somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

১৬: আমার কৈশর বেলায় আয় এর উৎস :P

২০ শে জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১২:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

টাকা এমন একটা জিনিস যার প্রয়োজন জন্ম থেকে ( মিষ্টি খায়ানো থেকে শুরু) মৃত্যু ( কাফনের কাপড় কিনে শেষ) পর্যন্ত। বাংলাদেশের পেক্ষাপটে একটি ছেলে সাধারনত ২০/২২ এর আগে লিগ্যাল ভাবে ইনকাম করতে পারে না কিন্তু কিছু পার্সোনাল খরচ কিন্তু ঠিকই হয় যা গার্জিয়ান কে বলা যায় না তাই বাধ্য হয়ে খুঁজে নিতে হয় কিছু ইললিগ্যাল সোর্স।
আমি যেহেতু গ্রামে বড় হয়েছি এবং ঐ বয়সে ব্যায় এর মূল খাত (কোনো গার্ল ফ্রেন্ড) ছিলো না বলে খুব বেশি ফাফরে পড়তে হয় নাই। শুধু মাঝে মধ্যে বন্ধুদের সাথে বেড়াতে যাওয়া, ভালো সিনেমা নামলে টাউনে গিয়ে সিনেমা দেখা, একটু বড় হলে দাঁড়ি গোঁফ কাটার খরচ, আর কিছু টুক;) টাক:P ......

এবার বলছি আমার আয়ের উৎস গুলো কি কি ছিলো-
উৎস নং-১: সুপারি বিক্রি :- আমরা ছিলাম যৌথ ফ্যামেলি, মানে দাদার সাথে সব চাচা সহ একসাথে থাকতাম। আমাদের বিশাল বাড়িতে সুপারি গাছ ছিলো প্রায় একশ এর মত আর মেজো কাকা যখন পাশের ফসিওল্ল্যা স্যারের বাসাটা কিনলো তখন দুই বাড়ি মিলে সুপারি গাছ দুইশ এর বেশি, আম গাছ ছিলো ৪০-৫০টি কাঁঠাল গাছ ছিলো ১৫-২০ টি।
মেজো কাকা বিদেশে থাকতেন। তাই বাড়িটা ভাড়া দেওয়া থাকতো আর তাই সেই বাড়ির সব গাছের অঘোষিত মালিক ছিলাম আমি আর আমার এক সমবয়সী চাচাতো ভাই সোহাগ। সুপারির একটি নির্দিষ্ট সিজেন থাকলেও কিছু কিছু গাছা (মনে হয় আমাদের কথা ভেবে) সারা বছর ফল দিতো। সবগুলো গাছকেই চোখে চোখে রাখতাম। কোন গাছে বাঁধা আসলো, কোন গাছের সুপারি গুলো প্রায় পেকে আসলো....। লাল পাঁকা সুপারির দাম ছিলো বেশি কিন্তু বেশি পাঁকাতে গেলে যদি সোহাগ আগেই পেড়ে ফেলে;। তখন একশ সুপারির দাম ছিলো ২০/২৫ টাকা।

উৎস নং-২: দাদার ধানের গোলা থেকে ধান বিক্রি:- আমাদের দাদা ছিলেন ব্যাচলর (দাদী অনেক আগেই মারা গিয়েছিলেন)। দাদা যে ঘরে থাকতেন সেই ঘরে ছিলো বড় একটি ধানের গোলা, দাদা সারা বছর সেখান থেকে ধান বিক্রি করে হাত খরচ চালাতেন। দাদার সাথে আমরাও সেখানে ভাগ বসাতাম। সুপারির মত ধান বিক্রি করা সহজ ছিলো না । কারন ধান ওজন হিসাবে বিক্রি করতে হয় আর পাল্লা-পাথর দিয়ে ওজন করার সময় কোথায়! একটি বাজার করার ব্যাগ ছিলো তাতে প্রায় ৬/৭ কেজি ধান ধরতো। অনুমান করে (একটু বেশি হলে হোক) এক ধরা (৫কেজি) ধান বাজারে নিয়ে দাম একটু কম পেলেও সময় যাতে কম লাগে পাইকারের কাছে বিক্রি করে দিতাম। (এই বিষয় গুলো গার্জিয়ানরা কিছুটা জানতেন কিন্তু কিছু বলতেন না)

অপ্রচলিত আয়ের উৎস:- দাদার একটি কাঠের আলমারি ছিলো। তালা লাগালেও দুই ডালার মাঝে অনেক খানি ফাঁকা থাকতো। সেই আলমারির ভিতরে উপরের তালায় একটি ডায়রির ভিতরে দাদা টাকা রাখতেন। তো সেখান থেকে দাদাকে টাকা বের করেতে অনেক বারই দেখেছি।
একদিন আমি খেয়াল করে দেখলাম উপরের তালায় যেখানে দাদা ডায়রিটা রেখেছেন একটা বাঁকা ধরনের কাঠি দিয়ে খোঁচা দিলেই ডায়রিটা নিচের তালায় পড়ে যাবে। আর নিচের তালায় পড়লে সেখান থেকে ডায়রিটা বের করা খুব একটা কঠিন হবে না। শুরু করলাম মিশন, ম্যাকগাইভারের মত বিশেষ ধরনের একটি বাঁকানো কাঠি দিয়ে ডায়রিটাকে নিচে ফেলতে সক্ষম হলাম। তার পর ডায়রি খুলে ভিতরে দেখি কয়েকটি ভাংটি টাকার সাথে ৫০০ টাকার একটি নোট। সেই ৯২-৯৩ সালে ৫০০ টাকা অনেক টাকা।
দ্রুত সিদ্ধান্ত নিলাম, ভাংটি টাকাগুলো রেখে শুধু ৫০০টাকাটা পকেটে রাখলাম। আর বিশেষ কায়দায় ডায়রিটাকে নিচের তালায় ঢুকিয়ে রাখলাম।

বিকেল বেলা দাদা আলমারি খুলে দেখেন ডায়রিটা নিচের তালায় পড়ে আছে। প্রথমে ভাবলেন হয়তো কোনো কারনে ডায়রিটা উপর থেকে নিচে পড়ে গেছে। কিন্তু সন্দেহ ঠিকই হলো । ডায়রি খুলে দেখেন তার হিসাব মতে ৫০০ টাকা নেই। দাদা অন্য পাতা গুলো ভালো করে খুঁজলেন এবং কোনো কাজে টাকা খরচ করেছেন কিনা মনে করতে চেষ্ট করলেন।
আমি এসে দেখি দাদা খুব চিন্তিত। জিজ্ঞাসা করলাম, দাদা কিছু বললেন না। দাদার চিন্তিত মুখ দেখে আমার মায়া হলো । মনে মনে পার্থনা করলাম "হে আল্লাহ দাদাকে এই টাকা হারানোর শোক সইবার ক্ষমতা দাও"

( দাদাও মার গেছেন অনেক দিন হলো। দাদার সাথে অনেক স্মৃতিই এখন মনে পড়ছে। আপনারা আমার দাদার জন্য দোয়া করবেন, আল্লাহ যেনো দাদাকে বেহেস্ত নসিব করেন- আমীন)
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজত্ব আল্লাহ দিলে রাষ্ট্রে দ্বীন কায়েম আমাদেরকে করতে হবে কেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:০৬



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) কেড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তির কোরাস দল

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৫



ঘুমিয়ে যেও না !
দরজা বন্ধ করো না -
বিশ্বাস রাখো বিপ্লবীরা ফিরে আসবেই
বন্যা ঝড় তুফান , বজ্র কণ্ঠে কোরাস করে
একদিন তারা ঠিক ফিরবে তোমার শহরে।
-
হয়তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাইডেন ইহুদী চক্তান্ত থেকে বের হয়েছে, মনে হয়!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮



নেতানিয়াহু ও তার ওয়ার-ক্যাবিনেট বাইডেনকে ইরান আক্রমণের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলো; বাইডেন সেই চক্রান্ত থেকে বের হয়েছে; ইহুদীরা ষড়যন্ত্রকারী, কিন্তু আমেরিকানরা বুদ্ধিমান। নেতানিয়াহু রাফাতে বোমা ফেলাতে, আজকে সকাল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজ ২৫শে বৈশাখ। ১৬৩তম রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আমার গাওয়া কয়েকটি রবীন্দ্রসঙ্গীত শেয়ার করলাম। খুব সাধারণ মানের গায়কী

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০৫

আপনারা জানেন, আমি কোনো প্রফেশনাল সিঙ্গার না, গলাও ভালো না, কিন্তু গান আমি খুব ভালোবাসি। গান বা সুরই পৃথিবীতে একমাত্র হিরন্ময় প্রেম। এই সুরের মধ্যে ডুবতে ডুবতে একসময় নিজেই সুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্ব কবি

লিখেছেন সাইদুর রহমান, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৭

বৈশাখেরি পঁচিশ তারিখ
কবি তোমার জনম
দিন,
বহু বছর পার হয়েছে
আজও হৃদে, হও নি
লীন।

কবিতা আর গল্প ছড়া
পড়ি সবাই, জুড়ায়
প্রাণ,
খ্যাতি পেলে বিশ্ব জুড়ে
পেলে নভেল, পেলে
মান।

সবার ঘরেই গীতাঞ্জলী
পড়ে সবাই তৃপ্তি
পাই,
আজকে তুমি নেই জগতে
তোমার লেখায় খুঁজি
তাই।

যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×