বর্তমান সময়ে আই এস বা জঙ্গী মুসলমানের সমার্থক শব্দ হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক হত্যাকান্ড থেকে শুরু করে দেশে নাস্তিক বা ব্লগার হত্যাকান্ড এই ধর্মের দোহাই দিয়েই ঘটানো হচ্ছে। এসব হত্যাকান্ডের পর কিছু সুশীল বলে থাকেন- ইহা সহী ইসলাম নয়। ফলে সহি ইসলাম ক্রমেই জোক শব্দে পরিনত হয়ে গেছে। এখন যদি কোন অসহী প্রোডাক্ট ইউনিলিভারের নামে বিক্রি করে। তখন সেই প্রোডাক্ট কিনে ধোকা খাওয়া মানুষগুলোর থেকেও বেশি প্রতিবাদি ও প্রতিরোধি পদক্ষেপ নিবে ইউনিলিভার। কারন বিষয়টা তাদের ইমেজ ও স্বার্থের সাথে জড়িত। তখন ইউনিলিভার যদি শুধু এই বলে বিবৃতি দেয়- ইহা সহী ইউনিলিভারের প্রোডাক্ট নয়। তাহলে তারা ক্ষতিগ্রস্থই হবে। যেহেতু তারাই ক্ষতিগ্রস্থ ও অস্তিত্বের প্রশ্নে পরেছে তাই সেই গরজেই তারা গর্জে উঠবে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা মুসলমানেরা আইএস বা জঙ্গী দল গুলোর বিরুদ্ধে কতখানি সোচ্চার? কতখানি প্রতিবাদি? কতখানি প্রতিরোধি? তারা যে সুস্পষ্ঠ ধর্ম লঙ্ঘন করেছে তা আমরা কতখানি প্রমানে আগ্রহী?
এই সব দায়িত্ব শুধু মাত্র, ইহা সহী নহে ; এই বলেই শেষ করা কি হাস্যকর নয়? সেই সাথে প্রশ্রয়ের আচরনও বটে।
একজন নাস্তিকের জন্য বা ইসলাম বিদ্বেষী লেখকের জন্য আন্তর্জাতিক ভাবে আমরা কতখানি ইমেজ হারাই? কতখানি সুযোগ সুবিধা হারাই? কতখানি আক্রমনের মুখে পড়ি?
বলতে গেলে তসলিমা নাসরিন, আসিফদের জন্য আমরা সন্ত্রাসী খেতাব, মাইগ্রেশন সমস্যায় পড়িনি। পড়েছি ওই দাড়ি টুপিওয়ালা শয়তানদের জন্য। অথচ তসলিমার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের তুলনায় আইএস এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কতখানি জোরালো? অথচ এমন হওয়া উচিত ছিল না। অনুচিত কাজেই আমরা পটু।
তাহলে তসলিমা, আসিফদের বিরোধিতা করার থেকেও আইএস ও জঙ্গী বিরোধিতা করা আমাদের জন্য ফরজ হয়ে গেছে। সমস্ত ইসলামি ওলামা ও সাধারনদের এইসব হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে কঠোর ও তীব্র বিরোধিতা করতেইইই হবে । মাঠে নামতে হবে। হাদিস ,কোরান দিয়ে তাদের ভুল অবস্থান স্পষ্ট করে দিতে হবে আর তা প্রচার করতে হবে। কারন এরা মুসলমান ব্র্যন্ডের প্রধান ও বড় শত্রু। আমাদের শত্রুর মোকাবেলা আমাদেরি করতে হবে। নতুবা যেই সমস্যা গুলো খুব প্রকট হবে,
- সিরিয়া থেকে আগত মুসলিম শরনার্থীরা জার্মান, ফ্রান্স তথা ইউরোপে ক্রমেই ঘৃনার পাত্র হবে। তাদের শেষ আশ্রয় হারাবে।
- আন্তর্জাতিক ভাবে মুসলিমরা সন্ত্রাসের সমার্থক শব্দ হবে ও ইহুদিদের থেকেও বেশি ঘৃন্য হয়ে যাবে।
- উন্নত দেশ গুলোতে ভাগ্য পাল্টাতে যাওয়া মুসলিম ভাই বোনেরা বিপদে পড়বে।
- মুসলিম ছাত্ররা আন্তর্জাতিক স্কলারশিপ গুলো নিয়ে বিদেশে পড়তে যাবার সুযোগ হারাবে।
- সন্ত্রাস দমনের নামে মুসলিম দেশ গুলো ইরাক হয়ে যাবে।
- বেচে থাকার তাগিদে হয়ত ধর্মান্তরিত হয়েও যাবে। মুসলমান অস্তিত্ব শেষ হয়ে যাবে।
তাই এত বড় আঘাত মোকাবেলায় যদি ইহা সহি নহে বলাই যথেষ্ট মনে করি তাহলে তা ছাগলের ম্যা ম্যা ছাড়া কিছুই হবে না।
আইএস এর লক্ষ্য শুধুমাত্র ইসলামিক স্টেট নয়। তাঁদের উদ্দেশ্য অনেক জটিল যা আমার মতন বোকাদের বুঝা অসম্ভব।সিরিয়ানদের আশ্রয়দাতা দেশে এরাম হত্যাকান্ড ঘটিয়ে তারা সিরিয়ান রিফিউজিদের তেরটা বাজানোর রাস্তা ক্লিয়ার করেছে, এতেই বুঝা যায় তারা ছাগলের বেশ ধরা হায়েনা । এই হায়েনাদের রুখতে বর্তমান মুসলিম বিশ্ব একেবারেই অপ্রস্তুত।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:১৮