞানী রিচার্ড ডাকিনসের মতো ব্যক্তিরাও। ওই ২০০ জনের মধ্যে অধিকাংশ ব্যক্তিই বিজ্ঞানের সবচেয়ে শক্তিশালী দুটি তত্ত্বের পক্ষে মত দিয়েছেন। তত্ত্ব দুটি হচ্ছে: ডারউইনের বিবর্তনবাদ ও আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতাবাদ।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ডকিনসের মতে, ডারউইনের বিবর্তনবাদ তত্ত্ব অবলীলাক্রমেই বিজয়ী হয়েছে। তিনি লিখেছেন, ডারউইনের এই তত্ত্ব মানুষের বোধশক্তির প্রতিটি ক্ষেত্র একেবারে কম কথায় যতটা ব্যাখ্যা করেছে তা আজ পর্যন্ত অন্য কোনো তত্ত্ব পারেনি।
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তাত্ত্বিক পদার্থবিদ স্টিভ গিডিংস লিখেছেন, আইনস্টাইনের এই প্রধান তত্ত্বটিই আধুনিক মহাবিশ্বের ধারণাকে বুঝতে সাহায্য করেছে। মহাবিশ্ব যে কতটা বিস্তৃত তা অনুমান করা যেত না এই তত্ত্ব না থাকলে। তাঁর মতে, কৃষ্ণগহ্বর, আলোকরাশির সংমিশ্রণ, এমনকি মহাবিশ্ব সৃষ্টির আদিরহস্য উদ্ঘাটনেও সম্ভাব্য অনেক কিছুর ব্যাখ্যা দিয়েছে এই তত্ত্ব। রয়টার্স।