টাইটেল দেখেই যারা ঝাপিয়ে পড়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন তাদের প্রতি অনুরোধ, একটু ধীরে ... ... জনাব/জনাবা! আগেই মুন্ডুপাত কইরেন না, জামাত শিবির বা ছাগু ট্যাগ লাগায়েন না। আমারে ট্যাগ লাগাইয়া, গালাগালি কইরা নিজে হয়ত তথাকথিত প্রগতিশীলদের দলে নাম লেখাইতে পারবেন বা বিশিষ্ট উদারমনা ব্লগার হিসাবে খ্যাতি লাভ করতে পারবেন কিন্তু তাতে কামের কাম কিছু হইবে না। তারচেয়ে আমার কিছু সরল প্রশ্ন নিজেকে করুন এবং নিজে নিজে উত্তর বের করার চেষ্টা করুন। তাহলে হয়ত কিছু উপকার হতেও পারে ...
যে সকল বোনেরা আবেদনময়ী পোষাক পরেন, তারা একটু নিজেকে জিজ্ঞাসা করেন তো, কেন সেটা পরেন??
উত্তর কি??
- এটা ফ্যাশন!
- তো ফ্যাশনে সবসময় কাপড় ছোট হ্যে যায় কেন? কাপড় বড় রেখেও তো অনেক ফ্যাশন আছে, সেগুলো ফলো করেন না কেন?
- কাপড় ছোট হইছে তা কি হয়েছে, দুষ্টু লোকেরা না দেখলেই হয় !
- তাহলে তুমি যে কাপড় খানা ছোট করে শরীর বের করে দিলে সেটা কি জন্য দিলে দুষ্টু ছেলেদের দেখার জন্য-ই তো, নাকি?
- না না, কি সব বাজে কথা বলছেন! তা হবে কেন !!
- তাহলে কি জন্য শরীর বের করে রাখ সেটা একটু বলোতো শুনি ...
- এই গরম ... এত কাপড় চোপড় পরলে কি স্মারটলি সব কাজ করা যায়!!
- ও এত গরম তোমার! তা যে টুকু কাপড় পরেছ সেটুকু এত আটসাট কেন, আবার বিশেষ বিশেষ জায়গায় এত চাপাইছ যে শরীরের সব ভাজ দেখা যাচ্ছে; এটা কেন করেছ?
- ইয়ে মানে ... ... হ্যাঁ, আমার কাপড় আমি পরছি তাতে তোর কি ... অসভ্য, ক্ষ্যাত, ইতর, মেয়ে মানুষ দেখলে মুখে লালা পড়ে, না!!
- হ্যাঁ, এতক্ষনে আসল কথায় এসেছ; আসলে তোমার এই সেক্সি পোষাক পরেছ ওই সব অসভ্য, ক্ষ্যাত, ইতর দের লালা ঝরাতেই!!!
কি মেয়েদের পচানো দেখে হাসছেন?? এবার আপনাকে একটা প্রশ্ন করি ঃ
যে সকল ভাইয়েরা তাদের প্রাপ্তবয়স্ক সন্তানদের বা বোনেদের বা স্ত্রীদের আধুনিক ফ্যাসানের নামে আবেদনময়ী কাপড় পরতে দেখেন কিন্তু তাদের নিষেধ করেন না, কেন করেন না?
- আমার মেয়েতো ছোট মানূষ মাত্র বয়স ১৫/১৬ ..., তাছাড়া আমার চোখে তো খারাপ কিছু দেখি না!
- ও আচ্ছা তাই না? তা এই বয়সের অন্য মেয়ে কে সেক্সি পোষাকে দেখলে আপনার দৃষ্টি কি বিশেষ বিশেষ জায়গায় নিবদ্ধ হয় না? আপনার ঘরের মেয়ের দিকে আপনার খারাপ দৃষ্টি পড়বে না এটাই স্বাভাবিক, কিন্তু অনবাভাবিক,পড়তেই পারে যেমন আপনি তাকান অন্যদের দিকে!!
- কি বললেন, আপনি খারাপ দৃষ্টিতে তাকান না?? হ্যাঁ, আপনার মত ধরা খাওয়ার আগে সবাই সাধু সাজে, কিন্তু আসলে সেটা কতটুকু সত্যি? এই দেখেন না হুজুকে বাঙ্গালী এক এক সময় এক একটা নিয়ে মাতে; একবার মেতে ছিল ইভটিজিং নিয়ে এখন যাচ্ছে ধর্ষণ নিয়ে গরম হওয়ার মৌসুম। সবাই কত কত বক্তৃতা মেরে যাচ্ছে, কেও তো এগুলোর পক্ষে বলে না, তাহলে এত ধর্ষন এত ইভটিজিং করে কারা??
- দেখেন, মুখ সামলায়ে কথা বলবেন!
- আচ্ছা ভাই ধরে নিলাম, আপনি নিতান্ত সাধু পুরুষ (দুষ্টু লোকেরা বলে নংপুরুষ), কিন্তু সমাজের সব মানুষ তো আর সাধু নয়, তারা তো আপনার ঘরের মেয়েদের দিকে লোভনীয় দৃষ্টিতে তাকাবে! এবং সুযোগ পেলে .........
- ছি! আপনার মন মানসিকতা এত নীচু! আগে জানতাম না!
- হু, ঠিক বলেছেন! ধরাপড়ার আগে বুঝা যায় না কার মন মানসিকতা কেমন! তাই সাবধান! সকলের থেকে; হ্যাঁ আপনার পাশের মানুষটি থেকেও যিনি সুশীল ভান ধরে আছেন! আর আজ থেকে খেয়াল রাখবেন আপনার ঘরের সন্তান, বোন বা স্ত্রী কি সাজে বাইরে যাচ্ছেন। সে শরীর ঢাকার উদ্দেশে কাপড় পরেছে নাকি প্রদশনের উদ্দেশ্যে কাপড় পরেছে!
যা হোক অনেক কথা হলো, তথাকথিত প্রগতিবাদীরা নিশ্চয় শান দিচ্ছেন, কি গালি দেওয়া যায়!! যতই গালি দিন, আর চোখ বুজে থাকুন, প্রকৃত সত্য হচ্ছেঃ আপনি আধুনিক ফ্যাশানের নামে ছোট কাপড় বা টাইট কাপড় পরেন লোকজনকে আপনার শরীর দেখিয়ে উত্তেজিত করার জন্য; এর বাইয়ে আর কোন যুক্তি নেই! আপনি চান যে আপনার শরীরের সৌন্দর্য দেখে অন্যে আপনার প্রতি আকৃষ্ট হোক, লোভনীয় দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকুক। এর ভিতর কাওকে কাওকে আপনার ভাল লাগলে আপনি আপনার সব উজাড় করে দিবেন, তার নাম দিবেন প্রেম/ ভালবাসা /লাভ! আর যাকে আপনি পছন্দ করবেন না তার প্রস্তাব কে বলবে ইভটিজিং বা কোন নরাধম তার পশুত্ব সংবরন না করতে পেরে আপনার উপর হামলে পড়লে তাঁকে বলবেন ধর্ষণ! বলবেন সমাজ টা নষ্ট হয়ে গেছে, সরকার দেশটাকে ধ্বংস কওরে দিল ইত্যাদি ইত্যাদি! কি সুন্দর যুক্তি!! আপনার কোন দোষ নেই!! ... এভাবে কোনদিন সমস্যার সমাধান হবে না!! তোমার শরীর, তোমার মন তোমার অমুল্য সম্পদ; আগে তাঁকে তুমু সাম্লিয়ে রাখ, তারপর চোরের বিচার চাও!
পুরুষদের প্রতি অনুরোধ, উট পাখির মত চোখবুঝে থাকবেন না, আপনার পরিবারের লোকজনের দিকে খেয়াল রাখুন! ইন্ডিয়ান নায়িকাদের ফ্যাশনের কাপড় চোপড় পরা থেকে বিরত রাখুন, আর পরকিয়া-আশ্লিলতা পূর্ণ হিন্দি সিরিয়াল দেখা থেকে ফিরিয়ে আনুন। ইন্ডিয়ায় পচন ধরে গেছে পূর্ণ মাত্রায়, আমাদের দেশেও শুরু হয়েছে ... এই পচন থেকে আপনার পরিবার কে রক্ষা করুন! আর অন্য নারীর প্রতি খারাপ দৃষ্টি দেওয়ার সময় খেয়াল রাখুন আপনার সন্তান/বোনের দিকে এমন ভাবে কেও দৃষ্টি দিয়ে আছে!
পুনশ্চঃ যাদের পর্দা বা বোরখা নামে এলার্জি আছে তাদের কে বলছি, আমি এখানে বোরখা পরার কথা কোথাও বলিনি, বলেছি শালীন পোষাক পরার কথা। আর একটা কথা আমি এখানে কোন ভাবেই ইভটিজার বা ধর্ষকদের পক্ষে কিছু বলিনি। অবশ্য তাদের কে বিপক্ষেও কিছু বলিনি, কারণ ওরা তো নর্দমার কীট, ওরা নষ্ট হয়ে গেছে, ওদের কিছু বলে লাভ নেই। আমাদের নিজেদের সাবধান হতে হবে আগে!
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৯